ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪৬ রানে অলআউট, ঘরের মাঠে সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় ভারত

বেঙ্গালুরু টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৪৬ রানে নিজেদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়ে গেছে ভারত। এটি টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর, ভারতের মাটিতে সর্বনিম্ন এবং এশিয়ার মাটিতেও সর্বনিম্ন স্কোর।

টেস্টে ভারতের সর্বনিম্ন স্কোর ৩৬। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে অ্যাডিলেডে ভুলে যাওয়ার মতো এই রেকর্ড গড়েছিল ভারত। দেশের মাটিতে এর আগে ভারতের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর ছিল ৭৫ রান। সেটি ১৯৮৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

ভারতের ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছেন ৫ জন। সর্বশেষ ১৯৯৯ সালে মোহালিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ভারতের ৫জন আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। সেদিন ভারত অলআউট হয়েছিল ৮৩ রানে। যদিও এক ইনিংসে এমন কিছু ভারতের জন্য নতুন নয়।

চলতি বছরের জানুয়ারিতেই কেপ টাউনে এক ইনিংসে ভারতের ৬ ব্যাটসম্যানও শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন। এর আগে ২০১৪ সালেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের ছয় ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হয়েছেন। এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ব্যাটসম্যানের শূন্য রানে আউটের তালিকায় সবচেয়ে বেশি তিনবার বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানেরা নাম লিখিয়েছেন।

৬ জন শূন্য রানে ফেরার পরও সর্বোচ্চ স্কোরটা অবশ্য বাংলাদেশেরই। এমন পরিস্থিতিতে পড়েও ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৬৫ রান করেছিল বাংলাদেশ।

সংখ্যা নিয়ে এত আলোচনায় বোধ হয় নিউজিল্যান্ডের বোলারদের কৃতিত্বটা কমে যাবে। পুরো সকালটাই ছিল নিউজিল্যান্ডের তিন পেসারের পেস, সুইং ও বাউন্সের দুর্দান্ত প্রদর্শনী। কাছাকাছি সময়ে হওয়া টেস্টগুলোতে স্পিনারদের কৃতিত্ব বেশিই দেখা যাচ্ছে।

ভারতই সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছে, সেখানে নাহিদ রানা, যশপ্রীত বুমরারা ভালো করলেও প্রধান চরিত্র স্পিনাররাই ছিলেন। এর আগে শ্রীলঙ্কা সিরিজে তো স্পিনারদের কাছেই মুখ থুবড়ে পড়েছিল নিউজিল্যান্ড। আর মুলতানে আজই ৭ উইকেট নিলেন সাজিদ খান।

স্পিনারদের দাপট দেখার পর পেসারদের সাফল্য দেখার জন্য অনেকের চোখেই ক্ষুধা তৈরি হতেই পারে। সেই ক্ষুধা মেটানোর জন্যই বোধ হয় নিউজিল্যান্ডের এমন প্রদর্শনী!

নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা অবশ্য মাঠের নামার জন্যই অপেক্ষায় ছিলেন। কারণ, তাঁদের সঙ্গে ভারতের আকাশের সখ্য খুব একটা ভালো না। গত মাসে গ্রেটার নয়ডায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে একটি বলও হয়নি বাজে আবহাওয়ার প্রভাবে। এরপর আবার নিউজিল্যান্ড যখন ভারতে এসেছে, সেখানেও হাজির হয় বৃষ্টি। বেঙ্গালুরুতে কাল বৃষ্টিতে ভেসে গেছে এই টেস্টে প্রথম দিনের খেলা। অর্থাৎ, ভারতে টানা ছয় দিন নিউজিল্যান্ডের টেস্ট ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। এরপর মাঠে নেমেই এমন পারফরম্যান্স।

মনে হতে পারে, এই প্রদর্শনী দেখতে তো খোদ ভারতই হয়তো চেয়েছে! নইলে কী আর বৃষ্টির কারণে দুই দিনের ঢাকা উইকেটে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। মজার ব্যাপার হলো, কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথামও টসে জিতলে ব্যাটিংই নেওয়ার কথা বলেছিলেন। ভাগ্য ভালো!

রোহিতদের ভাগ্যের দায় দেওয়ার সুযোগ নেই। রোহিত অবশ্য অন্য সময়ের মতোই শুরু করতে চেয়েছিলেন। ওভারের সপ্তম ওভারে আউট হয়েছেন বড় শট খেলতে গিয়েই। সে জন্য অবশ্য সাত ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। বাজে বল আসেনি। এরপর কোহলি, সরফরাজ খান কিংবা জয়সোয়াল সবাই শুধু নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টাই করেছেন। একজন ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি ঋষভ পন্ত।

ঋষভের ৪৯ বলে ২০ রানের ইনিংস দেখে অবশ্য বোঝার উপায় নেই, তিনি নিজের মতো করেই খেলতে চেয়েছেন। ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি অবশ্য তিনিই মেরেছিলেন। সেটা ইনিংসের ৭৭ তম বলে। ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে যশস্বী জয়সোয়ালের কাছ থেকে। তিনি করেছেন ১৩ রান।

বাকি ৯ জন আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে। হেনরি নিয়েছেন ৫ উইকেট। কুলদীপ যাদবকে আউট করে মাত্র ২৬ টেস্টে এক শ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন হেনরি। ৪ উইকেট নিয়েছেন ও রুর্ক। বাকি উইকেটটি সাউদির।

৪৬ রানে অলআউট, ঘরের মাঠে সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় ভারত

আপডেট সময় ০২:৫৬:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

বেঙ্গালুরু টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৪৬ রানে নিজেদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়ে গেছে ভারত। এটি টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর, ভারতের মাটিতে সর্বনিম্ন এবং এশিয়ার মাটিতেও সর্বনিম্ন স্কোর।

টেস্টে ভারতের সর্বনিম্ন স্কোর ৩৬। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে অ্যাডিলেডে ভুলে যাওয়ার মতো এই রেকর্ড গড়েছিল ভারত। দেশের মাটিতে এর আগে ভারতের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর ছিল ৭৫ রান। সেটি ১৯৮৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

ভারতের ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছেন ৫ জন। সর্বশেষ ১৯৯৯ সালে মোহালিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ভারতের ৫জন আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। সেদিন ভারত অলআউট হয়েছিল ৮৩ রানে। যদিও এক ইনিংসে এমন কিছু ভারতের জন্য নতুন নয়।

চলতি বছরের জানুয়ারিতেই কেপ টাউনে এক ইনিংসে ভারতের ৬ ব্যাটসম্যানও শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন। এর আগে ২০১৪ সালেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের ছয় ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হয়েছেন। এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ব্যাটসম্যানের শূন্য রানে আউটের তালিকায় সবচেয়ে বেশি তিনবার বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানেরা নাম লিখিয়েছেন।

৬ জন শূন্য রানে ফেরার পরও সর্বোচ্চ স্কোরটা অবশ্য বাংলাদেশেরই। এমন পরিস্থিতিতে পড়েও ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৬৫ রান করেছিল বাংলাদেশ।

সংখ্যা নিয়ে এত আলোচনায় বোধ হয় নিউজিল্যান্ডের বোলারদের কৃতিত্বটা কমে যাবে। পুরো সকালটাই ছিল নিউজিল্যান্ডের তিন পেসারের পেস, সুইং ও বাউন্সের দুর্দান্ত প্রদর্শনী। কাছাকাছি সময়ে হওয়া টেস্টগুলোতে স্পিনারদের কৃতিত্ব বেশিই দেখা যাচ্ছে।

ভারতই সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছে, সেখানে নাহিদ রানা, যশপ্রীত বুমরারা ভালো করলেও প্রধান চরিত্র স্পিনাররাই ছিলেন। এর আগে শ্রীলঙ্কা সিরিজে তো স্পিনারদের কাছেই মুখ থুবড়ে পড়েছিল নিউজিল্যান্ড। আর মুলতানে আজই ৭ উইকেট নিলেন সাজিদ খান।

স্পিনারদের দাপট দেখার পর পেসারদের সাফল্য দেখার জন্য অনেকের চোখেই ক্ষুধা তৈরি হতেই পারে। সেই ক্ষুধা মেটানোর জন্যই বোধ হয় নিউজিল্যান্ডের এমন প্রদর্শনী!

নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা অবশ্য মাঠের নামার জন্যই অপেক্ষায় ছিলেন। কারণ, তাঁদের সঙ্গে ভারতের আকাশের সখ্য খুব একটা ভালো না। গত মাসে গ্রেটার নয়ডায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে একটি বলও হয়নি বাজে আবহাওয়ার প্রভাবে। এরপর আবার নিউজিল্যান্ড যখন ভারতে এসেছে, সেখানেও হাজির হয় বৃষ্টি। বেঙ্গালুরুতে কাল বৃষ্টিতে ভেসে গেছে এই টেস্টে প্রথম দিনের খেলা। অর্থাৎ, ভারতে টানা ছয় দিন নিউজিল্যান্ডের টেস্ট ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। এরপর মাঠে নেমেই এমন পারফরম্যান্স।

মনে হতে পারে, এই প্রদর্শনী দেখতে তো খোদ ভারতই হয়তো চেয়েছে! নইলে কী আর বৃষ্টির কারণে দুই দিনের ঢাকা উইকেটে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। মজার ব্যাপার হলো, কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথামও টসে জিতলে ব্যাটিংই নেওয়ার কথা বলেছিলেন। ভাগ্য ভালো!

রোহিতদের ভাগ্যের দায় দেওয়ার সুযোগ নেই। রোহিত অবশ্য অন্য সময়ের মতোই শুরু করতে চেয়েছিলেন। ওভারের সপ্তম ওভারে আউট হয়েছেন বড় শট খেলতে গিয়েই। সে জন্য অবশ্য সাত ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। বাজে বল আসেনি। এরপর কোহলি, সরফরাজ খান কিংবা জয়সোয়াল সবাই শুধু নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টাই করেছেন। একজন ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি ঋষভ পন্ত।

ঋষভের ৪৯ বলে ২০ রানের ইনিংস দেখে অবশ্য বোঝার উপায় নেই, তিনি নিজের মতো করেই খেলতে চেয়েছেন। ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি অবশ্য তিনিই মেরেছিলেন। সেটা ইনিংসের ৭৭ তম বলে। ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে যশস্বী জয়সোয়ালের কাছ থেকে। তিনি করেছেন ১৩ রান।

বাকি ৯ জন আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে। হেনরি নিয়েছেন ৫ উইকেট। কুলদীপ যাদবকে আউট করে মাত্র ২৬ টেস্টে এক শ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন হেনরি। ৪ উইকেট নিয়েছেন ও রুর্ক। বাকি উইকেটটি সাউদির।