সংবিধানের ৫৭ (৩) অনুযায়ী পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বভার নেয়ার আগ পর্যন্ত পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী তার পদে বহাল থাকবে। সেই হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী এখনও শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
গত সোমবার (৭ অক্টোবর) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আয়োজনে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারি কক্ষে ‘সংবিধান: ক্ষমতার না জনতার?’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো সংবিধান নেই উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, সংবিধান যদি না থাকে তাহলে বর্তমানে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার এই সংবিধানের অধীনে শপথ নিলেন কিভাবে? একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, যদি সংবিধান থেকে থাকে তাহলে সংবিধান অনুযায়ী এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংবিধানের ৫৭ (৩) অনুযায়ী পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বভার নেয়ার আগ পর্যন্ত পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী তার পদে বহাল থাকবে। সেই হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবিধানের ৭ (খ) তে বলা হচ্ছে এই সংবিধানের কিছু কিছু ধারা জীবনে কোনোদিন পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু সংবিধান কোনো ধর্মগ্রন্থ নয় যে এটা পরিবর্তন করা যাবে না। আগামীর সংসদ কি আইন করবে বা কি আইন করবে না সেটা আজকের সংসদ নির্ধারণ করতে পারে না।
সংবিধানের প্রতিটা সংশোধনী হয়েছে নিজের দলের স্বার্থে উল্লেখ করে তিনি বারও বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতিটা সংশোধনী হয়েছে নিজের স্বার্থে, নিজের দলের স্বার্থে, নিজের দলকে ক্ষমতায় রাখার পথকে সুগম করার জন্য। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সংবিধানের যতগুলো সংশোধনী হয়েছে প্রত্যেকটা সংশোধনী ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে করা হয়েছে।
রাষ্ট্রের পুরো কাঠামোকে চতুর্থ সংশোধনী ভেঙে দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার এসেছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে পুরোপুরি নির্বাহী বিভাগের হাতে দিয়ে ক্ষমতার পৃথকীকরণকে পুরোপুরি মুছে ফেলা হয়েছে। এই সংবিধান হওয়া উচিত মানুষের অভিপ্রায়ের বহিঃপ্রকাশ। অতএব আমরা এই সংবিধান রাখবো নাকি নতুন সংবিধান লিখবো সেই বিষয়েও একটা গণভোট হওয়া উচিত। আমরা বার বার মানুষ থেকে দূরে সরে যাই।
সভায় আরও আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম৷