১৯ থেকে ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ শীতকালীন বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ে পিএইচডি গবেষক ও আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, একই সময়ে দেশের স্থলভাগের ওপর একটি শক্তিশালী পশ্চিমা লঘুচাপ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের ওপর একটি লঘুচাপের মিলিত প্রবাহের কারণে খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে রেকর্ড ব্রেকিং পরিমাণে বৃষ্টি হতে পারে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলীয় জেলাগুলোতেও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃষ্টি শুরুর সম্ভাব্য সময় ১৯ ডিসেম্বর দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে এবং বৃষ্টি শেষের সম্ভাব্য সময় ২২ ডিসেম্বর দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে।
সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে, যেখানে ৭৫ থেকে ১৫০ মিলিমিটার এবং খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে ১০০ থেকে ১৭৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হতে পারে রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে। অপেক্ষাকৃত হালকা বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে রংপুর বিভাগে। বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুরসহ খুলনা, বরিশাল ও ঢাকার বেশ কয়েকটি জেলা।
মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, ভারি বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে যাওয়ার আশঙ্কায় আলু চাষিদের ব্যাপক ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ১৯ থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত আলুর জমিতে কৃত্রিম সেচ না দেওয়ার জন্য। পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের জমি থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও ইটভাটা মালিকদের ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে কাঁচা ইট ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে বৃষ্টির কারণে বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো যায়।
আগামী কয়েক দিনের সম্ভাব্য বৃষ্টিপাত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষি খাত ও দৈনন্দিন কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, পূর্ব প্রস্তুতির মাধ্যমে সম্ভাব্য ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।