ঢাকা ০৯:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কুষ্টিয়া মডেল থানার কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি Logo আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না: সালাহউদ্দিন আহমদ Logo ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে শেখ হাসিনার বিচার Logo প্রবাসীদের জন্য হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে: আসিফ নজরুল Logo গরুর যে বুদ্ধি আছে তা অনেক মানুষের নেই: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা Logo টাঙ্গাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ছাত্রশিবিরের হেল্প ডেস্ক Logo সিরাজগঞ্জে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের পাশে ছাত্রশিবির Logo ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে শেখ হাসিনার বিচার কার্যক্রম Logo হাতিয়ার মেঘনায় ৩৯ যাত্রী নিয়ে ট্রলার ডুবি, ১৯ জন নিখোঁজ Logo রংপুরে ছাত্রশিবিরের হেল্প ডেস্কে হামলা, আটক ১
বিবিসিকে ফিলিস্তিনি আলোচক

গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে

গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে

দীর্ঘদিন আলোচনায় অচলাবস্থার পর গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাস একটি সমঝোতার দিকে এগোতে পারে বলে নতুন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এই পরোক্ষ আলোচনায় জড়িত একজন শীর্ষ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, আলোচনা এখন নির্ধারণী ও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজও বলেছেন, একটি চুক্তি এখন আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে কাছাকাছি।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার মতে, আলোচনায় একটি তিন ধাপের পরিকল্পনা উঠে এসেছে। এতে প্রথম ৪৫ দিনের মধ্যে গাজায় আটকে থাকা বেসামরিক ও নারী সেনা জিম্মিদের মুক্তি এবং ইসরায়েলি বাহিনীর শহরের কেন্দ্রস্থল, উপকূলীয় সড়ক ও মিসর সীমান্তসংলগ্ন এলাকা থেকে প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। এই ধাপে গাজায় বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া থাকবে।

দ্বিতীয় ধাপে বাকি জিম্মিদের মুক্তি এবং বাহিনী প্রত্যাহার নিশ্চিত করার কথা রয়েছে। তৃতীয় ধাপে যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ হবে। ইসরায়েলের হিসাবে গাজায় আটক ৯৬ জন জিম্মির মধ্যে ৬২ জন এখনও জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা এখন আরও বাস্তবসম্মত মনে হচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ সোমবার ইসরায়েলি সংসদের বৈদেশিক কমিটিকে জানিয়েছেন, আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় আমরা এখন জিম্মিদের নিয়ে একটি চুক্তির কাছাকাছি।

তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, হামাসের সামরিক ও শাসনক্ষমতা ধ্বংসের পর গাজায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ থাকবে। তার মতে, ৭ অক্টোবরের আগের পরিস্থিতিতে আমরা আর ফিরে যাব না। আমরা গাজা থেকে ইসরায়েলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বরদাশত করব না।

গাজা শাসনকারী হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে একটি নজিরবিহীন আক্রমণ চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫৩ জন অপহৃত হন। আলোচনার মাধ্যমে ও সামরিক অভিযানে এর মধ্যে ১০০ জনের বেশি জিম্মি মুক্তি পেয়েছেন।

ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছে, গত ৭ ডিসেম্বর মধ্যস্থতাকারীদের অনুরোধে ইসরায়েল গাজায় ছয় ঘণ্টার জন্য বিমান ও ড্রোন চলাচল বন্ধ রাখে। এই সময় হামাস জিম্মিদের তথ্য সংগ্রহ করে। কাতারপন্থি সংবাদমাধ্যম আল-আরাবি আল-জাদিদ জানিয়েছে, হামাস অসুস্থ ও বৃদ্ধ ইসরায়েলি জিম্মিদের একটি তালিকা মিসরীয় গোয়েন্দাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এতে মার্কিন জিম্মিদের নামও রয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয় এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় নতুন গতি যোগ করেছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন করা উচিত, না হলে পরিস্থিতি ভালো হবে না।

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল হামাসের শাসন ও সামরিক ক্ষমতা ধ্বংসের অঙ্গীকার করেছে। হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থা নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। গাজার ২৩ লাখ মানুষের বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত। অঞ্চলটিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি সাহায্য পৌঁছাতে বাধার মুখে লাখ লাখ মানুষ এখন চরম খাদ্য সংকটে ভুগছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

কুষ্টিয়া মডেল থানার কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি

বিবিসিকে ফিলিস্তিনি আলোচক

গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে

আপডেট সময় ০৯:২৬:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

দীর্ঘদিন আলোচনায় অচলাবস্থার পর গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাস একটি সমঝোতার দিকে এগোতে পারে বলে নতুন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এই পরোক্ষ আলোচনায় জড়িত একজন শীর্ষ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, আলোচনা এখন নির্ধারণী ও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজও বলেছেন, একটি চুক্তি এখন আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে কাছাকাছি।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার মতে, আলোচনায় একটি তিন ধাপের পরিকল্পনা উঠে এসেছে। এতে প্রথম ৪৫ দিনের মধ্যে গাজায় আটকে থাকা বেসামরিক ও নারী সেনা জিম্মিদের মুক্তি এবং ইসরায়েলি বাহিনীর শহরের কেন্দ্রস্থল, উপকূলীয় সড়ক ও মিসর সীমান্তসংলগ্ন এলাকা থেকে প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। এই ধাপে গাজায় বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া থাকবে।

দ্বিতীয় ধাপে বাকি জিম্মিদের মুক্তি এবং বাহিনী প্রত্যাহার নিশ্চিত করার কথা রয়েছে। তৃতীয় ধাপে যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ হবে। ইসরায়েলের হিসাবে গাজায় আটক ৯৬ জন জিম্মির মধ্যে ৬২ জন এখনও জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা এখন আরও বাস্তবসম্মত মনে হচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ সোমবার ইসরায়েলি সংসদের বৈদেশিক কমিটিকে জানিয়েছেন, আগের যেকোনও সময়ের তুলনায় আমরা এখন জিম্মিদের নিয়ে একটি চুক্তির কাছাকাছি।

তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, হামাসের সামরিক ও শাসনক্ষমতা ধ্বংসের পর গাজায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ থাকবে। তার মতে, ৭ অক্টোবরের আগের পরিস্থিতিতে আমরা আর ফিরে যাব না। আমরা গাজা থেকে ইসরায়েলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বরদাশত করব না।

গাজা শাসনকারী হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে একটি নজিরবিহীন আক্রমণ চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫৩ জন অপহৃত হন। আলোচনার মাধ্যমে ও সামরিক অভিযানে এর মধ্যে ১০০ জনের বেশি জিম্মি মুক্তি পেয়েছেন।

ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছে, গত ৭ ডিসেম্বর মধ্যস্থতাকারীদের অনুরোধে ইসরায়েল গাজায় ছয় ঘণ্টার জন্য বিমান ও ড্রোন চলাচল বন্ধ রাখে। এই সময় হামাস জিম্মিদের তথ্য সংগ্রহ করে। কাতারপন্থি সংবাদমাধ্যম আল-আরাবি আল-জাদিদ জানিয়েছে, হামাস অসুস্থ ও বৃদ্ধ ইসরায়েলি জিম্মিদের একটি তালিকা মিসরীয় গোয়েন্দাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এতে মার্কিন জিম্মিদের নামও রয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয় এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় নতুন গতি যোগ করেছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন করা উচিত, না হলে পরিস্থিতি ভালো হবে না।

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল হামাসের শাসন ও সামরিক ক্ষমতা ধ্বংসের অঙ্গীকার করেছে। হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থা নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। গাজার ২৩ লাখ মানুষের বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত। অঞ্চলটিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি সাহায্য পৌঁছাতে বাধার মুখে লাখ লাখ মানুষ এখন চরম খাদ্য সংকটে ভুগছেন।