সিরিয়া এবং লেবাননের সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামাসের সাথে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার তীব্র আশঙ্কার মাঝে সোমবার এই হামলা চালানোর দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
সোমবার সকালের দিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় রকেট লঞ্চার এবং লেবাননে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি ভূখণ্ডে রকেট হামলার জবাবে সিরিয়া এবং লেবাননে হামলার এই দাবি করেছে ইসরায়েল। সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিরীয় শহর দারার কয়েকটি সামরিক চৌকিতে বিমান হামলা হয়েছে। এতে সামরিক চৌকির কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থানীয় সময় রোববার রাত ১টা ৩৫মিনিটের দিকে ইসরায়েলের দখলকৃত সিরিয়ার গোলান মালভূমি থেকে দারায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর দুটি অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সাথে আন্তঃসীমান্ত সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর সিরিয়া ও লেবাননে প্রায়ই বিমান হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল।
সিরিয়া ও ইরাকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ঘাঁটিতে একাধিকবার ড্রোন হামলা হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রও সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়েছে। ওই অঞ্চলে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়াগোষ্ঠীগুলো মার্কিন সৈন্য ও ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পেন্টাগন। বৃহস্পতিবার পেন্টাগন জানায়, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মার্কিন সৈন্যদের ওপর হামলার জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর তারা ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ও ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়াদের ব্যবহৃত সিরিয়ার দুটি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।
এদিকে, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ না করলে আঞ্চলিক সংঘাত তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকলে মুসলিম ও প্রতিরোধ যোদ্ধারা ধৈর্য্যহীন হয়ে উঠবেন এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া থেকে কেউ তাদের থামাতে পারবেন না।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, ইসরায়েল যদি গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ না করে তাহলে এই সংঘাত ‘মধ্যপ্রাচ্যের সীমানা ছাড়িয়ে’ অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। রোববার এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ ‘বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতে’ পরিণত হওয়ার বাস্তব ঝুঁকি রয়েছে।