ঢাকা ১২:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo অভ্যুত্থান যাদের পছন্দ হয়নি, তারা এটিকে মুছে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে: ড. ইউনূস Logo বিসিএসের আবেদন ফি হচ্ছে ২০০ টাকা Logo পাকিস্তানের কাছ থেকে ২৫ হাজার টন চিনি কিনল বাংলাদেশ Logo কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হয়ে যেতে বললেন ট্রাম্প Logo ইউটিউব দেখে অস্ত্র চালানো শিখে প্রেমিকাকে হত্যা করেন প্রেমিক Logo গাজাজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চলছেই নিহত আরও ৩৬ ফিলিস্তিনি Logo আজ জবিতে এক মঞ্চে ছাত্রদল-শিবির সভাপতিসহ থাকবেন ১২ সংগঠনের নেতা Logo প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক আজ Logo দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন পাসপোর্ট ও বিআরটিএ অফিস Logo ভারতের উচিত ‘৭৫ প্লেবুক পাল্টে বাংলাদেশের নতুন বাস্তবতা উপলব্ধি করা’-মাহফুজ আলম

দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন পাসপোর্ট ও বিআরটিএ অফিস

গত এক বছরে খানা জরিপ করে দেশের সেবা খাতের আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

খানা জরিপে পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। জরিপে সর্বোচ্চ ঘুষ লেনদেনের দিক থেকে বিচারিক সেবা, ভূমি ও ব্যাংকিং খাতের নাম প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে টিআইবির ধানমন্ডির কার্যালয়ে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০২৩’ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব প্রতিবেদন আকারে এসব তথ্য তুলে ধরেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

দেশের ১৭টি সেবা খাতের ওপর জরিপ চালিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য খাতের মধ্যে এমএফএস, ওয়াসা ও অনলাইন শপিংয়েও জরিপ চালায় সংস্থাটি।

টিআইবির প্রতিবেদনে পাসপোর্ট, বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে সবসময়ে সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির খানা জরিপে একই সঙ্গে সর্বোচ্চ পরিমাণ ঘুষ গ্রহণের দিক থেকে বিচারিক সেবা, ভূমি ও ব্যাংকিং খাতে সর্বোচ্চ গড় ঘুষ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানায়, খানা জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৪ (এপ্রিল) পর্যন্ত সেবা খাতে জাতীয় পর্যায়ে মোট ঘুষের ন্যূনতম প্রাক্কলিত পরিমাণ ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা। এই সময়ে সার্বিকভাবে দুর্নীতির শিকার ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ঘুষের শিকার ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার বা খানা।

এ ছাড়া সেবা পেতে পরিবার বা খানা প্রতি সর্বনি¤œ ৫ হাজার ৬৮০ ঘুষ দিতে হয়েছে। গড় ঘুষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বিচারিক সেবায় এই খাতে একটি সেবা পেতে গড়ে গুনতে হয়েছে ৩০ হাজার ৯৭২ টাকা, প্রতিটি ভূমি সেবার জন্য গড়ে গুনতে হয়েছে ১৭ হাজার ৪৭১ ও ব্যাংকিং খাতে ৭ হাজার ৩৬৩ টাকা। সেবা পেতে ৭০ শতাংশ ৯ শতাংশ পরিবার দুর্নীতির শিকার হয়েছে। আর ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার ঘুষের শিকার হয়েছে। সর্বোচ্চ দুর্নীতি ও ঘুষের হার পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায়।

২০২৩ সালে জাতীয়ভাবে প্রাক্কলিত ঘুষের পরিমাণ ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ ও জিডিপির ০ দশমিক ২২ শতাংশ। এই পরিমাণ অর্থ দেশের মানুষ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সেবা পেতে ঘুষ দিয়েছে। এই সময়ে ভূমি সেবা পেতে ঘুষ দিয়েছে ২ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা, বিচারিক সেবা পেতে ২ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সেবা পেতে ১ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা ও পাসপোর্টে ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা।

 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিচারিক সেবা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায় দুর্নীতি ও ঘুষের উচ্চ হার অব্যাহত, যা সাধারণ জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বড় বাধা; অন্যদিকে ভূমি সেবা, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং বিআরটিএর মতো সেবায় উচ্চ দুর্নীতি ও ঘুষ বিদ্যমান, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ সেবা প্রাপ্তির অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করছে।

প্রতিবেদনে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ও ঘুষ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বিআরটিএ, ভূমি, পাসপোর্ট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, বিচারিক প্রক্রিয়ার নাম উঠে এসেছে।

এই সময়ে বিআরটিএতে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ৮৬ শতাংশ, আর প্রতিষ্ঠানটিতে ঘুষ দিতে হয়েছে ৭১ শতাংশ সেবাগ্রহীতাকে। পাসপোর্ট সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ৮৬ শতাংশ সেবাগ্রহীতা, ঘুষ দিতে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৮ শতাংশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ, আর ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ সেবা গ্রহীতাদের ঘুষ দিতে হয়েছে। বিচারিক সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ, ঘুষের শিকার ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ। এ ছাড়া ভূমিসেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতি শিকার ৫১ শতাংশ, ঘুষ দিতে হয়েছে ৩২ দশমিক ৩ শতাংশ।

টিআইবির খানা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৭ খাতে সেবা নিতে গিয়ে গড়ে ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ দুর্নীতি শিকার হয়েছেন এবং ঘুষ দেওয়ার হার গড়ে ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ।

সরকারি স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ। স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত সেবায় এই হার ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনে ৪১ শতাংশ, গ্যাস খাতে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ সহায়তায় ৩১ দশমিক ৪ শতাংশ।

সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সেবায় দুর্নীতি শিকার ২৬ শতাংশ, বিদ্যুৎ খাতে ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ, কৃষি খাতে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ, কর ও শুল্কে ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, বিমায় ১৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং ব্যাংকিং খাতে ৯ শতাংশ।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণে কাজ করা এনজিওগুলোতে দুর্নীতির শিকার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে, যেমন মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস), ওয়াসা, এবং অনলাইন শপিংয়ে এই হার ১১ দশমিক ১ শতাংশ।

সেবা খাতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাসহ জরিপে ফলাফলের ভিত্তিতে টিআইবি সরকারের কাছে ৯ দফা সুপারিশ করেছে। সেবাগ্রহণ প্রক্রিয়া ডিজিটাইলজডসহ সরকারি কর্মকর্তা–কর্মাচারীদের আচরণ সম্পদ বিবরণী দাখিল বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ৮ বিভাগের ১৫ হাজার ৫১৫টি পরিবারের তথ্য এই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৩ মে থেকে ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট পর্যন্ত জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

অভ্যুত্থান যাদের পছন্দ হয়নি, তারা এটিকে মুছে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে: ড. ইউনূস

দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন পাসপোর্ট ও বিআরটিএ অফিস

আপডেট সময় ১০:১২:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

গত এক বছরে খানা জরিপ করে দেশের সেবা খাতের আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

খানা জরিপে পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। জরিপে সর্বোচ্চ ঘুষ লেনদেনের দিক থেকে বিচারিক সেবা, ভূমি ও ব্যাংকিং খাতের নাম প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে টিআইবির ধানমন্ডির কার্যালয়ে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০২৩’ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব প্রতিবেদন আকারে এসব তথ্য তুলে ধরেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

দেশের ১৭টি সেবা খাতের ওপর জরিপ চালিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য খাতের মধ্যে এমএফএস, ওয়াসা ও অনলাইন শপিংয়েও জরিপ চালায় সংস্থাটি।

টিআইবির প্রতিবেদনে পাসপোর্ট, বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে সবসময়ে সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির খানা জরিপে একই সঙ্গে সর্বোচ্চ পরিমাণ ঘুষ গ্রহণের দিক থেকে বিচারিক সেবা, ভূমি ও ব্যাংকিং খাতে সর্বোচ্চ গড় ঘুষ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানায়, খানা জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৪ (এপ্রিল) পর্যন্ত সেবা খাতে জাতীয় পর্যায়ে মোট ঘুষের ন্যূনতম প্রাক্কলিত পরিমাণ ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা। এই সময়ে সার্বিকভাবে দুর্নীতির শিকার ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ঘুষের শিকার ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার বা খানা।

এ ছাড়া সেবা পেতে পরিবার বা খানা প্রতি সর্বনি¤œ ৫ হাজার ৬৮০ ঘুষ দিতে হয়েছে। গড় ঘুষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বিচারিক সেবায় এই খাতে একটি সেবা পেতে গড়ে গুনতে হয়েছে ৩০ হাজার ৯৭২ টাকা, প্রতিটি ভূমি সেবার জন্য গড়ে গুনতে হয়েছে ১৭ হাজার ৪৭১ ও ব্যাংকিং খাতে ৭ হাজার ৩৬৩ টাকা। সেবা পেতে ৭০ শতাংশ ৯ শতাংশ পরিবার দুর্নীতির শিকার হয়েছে। আর ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার ঘুষের শিকার হয়েছে। সর্বোচ্চ দুর্নীতি ও ঘুষের হার পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায়।

২০২৩ সালে জাতীয়ভাবে প্রাক্কলিত ঘুষের পরিমাণ ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ ও জিডিপির ০ দশমিক ২২ শতাংশ। এই পরিমাণ অর্থ দেশের মানুষ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সেবা পেতে ঘুষ দিয়েছে। এই সময়ে ভূমি সেবা পেতে ঘুষ দিয়েছে ২ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা, বিচারিক সেবা পেতে ২ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সেবা পেতে ১ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা ও পাসপোর্টে ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা।

 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিচারিক সেবা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায় দুর্নীতি ও ঘুষের উচ্চ হার অব্যাহত, যা সাধারণ জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বড় বাধা; অন্যদিকে ভূমি সেবা, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং বিআরটিএর মতো সেবায় উচ্চ দুর্নীতি ও ঘুষ বিদ্যমান, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ সেবা প্রাপ্তির অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করছে।

প্রতিবেদনে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ও ঘুষ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বিআরটিএ, ভূমি, পাসপোর্ট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, বিচারিক প্রক্রিয়ার নাম উঠে এসেছে।

এই সময়ে বিআরটিএতে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ৮৬ শতাংশ, আর প্রতিষ্ঠানটিতে ঘুষ দিতে হয়েছে ৭১ শতাংশ সেবাগ্রহীতাকে। পাসপোর্ট সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ৮৬ শতাংশ সেবাগ্রহীতা, ঘুষ দিতে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৮ শতাংশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ, আর ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ সেবা গ্রহীতাদের ঘুষ দিতে হয়েছে। বিচারিক সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ, ঘুষের শিকার ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ। এ ছাড়া ভূমিসেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতি শিকার ৫১ শতাংশ, ঘুষ দিতে হয়েছে ৩২ দশমিক ৩ শতাংশ।

টিআইবির খানা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৭ খাতে সেবা নিতে গিয়ে গড়ে ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ দুর্নীতি শিকার হয়েছেন এবং ঘুষ দেওয়ার হার গড়ে ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ।

সরকারি স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ। স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত সেবায় এই হার ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনে ৪১ শতাংশ, গ্যাস খাতে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ সহায়তায় ৩১ দশমিক ৪ শতাংশ।

সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সেবায় দুর্নীতি শিকার ২৬ শতাংশ, বিদ্যুৎ খাতে ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ, কৃষি খাতে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ, কর ও শুল্কে ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, বিমায় ১৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং ব্যাংকিং খাতে ৯ শতাংশ।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণে কাজ করা এনজিওগুলোতে দুর্নীতির শিকার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে, যেমন মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস), ওয়াসা, এবং অনলাইন শপিংয়ে এই হার ১১ দশমিক ১ শতাংশ।

সেবা খাতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাসহ জরিপে ফলাফলের ভিত্তিতে টিআইবি সরকারের কাছে ৯ দফা সুপারিশ করেছে। সেবাগ্রহণ প্রক্রিয়া ডিজিটাইলজডসহ সরকারি কর্মকর্তা–কর্মাচারীদের আচরণ সম্পদ বিবরণী দাখিল বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ৮ বিভাগের ১৫ হাজার ৫১৫টি পরিবারের তথ্য এই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৩ মে থেকে ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট পর্যন্ত জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে।