চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে হত্যাকাণ্ড ,সড়ক দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনায় ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একদিনে এতো দুর্ঘটনা ও হত্যায় মরদেহ উদ্ধার হওয়া নিয়ে জেলাজুড়ে যেমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে, তেমনি শোকাহত জেলার বাসিন্দারা।
গতকাল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
ঘটনার শুরু জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায়। বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের হাজী বাড়িতে বসবাস করতেন সুফিয়া বেগম। নিঃসন্তান সুফিয়া গত ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন এ বাড়ি থেকে। পরে পরিবারের লোকজন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুজি করে নিখোঁজের সংবাদে স্থানীয়ভাবে মাইকিংও করে।
নিখোঁজের ৮দিন পর সোমবার সকালে বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের মদনেরগাঁও গ্রামের চৌধুরী বাড়ির পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ আলম।
এই দিন দুপুরে জেলায় ঘটে লোমহর্ষক আরেক ঘটনা। চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় গুরুত্বর আহত অবস্থায় ১ জনকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সোমবার বেলা ১টার পর মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়। পরে জাহাজে গিয়ে নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা নিহত ও আহতদের উদ্ধার করেন। নিহতরা হলেন- মাষ্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল। তারা সবাই নড়াইল জেলার বাসিন্দা।
চাঁদপুরে নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, চাঁদপুর নৌ-সীমানায় আসলে ডাকাত দল জাহাজ ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে পৃথক স্টাফ রুমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে হত্যা করা হয। অথবা পারিবারিক বা ব্যবসায়িক কোন শত্রুতা থাকতে পারে। ঘটনাটি কখন এবং কোথায় ঘটেছে তা নিশ্চিত করে এখনো জানাতে পারেনি পুলিশ।
একইদিন বিকেলে জেলার শাহরাস্তি উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত হয় মেহেদী হাসান (১৪) নামের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। তাকে বাঁচাতে গিয়ে দুই বন্ধু নেওয়াজ (১৪) ও রবিন (১৩) আহত হয়। সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মাইজের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) লোকমান হোসেন লিটন।
এরপর , জেলার হাজীগঞ্জে বোগদাদ বাসের ধাক্কায় সড়ক থেকে ছিটকে পড়ে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী আহমেদ জুলহাস খাঁন (২৩) নামে এক যুবকের। সোমবার রাত ৮টায় উপজেলার বাকিলা বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত জুলহাস জেলার সদর উপজেলার কুমড়ারডুগী খাঁন বাড়ির বাসিন্দা।
নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক মাহবুব আলম জানান, দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম হয় জুলহাস। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়।
সবশেষ রাতে ঢাকা থেকে চাঁদপুর আসার পথে জৈনপুর আরেক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন আরও একজন। এখন পর্যন্ত তার নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।