ঢাকা ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে ফেরা হচ্ছে না সাকিবের

ঘরের মাটিতে দেশের মানুষের সামনে বিদায়ী টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। টাইগার অলরাউন্ডারের আগ্রহে তাকে নিয়েই মিরপুর টেস্টের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শেষ টেস্ট খেলতে আমেরিকা থেকে দেশের উদ্দেশে নির্ধারিত সময়ে রওনাও করেছিলেন সাকিব। তবে এরই মধ্যে তার দেশে ফেরা একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেছে।

শঙ্কা জেগেছিল গতকাল (বুধবার) মধ্যরাতেই। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে দুবাইয়ে এসে যাত্রাবিরতি দেন সাকিব। নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বিবেচনায় রেখে তার ঢাকায় আগমন আপাতত বন্ধ রাখা হয়। জানানো হয়েছিল, সরকারের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত পেলেই কেবল দেশে পা রাখবেন সাকিব। মিরপুরে খেলবেন নিজের বিদায়ী টেস্ট। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসা হচ্ছে না সাকিবের।

নিরাপত্তার কথা ভেবেই সাবেক এই অধিনায়ককে দেশে ফিরতে না করা হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। যদিও আজ বিকেল নাগাদ এ ব্যাপারে বিস্তারিত ঘোষণা আসতে পারে বিসিবির তরফে। তবে আপাতত যা খবর, দেশে ফেরা হচ্ছে না সাকিবের। তাই এক অর্থে, কানপুরে ভারতের বিপক্ষে টেস্টই সাকিব আল হাসানের সাদা পোশাকে শেষ ম্যাচ।

এর আগে ঢাকা পোস্ট বিসিবির একাধিক সূত্রের সঙ্গে আলাপে নিশ্চিত হয়েছিল, দুবাইয়ে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পরেই মূলত সাকিবের দেশে না ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আইসিসির বৈঠকে অংশ নিতে বিপিএল ড্রাফটের পরেই দুবাই গিয়েছিলেন বোর্ড সভাপতি। সঙ্গে ছিলেন বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। সাকিবের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে সেখানেই।

এর আগে গতকাল মধ্যরাতেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই পর্যন্ত এসেই থামতে হয়েছে তাকে। এখান থেকেই ঢাকায় ফ্লাইট ধরার কথা থাকলেও আপাতত সেটা হচ্ছে না। শুরুতে তার নিরাপত্তা চাওয়া নিয়ে নানারকম অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও কদিন আগেই বাংলাদেশে ফেরার সবুজ সংকেত পেয়েছেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সেই নরম সংকেত পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দেশে ফেরার সকল বন্দোবস্ত করে রেখেছিলেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত তা আর হচ্ছে না। জানা গিয়েছে, মিরপুরে শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে বিগত কয়েকদিনের পরিস্থিতি সেইসঙ্গে অন্যান্য জটিলতার কারণেই এমন অবস্থায় দুবাইয়ে থামতে বলা হয়েছে তাকে।

উল্লেখ্য, গত ১০ই অক্টোবর মিরপুরের শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে জড়ো হয়েছিলেন বেশকিছু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। সেখানে তারা দুই নম্বর গেটে সাকিবের ছবি টানিয়ে জুতাপেটা করেন। পরে স্টেডিয়াম এলাকাজুড়ে সাকিব বিরোধী গ্রাফিতি আঁকেন তারা। মিরপুরবাসী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, ভোট চুরির সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং স্বৈরাচারের দোসর সাকিব যে কি না দেশবাসীর ক্রান্তিলগ্নে বিদেশের মাটিতে আনন্দময় সময় কাটাচ্ছিল, সে আর কোনোদিন যেন বাংলাদেশের জার্সি না গায়ে দেয় এবং মিরপুর মাঠে না আসে।

সদ্য শেষ হওয়া ভারত সফরের কানপুর টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান। সেখানেই বলে রেখেছিলেন, নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মিরপুরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পেলেই দেশে এসে শেষ টেস্ট খেলতে চান তিনি। এরপর শুধুই বাকি থাকবে ওয়ানডে ফরম্যাট। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে দেশের মাঠে আর কোনো ওয়ানডের সুযোগ নেই সাকিবের।

সেই বিবেচনায় মিরপুর টেস্টই ছিল দেশের মাটি থেকে সাকিব আল হাসানের জন্য দেশের মানুষের সামনে থেকে ক্যারিয়ার শেষ করার সুযোগ। কিন্তু মিরপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সাকিবকে ফিরতে দিচ্ছে না দেশে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ চালু করলো পাকিস্তান

দেশে ফেরা হচ্ছে না সাকিবের

আপডেট সময় ১২:৩৯:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

ঘরের মাটিতে দেশের মানুষের সামনে বিদায়ী টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। টাইগার অলরাউন্ডারের আগ্রহে তাকে নিয়েই মিরপুর টেস্টের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শেষ টেস্ট খেলতে আমেরিকা থেকে দেশের উদ্দেশে নির্ধারিত সময়ে রওনাও করেছিলেন সাকিব। তবে এরই মধ্যে তার দেশে ফেরা একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেছে।

শঙ্কা জেগেছিল গতকাল (বুধবার) মধ্যরাতেই। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে দুবাইয়ে এসে যাত্রাবিরতি দেন সাকিব। নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বিবেচনায় রেখে তার ঢাকায় আগমন আপাতত বন্ধ রাখা হয়। জানানো হয়েছিল, সরকারের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত পেলেই কেবল দেশে পা রাখবেন সাকিব। মিরপুরে খেলবেন নিজের বিদায়ী টেস্ট। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসা হচ্ছে না সাকিবের।

নিরাপত্তার কথা ভেবেই সাবেক এই অধিনায়ককে দেশে ফিরতে না করা হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। যদিও আজ বিকেল নাগাদ এ ব্যাপারে বিস্তারিত ঘোষণা আসতে পারে বিসিবির তরফে। তবে আপাতত যা খবর, দেশে ফেরা হচ্ছে না সাকিবের। তাই এক অর্থে, কানপুরে ভারতের বিপক্ষে টেস্টই সাকিব আল হাসানের সাদা পোশাকে শেষ ম্যাচ।

এর আগে ঢাকা পোস্ট বিসিবির একাধিক সূত্রের সঙ্গে আলাপে নিশ্চিত হয়েছিল, দুবাইয়ে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পরেই মূলত সাকিবের দেশে না ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আইসিসির বৈঠকে অংশ নিতে বিপিএল ড্রাফটের পরেই দুবাই গিয়েছিলেন বোর্ড সভাপতি। সঙ্গে ছিলেন বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। সাকিবের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে সেখানেই।

এর আগে গতকাল মধ্যরাতেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই পর্যন্ত এসেই থামতে হয়েছে তাকে। এখান থেকেই ঢাকায় ফ্লাইট ধরার কথা থাকলেও আপাতত সেটা হচ্ছে না। শুরুতে তার নিরাপত্তা চাওয়া নিয়ে নানারকম অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও কদিন আগেই বাংলাদেশে ফেরার সবুজ সংকেত পেয়েছেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সেই নরম সংকেত পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দেশে ফেরার সকল বন্দোবস্ত করে রেখেছিলেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত তা আর হচ্ছে না। জানা গিয়েছে, মিরপুরে শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে বিগত কয়েকদিনের পরিস্থিতি সেইসঙ্গে অন্যান্য জটিলতার কারণেই এমন অবস্থায় দুবাইয়ে থামতে বলা হয়েছে তাকে।

উল্লেখ্য, গত ১০ই অক্টোবর মিরপুরের শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে জড়ো হয়েছিলেন বেশকিছু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। সেখানে তারা দুই নম্বর গেটে সাকিবের ছবি টানিয়ে জুতাপেটা করেন। পরে স্টেডিয়াম এলাকাজুড়ে সাকিব বিরোধী গ্রাফিতি আঁকেন তারা। মিরপুরবাসী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, ভোট চুরির সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং স্বৈরাচারের দোসর সাকিব যে কি না দেশবাসীর ক্রান্তিলগ্নে বিদেশের মাটিতে আনন্দময় সময় কাটাচ্ছিল, সে আর কোনোদিন যেন বাংলাদেশের জার্সি না গায়ে দেয় এবং মিরপুর মাঠে না আসে।

সদ্য শেষ হওয়া ভারত সফরের কানপুর টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান। সেখানেই বলে রেখেছিলেন, নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মিরপুরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পেলেই দেশে এসে শেষ টেস্ট খেলতে চান তিনি। এরপর শুধুই বাকি থাকবে ওয়ানডে ফরম্যাট। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে দেশের মাঠে আর কোনো ওয়ানডের সুযোগ নেই সাকিবের।

সেই বিবেচনায় মিরপুর টেস্টই ছিল দেশের মাটি থেকে সাকিব আল হাসানের জন্য দেশের মানুষের সামনে থেকে ক্যারিয়ার শেষ করার সুযোগ। কিন্তু মিরপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সাকিবকে ফিরতে দিচ্ছে না দেশে।