ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশ নিয়ে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে তা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। সীমান্তবাসীরা বলছেন, এতদিন নির্বিঘ্নে থাকলেও এখন কিছুটা আতঙ্কেই রয়েছেন তারা। আর এভাবে চলতে থাকলে দুদেশের সম্পর্কে ছেদ ধরতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ওপারে ভারত, এপারে বাংলাদেশ। দু’দেশের মধ্যে সীমানা রেখা টেনেছে কাঁটা তারের বেড়া। এতো দিন ঠিকঠাকই কাটছিলো দিনকাল। কিন্তু সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচার দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে সীমান্তের বাসিন্দাদের।
সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দা আনারুল ইসলাম। এতো দিন ভয়-ডর ছাড়াই কাজ করছেন জমিতে। এখন ভর করেছে চাপা আতঙ্ক। তিনি বলেন, জিরো পয়েন্টে কাজ করি। আতঙ্ক লাগে, পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায় কিনা। ভারতের লোকজন এসে আবার মারধর করে কিনা।
এলাকার অন্য চাষিদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে বিএসএফের হুমকির শিকার তারা। এতে চাষাবাদ নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।
চাষিরা জানান, বিএসএফ বর্তমানে যেভাবে টহল দিচ্ছে তাতে তারা সবাই আতঙ্কিত। কখন আক্রমণ করে বসে এই ভয়ে। মাঝে মাঝে বিএসএফয়ের লোকজন এসে গালাগালি করে।
প্রতিবছর জামর-পাথর কালীপূজায় দুই বাংলার মানুষদের মিলনমেলা বসতো ঠাকুরগাঁওয়ের তাজিগাঁওয়ে। কিন্তু এ বছর হয়নি সেই আয়োজন। বন্ধ করা হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েনে। যদিও সম্প্রীতি ধরে রেখেই বসবাস করছেন সবাই।
লালমনিরহাটের বলাইরহাট সীমান্তেও যুগের পর যুগ হিন্দু-মুসলমান একে অন্যের সহযোদ্ধা হয়েই বাস করছেন। সাম্প্রতিক ইস্যুর প্রভাব নেই তাদের মধ্যে। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেই আছে শেরপুরে নাকুগাও সীমান্তও।
বিশ্লেষকরা বলছে, গুজব সন্ত্রাসে দুদেশের সম্পর্কে ছেদ পড়লে তার রেশ গিয়ে পড়বে সীমান্তবাসীর ওপর। ক্ষতি হবে অর্থনীতিরও।
বিশ্লেষক ব্যারিস্টার কাজী রেফাত রেজওয়ান সেতু বলেছেন, দু’দেশের স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় না থাকলে তাহলে জাতীয় ও অর্থনীতিভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে তার থেকে বড় ক্ষতি হবে স্থানীয়দের জন্য।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক ড. এম আনিসুর রহমান বলেছেন, এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে চোরাচালান, সীমান্ত হত্যা ও সীমান্তে অনেক বড় ধরণের সংঘাত সৃষ্টি হয়।
বিজিবি জানিয়েছে, সীমান্ত এখনও শান্ত। অস্বস্তিকর যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে সজাগ বাহিনীর সদস্যরা।