কুমিল্লায় পাওনা টাকা নিয়ে সালিশ বৈঠক চলাকালে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাতে জেলার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাজিব হোসেন উপজেলার রহিমপুর গ্রামের মৃত খলিল মিয়ার ছেলে।
আহতরা হলেন- নবীপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর হোসেন (৫০), তার ছেলে আক্তার হোসেন (৩০) ও জসিম উদ্দিন (৫৫)। আহতরা কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় মারুফ (১৯) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা। মারুফ উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।
আহত আক্তারের স্ত্রী রাবেয়া জানান, তার ননদ নিলুফা বেগম উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের শিরিন বেগমের থেকে ১০ হাজার টাকা ধার আনেন। ধারের টাকা দিতে না পাড়ায় বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিস বৈঠক হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। পাওনা টাকার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে তার ননদ ও স্বামীকে তুলে নেয়ার জন্য শিরিন ৮-১০ জনকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়িতে আসেন। এসময় আমাদের সাথে তাদের হাতাহাতি হয়। এরপর স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয়পক্ষকে নিয়ে নবীপুর বাজারে কামাল মাষ্টারের অফিসে সালিশ বৈঠকে বসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সালিশ চলাকালে অফিসের বাইরে শিরিন বেগমের সাথে আসা মারুফ, মারফতসহ কয়েকজন রাবেয়া বেগমকে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এসময় রাবেয়ার স্বামীর বন্ধু রাজিব রাবেয়াকে উঠাতে গেলে মারুফ, মারফত, কোমর থেকে ছুরি বের করে রাজিবের বুকে ও শরীরে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে। এসময় রাজিবকে বাঁচাতে আসলে তার বন্ধু আক্তার হোসেন ও তার বাবা মোজাফ্ফর এবং কাকা জসিম উদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এসময় স্থানীয়রা মারুফ নামের একজন হামলাকারীকে আটক করে এবং আহতদের উদ্ধার করে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজিব হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আহতদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক বলেন, হত্যার ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও এ ঘটনায় হত্যা মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।