আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর
নয়াদিগন্ত:
আ’লীগের সুপারিশে মাউশির ৩১৮৩ পদে জনবল নিয়োগ
আওয়ামী লীগের দলীয় পরিচয় আর নেতাদের সুপারিশ নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) চাকরি নিয়েছেন তিন হাজার ১৮৩ জন কর্মচারী। মাউশি ও এর অধস্তন দফতর এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৮টি ক্যাটাগরির বিভিন্ন পদে ২০২৩ সালের ২২ আগস্ট এবং ১৪ নভেম্বর চাকরিতে যোগদান করেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতাদের সুপারিশ কিংবা ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন তারা। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের কারণে তালিকায় থাকা বাকি ৬১০ জনকে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের দেয়া তালিকার এই ৬১০ জনকে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়াও আবার শুরু হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের মাত্র এক মাস আগে গত ৬ জুন অতি গোপনীয় এই তালিকার ৬১০ প্রার্থীর লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। জুলাই মাসে তাদেরও নিয়োগপত্র পাওয়ার কথা ছিল।
মাউশি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিয়োগ পাওয়া ৩১৮৩ পদের এই কর্মচারীদের নিয়োগ পরীক্ষার আগেই তাদেরকে দেয়া হয়েছিল পরীক্ষায় পাস ও চাকরি পাওয়ার নিশ্চয়তা। আর এভাবে আওয়ামী লীগের দেয়া তালিকা ধরে মোট চার হাজার ১০৯ জন কর্মচারী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধস্তন প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার বিপ্লবের মাত্র দুই মাস আগে চূড়ান্ত করা হয়েছিল তাদের মনোনীত প্রার্থী বাছাইয়ের এই তালিকা। সেই তালিকার ৬১০ জন নিয়োগপত্র এখনো পায়নি। তবে ওই তালিকা বাতিলও করা হয়নি। শিগগিরই আওয়ামী লীগের প্রস্তুত করা আগের সেই তালিকা ধরেই তৃতীয় শ্রেণীর (গ্রেড-১০) কলেজের বিষয়ভিত্তিক প্রদর্শক পদে এই ৬১০ জন নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এই ধরনের নিয়োগে অর্থের লেনদেন বিষয়ে মাউশিতে একাধিক কর্মকর্তার সাথে আলাপ হলেও কোনো কর্মকর্তাই প্রকাশ্যে কোনো কথা বলতে চাননি।
সূত্র জানায়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের অধীন সরকারি কলেজের জন্য দশটি বিষয়ে ৬১০ জন প্রদর্শক ও সমমানের পদে নিয়োগে ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট নামকাওয়াস্তে ৭০ নম্বরের সাজানো এমসিকিউ পরীক্ষা নেয়া হয়। নিয়োগ কমিটির কেউ কেউ পূর্ণ ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। টাকার বিনিময়ে এবং ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরকে সরকারি কলেজগুলোতে নিয়োগ দিতে যাওয়া এই প্রদর্শকরাই পরবর্তীতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত হয়ে থাকেন। পদোন্নতি পেয়ে তারা অধ্যাপকও হতে পারবেন। যদিও শিক্ষা ক্যাডারের সৎ কর্মকর্তারা কথিত ওই এমসিকিউ পরীক্ষা বাতিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর অধীনে লিখিত পরীক্ষা নেয়ার দাবি তুলেছিলেন সেই সময়েই।
কালের কন্ঠ:
হাসিনা সরকারের সম্মতিতেই হত্যাকাণ্ড
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দুই বছর আগে থেকেই এর পরিকল্পনা হয়। দেশের ইতিহাসে নৃশংসতম ঘটনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ২০০৭ সালেই বিপথগামী বিডিআর সদস্যরা ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার আগে বেশ কয়েকবার তাপসের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক বিডিআর সদস্য তোরাব আলীর বাড়িতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তাপস বিডিআর ডিজি (মহাপরিচালক) ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা অনুুমোদন করেন।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে শেখ সেলিমের সঙ্গেও ১০-১২ জন বিডিআর সদস্য দেখা করেন। বিপথগামী বিডিআর সদস্যদের জানানো হয়েছিল, ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটনে শেখ হাসিনা সরকারের সম্মতি আছে। সে সময় পিলখানাজুড়ে জয় বাংলা স্লোগান শোনা গেছে।
বর্বর ওই ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এবং তদন্ত কমিটির কাছে দেওয়া বিডিআরের খুনি সদস্যদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য উঠে আসে।
প্রথম আলো:
গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
কারও এক পা নেই, কেউ কেউ হুইলচেয়ারে, আবার কারও চোখে ব্যান্ডেজ—তাঁরা সবাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত। এই আহত ব্যক্তিরা গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনের সড়ক অবরোধ করেন।
আহত ব্যক্তিদের দাবি তিনটি—বিদেশে উন্নত চিকিৎসা, আর্থিক সহায়তা এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের সাক্ষাৎ। এ দাবিতে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের অনেকে রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের অনেকে।
বেলা ১টার পর সড়ক অবরোধ শুরু হয়। রাত ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ চলছিল। আহত ব্যক্তিরা সারা রাত সড়কে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন।
ঘটনার শুরু স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের দেখতে গতকাল পঙ্গু হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সবার সঙ্গে দেখা করেননি—এ অভিযোগে হাসপাতাল থেকে বেরোনোর পথে তাঁর পথ আটকে বিক্ষোভ করেন আহত ব্যক্তিরা। পরে তাঁরা রাস্তায় নামেন।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা গতকাল বেলা ১১টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালে যান। ওই হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় দুটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন জুলাই-আগস্টে আহত ব্যক্তিরা। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চতুর্থ তলায় থাকা আহত
গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের বিক্ষোভকয়েকজনের খোঁজখবর নিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ও চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করতে যান।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হাসপাতালে এসেছেন—এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিরা উপদেষ্টার গাড়ির পথ আটকে দাঁড়ান। কেউ গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। দু-একজনকে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার গাড়ির ওপর উঠে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায়। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম অন্য একটি গাড়িতে চড়ে চলে যান। ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুককে আরেকটি গাড়িতে সরিয়ে নেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের থামাতে ব্যর্থ হন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চলে যাওয়ার পর আহত ব্যক্তিরা পঙ্গু হাসপাতালের সামনের আগারগাঁও-শ্যামলী সড়কে অবস্থান নেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পাশের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে আন্দোলনে চোখে আঘাত পাওয়া ব্যক্তিরা এসে যোগ দেন। এ সময় ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন সেনাসদস্যরা। তাঁরা আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ফেরত যেতে অনুরোধ করেন; কিন্তু তাঁরা যাননি।
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
তিন মাস পেরোতেই চতুর্মুখী চাপে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে নির্বাচনের চাপ, উপদেষ্টা পরিষদে ও বিভিন্ন পর্যায়ে নতুন নতুন নিয়োগ নিয়ে সমমনাদের তীব্র সমালোচনা, বিভিন্ন মহল থেকে নতুন উপদেষ্টা হওয়ার আগ্রহ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, দাবিদাওয়া নিয়ে অসন্তোষ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান সমালোচনায় ক্রমেই চাপ বাড়ছে সরকারের ওপর। এসব ক্ষোভ-অসন্তোষ সামাল দিতে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সামাল দিতে মাঝেমধ্যেই হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারকে। পরীক্ষা না দিয়ে এইচএসসিতে কয়েক বিষয়ে ছাত্রদের অটোপাসের আন্দোলন সফল হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা যেন হালে পানি পেয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সচিবালয় এলাকায় কোনো সভাসমাবেশ নিষিদ্ধের ঘোষণা দিলেও সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঘেরাও করেছিলেন সচিবালয়। নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর, ইউজিসি প্রস্তাবিত পাইলট প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তিসহ পাঁচ দাবি নিয়ে সোমবার এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় তরুণ এক উপদেষ্টার উপস্থিতিতে দেওয়া স্লোগান ঘিরে তৈরি হয় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি। গতকাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা উপদেষ্টাকে উপলক্ষ করে স্লোগান দেননি। তবে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছিল সরব।
দেশরুপান্তর:
১৭১৭ পুলিশ চিহ্নিত
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে নজিরবিহীন তা-ব চালিয়েছে পুলিশ। গুলি করে হত্যা করা হয়েছে সাধারণ ছাত্র ও নিরীহ লোকজনকে। যেসব পুলিশ সদস্য গুলি চালানো, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও ক্ল্যাশ গ্রেনেড ছুড়েছেন তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এ সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১৭১৭।
পাশাপাশি নির্দেশদাতা হিসেবে ১১০ জন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সারা দেশে ৫৭ হাজার ৬১৩ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের গুলি ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশের একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
পুলিশের ওই সূত্রটি জানিয়েছে, আন্দোলনকারীদের রুখতে মাঠে ১৪৭৯টি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে। এছাড়া ছাত্র-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ১৪ হাজার ২২৩ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এই আন্দোলনেই পুলিশ প্রথমবারের মতো ক্ল্যাশ গ্রেনেড (ভিড় ও দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের অস্ত্র) ব্যবহার করেছে। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে এই গ্রেনেডটি ব্যবহার করা হয়েছে ২৭৪টি।
সূত্রমতে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বেশি সহিংসতা হয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও রাজশাহীতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশি বেপরোয়া ছিল ঢাকা মহানগর ও আশপাশের এলাকায়। এসব এলাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি।
জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নিরপরাধ ছাত্র-জনতাকে অপেশাদার পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্য সদস্যরা মিলে হত্যা করেছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে।’
যুগান্তর:
সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ক্ষতি
ভারতের আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার গোপনীয় চুক্তির দায় এসে পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওপর। নিয়ম অনুযায়ী, অন্য কোনো দেশের সঙ্গে আমদানিসংক্রান্ত চুক্তির আগে এনবিআরের মতামত নিতে হয়। কিন্তু আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রে তা একেবারেই অগ্রাহ্য করা হয়। আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তিতে শুল্ক-কর ছাড়ের বিষয়ে এনবিআর অসম্মতি জানিয়েছিল। কিন্তু তা উপেক্ষা করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে’ নিজেরাই শুল্ক-কর অব্যাহতি দিয়ে চুক্তি করে। এতে সরকার সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি শুল্ক হারিয়েছে। সম্প্রতি শুল্ক গোয়েন্দার এক তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আদানি গ্রুপের সঙ্গে পিডিবির চুক্তি খতিয়ে দেখতে ৫ সেপ্টেম্বর ৯ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটের নির্ধারিত মূল্য ও তার ওপর শুল্ক-কর আদায়যোগ্য কিনা, প্রযোজ্য হলে শুল্ক-কর পরিশোধ করা হয়েছে কিনা এবং শুল্ক-কর ছাড়ের বিষয়ে এনবিআর অনুমতি দিয়েছিল কিনা-এসব বিষয় পর্যালোচনা করে কমিটি। ৩ নভেম্বর ওই কমিটি তাদের প্রতিবেদন এনবিআরে জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনবিআর থেকে অব্যাহতির আদেশ না থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় বিদ্যুৎ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে পিডিবি কর্তৃক শুল্ক-কর পরিশোধ না করায় ৩৯ কোটি ৭৩ লাখ ডলার (৪ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা, এক ডলার ১১৮ টাকা হিসাবে) আদায়যোগ্য। অর্থাৎ এই অর্থ পিডিবি থেকে এনবিআরকে পরিশোধ করার কথা থাকলেও তা করেনি। এতে রাষ্ট্র ৪ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা শুল্ক ক্ষতির ক্ষতির মুখে পড়েছে।
দৈনিক সংগ্রাম:
বিপ্লবী চেতনা বিরোধী কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ
দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকে ২৪ এর বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন কার্যকলাপ, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিয়ে অপপ্রচার এবং মন্তব্য বিপ্লবীদের ক্ষুব্ধ করে তুলছে। সাম্প্রতিক সময়ে এসে মনে করা হচ্ছে ঠিক যেই লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যে বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে সেই চেতনা থেকে বিচ্যুত হতে চলেছে বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকজন উপদেষ্টার নিয়োগের পর তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমন ব্যক্তিদের উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা। একইসাথে একজন উপদেষ্টার ব্যাখ্যা নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি। তিনি ওই উপদেষ্টার ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হয়ে আসল বিপ্লবীর সংজ্ঞা দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান হাসনাত আব্দুল্লাহ। সর্বশেষ তিনি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে ‘সবাই বিপ্লবী নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন।
গতকাল বুধবার ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ এ কথা লিখেন,‘বিপ্লব ব্যর্থ হলে যাদের গলায় ফাঁসির দড়ি পড়বে, তারাই বিপ্লবী।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামকে নিয়ে ‘অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে। যার শুরুটা মূলত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) মহাপরিচালক পদের নিয়োগপত্রে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সুপারিশসহ সই করা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। যে বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও অসত্য বলে দাবি করেন নাহিদ। একইসঙ্গে এসব বানোয়াট তথ্য ছড়িয়ে তাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মানবজমিন:
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার গাড়ির উপর দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আহতদের দেখতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। সব আহতকে না দেখা এবং তাদের সঙ্গে কথা না বলার প্রতিবাদ জানিয়ে ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সড়ক অবরোধ করে নজিরবিহীন প্রতিবাদ
করেছেন আহত রোগীরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা পেছনের পথ ধরে হাসপাতাল ছাড়ায় আহতদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাসহ তিন উপদেষ্টাকে ঘটনাস্থলে হাজির হওয়ার আল্টিমেটাম দেন। দুপুরে শুরু হওয়া এই আন্দোলন রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলছিল। তাদের বিক্ষোভ থামাতে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ঘটনাস্থলে হাজির হলেও আহতদের রাস্তা থেকে হাসপাতালে ফেরাতে পারেন নি। যথাযথ চিকিৎসা মিলছে না এবং সরকারের তরফে খোঁজ নেয়া হয় না-এমন অভিযোগ তুলে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে বিক্ষোভ দেখান শেরেবাংলা নগরের জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন আহতরা। পরে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন পাশের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউশনে ভর্তি আহতরাও।
গতকাল দুপুরে বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুককে সঙ্গে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। হাসপাতালে চতুর্থ তলায় ভর্তিদের দেখে নিচে নেমে যাওয়ায় তৃতীয় তলায় থাকা আহতরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তারা নিচে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন।
সমকাল:
ব্যাংকের আমানত তুলে সরকারকে ঋণ
উচ্চ সুদ পেতে ব্যাংক থেকে আমানত তুলে সরকারি বিল ও বন্ডে খাটাচ্ছেন অনেকে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সবাই এখন শূন্য ঝুঁকির এ খাতে বিনিয়োগ করছেন। ব্যাংকগুলোও গ্রাহককে দেওয়ার চেয়ে সরকারকে ঋণ দিতে উৎসাহ দেখাচ্ছে।
এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ঋণের খরচ যেমন বাড়ছে, ঋণ পাওয়াও অনেক কঠিন হচ্ছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়ে কর্মসংস্থান হচ্ছে কম। অন্যদিকে, সরকারের ঋণের সুদ খরচও অনেক বাড়ছে। সংকট মেটাতে এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকে কিংবা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নিয়মিত ধরনা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারের ঋণ নেওয়ার মাধ্যম ট্রেজারি বিল ও বন্ডের ২০ শতাংশ ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ। কয়েক বছর আগে যা ১ শতাংশের কম ছিল। গত জুন পর্যন্ত বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। গত বছরের জুন শেষে যা ছিল ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা। এক বছরে বিনিয়োগ বেড়েছে ৫১ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা ১০ দশমিক ৫২ শতাংশ। গত জুন শেষে ব্যক্তি বিনিয়োগ ২৬০ শতাংশের বেশি বেড়ে স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা। গত বছরের জুনে যা মাত্র ১ হাজার ১০২ কোটি টাকা ছিল। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগও সমানতালে বাড়ছে।
কালবেলা:
বিএনপি-জামায়াত এখন দূরে থাকতে চায় না
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে টানাপোড়েনের মধ্যেই রাজনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক রেখে এগোতে চাইছে বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনী ইস্যুতে উভয় দলের শীর্ষ নেতারা বিপরীতমুখী বক্তব্য দেন। এতে বিএনপির সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতের সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। তবে সময়ের ব্যবধানে দুই দলের নেতাদের বক্তব্যের ধরন ও সুর বদলেছে। নানা কারণেই এখন বড় দূরত্ব রাখতে চাইছেন না বিএনপি ও জামায়াতের নীতিনির্ধারকরা। বিশেষ করে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কারও সঙ্গে বিরোধে না গিয়ে ঐক্য ধরে রাখতে চায় দল দুটি। তা না হলে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের ফল বেহাত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। সম্প্রতি উভয় দলের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে উঠছে। গত সোমবার রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় বিএনপি। আর সোমবার লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে জামায়াতের আমির বলেছেন, ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য প্রয়োজনে ছোটখাটো বিষয়ে টানাটানি বন্ধ করতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগ মাঠে নেই। রাজনীতির মাঠে একধরনের বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সেই ফাঁকা জায়গায় জামায়াতে ইসলামী একটি বড় শক্তি হিসেবে রাজনীতিতে সামনে আসতে তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দরকার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, অন্য রাজনৈতিক দলের মতোই জামায়াত একটি দল। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের বিরোধের প্রশ্ন আসবে কেন? অনেক নেতা বক্তব্য দিতে পারেন, অন্যদের দিকে তাকিয়ে থাকার দরকার হয় না, আমরা আমাদের মতো করে পলিটিক্স করছি। মৌলিক কয়েকটি বিষয়ে সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি যৌক্তিক সময় তো দিতেই হবে।
অবশ্য জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার কালবেলাকে বলেছেন, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের মধ্যে কোনো দূরত্ব বা টানাপোড়েন নেই। যারা এ ধরনের কথা বলছেন, তার ব্যাখ্যা তারাই দেবেন। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে বিভিন্ন সংশোধন ও সংস্কারে মিনিমাম একটা সময় লাগবে সরকারের। এজন্য আমরা বলেছি একেবারে অল্প সময় দিলেও তারা পেরে উঠবে না।