ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ফেব্রুয়ারিতেই ছাত্র সংসদ-ডাকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির Logo সাতক্ষীরা সীমান্তে বিএসএফের ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি Logo ভারতের কাছে বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ: ভারতের সেনাপ্রধান Logo বাড়ির দেয়ালে লেখা ‘ সমন্বয়ক মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হ’ Logo সিরাজগঞ্জে শিশু নির্যাতনের অভিযোগে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা Logo এবার মাদকরোধক ডিসপ্লেতে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে’ Logo চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বাদ পড়া লিটন যায়গা পেলেন পিএসএলে Logo পাকিস্তান বাংলাদেশ ‘যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদ’ গঠনে সমঝোতা Logo চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক Logo টিউলিপকে বরখাস্তে প্রবল চাপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

কুষ্টিয়ায় বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে আহত জামায়াত কর্মীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ার মিরপুরে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত খোকন আলী (৩৫) নামে এক জামায়াত কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় ঢাকায় ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। খোকন আলী বুরাপাড়া গ্রামের নওশের আলীর ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম ও আমলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল।

এর আগে, রোববার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুরাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জামায়তের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জামায়াতের নেতা নাসিম রেজা মুকুল অভিযোগ করে বলেন, ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খোকন মারা গেছেন। তিন জামায়াতের কর্মী। স্থানীয় বিএনপির নেতা নাসিরের নেতৃত্বে বিএনপির শতাধিক লোকজন আমাদের কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এ ঘটনায় বুরাপাড়া এলাকার ওহিদুল, আবুল হাসেম, জাহাঙ্গীর, মজনু, শরিফুল, খোকন, শফিকুল, আনারুল, রেজাউল, আবুল কালাম আজাদ, আনারুল হক ও হাসান। তারা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিরা মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের নিজেদের নেতাকর্মী ও সমর্থক বলে দাবি করেছে জামায়াত।

স্থানীয়রা জানান, মিরপুর উপজেলার বুরাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের কমিটি গঠন করা নিয়ে বিদ্যালয়ে মিটিং চলছিল। কমিটির আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলেন আমলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল ও স্থানীয় বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন। জামায়াতের নেতা মুকুল হোসেন প্রার্থী হওয়ার পর থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন বিএনপি নেতা নাসির ও তার লোকজন। কয়েকদিন ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। একপর্যায়ে রোববার বিকেলে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন।

আহতরা বলেন, স্কুল কমিটি নিয়ে বিএনপি নেতা নাসির আমাদের ওপর হামলা করেছে। হত্যার উদ্দেশে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নাসির ও তার লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। তারা বিএনপির রাজনীতি করে। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক সোজা উদ্দিন জোয়ার্দার বলেন, সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমলা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মুকুল হোসেনকে বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রার্থী করা হয়। তিনি সভাপতি প্রার্থী হওয়ার পর থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও স্কুলের সভাপতি প্রার্থী নাসির বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেন। এর প্রতিবাদে স্কুল মাঠে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন জামায়াতে ইসলামীর ওই প্রার্থী। এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। নাসিরের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। এতে আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

মিরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহমত আলী রব্বান বলেন, নাসির একসময় ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। এখন তিনি বিএনপির কর্মী। ঘটনাটি যেহেতু স্থানীয় দুই পক্ষের, তাই এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ও স্কুলের সভাপতি প্রার্থী নাসির উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, স্কুল কমিটি নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত অবস্থায় ঢাকায় খোকন নামে একজন মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। কাউকে আটক করা যায়নি। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ফেব্রুয়ারিতেই ছাত্র সংসদ-ডাকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির

কুষ্টিয়ায় বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে আহত জামায়াত কর্মীর মৃত্যু

আপডেট সময় ০৫:৪১:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

কুষ্টিয়ার মিরপুরে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত খোকন আলী (৩৫) নামে এক জামায়াত কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় ঢাকায় ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। খোকন আলী বুরাপাড়া গ্রামের নওশের আলীর ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম ও আমলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল।

এর আগে, রোববার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার আমলা ইউনিয়নের বুরাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জামায়তের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জামায়াতের নেতা নাসিম রেজা মুকুল অভিযোগ করে বলেন, ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খোকন মারা গেছেন। তিন জামায়াতের কর্মী। স্থানীয় বিএনপির নেতা নাসিরের নেতৃত্বে বিএনপির শতাধিক লোকজন আমাদের কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এ ঘটনায় বুরাপাড়া এলাকার ওহিদুল, আবুল হাসেম, জাহাঙ্গীর, মজনু, শরিফুল, খোকন, শফিকুল, আনারুল, রেজাউল, আবুল কালাম আজাদ, আনারুল হক ও হাসান। তারা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিরা মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের নিজেদের নেতাকর্মী ও সমর্থক বলে দাবি করেছে জামায়াত।

স্থানীয়রা জানান, মিরপুর উপজেলার বুরাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের কমিটি গঠন করা নিয়ে বিদ্যালয়ে মিটিং চলছিল। কমিটির আহ্বায়ক প্রার্থী ছিলেন আমলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির নাসিম রেজা মুকুল ও স্থানীয় বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন। জামায়াতের নেতা মুকুল হোসেন প্রার্থী হওয়ার পর থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন বিএনপি নেতা নাসির ও তার লোকজন। কয়েকদিন ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। একপর্যায়ে রোববার বিকেলে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন।

আহতরা বলেন, স্কুল কমিটি নিয়ে বিএনপি নেতা নাসির আমাদের ওপর হামলা করেছে। হত্যার উদ্দেশে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নাসির ও তার লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। তারা বিএনপির রাজনীতি করে। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক সোজা উদ্দিন জোয়ার্দার বলেন, সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমলা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মুকুল হোসেনকে বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রার্থী করা হয়। তিনি সভাপতি প্রার্থী হওয়ার পর থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও স্কুলের সভাপতি প্রার্থী নাসির বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেন। এর প্রতিবাদে স্কুল মাঠে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন জামায়াতে ইসলামীর ওই প্রার্থী। এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। নাসিরের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। এতে আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

মিরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহমত আলী রব্বান বলেন, নাসির একসময় ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। এখন তিনি বিএনপির কর্মী। ঘটনাটি যেহেতু স্থানীয় দুই পক্ষের, তাই এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ও স্কুলের সভাপতি প্রার্থী নাসির উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, স্কুল কমিটি নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত অবস্থায় ঢাকায় খোকন নামে একজন মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। কাউকে আটক করা যায়নি। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।