গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত দিনাত জাহান আদরকে এক দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। রোববার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় গ্রেপ্তার জিনাত জাহান আদরের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওবাদুর রহমান।
শুনানি শেষে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আসামির উপস্থিতিতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমীর আদালত এ আদেশ দেন। শনিবার দুপুরে অমানবিক নির্যাতনের শিকার ১৩ বছর বয়সের কিশোরী কল্পনাকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে উদ্ধার করে ভাটারা থানা পুলিশ। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত তরুণী জিনাত জাহান আদরকে।
কল্পনার অভিযোগ, বিনা কারণে মারধরের পাশাপাশি তাকে খাবারও দেয়া হতো না। ভেঙে ফেলা হয়েছে সামনের চারটি দাঁত। হবিগঞ্জের এই মেয়েটিকে একাত্তরের সহায়তায় উদ্ধার করেছে ভাটারা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাও নিয়েছে তারা।
শনিবার দুপুরে একাত্তরের কাছে আসে কল্পনার বাঁচার আকুতির একটি ভিডিও ও বাড়ির ঠিকানা। এরপর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহযোগিতায় ভাটারা থানার পুলিশকে সাথে নিয়ে বসুন্ধরার বাসায় যায় একাত্তর টিম। বাসার দরজা খুলতে পুলিশের কাছে বাঁচার আকুতি জানায় কল্পনা। কল্পনার অভিযোগ, কাজের সামান্য ভুল আবার কখনো বিনা কারণেই অমানবিক নির্যাতন চলতো তার ওপর। কাঠের ব্রাশ দিয়ে মেরে ফেলা দিয়েছে চারটি দাঁত। চুল সোজা করার ইলেকট্রিক মেশিন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে দুই হাত। মেরে ভেঙে ফেলা বেতও মিলেছে বাসায়।
নির্যাতনে অভিযুক্ত দিনাত জাহান আদর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন। বর্তমানে কিছুই করেন না। বাসায় এক ভাই ও বন্ধুরা আসে মাঝে মাঝে। বাসার কেয়ারটেকার ও প্রতিবেশীরা বলছেন, নির্যাতনের বিষয়ে তারা কিছুই টের পাননি।
কল্পনা নিজের বাড়ির পুরো ঠিকানা বলতে পারে না। তবে হবিগঞ্জের কোনো একটি এলাকায় তার বাড়ি। অভিযুক্ত দিনাত জাহান আদরকে আটক করেছে পুলিশ। অসুস্থ কল্পনাকে উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে।
নির্যাতনের শিকার কল্পনার চিকিৎসা ও আইনি লড়াইয়ে পূর্নাঙ্গ সহযোগিতা করবে মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ একাত্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।