অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নিজ নিজ জায়গায় ফিরে যান। জনগণের আমানতকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ামত ভাববেন না।”
তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পরে দফায় দফায় যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা আমানতের খেয়ানত করেছে। কম-বেশি সবাই এ জাতিকে কষ্ট দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে গত ১৫ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা।”
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে নবাব সিরাজ-উদ-দ্দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে নাটোর জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুর রহমান বলেন, “এতো মানুষ জীবন দিয়েছে কেন? কারণ তারা চেয়েছেন বৈষম্যহীন সমাজ। শিশু থেকে শুরু করে ৮০ বছরের বৃদ্ধরা জুলাই আন্দোলনে নেমেছিলেন। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছিলেন।”
আওয়ামী লীগ বিভিন্ন দলের দেশপ্রেমিক নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। নির্বাচন তাদের জন্য, যারা দেশের মাটিকে আমানত মনে করে। আমরা চাই অতিদ্রুত সংস্কার করে দেশে একটি নির্বাচন হোক। আশা করি তারা (আন্তর্বর্তীকালীন সরকার) সেই দিকেই যাবে” বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, “যারা বাংলাদেশে অকাম-কুমাম করেছে, তারাই মানুষকে চোর বলত। যারা মানুষের সম্পদ, ইজ্জতের ওপর হাত দিচ্ছে না তাদের মানুষ গ্রহণ করবে। পট পরিবর্তনের পর নেতাকর্মীদের বলেছি, সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। আলহামদুলিল্লাহ, সবাই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। আন্দোলনে হতাহতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা যুবকদের হাতকে দেশ গড়ার হাতে পরিণত করব।”
জামায়াতের আমির বলেন, আমরা বিদেশি বন্ধু চাই, প্রভু চাই না। আমরা পিন্ডির হাত থেকে মুক্ত হয়েছি, অন্য কারো হাতে যাওয়ার জন্য নয়। কারো লাল চোখ আমরা দেখতে চাই না। জামায়াত ইসলাম বৈষম্যহীন মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা বিভেদ নয়, ঐক্য চাই। এ দেশের হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সবাই গর্বিত নাগরিক।
নাটোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক ড. মীর নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, মোবারক হোসেন প্রমুখ।