ঢাকা ০৪:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo তাহাজ্জুদের পর থেকেই মিথ্যা বলা শুরু করতো শেখ হাসিনা: প্রেস সচিব Logo আগের সরকার সীমান্তে ছাড় দিলেও, এখন ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo শপথের আগে ওয়াশিংটনে হাজার হাজার মানুষের ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভ Logo সাকিবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি Logo ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু সোমবার,রাজনীতির মধ্যে ঢুকতে চায় না ইসি Logo স্পিকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চেয়েছিলেন হাসিনা Logo জাবিতে মহিলা হলে বহিরাগত যুবক আটক Logo শীতে কাপছে পঞ্চগড়, একদিনে ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমে ৭.৯ ডিগ্রিতে নামল Logo একইস্থানে বিএনপির দু‘পক্ষের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ৫ Logo থানার ভেতরে পুলিশের ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল

জয়ের দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে যা জানালো ‍যুক্তরাষ্ট্র

স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সে জয়ের দুর্নীতি, টাকা পাচার প্রসঙ্গ
জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি বিবেচনায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিবে যুক্তরাষ্ট্র: রিচার্ড নেফিউ
দুর্নীতি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিভিন্ন রকমের হাতিয়ার রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তার প্রয়োজন অনুসারে সে সকল হাতিয়ার ব্যবহার করবে।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন প্রেস সেন্টারে ‘গ্লোবাল ফাইট অ্যাগেইনস্ট করাপশন’ শীর্ষক এক বিশেষ মিডিয়া রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সে বাংলাদেশে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি এবং বিদেশে টাকা পাচার প্রসঙ্গে করা প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ।
নেফিউ বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দুর্নীতির ঝুঁকি মোকাবিলায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার হাতিয়ার আমাদের হাতে রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ এবং জাতীয় কৌশল নির্ধারণ–এই দুই সময়েই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, দুর্নীতি প্রতিরোধের বিষয়টি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অগ্রাধিকার। তাই জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিবে যুক্তরাষ্ট্র এবং লক্ষেই আমাদের সকল চেষ্টা অব্যাহত।
গোলটেবিলে যোগ দেয়া বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “সম্প্রতি আপনি বাংলাদেশ সফর করেছেন। দুর্নীতি যেমন একটি বড় চ্যালেঞ্জ, তেমনি বাংলাদেশে গণতন্ত্রও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বর্তমান সরকার দেড় দশকেরও বেশী সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। এই সময়ে দেশ থেকে প্রায় ৬২ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন রিপোর্টে উঠে এসেছে। এবিষয়ে আপনারা কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন জানতে চাচ্ছিলাম? আপনি জানেন যে, সর্বস্তরে দুর্নীতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধেও অবৈধ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। আর এ দুর্নীতি থেকে নিজেকে বাঁচাতে কূটনৈতিক সুরক্ষাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে জানা যায়।
সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে যখন কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে এবং কূটনৈতিক সুরক্ষাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে– সেক্ষেত্রে আপনারা কীভাবে পদক্ষেপ নেন? আপনি কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছেন সে ব্যাপারে কী আমাদের কোনো ধারণা দিবেন? সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন সফরকালে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয় কিংবা তার ছেলের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তাহলে তাদের অন্য দেশে যাবার সুযোগ উন্মুক্ত রয়েছে। এবিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?”
জবাবে নেফিউ বলেন, “এটার জবাবে অনেক কথাই বলতে হয়। প্রতিটি দেশ দুর্নীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেটা মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারকে আমরা সহায়তা দিয়ে থাকি। আপনি বিদেশে টাকা পাচার নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে আমরা যেভাবে সহযোগিতা প্রদান করি তার কিছু হলো এরকম–আর্থিক স্বচ্ছতার বিষয়টি শক্তিশালী করা, আইন মেনে চিন্তা ও কাজের মাধ্যমে দুইভাবেই সহযোগিতা করা হয় এবং তদন্ত ও একই জাতীয় কাজের সময় কারিগরি সহায়তা প্রদান করা।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তা মোকাবিলায় আমরা কীভাবে সহযোগিতা করতে পারি তা নিয়ে তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা হয়। দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সক্রিয় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে।”
নেফিউ আরও বলেন, “আপনি সুনির্দিষ্ট যে বিষয়ে কথা বলেছেন আমি ঠিক সেই সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কথা বলতে যাচ্ছিনা। আমি যেটা বলবো, তা হলো দুর্নীতি মোকাবিলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিভিন্ন রকমের হাতিয়ার রয়েছে। আমরা যেটা অগ্রাধিকার দিতে পছন্দ করি সেটা হলে দুর্নীতি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করা, তদন্ত এবং এই জাতীয় বিষয়গুলোতে তাদেরকে সহযোগিতা করা। যখন প্রয়োজন হবে তখন আমরা সেই হাতিয়ার ব্যবহার করবো। কিছু ক্ষেত্রে, যেখানে আমরা দেখি যে সেখানকার দুর্নীতি আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে সেক্ষেত্রে জবাবদিহিতায় নিয়ে আসার জন্য হাতিয়ার আমাদের হাতে রয়েছে।”
তিনি বলেন, “প্রকৃতপক্ষে যেটা বলতে চাই তা হল– কিছু কিছু জায়গায় দুর্নীতি যখন সংকটের ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় এবং এ বিষয়টিতে আমরা নিশ্চিত হতে পারি ঠিক সেই ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আইন আমাদেরকে এইসব হাতিয়ার ব্যবহারের সুযোগ দেয়। যেহেতু আমরা দুর্নীতির চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে কাজ করছি তাই আমাদের জানার সুযোগ হয়েছে কীভাবে বিভিন্ন পন্থায় আমরা তা মোকাবিলা করতে পারি।”
নেফিউ বলেন, “দুর্নীতি মোকাবিলার এক নম্বর হাতিয়ার হল তা প্রতিরোধ করা। কিন্তু জবাবদিহিতার গুরুত্বপূর্ণ যেসকল কার্যপদ্ধতি রয়েছে এবং ইউনাইটেড ন্যাশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট করাপশন এবিষয়গুলো মেনে চলতে উৎসাহিত করলেও আমরা এগুলো নিয়ে ভীত নই। দায়িত্ব নেবার সময় এবং জাতীয় কৌশল নির্ধারণ–এই দুই সময়েই প্রেসিডেন্ট এ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, দুর্নীতি প্রতিরোধের বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অগ্রাধিকার। আমরা মনে করি, আমাদের হাতে যতগুলো হাতিয়ার রয়েছে সেগুলোর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা এই নীতিকে বাস্তবায়ন করতে পারবো। আমরা এভাবেই কাজ করে যাবো।”
সম্পূরক এক প্রশ্নে এই প্রতিবেদক জানতে চান, “আমি স্পস্ট করেই বলি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি তার ছেলের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে, করবে। এটা তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন। তার ছেলের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা কিংবা এধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি কী আপনি খোলাসা করতে চান?”
জবাবে নেফিউ বলেন, “এই বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে আমার বলার সুযোগ নেই।”
নেফিউ যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতি এবং বৈদেশিক সহায়তায় দুর্নীতি মোকাবেলায় কাজ করে থাকেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন তাকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের গ্লোবাল অ্যান্টি-করাপশন কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিযুক্ত করেন। রিচার্ড নেফিউ সরাসরি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রিপোর্ট করেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরে যোগ দেয়ার আগে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈশ্বিক জ্বালানি নীতি বিষয়ক সেন্টারে জ্যেষ্ঠ গবেষক হিসেবে কাজ করেন রিচার্ড নেফিউ। তার আগে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের উপ-বিশেষ দূত, পররাষ্ট্র দপ্তরে নিষেধাজ্ঞা নীতিবিষয়ক প্রধান উপ-সমন্বয়ক এবং জাতীয় নিরাপত্তায় ইরানবিষয়ক পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এফএইচ/
জনপ্রিয় সংবাদ

তাহাজ্জুদের পর থেকেই মিথ্যা বলা শুরু করতো শেখ হাসিনা: প্রেস সচিব

জয়ের দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে যা জানালো ‍যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় ০২:৪৭:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ নভেম্বর ২০২৩
স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সে জয়ের দুর্নীতি, টাকা পাচার প্রসঙ্গ
জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি বিবেচনায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিবে যুক্তরাষ্ট্র: রিচার্ড নেফিউ
দুর্নীতি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিভিন্ন রকমের হাতিয়ার রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তার প্রয়োজন অনুসারে সে সকল হাতিয়ার ব্যবহার করবে।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন প্রেস সেন্টারে ‘গ্লোবাল ফাইট অ্যাগেইনস্ট করাপশন’ শীর্ষক এক বিশেষ মিডিয়া রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সে বাংলাদেশে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি এবং বিদেশে টাকা পাচার প্রসঙ্গে করা প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ।
নেফিউ বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দুর্নীতির ঝুঁকি মোকাবিলায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার হাতিয়ার আমাদের হাতে রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ এবং জাতীয় কৌশল নির্ধারণ–এই দুই সময়েই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, দুর্নীতি প্রতিরোধের বিষয়টি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অগ্রাধিকার। তাই জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকি মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিবে যুক্তরাষ্ট্র এবং লক্ষেই আমাদের সকল চেষ্টা অব্যাহত।
গোলটেবিলে যোগ দেয়া বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “সম্প্রতি আপনি বাংলাদেশ সফর করেছেন। দুর্নীতি যেমন একটি বড় চ্যালেঞ্জ, তেমনি বাংলাদেশে গণতন্ত্রও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বর্তমান সরকার দেড় দশকেরও বেশী সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। এই সময়ে দেশ থেকে প্রায় ৬২ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন রিপোর্টে উঠে এসেছে। এবিষয়ে আপনারা কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন জানতে চাচ্ছিলাম? আপনি জানেন যে, সর্বস্তরে দুর্নীতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধেও অবৈধ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। আর এ দুর্নীতি থেকে নিজেকে বাঁচাতে কূটনৈতিক সুরক্ষাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে জানা যায়।
সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে যখন কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে এবং কূটনৈতিক সুরক্ষাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে– সেক্ষেত্রে আপনারা কীভাবে পদক্ষেপ নেন? আপনি কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছেন সে ব্যাপারে কী আমাদের কোনো ধারণা দিবেন? সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন সফরকালে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয় কিংবা তার ছেলের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তাহলে তাদের অন্য দেশে যাবার সুযোগ উন্মুক্ত রয়েছে। এবিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?”
জবাবে নেফিউ বলেন, “এটার জবাবে অনেক কথাই বলতে হয়। প্রতিটি দেশ দুর্নীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেটা মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারকে আমরা সহায়তা দিয়ে থাকি। আপনি বিদেশে টাকা পাচার নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে আমরা যেভাবে সহযোগিতা প্রদান করি তার কিছু হলো এরকম–আর্থিক স্বচ্ছতার বিষয়টি শক্তিশালী করা, আইন মেনে চিন্তা ও কাজের মাধ্যমে দুইভাবেই সহযোগিতা করা হয় এবং তদন্ত ও একই জাতীয় কাজের সময় কারিগরি সহায়তা প্রদান করা।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তা মোকাবিলায় আমরা কীভাবে সহযোগিতা করতে পারি তা নিয়ে তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা হয়। দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সক্রিয় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে।”
নেফিউ আরও বলেন, “আপনি সুনির্দিষ্ট যে বিষয়ে কথা বলেছেন আমি ঠিক সেই সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কথা বলতে যাচ্ছিনা। আমি যেটা বলবো, তা হলো দুর্নীতি মোকাবিলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিভিন্ন রকমের হাতিয়ার রয়েছে। আমরা যেটা অগ্রাধিকার দিতে পছন্দ করি সেটা হলে দুর্নীতি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করা, তদন্ত এবং এই জাতীয় বিষয়গুলোতে তাদেরকে সহযোগিতা করা। যখন প্রয়োজন হবে তখন আমরা সেই হাতিয়ার ব্যবহার করবো। কিছু ক্ষেত্রে, যেখানে আমরা দেখি যে সেখানকার দুর্নীতি আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে সেক্ষেত্রে জবাবদিহিতায় নিয়ে আসার জন্য হাতিয়ার আমাদের হাতে রয়েছে।”
তিনি বলেন, “প্রকৃতপক্ষে যেটা বলতে চাই তা হল– কিছু কিছু জায়গায় দুর্নীতি যখন সংকটের ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় এবং এ বিষয়টিতে আমরা নিশ্চিত হতে পারি ঠিক সেই ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আইন আমাদেরকে এইসব হাতিয়ার ব্যবহারের সুযোগ দেয়। যেহেতু আমরা দুর্নীতির চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে কাজ করছি তাই আমাদের জানার সুযোগ হয়েছে কীভাবে বিভিন্ন পন্থায় আমরা তা মোকাবিলা করতে পারি।”
নেফিউ বলেন, “দুর্নীতি মোকাবিলার এক নম্বর হাতিয়ার হল তা প্রতিরোধ করা। কিন্তু জবাবদিহিতার গুরুত্বপূর্ণ যেসকল কার্যপদ্ধতি রয়েছে এবং ইউনাইটেড ন্যাশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট করাপশন এবিষয়গুলো মেনে চলতে উৎসাহিত করলেও আমরা এগুলো নিয়ে ভীত নই। দায়িত্ব নেবার সময় এবং জাতীয় কৌশল নির্ধারণ–এই দুই সময়েই প্রেসিডেন্ট এ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, দুর্নীতি প্রতিরোধের বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অগ্রাধিকার। আমরা মনে করি, আমাদের হাতে যতগুলো হাতিয়ার রয়েছে সেগুলোর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা এই নীতিকে বাস্তবায়ন করতে পারবো। আমরা এভাবেই কাজ করে যাবো।”
সম্পূরক এক প্রশ্নে এই প্রতিবেদক জানতে চান, “আমি স্পস্ট করেই বলি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি তার ছেলের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে, করবে। এটা তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন। তার ছেলের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা কিংবা এধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি কী আপনি খোলাসা করতে চান?”
জবাবে নেফিউ বলেন, “এই বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে আমার বলার সুযোগ নেই।”
নেফিউ যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতি এবং বৈদেশিক সহায়তায় দুর্নীতি মোকাবেলায় কাজ করে থাকেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন তাকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের গ্লোবাল অ্যান্টি-করাপশন কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিযুক্ত করেন। রিচার্ড নেফিউ সরাসরি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রিপোর্ট করেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরে যোগ দেয়ার আগে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈশ্বিক জ্বালানি নীতি বিষয়ক সেন্টারে জ্যেষ্ঠ গবেষক হিসেবে কাজ করেন রিচার্ড নেফিউ। তার আগে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের উপ-বিশেষ দূত, পররাষ্ট্র দপ্তরে নিষেধাজ্ঞা নীতিবিষয়ক প্রধান উপ-সমন্বয়ক এবং জাতীয় নিরাপত্তায় ইরানবিষয়ক পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এফএইচ/