ঢাকা ০১:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাহাজে ৭ খুন: ছেলে হত্যার শোক সইতে না পেরে মারা গেলেন বাবা

জাহাজে ৭ খুন: ছেলে হত্যার শোক সইতে না পেরে মারা গেলেন বাবা

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার সজীবুল ইসলামের অকালমৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মারা গেছেন তার বাবা দাউদ মোল্যা।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেস্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে দাউদ মোল্যা মারা গেছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। ছেলের পর বাবার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সজিবুলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন দাউদ মোল্লা। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন স্বজনেরা। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর বাড়িতেই তার মৃত্যু হয়।

৫ বছর জাহাজের বিভিন্ন পদে চাকরি করেছেন সজিবুল ইসলাম। সম্প্রতি পদোন্নতি পেতে পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষার ফলের অপেক্ষায় ছিলেন। মাঝের এই সময় অলস ঘরে বসে না থেকে সপ্তাহ দুয়েক আগে এমভি আল-বাখেরা জাহাজে গ্রিজার পদে চাকরি নেন। ওই জাহাজেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি।

সজীবুল ইসলামের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

সজিবুলের মামা আহাদ সর্দার দাউদ মোল্যার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘আজ সজিবুলের বিয়ের পাঁচ মাস পূর্ণ হবে। পদোন্নতি হলে বেতন বাড়বে, বড় জাহাজে চাকরি হবে—এ কারণে পরীক্ষা দিয়েছিল। দুই সপ্তাহ আগে বাড়িতে ধান কাটার কাজ করে গেছে। যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিল, রেজাল্টের অপেক্ষায় ঘরে বসে না থেকে ছোট একটা জাহাজে কাজ করে আসি, তাতে কিছু রোজগার হবে। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল!’’

জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের আরেকজন হলেন একই ইউনিয়নের চর যশোবন্তপুর গ্রামের আনিচুর রহমানের ছেলে মো. মাজিদুল ইসলাম (১৬)। তিনি স্থানীয় ঝামা বরকাতুল উলুম ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় জাহাজে কাজ নিয়েছিলেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে মহম্মদপুর ও নড়াইল সীমান্তবর্তী কয়েকটি ইউনিয়নের অনেক মানুষ জাহাজে চাকরি করেন। এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে এমভি সুলতান সানজানা নামের লাইটার জাহাজডুবির ঘটনায় মহম্মদপুর পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের চারজন নিহত হন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সিরাজগঞ্জে অডিটোরিয়ামের ভেতরে পড়ে ছিল মরদেহ

জাহাজে ৭ খুন: ছেলে হত্যার শোক সইতে না পেরে মারা গেলেন বাবা

আপডেট সময় ০৮:২২:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার সজীবুল ইসলামের অকালমৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মারা গেছেন তার বাবা দাউদ মোল্যা।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেস্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে দাউদ মোল্যা মারা গেছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। ছেলের পর বাবার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সজিবুলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন দাউদ মোল্লা। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন স্বজনেরা। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর বাড়িতেই তার মৃত্যু হয়।

৫ বছর জাহাজের বিভিন্ন পদে চাকরি করেছেন সজিবুল ইসলাম। সম্প্রতি পদোন্নতি পেতে পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষার ফলের অপেক্ষায় ছিলেন। মাঝের এই সময় অলস ঘরে বসে না থেকে সপ্তাহ দুয়েক আগে এমভি আল-বাখেরা জাহাজে গ্রিজার পদে চাকরি নেন। ওই জাহাজেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি।

সজীবুল ইসলামের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

সজিবুলের মামা আহাদ সর্দার দাউদ মোল্যার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘আজ সজিবুলের বিয়ের পাঁচ মাস পূর্ণ হবে। পদোন্নতি হলে বেতন বাড়বে, বড় জাহাজে চাকরি হবে—এ কারণে পরীক্ষা দিয়েছিল। দুই সপ্তাহ আগে বাড়িতে ধান কাটার কাজ করে গেছে। যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিল, রেজাল্টের অপেক্ষায় ঘরে বসে না থেকে ছোট একটা জাহাজে কাজ করে আসি, তাতে কিছু রোজগার হবে। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল!’’

জাহাজে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের আরেকজন হলেন একই ইউনিয়নের চর যশোবন্তপুর গ্রামের আনিচুর রহমানের ছেলে মো. মাজিদুল ইসলাম (১৬)। তিনি স্থানীয় ঝামা বরকাতুল উলুম ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় জাহাজে কাজ নিয়েছিলেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে মহম্মদপুর ও নড়াইল সীমান্তবর্তী কয়েকটি ইউনিয়নের অনেক মানুষ জাহাজে চাকরি করেন। এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে এমভি সুলতান সানজানা নামের লাইটার জাহাজডুবির ঘটনায় মহম্মদপুর পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের চারজন নিহত হন।