ঢাকা ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানাতে চান ট্রাম্প

কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য বানাতে চান ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো ক্ষমতা বুঝে পাননি। তার আগেই রাক্ষসমূর্তিতে আবির্ভূত হয়ে পড়েছেন। গ্রিনলান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার হুমকি-ধমকির মধ্যে এবার বিশ্ববাসীর জন্য এক বিরাট বিস্ময় জাগিয়েছেন তিনি। পুরো কানাডাকেই যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য করার ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেছেন ট্রাম্প।

কানাডা। এত বিশাল দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বড়; বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কানাডার আয়তন। আর এত বিশাল সার্বভৌম দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য করার স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে কোনো যুদ্ধ না করায় অনেকে তার প্রশংসাও করে থাকেন। এই ট্রাম্পই এখন কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করে একটি নতুন দেশ গঠনের বাসনার কথা বলছেন।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প তার এই বাসনার কথা বিশ্ব গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন। আর তাতেই বিশ্বব্যাপী হৈ চৈ পড়ে গেছে।

বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, ওই সংবাদ সম্মেলনে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার কৌশল হিসেবে কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন, সে কথাও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, “সামরিক নয়, অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে কানাডাকে একীভূত করা হবে।”

দুই দেশের মানুষের উদ্দেশে ট্রাম্প তার অভিলাস তুলে ধরেছেন এভাবে: কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে সত্যিই দারুণ কিছু হবে। আপনি সেই কাল্পনিক রেখা থেকে মুক্তি পাবেন। আর তখন দেখবেন, দেখতে সত্যিই কেমন লাগছে। এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও অনেক ভালো হবে। কাল্পনিক রেখা বলতে ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যবর্তী সীমান্তকে বুঝিয়েছেন। এই সীমান্ত রেখা তুলে দিয়ে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জুড়ে নিতে চান তিনি। এর কারণ হিসেবে ট্রাম্প এক অজুহাত খাড়া করেছেন। তার অভিযোগ, কানাডাকে টিকিয়ে রাখতে বছর বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার গচ্চা দিতে হয়।

কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য করার জন্য ট্রাম্পের খায়েসকে নরকের সলতের সঙ্গে তুলনা করেছেন পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেছেন, “কানাডার যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনাও নেই।”

তিনি আরও বলেছেন, “আমাদের দুই দেশের শ্রমিক এবং নাগরিক সমাজ ব্যবসা এবং নিরাপত্তার দিক থেকে পরস্পরের সবচেয়ে বড় অংশীদার হয়ে উপকৃত হয়ে থাকে।”

দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, কানাডার বিরোধীদলীয় নেতা পিয়েরে পোলভিয়াকে খুবই পছন্দ করেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্পকে তিনি চরম বার্তা দিয়ে বলেছেন, “হবু প্রেসিডেন্টকে আমি সাফ জানিয়ে দিতে চাই, সবচেয়ে মূল্যবান কথা হলো কানাডার যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার একবিন্দুও সম্ভাবনা নেই।”

অবশ্য কানাডার নেতারা যা-ই বলুন না কেন, ট্রাম্প তার বাসনা পূরণের কৌশল হিসেবে অর্থনৈতিক শক্তি প্রয়োগের ঘোষণা দিয়ে ফেলেছেন। এখন দেখার বিষয়, কোথায় গিয়ে থামেন দুনিয়া কাঁপানো ট্রাম্প।

জনপ্রিয় সংবাদ

কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানাতে চান ট্রাম্প

আপডেট সময় ০৯:৩২:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো ক্ষমতা বুঝে পাননি। তার আগেই রাক্ষসমূর্তিতে আবির্ভূত হয়ে পড়েছেন। গ্রিনলান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার হুমকি-ধমকির মধ্যে এবার বিশ্ববাসীর জন্য এক বিরাট বিস্ময় জাগিয়েছেন তিনি। পুরো কানাডাকেই যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য করার ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেছেন ট্রাম্প।

কানাডা। এত বিশাল দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বড়; বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কানাডার আয়তন। আর এত বিশাল সার্বভৌম দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য করার স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে কোনো যুদ্ধ না করায় অনেকে তার প্রশংসাও করে থাকেন। এই ট্রাম্পই এখন কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করে একটি নতুন দেশ গঠনের বাসনার কথা বলছেন।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প তার এই বাসনার কথা বিশ্ব গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন। আর তাতেই বিশ্বব্যাপী হৈ চৈ পড়ে গেছে।

বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, ওই সংবাদ সম্মেলনে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার কৌশল হিসেবে কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন, সে কথাও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, “সামরিক নয়, অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে কানাডাকে একীভূত করা হবে।”

দুই দেশের মানুষের উদ্দেশে ট্রাম্প তার অভিলাস তুলে ধরেছেন এভাবে: কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে সত্যিই দারুণ কিছু হবে। আপনি সেই কাল্পনিক রেখা থেকে মুক্তি পাবেন। আর তখন দেখবেন, দেখতে সত্যিই কেমন লাগছে। এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও অনেক ভালো হবে। কাল্পনিক রেখা বলতে ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যবর্তী সীমান্তকে বুঝিয়েছেন। এই সীমান্ত রেখা তুলে দিয়ে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জুড়ে নিতে চান তিনি। এর কারণ হিসেবে ট্রাম্প এক অজুহাত খাড়া করেছেন। তার অভিযোগ, কানাডাকে টিকিয়ে রাখতে বছর বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার গচ্চা দিতে হয়।

কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য করার জন্য ট্রাম্পের খায়েসকে নরকের সলতের সঙ্গে তুলনা করেছেন পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেছেন, “কানাডার যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনাও নেই।”

তিনি আরও বলেছেন, “আমাদের দুই দেশের শ্রমিক এবং নাগরিক সমাজ ব্যবসা এবং নিরাপত্তার দিক থেকে পরস্পরের সবচেয়ে বড় অংশীদার হয়ে উপকৃত হয়ে থাকে।”

দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, কানাডার বিরোধীদলীয় নেতা পিয়েরে পোলভিয়াকে খুবই পছন্দ করেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্পকে তিনি চরম বার্তা দিয়ে বলেছেন, “হবু প্রেসিডেন্টকে আমি সাফ জানিয়ে দিতে চাই, সবচেয়ে মূল্যবান কথা হলো কানাডার যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার একবিন্দুও সম্ভাবনা নেই।”

অবশ্য কানাডার নেতারা যা-ই বলুন না কেন, ট্রাম্প তার বাসনা পূরণের কৌশল হিসেবে অর্থনৈতিক শক্তি প্রয়োগের ঘোষণা দিয়ে ফেলেছেন। এখন দেখার বিষয়, কোথায় গিয়ে থামেন দুনিয়া কাঁপানো ট্রাম্প।