ঢাকা ০৭:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সিরাজগঞ্জ  ১০০ প্রতিবন্ধীকে হুইল চেয়ার ও ১০০ শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুলব্যাগসহ শিক্ষা উপকরণ বিতরণ Logo বিনা সুদে লাখ টাকা ঋণের নামে সমাবেশের হোতা মোস্তফা আটক Logo প্রথম আলো অফিসের সামনে আবারও আন্দোলনকারীদের অবস্থান Logo যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন Logo শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে মোল্লা কলেজের ৩ জন নিহত Logo ডেমরা-যাত্রাবাড়ীতে তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের ভয়াবহ সংঘর্ষ Logo আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অ্যাকশনে গেলে আরও রক্তপাত হতো: আসিফ Logo ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে: হাইকোর্টের আদেশে স্থিতাবস্থা Logo বাংলাদেশে আলু-পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের Logo মামলা না নিলে ওসিকে এক মিনিটে বরখাস্ত করে দেবো: ডিএমপি কমিশনার

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যু, দিনভর দেশজুড়ে তোলপাড়

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:৩১:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • 40

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

যুগান্তর:

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যু, দিনভর দেশজুড়ে তোলপাড়
‘শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এর দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই’-রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এমন বক্তব্যে দেশজুড়ে তোলপাড় অবস্থা বিরাজ করছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যকে ‘স্ববিরোধী’ ও ‘মিথ্যাচার’ বলেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এটা হচ্ছে রাষ্ট্রপতির শপথ লঙ্ঘনের শামিল। তিনি যদি তার বক্তব্যে অটল থাকেন, তাহলে তার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না, সেটি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় ভেবে দেখতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক মশাল মিছিল থেকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি তোলা হয়। অন্যদিকে আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংসদ বাতিলের পর প্রধানমন্ত্রীর পদ আর থাকে না, এখন এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। এদিকে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মীমাংসিত বিষয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত না করার আহ্বান জানানো হয়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার পদত্যাগের কথা প্রথমে জানান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সেদিন রাতেই বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানকে পেছনে রেখে জাতির উদ্দেশে ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণের কথা জানিয়েছিলেন। এ ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। এতদিন পর আবার আলোচনায় এসেছে শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়টি।

প্রথম আলো:

চাল তেল চিনি ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে
এক সপ্তাহে বাজারে ডিমের দাম কমেছে; কিন্তু বেড়েছে চারটি পণ্যের দাম।বাজারে এক সপ্তাহে একটি পণ্যের দাম কমেছে, বেড়েছে চারটির। দাম কমার তালিকায় আছে শুধু ডিম। নতুন করে মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজের।

চারটি পণ্যের দাম আরও বাড়ল এমন এক সময়ে, যখন বাজারে কোনো স্বস্তি নেই। এই চার পণ্য কেনা ছাড়া সংসারও চলে না। পণ্যগুলোর দাম কমাতে সরকার শুল্ক–করে ছাড় দিয়েছে; কিন্তু এর সুফল এখনো বাজারে পড়েনি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুল্কছাড়ের পণ্য এখনো বাজারে আসেনি। বিশ্ববাজারেও দাম বাড়ছে। অন্যদিকে বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, শুল্ক কমানোর সঙ্গে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে হবে, তাহলে প্রভাব পড়বে। দাম যাতে কমে, সে বিষয়ে নজরদারিও দরকার।

চালের দাম বাড়ছে

নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে চাপে পড়ে চালের দাম বাড়লে। দেশে দু-তিন বছর ধরেই চালের দাম বেশ চড়া। এ সপ্তাহে খুচরা বাজারে মাঝারি ও সরু চালের দাম কেজিতে ১–৩ টাকা বেড়েছে। বেশি বেড়েছে মাঝারি চালের দাম, যার ক্রেতা স্বল্প আয়ের মানুষ।

ঢাকার কারওয়ান বাজার ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল সোমবার মাঝারি মানের ব্রি-২৮ চাল বিক্রি হয়েছে ৬১-৬২ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৮-৫৯ টাকা। ব্রি-২৯ চাল কেনা যাচ্ছে ৬২-৬৪ টাকা কেজি। এ চালের দামও কেজিতে ৩ টাকা বেড়েছে। সরু চালের মধ্যে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের দাম কেজিতে ১–২ টাকা বেড়েছে। রশিদ, ডায়মন্ডসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট প্রতি কেজি ৭০–৭২ টাকা এবং ভালো মানের নাজিরশাইল ৮০ টাকা বা তার বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের কেজি ৫২–৫৫ টাকা। এ ক্ষেত্রে দাম বাড়েনি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডিজিটালাইজেশন
♦ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকে চার সিদ্ধান্ত ♦ সাক্ষাৎ করলেন নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূতদুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডিজিটালাইজেশনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।

বৈঠকে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে-বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলে সব সরকারি কর্মকর্তার জন্য ই-রিটার্ন পোর্টালের মাধ্যমে কর বিবরণী দাখিল বাধ্যতামূলক করা এবং বড় করপোরেশনগুলোকে তাদের পুরো সংস্থায় ই-রিটার্ন গ্রহণ করতে উৎসাহিত করা। অন্যান্য সিদ্ধান্তের মধ্যে ছিল সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ নিশ্চিত করা, একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রোডম্যাপ এবং ভূমিসংশ্লিষ্ট সেবার জন্য বাস্তবায়ন সময়সূচি নির্ধারণ করা। বৈঠকে ডিজিটালাইজেশন সম্পর্কে জাতীয় পর্যায়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালু করার (ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো) প্রকল্পকে ডিজিটালাইজেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি এনবিআরের এক দরজায় সব সেবামাধ্যমে বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করার ওপর নতুন করে জোর দেওয়া হয়। বৈঠকে দ্রুত ডিজিটালব্যবস্থা তৈরির লক্ষ্যে অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা হয়। ডিজিটালাইজেশনের বিষয়ে দেশব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর সিদ্ধান্তও সভায় গৃহীত হয়। একই সঙ্গে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্পের মাধ্যমে এনবিআরকে ডিজিটালাইজেশন করে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করার ওপর নতুন করে জোর দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

কালের কন্ঠ:

পালিয়ে যাওয়াটাই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র না থাকা নিয়ে গণমাধ্যমকে দেওয়া রাষ্ট্রপতির বক্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে কোনো সংকট তৈরি করে কি না জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এম এ মতিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোনো সংকট হবে না। পদত্যাগপত্র দিতে হবে আগের (গত ৫ আগস্টের আগের) সংবিধান অনুযায়ী। আগের সংবিধান লঙ্ঘন করেই তো বিপ্লব হয়েছে। বিপ্লব যখন সফল হয়ে গেল, তখন আগের সংবিধান এখন আর নেই।

ততটুকু থাকবে, যতটুকু তারা গ্রহণ করবে।’
কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার তো বিদ্যমান সংবিধানের অধীনেই শপথ নিয়েছে, এমন প্রশ্নে সাবেক এই বিচারপতি বলেন, ‘এই শপথ নেওয়ার মানে হচ্ছে আগের সংবিধানের এই সংক্রান্ত বিধান তারা অ্যাডাপট (আত্মীকরণ) করছে বা গ্রহণ করেছে। এটা তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) নিতেই (শপথ) পারে। উনি (সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তো সংবিধান অনুযায়ী যাননি (ক্ষমতা থেকে)।

নয়াদিগন্ত:

এস আলম ও সাইফুজ্জামানের সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া শুরু
পাচারের অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে এস আলম ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের দেশে-বিদেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ)। ইতোমধ্যে বিদেশে থাকা পাচারের সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এরই ভিত্তিতে দেশের উচ্চ আদালত থেকে এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হতে পারে। এ নির্দেশনার আলোকেই দেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। একই সাথে বিদেশেও নিয়োগকৃত ফার্মের মাধ্যমে সম্পদ বাজেয়াপ্তের আবেদন করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রথমে দুইটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এর পরের ধাপে আরো তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে। তৃতীয় ধাপে আরো পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাচার হওয়া সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

দৈনিক সংগ্রাম:

র‌্যাব-ডিবির বিরুদ্ধে অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
১৭ বছর আগে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৬ কর্মীকে গুমের অভিযোগে র‌্যাব-ডিবির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছে তাদের পরিবার।

গতকাল সোমবার সকালে প্রসিকিউশন কার্যালয়ে অভিযোগটি দাখিল করা হয়। পরে ছাত্রশিবিরের আইন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান ও আইনজীবী আমানুল্লাহ আদিব সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

আইনজীবীরা জানান, গত ১৭ বছর ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার। মামলা-হামলা, হত্যাসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬ জন এখনও গুম আছেন। ওই ছয়জনকে খুঁজতে ৬ আগস্ট র‌্যাব সদর দপ্তরে গিয়েছিল পরিবারের সদস্যরা। কর্তৃপক্ষ তাদের সহযোগিতা করবে বলে জানালেও এখনও কোনো তথ্য দিতে পারেনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গুম হওয়া ৬ নেতাকর্মীর সন্ধান ও র‌্যাব-ডিবির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছে তাদের পরিবার।

গুমের শিকার শিবিরকর্মী রিজওয়ান হোসেনের ভাই জানান, ২০১৬ সালের আগস্টে আমার ভাইকে সবার সামনেই বাইকে করে তুলে নিয়ে যান এসআই নূর আলম ও তার একজন লোক। আমরা তৎক্ষণাৎ থানায় গেলে ওসি অপূর্ব হাসান আমাদের বলে ওকে (রিজওয়ানকে) খুঁজতে নিষেধ করেন এবং আমাদের পরিবারসহ গুম করে ফেলারও হুমকি দেন। পরে আমাদের কোনো মামলা নেয়নি, উলটো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। একদিন জানালেন আমার ভাই তুরস্কে গিয়েছে আইএসে যোগ দিতে। আমাদের চার ভাইয়ের মধ্যে তিন ভাই লেখাপড়া করিনি, কষ্ট করে ওকে পড়ালেখা করিয়েছি। আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই আমরা।

মানবজমিন:

প্রেসিডেন্টের বক্তব্য মিথ্যাচার, শপথ লঙ্ঘনের শামিল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র তার কাছে নেই বলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যাচার বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তার এ বক্তব্য শপথ ভঙ্গের শামিল এবং তার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্যতা আছে কিনা- সেটা নিয়ে সরকার আলোচনা করবে বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। এটা হচ্ছে মিথ্যাচার এবং উনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। কারণ, উনি নিজেই ৫ই আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী উনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এরপর সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপদেশমূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে উনার (রাষ্ট্রপতি) কাছ থেকে আপিল বিভাগের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়- এই পরিস্থিতিতে করণীয় কি আছে? এটার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের যিনি প্রধান বিচারপতি ছিলেন এবং অন্য সব বিচারপতিরা মিলে ১০৬-এর অধীনে একটা মতামত প্রদান করেন রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের ভিত্তিতে। সেটার প্রথম লাইনটি হচ্ছে, দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন…। তারপর অন্যান্য কথা।’

সমকাল:

আলটিমেটাম দিলেন ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার মানোন্নয়নে ২০১৭ সালে রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত করে দেয় সরকার। তবে এই সাত কলেজের প্রশাসনিক কাজে ঢাবি কর্তৃপক্ষের কোনো এখতিয়ার নেই। আবার অধিভুক্ত কলেজগুলোর জন্য আলাদা অফিস ও জনবল নেই ঢাবিতে। ফলে প্রায়ই তৈরি হচ্ছে নানা জটিলতা, আন্দোলনে নামছেন শিক্ষার্থীরা।

সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ তিন দফা দাবিতে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর নীলক্ষেত-সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে আশপাশের রাস্তায় তীব্র যানজট তৈরি হয়, ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ।

শিক্ষার্থীদের দাবি হলো– ১. সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য দ্রুত সংস্কার কমিটি গঠন করতে হবে; ২. সংস্কার কমিটি ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবে এবং ৩. সংস্কার কমিটি বর্তমান কাঠামো সচল রাখতে ঢাবি প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে, যাতে শিক্ষার্থীদের সেশন জটিলতার পরিবেশ তৈরি না হয়।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই তিন দাবি পূরণ না হলে বুধবার থেকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলনে নামবেন বলে ঘোষণা দেন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবদুর রহমান গতকাল এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

কালবেলা:

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। সেদিন রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনা তার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন; কিন্তু আড়াই মাসের ব্যবধানে শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে ‘দ্বিমুখী’ বক্তব্য দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সম্প্রতি একটি পত্রিকার সাপ্তাহিক রাজনৈতিক ম্যাগাজিনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, তার কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নেই।’ তার এমন ‘দ্বৈতাচারে’ সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। এজন্য রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

দ্রুতই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে রাজপথের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দায়েরের বিষয়ে কথা বলেন তিনি। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। রাষ্ট্রপতি তার পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন, দ্রুত তাকে পদত্যাগ করতে হবে। দ্রুতই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে রাজপথের কর্মসূচি ঘোষণা করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কোনোভাবেই আর রাষ্ট্রপতিকে পদে দেখতে চাই না আমরা।

এদিকে, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নিজের কাছে নেই—রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এমন মন্তব্যের জেরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে হাসনাত লেখেন, ‘শেখ হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে। পদত্যাগপত্রের কোনো ভূমিকা নেই।’ এরপর ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় তিনি ফ্যাসিবাদ নির্মূলে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

ভিডিওবার্তায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের পুনর্বাসনে ছক কষছে বলে অভিযোগ করেছেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনর্বাসনের জন্য ছাত্রলীগ বিভিন্ন ধরনের পাঁয়তারা করছে। ঢাকায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের পতিত আত্মারা জড়ো হওয়ার পাঁয়তারা করছে। প্রতিটি ঘটনাকে একত্রিত করলে বোঝা যায় ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো পুনর্বাসিত করা জন্য তারা চেষ্টা করছে।’

দেশরুপান্তর:

পদত্যাগপত্র প্রশ্নে পরস্পরবিরোধিতা
প্রবল গণআন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার আড়াই মাস পার হয়েছে। এরপরও তাকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিদিনই থাকে কোনো না কোনো আলোচনা-সমালোচনা। তিনি দেশ ছাড়ার আগে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন কি করেননি তা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে চলত বাহাস। এরই মধ্যে এ আলোচনায় নতুন করে রসদ জুগিয়েছে সম্প্রতি ‘দৈনিক মানবজমিন’-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক সাক্ষাৎকার। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে উদ্ধৃত করে মতিউর রহমান চৌধুরীর লেখায় বলা হয়েছে, তিনি শুনেছেন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু তার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। যা নিয়ে হঠাৎই সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আড়াই মাস পর রাষ্ট্রপতির এমন বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা কড়া সমালোচনা করেছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যকে অসৎ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করা হয়। সরকারের আইন ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি স্ববিরোধী কথা বলেছেন। মিথ্যাচার করেছেন। তার এই বক্তব্য শপথ ভঙ্গ করার শামিল।’ এমন বক্তব্যের পর তিনি রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারেন কি না সে প্রশ্ন তোলেন আসিফ নজরুল। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ারও জোরালো বক্তব্য আসে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সিরাজগঞ্জ  ১০০ প্রতিবন্ধীকে হুইল চেয়ার ও ১০০ শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুলব্যাগসহ শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যু, দিনভর দেশজুড়ে তোলপাড়

আপডেট সময় ০৭:৩১:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

যুগান্তর:

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যু, দিনভর দেশজুড়ে তোলপাড়
‘শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এর দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই’-রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এমন বক্তব্যে দেশজুড়ে তোলপাড় অবস্থা বিরাজ করছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যকে ‘স্ববিরোধী’ ও ‘মিথ্যাচার’ বলেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এটা হচ্ছে রাষ্ট্রপতির শপথ লঙ্ঘনের শামিল। তিনি যদি তার বক্তব্যে অটল থাকেন, তাহলে তার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না, সেটি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় ভেবে দেখতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক মশাল মিছিল থেকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি তোলা হয়। অন্যদিকে আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংসদ বাতিলের পর প্রধানমন্ত্রীর পদ আর থাকে না, এখন এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। এদিকে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মীমাংসিত বিষয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত না করার আহ্বান জানানো হয়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার পদত্যাগের কথা প্রথমে জানান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সেদিন রাতেই বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানকে পেছনে রেখে জাতির উদ্দেশে ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণের কথা জানিয়েছিলেন। এ ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। এতদিন পর আবার আলোচনায় এসেছে শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়টি।

প্রথম আলো:

চাল তেল চিনি ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে
এক সপ্তাহে বাজারে ডিমের দাম কমেছে; কিন্তু বেড়েছে চারটি পণ্যের দাম।বাজারে এক সপ্তাহে একটি পণ্যের দাম কমেছে, বেড়েছে চারটির। দাম কমার তালিকায় আছে শুধু ডিম। নতুন করে মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজের।

চারটি পণ্যের দাম আরও বাড়ল এমন এক সময়ে, যখন বাজারে কোনো স্বস্তি নেই। এই চার পণ্য কেনা ছাড়া সংসারও চলে না। পণ্যগুলোর দাম কমাতে সরকার শুল্ক–করে ছাড় দিয়েছে; কিন্তু এর সুফল এখনো বাজারে পড়েনি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুল্কছাড়ের পণ্য এখনো বাজারে আসেনি। বিশ্ববাজারেও দাম বাড়ছে। অন্যদিকে বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, শুল্ক কমানোর সঙ্গে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে হবে, তাহলে প্রভাব পড়বে। দাম যাতে কমে, সে বিষয়ে নজরদারিও দরকার।

চালের দাম বাড়ছে

নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে চাপে পড়ে চালের দাম বাড়লে। দেশে দু-তিন বছর ধরেই চালের দাম বেশ চড়া। এ সপ্তাহে খুচরা বাজারে মাঝারি ও সরু চালের দাম কেজিতে ১–৩ টাকা বেড়েছে। বেশি বেড়েছে মাঝারি চালের দাম, যার ক্রেতা স্বল্প আয়ের মানুষ।

ঢাকার কারওয়ান বাজার ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল সোমবার মাঝারি মানের ব্রি-২৮ চাল বিক্রি হয়েছে ৬১-৬২ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৮-৫৯ টাকা। ব্রি-২৯ চাল কেনা যাচ্ছে ৬২-৬৪ টাকা কেজি। এ চালের দামও কেজিতে ৩ টাকা বেড়েছে। সরু চালের মধ্যে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের দাম কেজিতে ১–২ টাকা বেড়েছে। রশিদ, ডায়মন্ডসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট প্রতি কেজি ৭০–৭২ টাকা এবং ভালো মানের নাজিরশাইল ৮০ টাকা বা তার বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের কেজি ৫২–৫৫ টাকা। এ ক্ষেত্রে দাম বাড়েনি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডিজিটালাইজেশন
♦ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকে চার সিদ্ধান্ত ♦ সাক্ষাৎ করলেন নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূতদুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডিজিটালাইজেশনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।

বৈঠকে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে-বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলে সব সরকারি কর্মকর্তার জন্য ই-রিটার্ন পোর্টালের মাধ্যমে কর বিবরণী দাখিল বাধ্যতামূলক করা এবং বড় করপোরেশনগুলোকে তাদের পুরো সংস্থায় ই-রিটার্ন গ্রহণ করতে উৎসাহিত করা। অন্যান্য সিদ্ধান্তের মধ্যে ছিল সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ নিশ্চিত করা, একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রোডম্যাপ এবং ভূমিসংশ্লিষ্ট সেবার জন্য বাস্তবায়ন সময়সূচি নির্ধারণ করা। বৈঠকে ডিজিটালাইজেশন সম্পর্কে জাতীয় পর্যায়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালু করার (ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো) প্রকল্পকে ডিজিটালাইজেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি এনবিআরের এক দরজায় সব সেবামাধ্যমে বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করার ওপর নতুন করে জোর দেওয়া হয়। বৈঠকে দ্রুত ডিজিটালব্যবস্থা তৈরির লক্ষ্যে অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা হয়। ডিজিটালাইজেশনের বিষয়ে দেশব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচার চালানোর সিদ্ধান্তও সভায় গৃহীত হয়। একই সঙ্গে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্পের মাধ্যমে এনবিআরকে ডিজিটালাইজেশন করে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করার ওপর নতুন করে জোর দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

কালের কন্ঠ:

পালিয়ে যাওয়াটাই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র না থাকা নিয়ে গণমাধ্যমকে দেওয়া রাষ্ট্রপতির বক্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে কোনো সংকট তৈরি করে কি না জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এম এ মতিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোনো সংকট হবে না। পদত্যাগপত্র দিতে হবে আগের (গত ৫ আগস্টের আগের) সংবিধান অনুযায়ী। আগের সংবিধান লঙ্ঘন করেই তো বিপ্লব হয়েছে। বিপ্লব যখন সফল হয়ে গেল, তখন আগের সংবিধান এখন আর নেই।

ততটুকু থাকবে, যতটুকু তারা গ্রহণ করবে।’
কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার তো বিদ্যমান সংবিধানের অধীনেই শপথ নিয়েছে, এমন প্রশ্নে সাবেক এই বিচারপতি বলেন, ‘এই শপথ নেওয়ার মানে হচ্ছে আগের সংবিধানের এই সংক্রান্ত বিধান তারা অ্যাডাপট (আত্মীকরণ) করছে বা গ্রহণ করেছে। এটা তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) নিতেই (শপথ) পারে। উনি (সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তো সংবিধান অনুযায়ী যাননি (ক্ষমতা থেকে)।

নয়াদিগন্ত:

এস আলম ও সাইফুজ্জামানের সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া শুরু
পাচারের অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে এস আলম ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের দেশে-বিদেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ)। ইতোমধ্যে বিদেশে থাকা পাচারের সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এরই ভিত্তিতে দেশের উচ্চ আদালত থেকে এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হতে পারে। এ নির্দেশনার আলোকেই দেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। একই সাথে বিদেশেও নিয়োগকৃত ফার্মের মাধ্যমে সম্পদ বাজেয়াপ্তের আবেদন করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রথমে দুইটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এর পরের ধাপে আরো তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে। তৃতীয় ধাপে আরো পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাচার হওয়া সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

দৈনিক সংগ্রাম:

র‌্যাব-ডিবির বিরুদ্ধে অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
১৭ বছর আগে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৬ কর্মীকে গুমের অভিযোগে র‌্যাব-ডিবির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছে তাদের পরিবার।

গতকাল সোমবার সকালে প্রসিকিউশন কার্যালয়ে অভিযোগটি দাখিল করা হয়। পরে ছাত্রশিবিরের আইন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান ও আইনজীবী আমানুল্লাহ আদিব সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

আইনজীবীরা জানান, গত ১৭ বছর ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার। মামলা-হামলা, হত্যাসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬ জন এখনও গুম আছেন। ওই ছয়জনকে খুঁজতে ৬ আগস্ট র‌্যাব সদর দপ্তরে গিয়েছিল পরিবারের সদস্যরা। কর্তৃপক্ষ তাদের সহযোগিতা করবে বলে জানালেও এখনও কোনো তথ্য দিতে পারেনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গুম হওয়া ৬ নেতাকর্মীর সন্ধান ও র‌্যাব-ডিবির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করেছে তাদের পরিবার।

গুমের শিকার শিবিরকর্মী রিজওয়ান হোসেনের ভাই জানান, ২০১৬ সালের আগস্টে আমার ভাইকে সবার সামনেই বাইকে করে তুলে নিয়ে যান এসআই নূর আলম ও তার একজন লোক। আমরা তৎক্ষণাৎ থানায় গেলে ওসি অপূর্ব হাসান আমাদের বলে ওকে (রিজওয়ানকে) খুঁজতে নিষেধ করেন এবং আমাদের পরিবারসহ গুম করে ফেলারও হুমকি দেন। পরে আমাদের কোনো মামলা নেয়নি, উলটো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। একদিন জানালেন আমার ভাই তুরস্কে গিয়েছে আইএসে যোগ দিতে। আমাদের চার ভাইয়ের মধ্যে তিন ভাই লেখাপড়া করিনি, কষ্ট করে ওকে পড়ালেখা করিয়েছি। আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই আমরা।

মানবজমিন:

প্রেসিডেন্টের বক্তব্য মিথ্যাচার, শপথ লঙ্ঘনের শামিল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র তার কাছে নেই বলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মিথ্যাচার বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তার এ বক্তব্য শপথ ভঙ্গের শামিল এবং তার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্যতা আছে কিনা- সেটা নিয়ে সরকার আলোচনা করবে বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। এটা হচ্ছে মিথ্যাচার এবং উনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। কারণ, উনি নিজেই ৫ই আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী উনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এরপর সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উপদেশমূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে উনার (রাষ্ট্রপতি) কাছ থেকে আপিল বিভাগের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়- এই পরিস্থিতিতে করণীয় কি আছে? এটার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের যিনি প্রধান বিচারপতি ছিলেন এবং অন্য সব বিচারপতিরা মিলে ১০৬-এর অধীনে একটা মতামত প্রদান করেন রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের ভিত্তিতে। সেটার প্রথম লাইনটি হচ্ছে, দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন…। তারপর অন্যান্য কথা।’

সমকাল:

আলটিমেটাম দিলেন ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার মানোন্নয়নে ২০১৭ সালে রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত করে দেয় সরকার। তবে এই সাত কলেজের প্রশাসনিক কাজে ঢাবি কর্তৃপক্ষের কোনো এখতিয়ার নেই। আবার অধিভুক্ত কলেজগুলোর জন্য আলাদা অফিস ও জনবল নেই ঢাবিতে। ফলে প্রায়ই তৈরি হচ্ছে নানা জটিলতা, আন্দোলনে নামছেন শিক্ষার্থীরা।

সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ তিন দফা দাবিতে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর নীলক্ষেত-সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে আশপাশের রাস্তায় তীব্র যানজট তৈরি হয়, ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ।

শিক্ষার্থীদের দাবি হলো– ১. সাত কলেজ নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য দ্রুত সংস্কার কমিটি গঠন করতে হবে; ২. সংস্কার কমিটি ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা প্রণয়ন করবে এবং ৩. সংস্কার কমিটি বর্তমান কাঠামো সচল রাখতে ঢাবি প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে, যাতে শিক্ষার্থীদের সেশন জটিলতার পরিবেশ তৈরি না হয়।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই তিন দাবি পূরণ না হলে বুধবার থেকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলনে নামবেন বলে ঘোষণা দেন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবদুর রহমান গতকাল এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

কালবেলা:

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। সেদিন রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনা তার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন; কিন্তু আড়াই মাসের ব্যবধানে শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে ‘দ্বিমুখী’ বক্তব্য দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সম্প্রতি একটি পত্রিকার সাপ্তাহিক রাজনৈতিক ম্যাগাজিনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, তার কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নেই।’ তার এমন ‘দ্বৈতাচারে’ সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। এজন্য রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

দ্রুতই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে রাজপথের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দায়েরের বিষয়ে কথা বলেন তিনি। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। রাষ্ট্রপতি তার পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন, দ্রুত তাকে পদত্যাগ করতে হবে। দ্রুতই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে রাজপথের কর্মসূচি ঘোষণা করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কোনোভাবেই আর রাষ্ট্রপতিকে পদে দেখতে চাই না আমরা।

এদিকে, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নিজের কাছে নেই—রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এমন মন্তব্যের জেরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে হাসনাত লেখেন, ‘শেখ হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে। পদত্যাগপত্রের কোনো ভূমিকা নেই।’ এরপর ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় তিনি ফ্যাসিবাদ নির্মূলে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

ভিডিওবার্তায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের পুনর্বাসনে ছক কষছে বলে অভিযোগ করেছেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনর্বাসনের জন্য ছাত্রলীগ বিভিন্ন ধরনের পাঁয়তারা করছে। ঢাকায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের পতিত আত্মারা জড়ো হওয়ার পাঁয়তারা করছে। প্রতিটি ঘটনাকে একত্রিত করলে বোঝা যায় ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো পুনর্বাসিত করা জন্য তারা চেষ্টা করছে।’

দেশরুপান্তর:

পদত্যাগপত্র প্রশ্নে পরস্পরবিরোধিতা
প্রবল গণআন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার আড়াই মাস পার হয়েছে। এরপরও তাকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিদিনই থাকে কোনো না কোনো আলোচনা-সমালোচনা। তিনি দেশ ছাড়ার আগে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন কি করেননি তা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে চলত বাহাস। এরই মধ্যে এ আলোচনায় নতুন করে রসদ জুগিয়েছে সম্প্রতি ‘দৈনিক মানবজমিন’-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক সাক্ষাৎকার। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে উদ্ধৃত করে মতিউর রহমান চৌধুরীর লেখায় বলা হয়েছে, তিনি শুনেছেন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু তার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। যা নিয়ে হঠাৎই সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আড়াই মাস পর রাষ্ট্রপতির এমন বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা কড়া সমালোচনা করেছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যকে অসৎ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করা হয়। সরকারের আইন ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি স্ববিরোধী কথা বলেছেন। মিথ্যাচার করেছেন। তার এই বক্তব্য শপথ ভঙ্গ করার শামিল।’ এমন বক্তব্যের পর তিনি রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারেন কি না সে প্রশ্ন তোলেন আসিফ নজরুল। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ারও জোরালো বক্তব্য আসে।