বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, “বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। গত পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৩ বিলিয়ন ডলার। বলেছিলাম, ১০টি ব্যাংক দেউলিয়ার পথে রয়েছে, কিন্তু পরবর্তীতে ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়িয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ইসলামী ব্যাংকের ৪০০তম শাখা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, “যারা অর্থ নিয়ে পালিয়েছে, তাদের সেই অর্থ কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়, সে চেষ্টা করা হচ্ছে। চেষ্টার শেষ নেই। দেরিতে হলেও এটার সাফল্য আসবে। ব্যাংকের ওপর, সরকারের ওপর আস্থা রাখবেন। এখানে দুর্নীতি নেই, উচ্চপর্যায়েও দুর্নীতি নেই এবং থাকবে না। এখানে প্রত্যেকটা ব্যক্তি সৎ এবং তারা কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের রিজার্ভ কমবে না, বরং বাড়বে। ২৬ থেকে ২৮ শতাংশ রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি দেখছি। এটা কিন্তু অল্প টাকা নয়। এটার কারণ—অর্থ পাচার কমে গেছে অর্থাৎ সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বিদেশে পাচার কমে গেছে। ফলে, অর্থটা বাইরে ডাইভার্ট না হয়ে বাংলাদেশে চলে আসছে। ব্যাংক কোনো পারিবারিক প্রতিষ্ঠান নয়। ব্যাংক হচ্ছে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমানতকারী প্রতিষ্ঠান। ইসলামী ব্যাংককে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি আগাতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “ব্যাংকিং খাতের ধ্বস নিয়ে অনেকেই চিন্তিত ছিলেন। সেখান থেকে এখন ব্যাংকগুলো যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটাই বড় বিষয়। এখন আর এগুলো পড়ে যাবে না। এটিকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে আগাতে পারবে না। রাষ্ট্রের অর্থনীতি পুনর্গঠন করতে হলে ব্যাংকিং খাতকে পুনর্গঠন করতে হবে। আমাদের অর্থনীতিতে কতগুলো সংকট ছিল। বৈশ্বিক বাণিজ্যে আমাদের বিশাল ঘাটতি ছিল। রিজার্ভের পতন হচ্ছিল। এ জায়গা থেকে আমরা অনেকটুকু বের হয়ে এসেছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ আর কমছে না। গত আগস্ট মাসের পরে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ডলার বিক্রি করেনি। কাজেই আমাদের রিজার্ভ কমবে না, বাড়বেই। রেমিট্যান্সের বিরাট প্রবাহ পরিবর্তন হয়েছে। গত পাঁচ মাসে আমাদের ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ মাসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ড. এম মাসুদ রহমান, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, ইনডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্ট মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা।