বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ছাত্রদল কর্তৃক আয়োজিত একটি মানববন্ধনে ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা’ ও তার পরিবারের নামে দেয়াল খচিত ছবি অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আরিফ হোসেন শান্ত বলেন,‘জুলাইয়ে স্বৈরাচার সরকারের পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের পর আমরা হলের শিক্ষার্থীরা চাইনি শেখ হাসিনার নামকরণ বলবৎ থাকুক। এ ছাড়া হলে স্বৈরাচার সরকারের ম্যুরালও ছিল, যেটা আমাদের জন্য, এমনকি এখানকার স্থানীয়দের জন্যও অস্বস্তিকর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সব মিলিয়ে আমরা হলের নাম পরিবর্তন ও ম্যুরাল অপসারণের জন্য আবেদন করি। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুতই ম্যুরাল অপসারণ করবে। আশা করি হলের নামও দ্রুত পরিবর্তন হবে।’
এছাড়া জুলাই আন্দোলনের ছাত্রনেতা ও ববি ছাত্রদল কর্মী আজমাইন সাকিব, এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে, আমরা ৫ অগাস্টের পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার ছবি সরাতে পারেনি প্রশাসন। জুলাইয়ের চেতনা বেঁচে থাকা পর্যন্ত তাকে আর কোথাও দেখা যাবে না বলে আশাকরি।
বৈষম্য আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কর্মী ইমরান হোসেন বলেন,
আমরা আবাসিক শিক্ষার্থীরাও চাচ্ছিলাম না স্বৈরাচারী সরকারের কোনও স্মৃতিচিহ্ন থাকুক আমাদের হলে। তাই আবেদন প্রক্রিয়ায় গিয়েছি এবং হল প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত প্রশাসনের উদ্যোগ আশা করছি। এখন নাম পরিবর্তনটা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি এটা দ্রুত সম্পন্ন হবে।
“আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শের নামে কোন ধরনের একপেশে এবং ব্যক্তিগত ছবি প্রচারিত না হোক। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ছবি দেয়াল চিত্রে না থাকা উচিত। এসব ছবি শাসক দলের আধিপত্য এবং ছাত্র সমাজের উপর তাদের ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার প্রমাণ।”
এছাড়াও, বক্তারা অভিযোগ করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের স্বাধীন মতামত প্রকাশের সুযোগ সীমিত করা হচ্ছে এবং একটি দলীয় মনোভাব পোষণ করা হচ্ছে। তারা বলেন, “এধরনের ছবি ও চিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক বৈচিত্র্য ও মতপার্থক্যকে প্রতিস্থাপন করতে পারে না। আমাদের দাবি, এই ছবি অবিলম্বে অপসারণ করা হোক।”
এই মানববন্ধনে ছাত্রদলের নেতারা দাবি করেন যে, তাদের আন্দোলন শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না, এটি দেশের রাজনৈতিক পরিবেশের স্বাধীনতার লক্ষ্যে বিস্তৃত হবে। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে দেশে গণতন্ত্রের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয় এবং জনগণের মতামতকে মূল্যায়ন করা হয়।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মানববন্ধন ও ছবি অপসারণের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। তবে বিষয়টি স্থানীয় রাজনীতির মধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন পক্ষ থেকে বিভিন্ন মতামত প্রকাশিত হচ্ছে।
এই ঘটনাটি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশের একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে ছাত্ররা তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ও দাবিগুলি সোচ্চারে জানাতে সাহসী ভূমিকা পালন করছে।