ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় কমপক্ষে আরও ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৩ হাজার ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে।এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজা জুড়ে কমপক্ষে আরও ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ভূখণ্ডটির দক্ষিণে আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি ক্যাফেতে বসে থাকা অবস্থায় লোকদের ওপর ড্রোন হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
এতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এর আগে এই এলাকাকে “নিরাপদ অঞ্চল” হিসাবে ঘোষণা করেছিল।
গাজায় আল জাজিরার সংবাদদাতা জানায়, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এই ছিটমহলের দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসের পশ্চিমে অবস্থিত ছোট তাঁবুর ওই ক্যাফেতে ইসরায়েলি ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সোমবার গভীর রাতে কমপক্ষে ১০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।
আল জাজিরার হানি মাহমুদ মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে জানায়, “এই হামলা এটিই প্রমাণ করছে যে, ‘নিরাপদ এলাকা’ সম্পর্কে ইসরায়েলি দাবিগুলো কেবলই মিথ্যা বর্ণনা ছাড়া আর কিছুই নয়। লোকেরা ইন্টারনেট এবং বাইরের বিশ্বের সাথে যুক্ত হতে বা বড় পর্দায় ফুটবল খেলা দেখতে এই কফি শপে যায়। গভীর রাতে ড্রোন থেকে ওই ক্যাফেতে অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয় যখন লোকেরা সেটির ভেতরে ছিল। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, সেসময় এই ক্যাফটি মানুষে পূর্ণ ছিল।”
হামলায় আহত সাতজনের অস্ত্রোপচার চলছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা ভুক্তভোগীরা সম্পূর্ণরূপে বিকৃত হয়ে গেছে।”
এর আগে মধ্য গাজায় অবস্থিত নুসেইরাতের আল-আওদা হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেন, সোমবার ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো পশ্চিম দিক থেকে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের দিকে অগ্রসর হওয়া এবং বাসিন্দাদের ওপর গোলাবর্ষণসহ একাধিক বিমান ও স্থল হামলায় ২০ জন নিহত হয়েছেন।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শরণার্থী শিবিরে ট্যাংক হামলায় বাসিন্দারা অবাক হয়ে গেছে। জাইক মোহাম্মদ নামে ২৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি বলেছেন, “কিছু লোক বের হতে পারেনি এবং তারা তাদের বাড়ির ভেতরে আটকা পড়েছিল।”
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।