বর্ডার-গাভস্কার ট্রফির উত্তেজনা মাঠে থাকলেও, মাঠের বাইরের ইস্যু নিয়েও আলোচনা চলছে। সিডনি টেস্টের আগে রোহিত শর্মার সরে যাওয়া নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। কিছু প্রশ্ন উঠেছে, পারফরম্যান্সের কারণে কি তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে, নাকি তাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে?
সাধারণত দলের নিয়মিত খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের কারণে বাদ দেওয়া হলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্রাম শব্দটি ব্যবহার করা হয়। রোহিতের ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে। টসের সময় ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জসপ্রিত বুমরাহ স্পষ্টভাবে বিশ্রাম শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন।
সিডনিতে দ্বিতীয় দিনের খেলা চলাকালীন প্রোডাকশনের মুখোমুখি নিয়ে রোহিত নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। সাফ জানিয়েছেন, নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। দলের জন্য এই ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য অফফর্মে থাকা রোহিত নিজ থেকে ম্যাচটি না খেলার সিদ্ধান্ত নেন।
তার এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আরেকটি প্রশ্নও উঠছে, টেস্ট ক্রিকেটে নিজের শেষটা কি দেখে ফেললেন রোহিত? উত্তরটা সাফ পরিষ্কার, ‘‘আমি কেবল এই টেস্ট থেকে সরে দাঁড়িয়েছি, অবসর নেইনি।
তার ভাষ্য, ‘‘রান করতে পারছিলাম না। ব্যর্থ হলে তো মানতেই হবে। তাই দলের স্বার্থে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অবসর নেইনি। শুধু এই ম্যাচটা না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রান করতে পারছিলাম না। আমাদের অনেক ব্যাটারই ভাল ফর্মে নেই। ম্যাচে প্রভাব পড়ছিল। অধিনায়ক হিসাবে দলের কথাই আগে ভাবি। কী করলে দলের লাভ ভাবি। সেই ভাবনা থেকেই সরে দাঁড়িয়েছি। এটা দলগত খেলা। ব্যক্তিগত খেলা নয়। আমি নিজেই কোচ, নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোথাও যাচ্ছি না। দলের সঙ্গেই আছি।’’
সর্বশেষ ৬ ইনিংসে মাত্র ৬৫ রান করা রোহিতের ফর্ম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাই হয়েছে কয়েক দিন। অধিনায়ক বলেই তাকে বাদ দেওয়া যাচ্ছিল না—এমনও বলেছিলেন কেউ কেউ। নিজেকে সরিয়ে রাস্তাটা রোহিত পরিষ্কার করে দেন। তবে তার সামনের পরিকল্পনা কী সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
রোহিত খোলাসা করে বলেছেন, ‘‘যারা কলম নিয়ে, ল্যাপটপ নিয়ে বসে রয়েছেন, তারা কী লিখলেন, তাতে আমাদের জীবন বদলে যাবে না। তারা ঠিক করবেন না আমরা খেলব কিনা, অধিনায়কত্ব করব কিনা। আমি পরিণত। দুই ছেলের বাবা। তাই দলের স্বার্থে আমার যেটা সঠিক মনে হয়েছে, সেটাই করেছি। কেননা দিনের শেষে দলকে ম্যাচ জেতানোটাই আসল কথা। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নয়।’’
ছয় মাস আগে যে ভাবনা নিয়ে নেতৃত্ব দিতাম, এখনও সে ভাবেই দিই। সিদ্ধান্তগুলো কাজে লাগলে ভালো মনে হয়। কাজে না এলে, সমালোচনা হয়। তখন লোকে বলে, এ কী করছে! দেখুন আমরা ভারতে থাকি। ১৪০ কোটি মানুষ আমাদের বিচার করে। তারা মতামত দিতেই পারেন। কিন্তু মাঠে নেমে আমাদের পারফর্ম করতে হয়। সিদ্ধান্ত নিতে হয়। একই রকম মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামি সবসময়। অধিনায়ক হিসাবে দলে স্বার্থকে আগে রাখি। যেটা ভাবি, সেটাই বলি, সেটাই করি। অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি।’’ – যোগ করেন রোহিত।