বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের নির্যাতনসহ নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অনুপম সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসানসহ ৮ জনকে আজীবন বহিষ্কার মোট ২৩ শিক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে শাস্তি দিয়েছে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।
এর পাশাপাশি ১১ শিক্ষার্থীর একাডেমিক কার্যক্রম বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিত, চার জনকে হোস্টেলে প্রবেশে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মুচলেকা দিয়ে পাঁচ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস, হোস্টেলে অবস্থান, ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি পেয়েছেন।
গত রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলেজের সভাকক্ষে অধ্যক্ষ নাজমুল আলম খানের সভাপতিত্বে এই সভা হয়। পরে অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বাকি আজীবন বহিষ্কৃতরা হলো- মাশফিক আনোয়ার, অনুপম দত্ত, সঞ্জীব সরকার, সাইফুল ইসলাম, মাহিদুল হক ও জাহিদুল ইসলাম। আর দুই বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত হয়েছে রাকিবুল হাসান, মেহেদী হাসান, মেরাজ হোসেন ও রায়হান হাবিব ফাল্গুনের। এক বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত হয়েছে অর্ণব সাহার। ছয় মাসের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত হয়েছে সানজিদ আহমেদ, শাহরিয়ার ইফতেখার, মুনতাসুর রাতুল, শামস আরেফিন ও আসিফ ইকবালের।
এ ছাড়া হোস্টেলে প্রবেশে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হওয়া শিক্ষার্থীরা হলো- আশিক মাহমুদ, মঞ্জুরুল হক রাজিব, আশিক উদ্দিন ও কুবের চক্রবর্তী। মুচলেকা দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি পেয়েছেন শিপন হাসান, সৈয়দ রায়হান আল আশরাফ, আসিফ রায়হান, দিগন্ত সরকার ও সিয়াম জাওয়াদ।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ একাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি নাজমুল আলম খান গণমাধ্যামকে বলেন, ‘রবিবার দুপুরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
গত ৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে এই ২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ওই একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সভা শেষে চিঠি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত সাময়িকভাবে তাদের ২৮ জনকে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হলো। এ ছাড়া তাদের ক্যাম্পাস ও হোস্টেল থেকেও সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। এসব শিক্ষার্থীর অভিযোগের তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপাধ্যক্ষ জিম্মা হোসেনকে সভাপতি এবং মো. বদর উদ্দীনকে সদস্যসচিব করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী আজ ২৮ শিক্ষার্থীর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিলো কলেজ প্রশাসন।