বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেশের সব শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কর্মজীবী, দিনমজুর সবাই এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবে এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর, বিশেষ করে মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, ভাড়া এবং অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রা ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। অনেক শিক্ষার্থী বাসা থেকে আগের তুলনায় দ্বিগুণ খরচ আনলেও মাস শেষে সংকটে পড়ছেন। তাদের আয়ের প্রধান উৎস টিউশনি থেকে আগের মতো আয় না হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই রাজাপুরে মেসে থাকা এক শিক্ষার্থী জানান, “গত চার মাস ধরে মেসে আমিষ বলতে পাঙ্গাস মাছ আর পোলট্রি মুরগির মাংস ছাড়া কিছুই খেতে পারিনি। এর বাইরে অন্য কোনো আমিষ কেনার সামর্থ্য নেই আমাদের। মাসের বেশিরভাগ দিনই একবেলা না খেয়ে খরচ বাচাতে হচ্ছে। ”
তাদের অভিযোগ, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে সাধারণ দিনমজুরদের মজুরি যেমন বেড়েছে, দোকানদারেরা তাদের পণ্যের দাম বাড়িয়ে লাভ করছেন, কিন্তু মেসের শিক্ষার্থীরা কোনো জায়গা থেকেই বাড়তি সহায়তা পাচ্ছেন না। উল্টো তাদের খরচ কেবল বাড়ছে, আর আয় স্থিরই রয়ে গেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন,”যুবক বয়সে শিক্ষার্থীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় আপাতদৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের তেমন কিছু না হলেও এরকম খাদ্যাভ্যাসের ফলে তাদের দেহের পুষ্টির ওপর দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, খাদ্যে বৈচিত্র্য কমে গেলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
শিক্ষার্থীরা এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের তাগিদ দিয়েছেন। তাদের আশা, দ্রব্যমূল্য দ্রুত স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরে আসবে এবং তারা আবার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে পারবেন।
মেসের শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে বাজার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এই পরিস্থিতি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সম্ভাবনাকেও প্রভাবিত করতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার দাবী করেন শিক্ষার্থীরা।