আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
দল নিষিদ্ধের ফল ভালো কিছু বয়ে আনে না
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার ফলাফল কখনো ভালো কিছু বয়ে আনে না। তিনি বলেন, যাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করব, তারাই তো নিজেরাই নিজেদের নিষিদ্ধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। একটা বিবৃতি দেওয়ার লোক নেই , স্লোগান দেওয়ার লোক নেই। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর ‘মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের প্রেক্ষাপটে আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ। গয়েশ্বর বলেন, সর্বস্তরের মানুষ দেশ স্বাধীন করল আর সরকার গঠন করল আওয়ামী লীগ। বাহাত্তরে তারা যে সংবিধান লিখে তারা কি সেই সংবিধান মেনে চলেছে? চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, ব্যাংক ডাকাতি, নারী নির্যাতন- এসব কি সংবিধানে লেখা ছিল? তারাই বাহাত্তরের সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। তারাই সংবিধান লঙ্ঘন করে একদলীয় শাসন কায়েম করে। গত ৫২ বছরে আওয়ামী লীগের মতো সংবিধান লঙ্ঘনকারী দল বাংলাদেশে আর নেই। শেখ হাসিনা এতদিন আইন মানেনি। এখন আইনকে ভয় পাচ্ছে। ভয় না পেলে দেশ ছেড়ে পালাত না।
ইনকিলাব:
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে তৈরি আছি: হাছান মাহমুদ
দেশের ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ প্রয়োজন হলে বিএনপির সঙ্গে একযোগে কাজ করার বিষয়ে তার দলের প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
রোববার লন্ডনভিত্তিক ‘চ্যানেল এস’ টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমি বিএনপির সাথে অনেক ক্ষেত্রে একমত। বিএনপি যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলছে, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে, সেটির সাথে আমরা একমত এবং প্রয়োজনে বিএনপির সাথে একযোগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা কাজ করব।
গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ শাসিত সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল বা ব্যর্থতা কী ছিল—এমন এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারে থাকলে ভুল হবেই। পৃথিবীর কোনো সরকার শতভাগ নির্ভুল কাজ করতে পারবে না। আমাদেরও অনেক ভুল ছিল। শুধু একটি দুটি ভুল নয়, দায়িত্বে থাকলে ভুল হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি—এটি আমার দলের অভিমত নয়, ব্যক্তি ড. হাছান মাহমুদের অভিমত হচ্ছে…আমি মনে করি বিএনপি অবশ্যই সব সময় নির্বাচন বর্জন করেছে, নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু যেহেতু আমরা দায়িত্ব ছিলাম, বিএনপিকে নির্বাচনে অ্যাকোমোডেট করতে না পারা আমাদের ব্যর্থতা ছিল। ২০১৪ সালে, ২০২৪ সালে নির্বাচনে আনতে না পারা আমাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ছিল। যদিও তারা আমাদেরকে ব্যর্থ করার চেষ্টাই করেছে, তবুও এটা আমাদের ব্যর্থতা।
স্বীকার হয়েছে সেই নামটা প্রকাশ করুক। আমি মনে করি, প্রথম থেকেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের যে দাবি ছিল, সেই বিষয়টি পুরোপুরি আদালতের হাতে ছেড়ে না দিয়ে যদি বিষয়টি অন্যভাবে হ্যান্ডেল করা যেত তাহলে ভালো হতো। এটিকে এতদূর যেতে দেওয়াটাই ভুল ছিল আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
দলের পরবর্তী নেতৃত্ব প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, দলে সব সময় পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনাই প্রাণ এবং শেখ হাসিনা হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রাণ ভোমরা। তাকে ছাড়া আওয়ামী লীগ কল্পনা করা যায় না। দলে গণতন্ত্র আছে তাই কোনো লাইনআপ তৈরি করা নেই। সময় এবং পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে পরবর্তী নেতৃত্ব তৈরি হয়ে যাবে।
প্রথম আলো:
বিদেশি ‘নাগরিকত্ব’ নিয়ে মন্ত্রী-এমপি হন ২৪ জন
মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য ছিলেন, এমন ২৪ জনের বিদেশি নাগরিকত্ব বা রেসিডেন্স কার্ড থাকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে দুদক।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান গোপনে সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের ‘রেসিডেন্স কার্ড’ (স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি) রয়েছে বেলজিয়ামের। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যুক্তরাজ্যের নাগরিক। সাবেক দুই প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও জুনাইদ আহ্মেদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বৈধ অনুমতি বা ‘গ্রিন কার্ড’ রয়েছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য ছিলেন, এমন ২৪ জনের দ্বৈত নাগরিকত্ব (কারও কারও ক্ষেত্রে রেসিডেন্স কার্ড বা গ্রিন কার্ড) থাকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেতে চাইলে একজন ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কোনো কোনো রাষ্ট্রে রেসিডেন্স কার্ড বা গ্রিন কার্ড পাওয়ার পরের ধাপে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়।
গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রভাবশালী ১৮০ জনের (১৫ অক্টোবর পর্যন্ত) অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে টাকা পাচারের বিষয়টি অনুসন্ধান করছে দুদক। সেই অনুসন্ধানে এখন পর্যন্ত ২৪ জনের দ্বৈত নাগরিকত্ব বা রেসিডেন্স কার্ড থাকার ব্যাপারে তথ্য পেয়েছে দুদক। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের তদন্ত–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করলে বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করলে তিনি সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী হতে পারেন না।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে, এমন কোনো ব্যক্তির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া বা মন্ত্রিত্ব লাভের সুযোগ নেই। তথ্য গোপন করে যদি এ কাজ হয়ে থাকে, তাহলে আইন ও সংবিধান পরিপন্থী কাজ হয়েছে।
দুদকের তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সাবেক পাঁচজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর নাগরিকত্ব রয়েছে যুক্তরাজ্যে। তাঁরা হলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল, মো. তাজুল ইসলাম, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও মো. মাহবুব আলী। তাঁদের মধ্যে গত ১৫ সেপ্টেম্বর মাহবুব আলীকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কালের কন্ঠ:
অর্থনীতিতে কিছুটা শৃঙ্খলা অস্বস্তি রাজনীতিতে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের অবসানের আজ তিন মাস পূর্ণ হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ও দেশ ছাড়ার পর শুরু হয় গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের যাত্রার প্রত্যাশা নিয়ে নতুন এক অধ্যায়। ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বয়সও তিন মাস পূর্ণ হওয়ার পথে। এই তিন মাস মূল্যায়নে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ভঙ্গুর সামষ্টিক অর্থনীতিতে খানিকটা শৃঙ্খলা ফিরেছে।আর রাজনীতিবিদরা সংস্কার এবং এখনো দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্পষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ায় এক ধরনের অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন।
সরকারের অর্থ বিভাগের তথ্য মতে, নবগঠিত এবং ব্যতিক্রমী এ সরকারকে কাজ শুরু করতে হয় আগের সরকারের রেখে যাওয়া ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে। এর মধ্যে পুঞ্জীভূত বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছয় হাজার ৭৯০ কোটি ডলার। এই বিপুল ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধের চাপ এখন বর্তমান সরকারের ঘাড়ে।
যুগান্তর:
ইতিহাস নাকি প্রত্যাবর্তন
অপেক্ষার পালা শেষ। মহারণ শুরুর মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত। ভোটের উত্তেজনার পারদ এখন চূড়ায়। টানা এক বছর ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির তুমুল প্রচারের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি হবেন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের দুইশ বছরের ইতিহাসে প্রথম কোনো নারী প্রেসিডেন্ট। ইতিহাস তৈরির হাতছানি কমলার সামনে। অপরদিকে গত নির্বাচনে পরাজয়ের গ্লানি মুছে প্রত্যাবর্তনের প্রত্যয় ট্রাম্পের।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলছে। হোয়াইট হাউজ দখলের লড়াইয়ে কে জয়ী হবেন, কে হাসবেন শেষ হাসি-কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ প্রশ্নের জবাব পেতে এখন শেষ মুহূর্তের অপেক্ষা। অনেক ভোটার শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেবেন। নীরব ভোটার আছেন অনেক। তাই ফলাফল প্রকাশের আগে কে জয়ী হবেন, তা অনুমান করা যাচ্ছে না। ক্যালিফোর্নিয়ার এক সংগ্রামী নারী কমলা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে মার্কিন মুল্লুকের অন্যতম সেরা ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কাছেই নয়; যুদ্ধবিগ্রহে বিধ্বস্ত বিশ্ব আর বিশ্ব অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থায় এবারের মার্কিন নির্বাচন বিশ্বের কাছেও তাৎপর্যপূর্ণ।
দৈনিক সংগ্রাম:
জুলাই বিপ্লব ৪ মাসে পড়লো আজ
ইবরাহীম খলিল : প্রতি বিপ্লবের হুমকি, নানা ষড়যন্ত্র আর গুজবের মধ্যে আজ চার মাসে পা রাখলো জুলাই-বিপ্লব। আজ থেকে তিন মাস আগে এই দিনে অথাৎ ৫ আগস্ট ২০২৪ ইং ছাত্র-জনতার অপ্রতিরোধ্য আক্রমণে প্রাণভয়ে এই দেশ থেকে পাশের দেশে পালিয়ে যায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা; যে কি-না বড়াই করে বলতো শেখ হাসিনা পালায় না। আর তার দাপুটে সঙ্গি সাথীরা চলে যান আত্মগোপনে। অতঃপর গঠিত হয় দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অর্ন্তবর্তকালীন সরকার। অবশ্য শেখ হাসিনার পালানোর পরও থেমে থাকেনি ষড়যন্ত্র। সীমান্ত দিয়ে আবার টুস করে দেশে ঢুকে পড়া, প্রতি বিপ্লব সৃষ্টি করা, নানাভাবে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করা বন্যার পানিতে ডুবিয়ে মারাসহ নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ছাত্র-জনতার অপ্রিতরোধ্য প্রচেষ্টায় প্রতিটি সংকট সফলভাবে মোকাবেলা করা হয়।
একটু আগে থেকে শুরু করলে বিষয়টি এমন দাঁড়ায় যে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে শুরু হয় জুলাই বিপ্লবের সফল এই আন্দোলন। ¯্রফে সরকারি চাকরিতে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে জুন মাসে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল কেবল ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমতার আন্দোলন। কিন্তু পৃথিবীর আর সব স্বৈরাচারের মতো শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিকে মেনে নিতে গড়িমসি করে হাসিনার সরকার। কেননা পৃথিবীর সব স্বৈরাচারই যেকোনো আন্দোলন দমন করতে চায় বলপ্রয়োগের মাধ্যমে। ভয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে নিজের ক্ষমতাকে সুসংহত করা যায় সেই গতানুগতিক ধারাতেই ছুটছিল স্বৈরাচার শেখ হাসিনা এবং তার দোসররা।
২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল ১৬ বছরে অনেকটাই অপ্রতিরোধ্য স্বৈরাচারে রূপ নেয়। সবাই শেখ হাসিনা অনেকটাই নিশ্চিত ছিল যে শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগ সরকার কিংবা শেখ হাসিনাকে কিছুই করতে পারবে না। বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষগুলোও হতাশ হয়ে পড়ে। ফলে আওয়ামী লীগের মধ্যে তৈরি হয়েছিল ‘ডোন্ট কেয়ার’ ভাব। ফলে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন দমনে বেছে নেয় পেশিশক্তির ব্যবহার এবং আন্দোলন ভিন্ন দিকে নিতে ব্যবহার করে পুরানো কৌশল ট্যাগিং কালচার। কিন্তু কার্যত আওয়ামী লীগের সব অস্ত্রই ব্যর্থ হয়।
নয়াদিগন্ত:
‘মাইনাস-টু’ নিয়ে রাজনীতিতে হঠাৎ আবার আলোচনা কেন
বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘মাইনাস-২ ফর্মুলা’র বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করার পর বিষয়টি নিয়ে দলটির ভেতরে ও বাইরে নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘বিএনপি বা এর শীর্ষ নেতৃত্বকে’ রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার কোনো ইঙ্গিত দলটি পাচ্ছে কিনা সেই প্রশ্নও আলোচিত হচ্ছে।
আলমগীর অবশ্য বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘বিরাজনীতিকরণের বিষয়ে সতর্ক’ করতে গিয়ে তিনি ‘মাইনাস-টু’ ফর্মুলার উল্লেখ করেছেন। তবে এখন দেশে ‘বিরাজনীতিকরণের’ চেষ্টা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের তিনি সরাসরি কোনো জবাব দেননি।
তবে সরকারের একজন উপদেষ্টা সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, মাইনাস-টু নিয়ে কোনো চিন্তা বর্তমান সরকারের নেই।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তারা সবাইকে নিয়েই রাজনীতি করতে চান।
তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে বাদ দেয়ার প্রশ্নই আসে না। এখন বিএনপি কেন এমন ভাবছে, তা আমাদের জানা নেই।’
একজন বিশ্লেষক বলছেন, নির্বাচনকে দৃশ্যত কম গুরুত্ব দেয়া আর বিএনপিকে ইঙ্গিত করে আসা বিভিন্ন বক্তব্যের কারণেই হয়তো দলটির মধ্যে মাইনাস-টু ফর্মুলার বিষয়টি সামনে এসেছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল। তখন দুই প্রধান নেত্রী খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে জেলে নেয়ার পর ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’র আলোচনা জোরদার হয়েছিল।
তখন তাদের দলসহ অনেকেই অভিযোগ করেছিল যে ‘দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে’- যা পরে ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
এবারের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ও এর নেত্রী শেখ হাসিনা উৎখাত হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এরপর থেকে বিএনপি দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দাবি করে আসছে। তবে সরকারের দিক থেকে বারবারই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর। যদিও এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য গঠিত সার্চ কমিটি তাদের কাজ শুরু করেছে।
অন্যদিকে, আন্দোলনকারীদের অনেকেই আকারে ইঙ্গিতে বলার চেষ্টা করছেন যে ‘আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন’। পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলোও কাজ করতে শুরু করেছে, যার মধ্যে সংবিধান, পুলিশ ও প্রশাসন সংস্কারের মতো কমিশন রয়েছে।
মানবজমিন:
ঢাবিতে হাসিনাসহ ৫ নেতার প্রতীকী ফাঁসি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও তাদের জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর নেতাদের প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ। গতকাল দুপুর ২টায় ঢাবি’র টিএসসি’র পায়রা চত্বরে ‘ছাত্র-জনতার ফাঁসির মঞ্চ’ ব্যানারে এই প্রতীকী ফাঁসি দেয়া হয়।
প্রতীকী ফাঁসি দেয়া ৫ নেতা হলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
এ সময় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, আমরা চাই সরকার আমাদের এই প্রতীকী ফাঁসি দেখে গণহত্যার মাস্টার মাইন্ডদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসি নিশ্চিত করে বিচার করুক। তিনি বলেন, যারা গণহত্যা করেছে, গুম-খুন করেছে, তাদের রাজনৈতিক অপতৎপরতাকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা ২০২৪-এর নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং এমপি-মন্ত্রী হয়েছে তাদের বিচার করতে হবে।
গণআন্দোলনে শহীদরা ফিরে আসবে না, তবে গণহত্যার মাস্টার মাইন্ডরা কেন ফিরে আসবে? এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হাত-পা, চোখ হারিয়েছেন। তারা বাবা, ভাই, বোন, সন্তান হারিয়েছেন। তারা তো আর ফিরে আসবে না। তাহলে কেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ফেরত আসবে? তাহলে কেন হাসিনা-কাদের ফিরে আসবে? জিএম কাদের, মেনন, ইনুরা কেন ফিরে আসবে?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেক কিছু করলেও গণহত্যাকারীদের বিচার করতে পারেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, আপনারা গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে বেঈমানি করবেন না, এ স্পিরিটকে কলঙ্কিত করবেন না। আমরা বেঈমানি করতে দেবো না।
এসময় তিনি সংবিধান পরিবর্তন করে ফ্যাসিবাদী প্রথার বিলোপ, জাতীয় ঐকমত্যে বিপ্লবী সরকার গঠন এবং জাতীয় পার্টির কার্যালয়কে জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা বানানোর দাবি জানান।
কালবেলা:
এসিআই মোটরস-পিডি মিলেমিশে সর্বনাশ
ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি, সময় বাঁচানো এবং অধিক মুনাফা নিশ্চিতে সরকার ২০০৯ সালে চালু করে খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প। এই প্রকল্পের অধীনে ভর্তুকি মূল্যে কৃষককে কৃষি যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কৃষকরা যন্ত্রাংশ পাননি। কৃষকরা বঞ্চিত হয়েছেন, আর লাভ হয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। রাজনৈতিক প্রভাব, ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যের এসব যন্ত্রাংশ পেয়েছেন প্রভাবশালীরা। বিশেষ করে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন প্রভাবশালীর সহায়তায় এসিআই মোটরসকে যন্ত্র সরবরাহে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৯ সালে এনলিস্টেড কোম্পানির তালিকার এসিআইসহ চারটি কোম্পানি ছিল। এরপর ২০২০ সাল পর্যন্ত আর কোনো কোম্পানিকে এনলিস্টেড করতে দেওয়া হয়নি। বাকি তিনটি কোম্পানিও যাতে কাজ না পায়, সেজন্য পিডির মাধ্যমে নানা অহেতুক মানদণ্ড (ক্রাইটেরিয়া) দেওয়া হতো। এজন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বড় কর্তারা এসিআই থেকে নিয়েছেন মোটা অঙ্কের ঘুষ। এভাবেই অধিদপ্তরে বিগত হাসিনা সরকারের আমলে প্রায় একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল এসিআই মোটরসের। আর অন্য কোনো প্রতিযোগী না থাকায় দাম নির্ধারণ থেকে সবকিছুই হতো এসিআই মোটরসের নিয়ন্ত্রণে। ফলে বিভিন্ন যন্ত্রে দু-তিনগুণ দাম ধরাসহ অভিযোগ রয়েছে টাকা দিয়েও যন্ত্র না পাওয়ার। বিষয়টি ধরা পড়েছে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তদন্তেও।
গত বছরের জুনে করা ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিপিপির (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) নির্দেশনা না মানা; কারিগরি কমিটির পরামর্শ উপেক্ষা তথা অমান্য করে বেশি দরে যন্ত্রপাতি কেনা এবং নতুন আসবাবপত্র মেরামত দেখিয়ে অর্থ ব্যয় করা; বাজারদর যাচাই না করে উচ্চদরে কৃষিযন্ত্র কেনা; নিম্নশক্তির (হর্স পাওয়ার) কৃষিযন্ত্র সংগ্রহ তথা কেনা ও কৃষকদের সরবরাহ করা; নিম্নমানের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা সত্ত্বেও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের জরিমানা না করে অনিয়মিতভাবে বিল পরিশোধ করা; কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং প্রকল্পের বার্ষিক সীমার অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করার মতো অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।
দেশররুপান্তর:
ঘরে বসেই নতুন পাসপোর্ট শিরীনের
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের (এমপি) লাল পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। যারই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও জাতীয় সংসদের পদত্যাগী স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর লাল পাসপোর্টও বাতিল হয়েছে। রংপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্বর্ণশ্রমিক মুসলিম উদ্দিন (৩৮) নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি তিনি। গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে থাকা সাবেক এ স্পিকার গত ৩ অক্টোবর তার স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইনসহ ঢাকার আগারগাঁওয়ে পাসপোর্ট অফিসে সাধারণ ই-পাসপোর্ট পেতে আবেদন করেন। গত ১০ অক্টোবর তাদের আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের ছবি দেওয়ার তারিখ ছিল, যা তারা ঘরে বসেই দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অথচ ই-পাসপোর্ট আবেদনের নিয়মাবলিতে বলা আছে, সবকিছু ঘরে বসে করতে পারলেও নির্ধারিত তারিখে আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ দিতে আবেদনকারীকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। শুধু অসুস্থ ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরা পাসপোর্ট অফিসের বিশেষ সেবা মোবাইল টিমের মাধ্যমে ঘরে বসে বা হাসপাতালে থেকে এ সুবিধা নিতে পারবেন। যদিও আবেদন করার পর আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হলেও, গতকাল সোমবার পর্যন্ত শিরীন দম্পতির পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়নি বলে জানা গেছে।
সমকাল:
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন: ফলাফল জানা যাবে কবে?
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে আজ মঙ্গলবার। ইতোমধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন ৭ কোটি ৭০ লাখের বেশি ভোটার। মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ হলেও ফলাফল কবে জানা যাবে, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে অনেকের মাঝে।
মার্কিন ফেডারেল নির্বাচন ঐতিহ্যগতভাবে নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ শতকের গোঁড়ার দিকে এ তারিখ নির্ধারিত হয়। মূলত, রাজ্যগুলোতে বিভিন্ন দিনে নির্বাচন হত। কিন্তু ১৮৪৫ সালে দেশব্যাপী একই দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি আইন পাস করা হয়।
এ তারিখটি নভেম্বরের গোড়ার দিকে বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ এটি সেই সময়ে প্রধানত কৃষি সমাজের জন্য উপযোগী ছিল— ফসল কাটার পরেও ভ্রমণ-উপযোগী আবহাওয়ার কারণে।
বিভিন্ন রাজ্যে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে সকাল ৯টার মধ্যে ভোটদান শুরু হবে। বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী এটি হবে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
বেশিরভাগ ভোট কেন্দ্রগুলো রাজ্য ও কাউন্টির ওপর নির্ভর করে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হবে এবং শেষ ভোট বুধবার দিবাগত রাত ১ টায় শেষ হবে৷
সাধারণ নিয়ম হলো, যতো পশ্চিমে যাওয়া হবে, সময় অঞ্চলের পার্থক্যের কারণে দেরীতে ভোট বন্ধ হবে। সময়ের ব্যবধানের কারণে এমনও হতে দেখা যায়, পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যে ভোট গণনা শুরু হয়ে গেলেও আলাস্কা ও হাওয়াইয়ের মতো অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা তখনও ভোট দিচ্ছেন।
ভোট শেষ হওয়ার পরে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে গণনা শুরু হবে। নির্বাচনের সম্ভাব্য বিজয়ী কে, তা জানতে হয়তো কয়েকদিন অপেক্ষায় থাকতে হবে। ২০১৬ সালে অবশ্য ভোটের পরদিন সকালেই ট্রাম্পকে বিজয়ী হিসেবে স্বীকার করে নেন হিলারি ক্লিনটন।