আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:
কালবেলা:
হাসিনাকে ফেরাতে ‘রেড নোটিশ’জারি হচ্ছে
জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের ধরতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ‘রেড নোটিশ’ জারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কারকাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বজনমতকে বিভ্রান্ত করতে নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে। আইসিসিতে দেওয়া আওয়ামী লীগের অভিযোগ অন্তর্বর্তী সরকার আমলে নিচ্ছে না বলে জানান আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করতেই সরকারের বিরুদ্ধে আইসিসিতে অভিযোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অভিযোগটি কোনোভাবেই গৃহীত হওয়ার কারণ নেই।
আইন উপদেষ্টা বলেন, এটা কোনো মামলা নয়। এটা আইসিসির প্রসিকিউশন অফিসকে একটা পিটিশন লিখে জানানো। এটা পৃথিবীর যে কোনো মানুষ করতে পারে। এটা এতই অবিশ্বাস্য ও বস্তুনিষ্ঠতাহীন একটা মামলা যে, কোনোভাবেই এই রিট হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটা ফ্যাসিস্ট চক্র বিশ্ব জনমতকে, বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ও আত্মরক্ষার জন্য মিথ্যা প্রচারণা চালানোর উপায় হিসেবে করেছে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারের নির্দেশনা পেলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কারকাজ এখন শেষ পর্যায়ে। সরেজমিন দেখা যায়, ট্রাইব্যুনালের ঐতিহাসিক সাদা ভবনটির (পুরাতন হাইকোর্ট ভবন) নানামুখী সংস্কারকাজে ব্যস্ত কর্মীরা। এ ছাড়া ট্রাইব্যুনাল-সংলগ্ন বাগান নতুন করে সাজানো হচ্ছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এই সংস্কারকাজের সার্বিক তদারক করা হচ্ছে। কয়েকশ কর্মী এখানে নিয়মিত কাজ করছেন।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক মানের বিচার কার্যক্রম চলবে, এমনভাবে ট্রাইব্যুনাল ভবন উপযোগী করা হচ্ছে। ভবনটি সংস্কারের আগে অনেকটাই জরাজীর্ণ ছিল। কয়েক দফা সংস্কারকাজ পরিদর্শন করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। সংস্কারকাজ চলমান থাকায় আপাতত ভবনসংলগ্ন (অস্থায়ী) ট্রাইব্যুনালে শুরু হয়েছে বিচারিক কার্যক্রম।
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
রাষ্ট্রের পোশাক বদল হয়েছে পরিবর্তন হয়নি
ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, রাষ্ট্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি চরিত্রগতভাবে। বানর যদি মানুষের পোশাক পরে, তাহলে কি সে মানুষ হয়ে যায়? রাষ্ট্র তো ওই বানরই রয়ে গেছে। তার পোশাক বদল হয়েছে, রাষ্ট্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হকের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ‘চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানে বামপন্থিদের ভূমিকা এবং করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আবু সাঈদ খান এতে সভাপতিত্ব করেন। আ ফ ম মাহবুবুল হক স্মৃতি সংসদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এখন যে অভ্যুত্থান ঘটল, সেই অভ্যুত্থানে কোনো বিপ্লব ঘটেনি। এক চরম ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটেছে। এই পতন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ঘটত, ঘটতে পারত। তাহলে আজ যারা পলাতক, তাদের পালাতে হতো না, তারা বেঁচে যেত। কিন্তু তারা তা চায়নি বলেই এ অভ্যুত্থান হয়েছে। একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। আজ পৃথিবীজুড়েই পুঁজিবাদ ফ্যাসিবাদের রূপ নিয়েছে। আলোচনা সভায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, যে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবির অর্থায়নের কারণে বাংলাদেশে বৈষম্য বেড়েছে এবং শিক্ষা-চিকিৎসার বাণিজ্যিকীকরণ হয়েছে, পাশাপাশি আমাদের এখানে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত ভয়ংকর রকম শঙ্কার মধ্যে পড়েছে। সেই বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ যদি এখনো দাপট নিয়ে চলে এবং এ সরকার যদি তাদের ওপর ভরসা করে এখনো অর্থনীতিকে পুনর্গঠনের চিন্তা করে, তাহলে পরিবর্তনটা কোথায় হচ্ছে? পরিবর্তনের যে আকাক্সক্ষা ও শক্তি প্রয়োজন ছিল, তার একটি অংশ জনগণের মধ্যে আছে।
যুগান্তর:
এসপির ভাইয়ের পুলিশ প্রটোকলে চাঁদাবাজি
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক
বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) ইব্রাহিম খলিলের ভাই হুমায়ুন কবির। তিনি ‘জিয়া শিশু একাডেমির মহাপরিচালক পরিচয়ে এলাকায় বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে নেমেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব বিস্তার করছেন বিভিন্ন দপ্তর-অধিদপ্তরে। এসপির বড় ভাই হিসাবে এলাকায় গেলে পাচ্ছেন ভিআইপি প্রটোকল। পুলিশ এসকর্ট দিতে উপস্থিত থাকেন খোদ বেতাগী থানার ওসি একরামুল হক। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের পাশাপাশি নানা গুঞ্জন চলছে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে।
এদিকে, পতিত সরকারের দোসর হিসাবে পরিচিত অনেককেই আশ্রয়-প্রশ্রয়ও দিচ্ছেন তিনি। এদের মধ্যে বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম গোলাম কবীরের নামও আছে। এলাকায় ‘ফিফটিন পার্সেন্ট’ হিসাবে পরিচিত এই ব্যক্তিদের নিয়ে ঢাকায় গোপন বৈঠকও করেছেন। আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার বিরুদ্ধে স্থানীয় গণমিলনায়তন নির্মাণে পুকুর চুরির তদন্ত শুরু হয়েছে। গত ১৫ বছরে শত শত কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্যের এই হোতাদের মামলায় আসামি না করার অভয় দিয়ে হুমায়ুন হাতিয়েছেন বিপুল টাকা। নিয়েছেন নতুন বিলাসবহুল গাড়ি। যুগান্তরের অনুসন্ধানে মৎস্য আড়তে চাঁদাবাজি, আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক, এলাকায় পুলিশ এসকর্টের ভিডিওসহ নানা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে।
প্রথম আলো:
আনিসুলের প্রভাব, কাদেরের আশীর্বাদে ব্যবসা সিএনএসের
● মামলা করে দরপত্র আটকে রেখে সিএনএস সেতুর টোল আদায়ের কাজ করে যেত। ● যমুনা সেতুতে ছয় মাসের জন্য নিয়োগ পেয়ে আট বছর কাজ করে সিএনএস। ● মেঘনা-গোমতী সেতুতেও একই কৌশল নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
ঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতুতে টোল আদায়ে মাত্র ছয় মাসের জন্য কারিগরি সহযোগিতার দায়িত্ব পেয়েছিল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড (সিএনএস)। কিন্তু তাদের আর সরানো যায়নি। ছয় মাসের জন্য ঢুকে তারা আট বছর সেতুটির টোল আদায়ে কাজ করেছে।
কাজটি নিজেদের দখলে রাখতে সিএনএস যে কৌশল নিয়েছিল, সেটি হলো মামলা। আদালতে গিয়ে তারা নতুন ঠিকাদার নিয়োগপ্রক্রিয়া আটকে রাখেঅভিযোগ আছে, আদালতের আদেশ যাতে সিএনএসের পক্ষে যায়, সে জন্য প্রভাব বিস্তার করতেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আনিসুল হকের ছোট ভাই আরিফুল হক ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সিএনএসের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালের মার্চে মারা যান। সূত্র বলছে, আরিফুলের মৃত্যুর পর আনিসুল হকই নেপথ্যে থেকে সিএনএসের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। যদিও প্রতিষ্ঠানটিতে তাঁর কোনো পদ ছিল না।
‘মামলা কৌশলে’ শুধু যমুনা সেতু নয়, মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের কাজও সাত বছর করেছে সিএনএস। ২০১৮ সাল থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম (ভৈরব) ও শহীদ ময়েজ উদ্দিন (ঘোড়াশাল) সেতুর টোলও আদায় করছে তারা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত এক যুগে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অন্তত পাঁচ ধরনের কাজ বাগিয়ে নেয় সিএনএস।
কালের কন্ঠ:
জিরো পয়েন্টে ঘেঁষতেই পারেনি আ. লীগ
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ গতকাল রবিবার রাজধানীর জিরো পয়েন্টে নূর হোসেন চত্বরে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিল। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে দলটির নেতাকর্মীদের তেমন দেখা মেলেনি। পুরো এলাকায় শক্ত অবস্থানে ছিল বিএনপির নেতাকর্মীসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
জিরো পয়েন্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণজমায়েত থেকে বলা হয়, যত দিন গণহত্যার বিচার না হবে, তত দিন আওয়ামী লীগের জনসমক্ষে আসার অধিকার নেই।
এই পরিস্থিতির মধ্যে আওয়ামী লীগ ও মহিলা লীগের কয়েকজন নূর হোসেন চত্বরের অদূরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পৌঁছলে তাদের মধ্যে পরিচিত মুখগুলো শনাক্ত হয়ে যায়। দুজন নারীসহ অন্তত ২০ জনকে পিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দলটির প্রথমবারের মতো রাজপথের কর্মসূচি ছিল এটি।
দেশরুপান্তর:
জিএম কাদেরসহ জাপা শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে ছয় বছর আগে হামলার অভিযোগে ৬৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে। গত শুক্রবার রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় এজাহার হিসেবে রেকর্ড করা মামলাটিতে জাতীয় পার্টি ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান মো. বাবুল সরদার চাখারী। বাদীপক্ষের আইনজীবী জহির হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় গত ৩১ অক্টোবর আদালতে নালিশি মামলা হয়। আদালত অভিযোগ এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য হাতিরঝিল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
এ মামলার আসামিদের মধ্যে জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদের ছাড়াও রয়েছেন তার স্ত্রী শেরিফা কাদের, দলটির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক (চুন্নু) এবং সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। এ ছাড়া জাপার ১২ প্রেসিডিয়াম সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন এ কে এম সেলিম ওসমান, খায়রুল ইসলাম, আহসান আবদুর রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, লিয়াকত হোসেন, আতিকুর রহমান, সোলায়মান আলম, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, রাজা আমিন ও এটিইউ তাজ রহমান।
মানবজমিন:
রপ্তানি-রেমিট্যান্সে উন্নতি, ইতিবাচক রিজার্ভ
গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অর্থাৎ টানা তিন মাস ধরে ইতিবাচক ধারায় রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। পাশাপাশি বেড়েছে রপ্তানি আয়। মূলত এই দুই সূচক উন্নতির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। এতে আবারো ২০ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে রিজার্ভ। অক্টোবর শেষে যা ছিল ১৯.৮৪ বিলিয়ন ডলারে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১৩৭ কোটি ডলার পরিশোধের পর গত ৯ই সেপ্টেম্বর ১৯.৩৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। এর আগে যা ২০.৫৫ বিলিয়ন ছিল। এ ছাড়া টাকার বিপরীতে ডলারের দর স্থিতিশীল রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলেন, গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তারা সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। এতে প্রতি মাসেই রেমিট্যান্স আসা বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে রপ্তানি আয় বেড়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর তদারকির কারণে অযৌক্তিক আমদানি বন্ধ হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে নতুন করে ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। সব মিলিয়ে রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণও বাড়ছে।
রপ্তানি আয় বেড়েছে: গত অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ২০.৬৫ শতাংশ বেড়ে ৪.১৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে এটি ছিল ৩.৪২ বিলিয়ন ডলার। রোববার বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এই তথ্য প্রকাশ করেছে। ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানি ১০.৮০ শতাংশ বেড়ে ১৫.৭৮ বিলিয়ন হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৪.২৪ বিলিয়ন ডলার
দৈনিক সংগ্রাম:
পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চান প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের ব্যয় কমাতে সহায়তা করার জন্য সিঙ্গাপুরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববার বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লো ঢাকায় তেজগাঁও কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস রাষ্ট্রদূত লোকে বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশে প্রচুর অর্থ পাচার করা হয়েছে।’
‘সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রয়োজন আমাদের,’ বলেন তিনি। রাষ্ট্রদূত লো সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন। অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর লক্ষ্যে ঢাকার সঙ্গে কাজ করার জন্য সিঙ্গাপুরের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি জানান, প্রবাসীরা যেন তাদের পরিবারের কাছে আরও বেশি অর্থ পাঠাতে পারে সে লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অভিবাসনের ব্যয় কমিয়ে আনতে চায়। ‘আমরা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে নিয়োগের খরচ কমানোর জন্য একটি মডেল কাঠামো তৈরি করতে পারি,’ প্রধান উপদেষ্টা বলেন।
হাইকমিশনার সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বাংলাদেশকে বৈদেশিক নিয়োগ ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করার পরামর্শ দেন যাতে করে মানব পাচার ও শ্রমিক শোষণের আশঙ্কা কমে যায়। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্রনীতি, শিপিং, শিক্ষা এবং নিজ নিজ জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, স্বৈরাচারী সরকার পতনের মাত্র তিন মাসের মাথায় অর্থনীতি ভালোভাবে পুনরুদ্ধার করে বাংলাদেশ এখন ব্যবসার জন্য প্রস্তুত। এখন এদেশে ব্যবসা করার উপযুক্ত সময়।
সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ডিরেক্টর ফ্রান্সিস চং বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব করেছিল। প্রস্তাবিত এফটিএ-র ওপর একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং উভয় দেশই এখন কীভাবে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু করা যায় তার সুযোগ নির্ধারণ করবে। লো বলেন, সিঙ্গাপুর পানি শোধন এবং বর্জ্য শক্তি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তাদের দক্ষতা ভাগাভাগি করতে পারলে খুশি হবে। তিনি উভয় দেশের খাদ্য সংস্থার মধ্যে সহযোগিতার প্রস্তাব করেন।
সমকাল:
আর কখনো হাসবে না মুনতাহা
বয়স মাত্র পাঁচ বছর। সারাদিন ঘুরে বেড়াতো ঘরের এ কোণা থেকে ওই কোণা। তার হাসি মন জয় করে নিত সবার। কিন্তু আর হাসবে না ফুটফুটে সুন্দর শিশু মুনতাহা আক্তার। সে এখন কেবলই ছবি।
মুনতাহার বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামে। এক ওয়াজ মাহফিল থেকে ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরে সে বাইরে খেলতে যায়। পরে আর খোঁজ মেলেনি। এরপর শিশুটির সন্ধান চেয়ে ফেসবুকে অনেকে পোস্ট দেন। রোববার ভোরে মুনতাহার লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লাশ উদ্ধারের ঘটনা জানাজানির পর মুনতাহার পরিবার তো বটেই, ফেসবুকজুড়েও মাতম চলছে। শিশুটির ছবি দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়েছেন। অনেকে শিশুটির হাস্যোজ্জ্বল ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘এমন নিষ্পাপ শিশুকে হত্যা করার মতো পাষণ্ডও আছে?’
শিশু মুনতাহার নিখোঁজ ও লাশ উদ্ধারের বিষয়টি সিলেটসহ সারা দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। মূলত মুনতাহা নিখোঁজের বিষয়টি কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় আসছিল। নিখোঁজ হওয়ার পর মুনতাহার সন্ধান চেয়ে ফেসবুকে অনেকে স্ট্যাটাস দেন। এর মধ্যে সিলেটের সমাজকর্মী ফারমিছ আক্তার মুনতাহার সন্ধানকারীকে সোনার চেইন উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন। মুনতাহার লাশ উদ্ধারের পর তিনি একাধিক আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। একটিতে লেখেন, ‘এত সুন্দর মুখটা কেমন হয়ে গেল রে!’