গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তার ও ক্যালেন্ডার বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে মুকসুদপুর উপজেলার সদরের চৌরঙ্গী এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এসময় অন্তত ১৫টি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম ও নির্বাহী কমিটির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
জানা যায়, মুকসুদপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সেলিমুজ্জামান সেলিম ও সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহর সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ছিল। শুক্রবার রাতে উপজেলার স্থানীয় চৌরঙ্গী মোড়ে উপজেলা ছাত্রদল নেতা আরিয়ান হক জীম বিএনপি নেতা মেসবাহর দেওয়া শুভেচ্ছা ক্যালেন্ডার বিতরণ করছিলেন। এসময় সেলিমুজ্জামান সেলিমের কয়েকজন সমর্থক ক্যালেন্ডার বিতরণকারীকে মারধর করে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে দুই পক্ষের সহস্রাধিক কর্মী সমর্থক রাস্তায় বেরিয়ে আসে। একপর্যায়ে লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষ একে অপরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুরো এলাকাজুড়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এ ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ৩০ জন সমর্থক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসময় অন্তত ১৫টি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। মারাত্মক আহত ৯ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এঘটনার পর শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলাকায় শোডাউন করায় থমথমে অবস্থান বিরাজ করছে। সেলিমুজ্জামান সেলিমের সমর্থকরা স্থানীয় সোনালী ব্যাংক মোড়ে এবং সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহর সমর্থকরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, যারা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ছিলো না তারা এখন এলাকায় বিএনপি করতে চায়। এমনকি তারা আওয়ামী দোসরদের বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় করতে চাচ্ছে। তাদের দলে কোনো অবস্থান নেই জেনেই এই হামলা করেছে। আমি মনে করি মুকসুদপুর উপজেলা বিএনপিতে কোনো গ্রুপ নেই।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ বলেন, ক্যালেন্ডার বিতরণের সময় সেলিমের লোকজন আমার কর্মীদের মারধর করে। পরে পুলিশের উপস্থিতে হামলা চালানো হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, সেলিমুজ্জামান সেলিম আওয়ামী পরিবারের সদস্য। তিনি আওয়ামী লীগ কর্মীদের দলে সক্রিয় করতে চাচ্ছে। এছাড়া সেলিমুজ্জামান সেলিম দিদার হত্যা মামলা ও সেনাবাহিনীর ওপর হামলা এই দুটি মামলায় আসামি দিয়ে চাঁদাবাজি করছে।
মুকসুদপুর থানার ওসি মো. মোস্তফা কামাল জানান, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় মামলা করেনি। উপজেলা সদরে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।