রাশিয়ার হাতে ‘ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত’ শক্তিশালী নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ আছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।এক অনির্ধারিত টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, ‘ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র’কে বাধা দেওয়া যায় না। ইউক্রেনের নিপ্রো শহরে নতুন করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একদিন পর তিনি এমন মন্তব্য করলেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবারের ওই ভাষণে পুতিন বলেছেন, ওরেশনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে ১০ গুণ বেশি গতিতে উড়ে যেতে পারে এবং তিনি এর উৎপাদনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার কথা জানিয়েছিলেন পুতিন। প্রসঙ্গত, ইউক্রেন সম্প্রতি মার্কিন সরবরাহ করা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ায় হামলা করেছে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনকে ‘সমুচিত জবাব’ দেওয়ার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে করে তিনি ‘তার কর্মকাণ্ডের সত্যিকার পরিণতি অনুধাবন করতে পারেন’। জেলেনস্কি জানিয়েছেন,তিনি ইউক্রেনের জন্য পশ্চিমাদের কাছ থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চেয়েছেন।
বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স-ইউক্রেন জানিয়েছে, কিয়েভ যুক্তরাষ্ট্রের টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) চেয়েছে বা প্যাট্রিয়ট অ্যান্টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের মান উন্নত করার প্রস্তাব দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার নিপ্রোতে যে হামলা হয়েছে তাকে প্রত্যক্ষদর্শীরা অস্বাভাবিক বলে আখ্যায়িত করেছে এবং এর ফলে যে বিস্ফোরণ হয়েছে তা তিন ঘণ্টা পর্যন্ত চলছিল।
বিবিসি বলছে, ক্ষেপণাস্ত্রসহ ওই হামলা ছিল খুবই শক্তিশালী এবং হামলার পর ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন যে এটা ছিল আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো।
রিস্ক অ্যাডভাইজরি কোম্পানি সিবিলাইন এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জাস্টিন ক্রাম্প বিবিসিকে বলেছেন, মস্কো সতর্কতা হিসেবে ওই হামলা করে থাকতে পারে। তার মতে, যে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে তা এত দ্রুতগামী ও আধুনিক যে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষাকে মারাত্মকভাবে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলতি সপ্তাহের এই উত্তেজনাকর অবস্থা নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশ্বনেতাদের অনেকে। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, যুদ্ধ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং এতে বৈশ্বিক দ্বন্দ্বের সত্যিকার ঝুঁকি আছে। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান বলেছেন পশ্চিমাদের উচিত ভ্লাদিমির পুতিনের সতর্কতাকে গুরুত্ব দেওয়া। কারণ, রাশিয়া সামরিক শক্তির ওপর নির্ভর করেই এর নীতি ঠিক করে।
আর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং আন পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি বলে উল্লেখ করেছেন। উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য কয়েক হাজার সেনা পাঠিয়েছে এবং কুরস্ক অঞ্চলে তাদের সঙ্গে ইউক্রেনের সেনাদের লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। কুরস্কে ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার কিছু ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সেনাদের যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য মস্কোকে জবাব দিতে তিনি ইউক্রেনকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার জন্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন।