আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর
সমকাল:
তেজি বাজারে ক্রেতার নিঃশব্দ হাহাকার
কোথাও পণ্যের কমতি নেই, তবু দামের চোটে ক্রেতার নিঃশব্দ হাহাকার। কোনো টোটকাতেই বাগে আসছে না নিত্যপণ্যের বল্গাহীন বাজার। সদাই করতে গিয়ে রীতিমতো নাকানি-চুবানি খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। আর পারছেন না তারা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও বাজার ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষের আশা ছিল– সিন্ডিকেট বন্ধ হবে, দামের তেজ কমবে। তবে সেই আশাতেও যেন গুড়ে বালি!
গেল এক মাসে, বিশেষ করে সবজির দামে ক্রেতার চোখ কপালে ঠেকেছে! পাশাপাশি ডিম-মুরগিসহ সবকিছুর দামই লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে নির্দিষ্ট আয়ের সাধারণ মানুষ জীবন চালাতে খেই হারাচ্ছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর দফায় দফায় বৈঠক করছে। জেলায় জেলায় হয়েছে বিশেষ টাস্কফোর্স; নিয়মিত তদারকিও হচ্ছে। সিন্ডিকেট ধরতে চলছে অভিযান-জরিমানা। দেশের বাইরে থেকে আসছে পণ্য। স্বয়ং বাণিজ্য উপদেষ্টা নিজেই বাজার তদারকিতে মাঠে নেমেছেন। সরকারের এতসব পদক্ষেপের যোগফল ‘শূন্য’।
এ পটভূমিতে ক্রেতাকে খানিকটা স্বস্তি দিতে নতুন সরকার নিয়েছে নতুন উদ্যোগ। আজ মঙ্গলবার থেকে রাজধানীতে ওপেন মার্কেট সেলের (ওএমএস) আওতায় আলু, ডিম, পেঁয়াজের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি বিক্রি শুরু হতে যাচ্ছে। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে কিনে রাজধানীর নির্দিষ্ট ২০ স্থানে সুলভ মূল্যে সবজি বিক্রি করবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে শাকসবজির দাম সব সময় বাড়তি থাকে। এবার এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বন্যা। এ ছাড়া ডলারের উচ্চমূল্য তো আছেই। এর ওপর আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর কয়েক দিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও আবার তা শুরু হয়েছে। চতুর্মুখী সংকটে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে এই সরকার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখা ও দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার কার্যকর কৌশল না থাকার সুযোগ নিয়ে দাম বাড়াচ্ছে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। এসব উদ্যোগে এ সমস্যার স্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান সম্ভব নয় বলে মনে করেন না তারা। বিশ্লেষকদের পরামর্শ, দ্রব্যমূল্য সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে প্রাইস কমিশন গঠন করতে হবে।
কালবেলা:
সাবমেরিন কেবলসের আয় কর্তারাই ভাগ করে খান
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলসে (বিএসসি-পিএলসি) চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক উভয় পদেই পরিবর্তন হয়েছে ছয়বার। কোম্পানির বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগ পেয়েছেন ২০ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী। ব্যান্ডউইথের দাম কমেছে কয়েক দফা। চালু হয়েছে সিমিউই-৫ সাবমেরিন কেবল। শুরু হয়েছে সিমিউই-৬-এর কাজ। এমন অনেক পরিবর্তনই এসেছে বিএসসিপিএলসিতে। শুধু পরিবর্তন আসেনি কোম্পানির নিজস্ব কর্মকর্তাদের ভাগ্যে এবং কোম্পানির উন্নতিতে। কোম্পানির আয়-উন্নতি না হলেও নানা কৌশলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রেষণে আসা কর্মকর্তারা অর্থ ভাগবাটোয়ারা করে তাদের পকেট ভারী করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএসসিপিএলসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকলেও কোম্পানির উন্নতির দিকে তাদের নজর নেই। কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় কোম্পানিটির ব্যান্ডউইথ বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে। সম্প্রতি সরকারি প্রতিষ্ঠানটির আয় ও মুনাফায় ধস দেখা দিয়েছে। সবশেষ হিসাব বছরের তথ্যানুযায়ী, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটির আয় ও মুনাফা আগের হিসাব বছরের তুলনায় কমে গেছে। এজন্য প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দামও কমে গেছে।
সবশেষ হিসাব বছরে সাবমেরিন কেবলসের আয় (রেভিনিউ) কমে দাঁড়িয়েছে ৩৯৮ কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ হিসাব বছরে ছিল ৫১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে আয় কমেছে ১১৩ কোটি টাকা। আয় কমে যাওয়ায় গত হিসাব বছরে বিএসসিপিএলসির মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ১৮২ কোটি টাকা। যেখানে আগের অর্থবছরে কোম্পানিটি মুনাফা করেছিল ২৭৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে মুনাফা কমেছে ৯৭ কোটি টাকা।
এদিকে ব্যান্ডউইথ বিক্রি বাবদ বিভিন্ন কোম্পানির কাছে চলতি অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির বকেয়া রয়েছে প্রায় ২৪৫ কোটি টাকা। যদিও আগের অর্থবছরগুলোতে বকেয়ার পরিমাণ ছিল আরও বেশি। জানা গেছে, গত কয়েক অর্থবছরের হিসাবে সবচেয়ে বেশি বকেয়া বেড়েছে ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে। ২০২১-২২ সালে কোম্পানির বকেয়া ছিল ৩০৭ কোটি টাকা, ২০২২-২৩ সালে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮২ কোটি টাকা।
বকেয়া আদায় না বাড়লেও নিয়মিতই বকেয়া আদায়ের সভা হয়। এসব সভায় বকেয়া আদায় না বাড়লেও সম্মানীর টাকায় পকেট ভরছেন কর্মকর্তারা। জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৮০টির বেশি সভা করেছে বকেয়া আদায় কমিটি। এজন্য ২০ লাখ টাকার বেশি সম্মানী নিয়েছেন কমিটির সদস্যরা
প্রথম আলো:
সবজির সরবরাহ কম, দাম বাড়ে হাতবদলে
অসময়ে অতিবৃষ্টির কারণে শীতকালীন আগাম সবজির উৎপাদন ২৫ শতাংশ কমে গেছে। তাই সবজির দাম বাড়তি।
কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে সবজির চড়া দামের কারণ সরবরাহ ঘাটতি ও বারবার হাতবদল। উৎপাদন পর্যায়েই এখন সবজির দাম বেশি। ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে সেই দাম কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
কৃষক, পাইকারি বিক্রেতা, আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সরবরাহব্যবস্থায় কীভাবে দাম বাড়ে, তা দেখতে প্রথম আলোর দুজন প্রতিবেদক যশোর ও বগুড়া থেকে সবজিবাহী দুটি ট্রাকে করে রাজধানীর আড়ত পর্যন্ত এসেছেন।
এদিকে গতকাল সোমবার রাজধানীর দুটি পাইকারি ও তিনটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, কয়েক দফা হাতবদলে পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম কেজিতে সর্বনিম্ন ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে গতকাল প্রতি কেজি বরবটির দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। একই দিন তা মিরপুরের শেওড়াপাড়া ও মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে খুচরায় বিক্রি হয় ১৫০ টাকায়।
জানা যায়, উৎপাদন এলাকার মোকাম থেকে রাজধানীতে পণ্য আসার পরও কয়েক দফা হাতবদল হয়। পাইকারি থেকে অন্তত চারবার হাত বদল হয়ে তা ভোক্তার কাছে পৌঁছায়। যেমন ট্রাক থেকে প্রথমে পণ্য যায় আড়তে, সেখানে থেকে পণ্য কেনেন পাইকার বা ফড়িয়ারা। পরে ফড়িয়াদের কাছ থেকে বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীরা পণ্য কিনে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, চার দফা হাতবদলে দু-তিনজন মধ্যস্বত্বভোগী যুক্ত হন।
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
১৫ বছরে টাকার কুমির হয়েছেন শামীম ওসমান
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান আলোচিত-সমালোচিত মুখ। তার নির্বাচনি এলাকা ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জকে নববধূর মতো সাজানোর ঘোষণা দিলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি তেমন কোনো কাজই করেননি। তার সংসদীয় এলাকা বছরজুড়েই পানিতে ডুবে থাকে। রাস্তাঘাটের অবস্থাও ভালো নয়। এলাকার অধিকাংশ রাস্তা খানাখন্দে ভরা। সংসদীয় এলাকায় তেমন কোনো উন্নয়ন করতে না পারলেও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ফুলেফেঁপে টাকার কুমির বনেছেন শামীম ওসমান। নিজ ও নিজের পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা জমিয়েছেন। দেশ ও দেশের বাইরে রয়েছে তার বিশাল ব্যবসাবাণিজ্য। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলতেন- ‘দুই আর দুই’ মিলে অনেকে চার বললেও আমি দেখি ২২। কারণ আমি আগে থেকেই অনেক কিছু অনুমান করতে পারি। সেই বক্তব্য দেওয়া শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের নিষ্ঠুর পতন হবে, সেটা তিনি বুঝতে পারেননি। সেই সঙ্গে তাকেও দেশ ছেড়ে পালাতে হবে সেটাও উপলব্ধি করতে পারেননি।
কালের কন্ঠ:
১৭ লাখ কোটি টাকার প্রকল্প/উন্নয়নের সাত লাখ কোটি লুট!
ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে ১৭ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সড়ক ও সেতু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের হাজার হাজার প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতি আর লুটপাট হয়েছে সীমাহীন। প্রভাবশালীদের ইচ্ছায় অপ্রয়োজনীয়, কমিশননির্ভর এবং অপচয়ের এসব প্রকল্পের একটি বড় অংশই গেছে স্বার্থান্বেষী মহলের পেটে। সড়ক ও সেতু বিভাগের ওপর করা টিআইবির একটি গবেষণার তথ্য ধরলেও গড়ে এই অনিয়ম, লুটপাট ও দুর্নীতির অঙ্ক কমবেশি চার লাখ কোটি থেকে সাত লাখ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, অন্য সব প্রকল্পেও কমবেশি একই হারে অনিয়ম-দুর্নীতি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাঁরা মনে করেন, অপরিকল্পিত অবকাঠামোনির্ভর এসব প্রকল্প নেওয়াই হতো টাকা লুটপাটের জন্য।
নয়াদিগন্ত:
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ অঞ্চল চান প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাখাইনে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য জাতিসঙ্ঘের দ্বারা গ্র্যান্টেড নিরাপদ অঞ্চল তৈরি এবং তাদের সহায়তা করার উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি রাখাইনের বিদ্যমান সঙ্কট সমাধানে এটি একটি ভালো সূচনা হতে পারে এবং বাংলাদেশে হাজার হাজার নতুন শরণার্থীর প্রবেশ ঠেকাতে পারবে।
মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার জাতিসঙ্ঘের বিশেষ রিপোর্টার থমাস অ্যান্ড্রুজ প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান। রাজধানীর তেজগাঁও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ র্যাপোর্টার থমাস অ্যান্ড্রুজ রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়ে গত মাসে নিউইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাইটলাইনে বৈঠক করেন এবং এ সময় তিনি জাতিসঙ্ঘে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থাপিত তিন দফা প্রস্তাবের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বড় ধরনের সঙ্কট তৈরি করেছে এবং এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাসহ বাস্তুচ্যুত ও অনাহারি মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তার প্রয়োজন। বিশেষ রিপোর্টার জানান, মিয়ানমারের অন্তত ৩.১ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে রাখাইন রাজ্যের রয়েছে কয়েক লাখ। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো এখানে দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। তিনি উল্লেখ করেন সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তবে কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরগুলোতে ইতোমধ্যে দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বসবাস করছে।
অধ্যাপক ইউনূস রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ ও বাস্তুচ্যুত মানুষের সজন্য আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে আলোচনা করার পরামর্শ দেন। তিনি হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসন ত্বরান্বিত করতে বিশেষ রিপোর্টারের সহায়তা চান।
যুগান্তর:
ব্যাপারী ও ফড়িয়াদের দাপট
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও বাজারে পণ্যমূল্য পরিস্থিতি সর্বকালের রেকর্ড ছাড়াচ্ছে। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে সব পণ্যের দামই বাড়ছে হুহু করে। তাদের থাবা থেকে বাদ যায়নি সবজিও। রাজধানীর খুচরা বাজারে বেশির ভাগ সবজির কেজি ১০০ টাকার ওপরে। আবার কিছু ৩০০ টাকাও ছাড়িয়ে গেছে। পরিস্থিতি এমন-চার থেকে পাঁচ হাত বদলে কৃষকের ৩০ টাকা কেজির বেগুন ভোক্তা ১৫০ টাকা দিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যান্য সবজিতেও একই চিত্র। আর এই হাতবদলের মারপ্যাঁচে প্রথমেই সবজির দাম আকাশছোঁয়া করছেন স্থানীয় ব্যাপারী ও রাজধানীর ফড়িয়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। মূলত তাদের কারসাজিতে মাঠ পর্যায়ে কৃষক যে দামে পণ্য বিক্রি করছেন, ঢাকায় ক্রেতা পাঁচগুণ বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম কমায় পরিবহণ ভাড়াও কমেছে। সঙ্গে রাস্তায় নামে-বেনামে কমেছে চাঁদাবাজি। নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উৎপাত। তারপরও পণ্যের দাম কমেনি। বরং প্রতিদিনই বাড়ছে। যুগান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উৎপাদনকারী থেকে পণ্য ভোক্তা পর্যায়ে আসতে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোতে হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে-স্থানীয় ব্যবসায়ী, ব্যাপারী, ফড়িয়া, পাইকারি ব্যবসায়ী, খুচরা বাজার ইত্যাদি। প্রতিটি ধাপেই মূল্য বাড়ছে। সবকিছু যোগ করে নির্ধারণ হচ্ছে সবজির দাম। এর সঙ্গে লাভ যোগ করে খুচরা বিক্রেতা ভোক্তার হাতে পণ্য তুলে দিচ্ছেন। তবে ভোক্তা যে দামে কিনছেন তার সঙ্গে কৃষকের বিক্রি দামের মধ্যে বিস্তর ফারাক দেখা গেছে। বাস্তবে দুই প্রান্তের (ঢাকা ও তৃণমূল পর্যায়) সঙ্গে মিলিয়ে দেখা গেছে পণ্য উৎপাদনের পর বিক্রি করে ঠকছেন কৃষক এবং ঢাকায় খুচরা পর্যায়ে চড়া দামে কিনতে গিয়ে ঠকছেন ভোক্ত। আর বাকি সবাই লাভবান হচ্ছেন।
দৈনিক সংগ্রাম:
রাষ্ট্র সংস্কারে কমিশনের কাজ শুরু
* বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মতামত নেবে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন
* তিন সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম চিহ্নিত করা হবে – বদিউল আলম মজুমদার
* জনপ্রশাসন সংস্কারে মাঠ পর্যায়ে আলোচনা করবে কমিশন
* ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযোগ নেবে গুম সংক্রান্ত কমিশন
মিয়া হোসেন: রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ তুলে ধরতে গঠিত কমিশনগুলো কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে কমিশনগুলো একাধিকবার বৈঠক করেছে। তারা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মতামত গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে সংস্কারের জন্য গঠিত ৬টি কমিশনই একাধিকার বৈঠক করেছে। গুমের বিষয়ে অভিযোগ গ্রহণ করছে গুম সংক্রান্ত কমিশন। আর দুদক সংস্কারে মতামত আহবান করেছে দুদক সংস্কার কমিশন। অন্যান্য কমিশনগুলোও জনগনের মতামত গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করবে সরকার।
গতকাল সোমবার তৃতীয় দিনের মতো বৈঠক করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সচিবের সাথে বৈঠক করেছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেছেন, বিগত তিনটি নির্বাচনের অনিয়মগুলো চিহ্নিত করে এগুলো দূর করার জন্য প্রস্তাব তৈরি করবেন।
এদিকে গত রোববার রাতে ভার্চুয়ালি সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত। সভায় তারা কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারের লক্ষ্যে আগ্রহী ব্যক্তিদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ চেয়েছে দুদক সংস্কার কমিশন। গতকাল সোমবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রথম সভা করেছেন। সভা শেষে কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেছেন, সরকারি চাকরিজীবীসহ মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ শুরু করবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
মানবজমিন:
তিন মাস পর্যবেক্ষণ এরপর কৌশল নির্ধারণ বিএনপি’র
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে কৌশল নির্ধারণ করবে বিএনপি। আপাতত আগামী তিন মাস সরকারের নেয়া পদক্ষেপ ও উদ্যোগ পর্যালোচনা করবে দলটি। এরপর দলীয় কৌশল নির্ধারণ করা হবে। এই সময়ে সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা ও ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরিয়ে দেয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে। দলের নেতারা নির্বাচনের বিষয়ে কথা বললেও নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে নির্বাচন প্রস্তুতির জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সময় দেয়ার বার্তা দেয়া হচ্ছে।
সময় বেঁধে না দিলেও অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দীর্ঘ হোক- তা চায় না দলটি। ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় দু’মাস অতিবাহিত হয়েছে। আরও তিন মাস এই সরকারের পারফরমেন্স দেখতে চায় তারা। এরমধ্যে সরকারের কাজ সন্তোষজনক না হলে এবং নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করা না হলে সরকারের উপর বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে পারে দলটি।
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর এ পর্যন্ত যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তা নিয়ে কিছুটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে বিএনপি নেতাদের মাঝে। তারা মনে করছেন সরকারকে আরও তৎপর হওয়া দরকার। নির্বাচনসহ আরও কিছু বিষয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত। এটি করা হলে সাধারণ মানুষ আশ্বস্ত হবে। দলগুলো নির্বাচন নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারবে।
দেশরুপান্ত:
নিজেই নিজের হত্যা মামলার আসামি!
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট রাজধানী ঢাকায় গুলিতে নিহত হন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের মাওলানা মাহমুদুল হাসান। তবে পুলিশের লেখার ভুলে তিনি এখন ‘কাগুজে’ আসামি। মাহমুদুলের নিজ এলাকা সরাইল থানায় এ বিষয়ে অনুসন্ধান স্লিপ আসার পর দুশ্চিন্তায় পড়েছে তার পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাহমুদুল নিহত হওয়ার ঘটনায় তার মামা মো. খলিল উল্লাহ বাদী হয়ে ১০১ জনকে আসামি করে উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত কাজের স্বার্থে মাহমুদুল হাসান সম্পর্কে জানতে সরাইল থানায় অনুসন্ধান স্লিপ আসে। সেখানে আসামি হিসেবে মাহমুদুলের স্বভাব চরিত্র যাচাই করে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়। এরপরই সরাইল থানা পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের মাধ্যমে খবরটি মাহমুদুলের পরিবারের কাছে যায়।
নিহত মাহমুদুল হাসানের চাচা সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমার ভাতিজা মাহমুদুল হাসান ৫ আগস্ট নিহত হলে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। দুদিন আগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আমাকে ফোন করে জানান মারা যাওয়া আমার ভাতিজা মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে ঢাকায় মামলা হয়েছে। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে। বিষয়টি শুনে আমি হতবাক হয়ে যাই। আমাদের ধারণা মাহমুদুলকে হত্যার মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।’