ঢাকা ০৩:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে যেসব কারণ উল্লেখ করেছে সরকার

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৮:৩৬:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • 59

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বুধবার (২৪ অক্টোবর) রাতে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ‘হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী’ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ বিষয়ে প্রামাণ্য তথ্য দেশের সকল প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের অপরাধ আদালতে প্রমাণিতও হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে ‘উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ’ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করেছে। আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে।

পরবর্তী সময়ে ‘৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যের’ সঙ্গে জড়িত বলে সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

এসব কারণ দেখিয়ে ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’-এর ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং এই ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এই মুহূর্তে খবর এলো, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হলো; মুহূর্তে খবর এলো, সন্ত্রাসী লীগ নিষিদ্ধ হলো; হৈ হৈ রৈ রৈ, সন্ত্রাস লীগ গেলি কই; এই মুহূর্তে খবর এলো, ক্যাম্পাস সন্ত্রাসমুক্ত হলো- ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে প্রতিষ্ঠিত হয় ছাত্রলীগ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাঙালির স্বাধিকারের বিভিন্ন আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এই ছাত্র সংগঠন। তবে সময়ের পরিক্রমায় ছাত্রলীগ একাধিক ধারায় বিভক্ত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিজেদের মধ্যে দলাদলি, অন্তঃকোন্দল, হামলা-মারামারি, খুন, শিক্ষার্থী নির্যাতন, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা কারণে ছাত্রলীগের সমালোচনা হয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আন্দোলন নিরসনে আমরা কঠোর হতে চাই না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে যেসব কারণ উল্লেখ করেছে সরকার

আপডেট সময় ০৮:৩৬:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বুধবার (২৪ অক্টোবর) রাতে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ‘হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী’ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ বিষয়ে প্রামাণ্য তথ্য দেশের সকল প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের অপরাধ আদালতে প্রমাণিতও হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে ‘উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ’ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করেছে। আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে।

পরবর্তী সময়ে ‘৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যের’ সঙ্গে জড়িত বলে সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

এসব কারণ দেখিয়ে ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’-এর ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং এই ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এই মুহূর্তে খবর এলো, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হলো; মুহূর্তে খবর এলো, সন্ত্রাসী লীগ নিষিদ্ধ হলো; হৈ হৈ রৈ রৈ, সন্ত্রাস লীগ গেলি কই; এই মুহূর্তে খবর এলো, ক্যাম্পাস সন্ত্রাসমুক্ত হলো- ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে প্রতিষ্ঠিত হয় ছাত্রলীগ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাঙালির স্বাধিকারের বিভিন্ন আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এই ছাত্র সংগঠন। তবে সময়ের পরিক্রমায় ছাত্রলীগ একাধিক ধারায় বিভক্ত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিজেদের মধ্যে দলাদলি, অন্তঃকোন্দল, হামলা-মারামারি, খুন, শিক্ষার্থী নির্যাতন, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা কারণে ছাত্রলীগের সমালোচনা হয়েছে।