বলিভিয়ায় একটি সামরিক ঘাঁটিতে ভয়াবহ হামলার মাধ্যমে ঘাঁটি দখল করে কমপক্ষে ২০০ সৈন্যকে অপহরণ ও জিম্মি করেছে হামলাকারীরা। সশস্ত্র এই হামলাকারীরা দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের সমর্থক। রোববার (৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় টেলিভিশনে পিঠের পেছনে বাঁধা অবস্থায় সারি সারি সৈন্যদের ছবি দেখানো হয়েছে। এসময় তাদেরকে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের বেষ্টিত অবস্থায় দেখা যায়।
বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেসের সশস্ত্র সমর্থকদের হাতে দেশটির অন্তত ২০০ সৈন্য জিম্মি রয়েছে বলে জানিয়েছে বলিভিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো জানায়, সশস্ত্র ওই গোষ্ঠীটি সামরিক ঘাঁটি থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে। তিনটি সামরিক ইউনিটে ওই সশস্ত্র গোষ্ঠী আক্রমণ করে। শুক্রবার (১ নভেম্বর) বলিভিয়ার সামরিক বাহিনী জানায়, সশস্ত্র ওই দলটি বলিভিয়ার কোচাবাম্বা শহরের কাছে একটি সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
মূলত কোচাবাম্বা শহরটি মধ্য বলিভিয়ায় অবস্থিত এবং সেখানে সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মেরালেসের অনেক সমর্থক বাস করেন। এছাড়া সামরিক স্থাপনাটি সশস্ত্র গোষ্ঠী নিজেদের দখলে নেওয়ার পরপরই দেশটির সামরিক বাহিনী সৈন্যদের এবং তাদের পরিবারদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয় বলে স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে।
বলিভিয়ার বার্তাসংস্থা এএনএফ জানিয়েছে, এই স্থাপনায় থাকা বন্দি সৈন্যদের মধ্যে একজন তার কমান্ড সেন্টারে পাঠানো এক বার্তায় বলেছেন- সশস্ত্র দলটি কর্তৃপক্ষকে (দেশে চলমান) অবরোধে হস্তক্ষেপ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে। মোরালেসের সমর্থকরা গত ১৯ দিন ধরে সারা দেশে অবরোধ তৈরি করেছে। সাবেক এই প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং মানব পাচারের অভিযোগে তদন্ত বন্ধ করার দাবি করছেন তারা। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোরালেস।
এর আগে গত রোববার মোরালেস তার গাড়িতে গুলিবর্ষণের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। আর এটিকে তাকে হত্যার চেষ্টা বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। তবে বলিভিয়ার সরকার মোরালেসের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ইভো মোরালেস ২০০৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু নির্বাচন জালিয়াতির অভিযোগে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরে তিনি পদত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইস আর্সের অনুসারীদের সঙ্গে মোরালেসের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। উভয় ব্যক্তিই দেশটির ২০২৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন মাস দলের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান।