ঢাকা ০৫:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ ইস্যু

সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় সংকট চায় না বিএনপি

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:২১:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • 45

আজকের প্রত্রিকার প্রধান প্রধান খবর

কালের কন্ঠ:

সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় সংকট চায় না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবিকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি। দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে কিংবা তিনি অপসারিত হলে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হতে পারে। ফলে কোনোভাবেই দেশে যাতে নতুন করে কোনো সাংবিধানিক কিংবা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। এদিকে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে বিএনপি।
গত মঙ্গলবার রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের ভার্চুয়াল বৈঠকে এই অভিমত উঠে আসে। এরপর গতকাল বুধবার স্পর্শকাতর এই বিষয়টিকে নিয়ে দলটি তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মন্তব্য ঘিরে পরিস্থিতি নতুন মোড় নেয়।

রাষ্ট্রপতির মন্তব্যের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের অনেকেই তাঁর বিদায় চাইলেও আইন ও সংবিধান অনুযায়ী তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুযোগ আছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। একই প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি।
এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিনজন সদস্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা দলের অবস্থান প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।

মানবজমিন:

ডানা’র প্রভাব পড়বে বাংলাদেশেও

বঙ্গোপসাগরে ফুঁসছে ঘূর্ণিঝড় ডানা। শক্তি সঞ্চয় করে ক্রমেই এগিয়ে আসছে ভারতের ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলের দিকে। ডানায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ। তবে এই ঝড়ের প্রভাব পড়বে বাংলাদেশেও। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ডানা’র যে গতি-প্রকৃতি, তাতে এর আছড়ে পড়ার সম্ভাব্য এলাকা ভারতের ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূল। তবে বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর ওপর ডানার প্রভাব পড়তে পারে। যদিও ঘূর্ণিঝড়টি ঠিক কোথায় আঘাত হানতে পারে, তা নিশ্চিত করে বলার সময় এখনো আসেনি।

এদিকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১৮ অঞ্চলের নদীবন্দরে সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এসব অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির আভাস দিয়েছে সংস্থাটি। বুধবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরসমূহের জন্য দেয়া পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়া অফিস জানায়, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম বা পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আরেক বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা, ট্রলারগুলোকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

প্রথম আলো:

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করল সরকার
● ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

● প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, স্বাধীনতা–পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরে হত্যাসহ নানা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল ছাত্রলীগ।

● ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের সশস্ত্র আক্রমণে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির দাবির মুখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত হলো।

গতকাল বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ-যৌন নিপীড়নসহ নানা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ সম্পর্কে প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

রাজনৈতিক ঐক্য হলে রাষ্ট্রপতি অপসারণ
♦ নতুন সাংবিধানিক শূন্যতা চায় না বিএনপি ♦ রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে সিদ্ধান্ত হয়নি : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবরাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে চাপ বাড়লেও এটি নিয়ে মাঠ গরম হোক তা চাইছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এ ইস্যুতে কোনো সাংবিধানিক জটিলতা চাইছেন না নীতিনির্ধারকেরা। সরকারের এ ধরনের অবস্থান নিতে ভূমিকা রাখছে রাজনৈতিক দলগুলো। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিও চাইছে না রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে নতুন কোনো সাংবিধানিক শূন্যতা বা দেশে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হোক।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, কবর জিয়ারত (রাষ্ট্রের লঘু কাজ) ছাড়া রাষ্ট্রপতির আর কোনো কাজ আছে বলে তো মনে করি না। তিনি তা করুন। তার অপসারণ নিয়ে এত চিন্তার কিছু নাই। রাজনৈতিক দলগুলো চাইলে প্রেসিডেন্টের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে মঙ্গলবার দিনভর বঙ্গভবন, শহীদ মিনারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভের পর গতকাল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক করেন মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এবং পুলিশের মহাপরিদর্শকের সঙ্গেও। তবে এসব বৈঠকের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুটি জড়িত কি না সেটি স্পষ্ট করেননি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এবং বিএনপি।

নয়াদিগন্ত:

বিএনপির পর জামায়াতের রিভিউ আবেদন
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদনের (রিভিউ) ওপর আজ বৃহস্পতিবার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলার এ রিভিউ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চের বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় ৪২ নম্বরে এই রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য রয়েছে।
এ দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন (রিভিউ) করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। গতকাল বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। জামায়াতে ইসলামীর আবেদনটি বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য ঠিক করা হয়েছে।

এর আগে গত ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো: রেজাউল হক এ বিষয়ে করা দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর দিন ঠিক করেন।আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, শরীফ ভূঁইয়া ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

গত ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আবেদনে ১০টি যুক্তি উত্থাপন করা হয়েছে। ৮০৭ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক স্তম্ভ ধ্বংস করা হয়েছে। এই বিধান বাতিলের পর ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে নজিরবিহীন কারচুপির মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। ফলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে। একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির কাঁধে ফ্যাসিবাদ জেঁকে বসে।

এর আগে গত ২৫ আগস্ট পাঁচজন বিশিষ্ট নাগরিকও রিভিউ চেয়ে আরেকটি আবেদন করেছিলেন। তারা হলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ। এ আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। তবে পরবর্তী দুটি সংসদ নির্বাচন অর্থাৎ ১০ম ও ১১তম নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে অভিমত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল আদালত। কিন্তু লিখিত রায়ে পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে বলে আপিল বিভাগ যে আদেশ দিয়েছিলেন তা আর রাখেননি বিচারপতি খায়রুল হক।

 

দৈনিক সংগ্রাম:

রাষ্ট্রপতিকে বিদায় নিতেই হচ্ছে

মোহাম্মদ জাফর ইকবাল: রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ভাগ্য এখন ‘হতে পারে আবার নাও হতে পারে, এর মধ্যে রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তার পদত্যাগে দাবি জানিয়ে আল্টিমেটাম দিয়ে রেখেছে। একই সাথে সরকারের সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, তাকে সরে যেতে হবে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, এই মুহূর্তে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে সাংবিধানিক শূন্যতা দেখা দেয়। আর এর সুবিধা কোনো তৃতীয় পক্ষ নিয়ে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রপতিকে সরে যেতেই হবে। তবে কীভাবে সরে যাবেন সেটিই আলোচ্য বিষয়। তিনি কি দাবির মুখে পদত্যাগ করবেন, নাকি তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে, সেটাই এখন প্রশ্ন।

সূত্র মতে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদচ্যুতি ও দেশত্যাগের পর তার মনোনীত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন স্বপদে থাকতে পারেন কি না, বিতর্কটা তখনই উঠেছিল। তবে সেই সময়ে আন্দোলনে বিজয়ী শক্তির মনোনীত উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক বিতর্ক এড়িয়ে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিয়েছিলেন। ৮ আগস্ট রাষ্ট্রপতির কাছেই শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শপথ নেন। এর দুইদিন আগে রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেছিলেন, পালিয়ে যাওয়ার আগে শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র দিয়ে গেছেন এবং সেটি তিনি গ্রহণ করেছেন।

দেশরুপান্তর:

যেভাবে সরে যেতে পারেন, যেভাবে সরানো সম্ভব
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে এখন দেশ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ইতিমধ্যে কয়েকটি সংগঠন তাকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছে। তিনি পদত্যাগ করলে কীভাবে করবেন, কিংবা তাকে সরিয়ে দেওয়া হলে সে প্রক্রিয়াই-বা কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

সংবিধান ও আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় সংসদ রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসন করতে পারলেও সংসদ না থাকায় এখন সে সুযোগও নেই। পদ ছাড়লে তাকে পদত্যাগপত্র দিতে হবে স্পিকারের কাছে। যেহেতু স্পিকার পদত্যাগ করেছেন এবং ডেপুটি স্পিকার কারাগারে আছেন, তাই সেই সুযোগও এখন তার নেই।তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর সংবিধানের বিষয়টি এখন গৌণ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ (বিশেষ পরিস্থিতির নীতি)। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ কিংবা নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতিই কাজ করবে বলে মনে করেন তারা। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সংবিধান বিশ্লেষক ড. শাহদীন মালিক মনে করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংবিধান অনুযায়ী অনেক কিছুই হচ্ছে না। তাই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, অপসারণ কিংবা নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ সংবিধান মেনে হবে না। দেশ রূপান্তরকে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের দাবির মুখে প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বেশ কয়েকজন বিচারক পদত্যাগ করেছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে হাইকোর্টের ১২ জন বিচারককে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এখন তারা যেটা সঠিক মনে করছে, সেই দাবি করছে এবং সেই দাবি মেনে নিয়ে অনেকেই পদত্যাগ করছেন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এটা স্পষ্ট যে, ছাত্র-জনতা যদি জোরালো দাবি করে তাহলে অতীতের মতো পদধারীরা যেভাবে পদত্যাগ করেছেন, এখানেও সেভাবেই হবে। এখানে নতুনত্বের আর কী আছে?’

সমকাল:

১৪ দলীয় জোটের ভবিষ্যৎ‘অন্ধকার’

ছন্দ হারিয়েছে ১৪ দল। গণঅভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালানোর পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন এই জোটটির ‘অস্তিত্ব’ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। আচকা ক্ষমতা হারিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেই ধুঁকছে। জোটের অন্য শরিক দলেও নেমে এসেছে বিপর্যয়। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে কোনো কোনো শরিক দলে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এই মুহূর্তে জোটের সব দলই নিজেদের রাজনৈতিক ‘সত্তা’ টিকিয়ে রাখার প্রাণপণ লড়াইয়ে। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী আড়াই মাস এসব দল রাজনৈতিকভাবে কার্যত বিচ্ছিন্ন ও নিষ্ক্রিয়। সব মিলিয়ে ১৪ দলীয় জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার সময় নেই কারও।

এদিকে কয়েকটি শরিক দল চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে বিবৃতি কিংবা ঘরোয়া বৈঠক করে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ‘গণরোষের ভয়ে’ কোনো দলই নামছে না মাঠের কর্মসূচিতে। এরই মধ্যে ১৪ দলীয় জোটের প্রভাবশালী দুই শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু জুলাই-আগস্টে সংঘটিত একাধিক হত্যা মামলার আসামি হয়ে কারাবন্দি। দুর্নীতি-লুটপাটের নানা অভিযোগ ওঠায় এ দুই সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতিও রয়েছে সরকার ও দুদকের। পাশাপাশি হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি হয়ে শরিক দলের শীর্ষ নেতাসহ সারাদেশের বেশির ভাগ নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

কালবেলা:

তত্ত্বাবধায়ক ফেরাতে রিভিউ শুনানি আজ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা পৃথক তিনটি আবেদনের ওপর আজ বৃহস্পতিবার শুনানি হতে পারে। আবেদনগুলো প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের আজকের দৈনন্দিন কার্যতালিকার ৪২ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। রিভিউ আবেদনগুলো করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এম সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী রিট করলে হাইকোর্ট এ ব্যবস্থা বাতিল করেন। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হলে শুনানি শেষে ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পরবর্তী দশম ও একাদশ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। রায়ে বলা হয়, ‘এ ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।’

আদালত তার রায়ে বলেন, ‘আপিল বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই আবেদনটি গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধনী) আইন ১৯৯৬ এই নির্দেশের পর থেকে অবৈধ ও সংবিধান বহির্ভূত ঘোষণা করা হলো। তবে আইনসম্মত না হলেও (প্রয়োজনের কারণে আইনসম্মত এবং জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন—সুপ্রাচীনকাল ধরে চলে আসা নীতিমালার ভিত্তিতে) দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করা ত্রয়োদশ সংশোধনীর আওতায়ই হতে পারে।’

 

জনপ্রিয় সংবাদ

শপথ নিলেন নতুন সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার

রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ ইস্যু

সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় সংকট চায় না বিএনপি

আপডেট সময় ০৭:২১:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

আজকের প্রত্রিকার প্রধান প্রধান খবর

কালের কন্ঠ:

সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় সংকট চায় না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবিকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি। দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে কিংবা তিনি অপসারিত হলে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হতে পারে। ফলে কোনোভাবেই দেশে যাতে নতুন করে কোনো সাংবিধানিক কিংবা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। এদিকে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে বিএনপি।
গত মঙ্গলবার রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের ভার্চুয়াল বৈঠকে এই অভিমত উঠে আসে। এরপর গতকাল বুধবার স্পর্শকাতর এই বিষয়টিকে নিয়ে দলটি তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মন্তব্য ঘিরে পরিস্থিতি নতুন মোড় নেয়।

রাষ্ট্রপতির মন্তব্যের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের অনেকেই তাঁর বিদায় চাইলেও আইন ও সংবিধান অনুযায়ী তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুযোগ আছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। একই প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি।
এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিনজন সদস্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা দলের অবস্থান প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।

মানবজমিন:

ডানা’র প্রভাব পড়বে বাংলাদেশেও

বঙ্গোপসাগরে ফুঁসছে ঘূর্ণিঝড় ডানা। শক্তি সঞ্চয় করে ক্রমেই এগিয়ে আসছে ভারতের ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলের দিকে। ডানায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ। তবে এই ঝড়ের প্রভাব পড়বে বাংলাদেশেও। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ডানা’র যে গতি-প্রকৃতি, তাতে এর আছড়ে পড়ার সম্ভাব্য এলাকা ভারতের ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূল। তবে বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর ওপর ডানার প্রভাব পড়তে পারে। যদিও ঘূর্ণিঝড়টি ঠিক কোথায় আঘাত হানতে পারে, তা নিশ্চিত করে বলার সময় এখনো আসেনি।

এদিকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১৮ অঞ্চলের নদীবন্দরে সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এসব অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির আভাস দিয়েছে সংস্থাটি। বুধবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরসমূহের জন্য দেয়া পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়া অফিস জানায়, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম বা পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আরেক বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা, ট্রলারগুলোকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

প্রথম আলো:

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করল সরকার
● ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

● প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, স্বাধীনতা–পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরে হত্যাসহ নানা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল ছাত্রলীগ।

● ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের সশস্ত্র আক্রমণে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির দাবির মুখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত হলো।

গতকাল বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ-যৌন নিপীড়নসহ নানা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ সম্পর্কে প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

রাজনৈতিক ঐক্য হলে রাষ্ট্রপতি অপসারণ
♦ নতুন সাংবিধানিক শূন্যতা চায় না বিএনপি ♦ রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে সিদ্ধান্ত হয়নি : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবরাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে চাপ বাড়লেও এটি নিয়ে মাঠ গরম হোক তা চাইছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এ ইস্যুতে কোনো সাংবিধানিক জটিলতা চাইছেন না নীতিনির্ধারকেরা। সরকারের এ ধরনের অবস্থান নিতে ভূমিকা রাখছে রাজনৈতিক দলগুলো। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিও চাইছে না রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে নতুন কোনো সাংবিধানিক শূন্যতা বা দেশে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হোক।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, কবর জিয়ারত (রাষ্ট্রের লঘু কাজ) ছাড়া রাষ্ট্রপতির আর কোনো কাজ আছে বলে তো মনে করি না। তিনি তা করুন। তার অপসারণ নিয়ে এত চিন্তার কিছু নাই। রাজনৈতিক দলগুলো চাইলে প্রেসিডেন্টের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে মঙ্গলবার দিনভর বঙ্গভবন, শহীদ মিনারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভের পর গতকাল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক করেন মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এবং পুলিশের মহাপরিদর্শকের সঙ্গেও। তবে এসব বৈঠকের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুটি জড়িত কি না সেটি স্পষ্ট করেননি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এবং বিএনপি।

নয়াদিগন্ত:

বিএনপির পর জামায়াতের রিভিউ আবেদন
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদনের (রিভিউ) ওপর আজ বৃহস্পতিবার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলার এ রিভিউ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চের বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় ৪২ নম্বরে এই রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য রয়েছে।
এ দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন (রিভিউ) করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। গতকাল বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। জামায়াতে ইসলামীর আবেদনটি বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য ঠিক করা হয়েছে।

এর আগে গত ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো: রেজাউল হক এ বিষয়ে করা দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর দিন ঠিক করেন।আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, শরীফ ভূঁইয়া ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

গত ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আবেদনে ১০টি যুক্তি উত্থাপন করা হয়েছে। ৮০৭ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক স্তম্ভ ধ্বংস করা হয়েছে। এই বিধান বাতিলের পর ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে নজিরবিহীন কারচুপির মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। ফলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে। একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির কাঁধে ফ্যাসিবাদ জেঁকে বসে।

এর আগে গত ২৫ আগস্ট পাঁচজন বিশিষ্ট নাগরিকও রিভিউ চেয়ে আরেকটি আবেদন করেছিলেন। তারা হলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ। এ আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। তবে পরবর্তী দুটি সংসদ নির্বাচন অর্থাৎ ১০ম ও ১১তম নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে অভিমত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল আদালত। কিন্তু লিখিত রায়ে পরবর্তী দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে বলে আপিল বিভাগ যে আদেশ দিয়েছিলেন তা আর রাখেননি বিচারপতি খায়রুল হক।

 

দৈনিক সংগ্রাম:

রাষ্ট্রপতিকে বিদায় নিতেই হচ্ছে

মোহাম্মদ জাফর ইকবাল: রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ভাগ্য এখন ‘হতে পারে আবার নাও হতে পারে, এর মধ্যে রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তার পদত্যাগে দাবি জানিয়ে আল্টিমেটাম দিয়ে রেখেছে। একই সাথে সরকারের সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, তাকে সরে যেতে হবে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, এই মুহূর্তে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে সাংবিধানিক শূন্যতা দেখা দেয়। আর এর সুবিধা কোনো তৃতীয় পক্ষ নিয়ে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রপতিকে সরে যেতেই হবে। তবে কীভাবে সরে যাবেন সেটিই আলোচ্য বিষয়। তিনি কি দাবির মুখে পদত্যাগ করবেন, নাকি তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে, সেটাই এখন প্রশ্ন।

সূত্র মতে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদচ্যুতি ও দেশত্যাগের পর তার মনোনীত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন স্বপদে থাকতে পারেন কি না, বিতর্কটা তখনই উঠেছিল। তবে সেই সময়ে আন্দোলনে বিজয়ী শক্তির মনোনীত উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক বিতর্ক এড়িয়ে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিয়েছিলেন। ৮ আগস্ট রাষ্ট্রপতির কাছেই শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শপথ নেন। এর দুইদিন আগে রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেছিলেন, পালিয়ে যাওয়ার আগে শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র দিয়ে গেছেন এবং সেটি তিনি গ্রহণ করেছেন।

দেশরুপান্তর:

যেভাবে সরে যেতে পারেন, যেভাবে সরানো সম্ভব
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে এখন দেশ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ইতিমধ্যে কয়েকটি সংগঠন তাকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছে। তিনি পদত্যাগ করলে কীভাবে করবেন, কিংবা তাকে সরিয়ে দেওয়া হলে সে প্রক্রিয়াই-বা কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

সংবিধান ও আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় সংসদ রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসন করতে পারলেও সংসদ না থাকায় এখন সে সুযোগও নেই। পদ ছাড়লে তাকে পদত্যাগপত্র দিতে হবে স্পিকারের কাছে। যেহেতু স্পিকার পদত্যাগ করেছেন এবং ডেপুটি স্পিকার কারাগারে আছেন, তাই সেই সুযোগও এখন তার নেই।তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর সংবিধানের বিষয়টি এখন গৌণ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ (বিশেষ পরিস্থিতির নীতি)। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ কিংবা নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতিই কাজ করবে বলে মনে করেন তারা। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সংবিধান বিশ্লেষক ড. শাহদীন মালিক মনে করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংবিধান অনুযায়ী অনেক কিছুই হচ্ছে না। তাই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, অপসারণ কিংবা নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ সংবিধান মেনে হবে না। দেশ রূপান্তরকে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের দাবির মুখে প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বেশ কয়েকজন বিচারক পদত্যাগ করেছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে হাইকোর্টের ১২ জন বিচারককে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এখন তারা যেটা সঠিক মনে করছে, সেই দাবি করছে এবং সেই দাবি মেনে নিয়ে অনেকেই পদত্যাগ করছেন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এটা স্পষ্ট যে, ছাত্র-জনতা যদি জোরালো দাবি করে তাহলে অতীতের মতো পদধারীরা যেভাবে পদত্যাগ করেছেন, এখানেও সেভাবেই হবে। এখানে নতুনত্বের আর কী আছে?’

সমকাল:

১৪ দলীয় জোটের ভবিষ্যৎ‘অন্ধকার’

ছন্দ হারিয়েছে ১৪ দল। গণঅভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালানোর পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন এই জোটটির ‘অস্তিত্ব’ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। আচকা ক্ষমতা হারিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেই ধুঁকছে। জোটের অন্য শরিক দলেও নেমে এসেছে বিপর্যয়। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে কোনো কোনো শরিক দলে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এই মুহূর্তে জোটের সব দলই নিজেদের রাজনৈতিক ‘সত্তা’ টিকিয়ে রাখার প্রাণপণ লড়াইয়ে। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী আড়াই মাস এসব দল রাজনৈতিকভাবে কার্যত বিচ্ছিন্ন ও নিষ্ক্রিয়। সব মিলিয়ে ১৪ দলীয় জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার সময় নেই কারও।

এদিকে কয়েকটি শরিক দল চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে বিবৃতি কিংবা ঘরোয়া বৈঠক করে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ‘গণরোষের ভয়ে’ কোনো দলই নামছে না মাঠের কর্মসূচিতে। এরই মধ্যে ১৪ দলীয় জোটের প্রভাবশালী দুই শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু জুলাই-আগস্টে সংঘটিত একাধিক হত্যা মামলার আসামি হয়ে কারাবন্দি। দুর্নীতি-লুটপাটের নানা অভিযোগ ওঠায় এ দুই সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতিও রয়েছে সরকার ও দুদকের। পাশাপাশি হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি হয়ে শরিক দলের শীর্ষ নেতাসহ সারাদেশের বেশির ভাগ নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

কালবেলা:

তত্ত্বাবধায়ক ফেরাতে রিভিউ শুনানি আজ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা পৃথক তিনটি আবেদনের ওপর আজ বৃহস্পতিবার শুনানি হতে পারে। আবেদনগুলো প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের আজকের দৈনন্দিন কার্যতালিকার ৪২ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। রিভিউ আবেদনগুলো করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এম সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী রিট করলে হাইকোর্ট এ ব্যবস্থা বাতিল করেন। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হলে শুনানি শেষে ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পরবর্তী দশম ও একাদশ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। রায়ে বলা হয়, ‘এ ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।’

আদালত তার রায়ে বলেন, ‘আপিল বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই আবেদনটি গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধনী) আইন ১৯৯৬ এই নির্দেশের পর থেকে অবৈধ ও সংবিধান বহির্ভূত ঘোষণা করা হলো। তবে আইনসম্মত না হলেও (প্রয়োজনের কারণে আইনসম্মত এবং জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন—সুপ্রাচীনকাল ধরে চলে আসা নীতিমালার ভিত্তিতে) দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করা ত্রয়োদশ সংশোধনীর আওতায়ই হতে পারে।’