ঢাকা ০১:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিস্তায় ভাঙ্গনে বসতভিটা জমি সবই নদীগর্ভে

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ১০:০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪
  • 54

তিস্তা নদী গিলে খাচ্ছে মানুষের বসতভিটা, ফসলি জমি। রংপুরের কাউনিয়ায় গত কয়েকদিনে ১০ পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে।

লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার হরিণচওড়া, রাজপুর, আদিতমারী উপজেলার চি মারি, হাতিবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারিসহ অন্তত ২৩টি পয়েন্টে তিস্তার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে শতাধিক বসতভিটাসহ নানা স্থাপনা।

রংপুরের কাউনিয়ায় উপজেলায় তিস্তা নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। কাউনিয়ার মানচিত্র থেকে শুভাঘাট ও শনশনাটারী মৌজা দুটি বিলীন হয়ে গেছে অনেক আগেই।

আরও পড়ুন:দুপুরের মধ্যে ১৩ জেলায় ঝড়বৃষ্টির আভাস

গত কয়েকদিনে ১০ পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। জানা জায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়নই নদীভাঙনের শিকার। কাউনিয়ায় গত শুক্রবার রাত থেকে ভারতের ছেড়ে দেওয়া পানি আর বৃষ্টির পানিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে নদী-তীরবর্তী ১০টি গ্রাম।

গত রবিবার রাত থেকে পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে চরগনাই গ্রামের ১০টি বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। আরও ১২টি বসতভিটা নদীগর্ভে যাওয়ার পথে। এভাবেই প্রতিবছর ফসলি জমি আর বাড়িঘর তিস্তা নদী গিলে খাচ্ছে।

চরগনাই গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিমিশেই তারসহ ১০টি বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। এ অবস্থায় দুশ্চিস্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিস্তা নদীপাড়ের বাসিন্দারা। নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে নদীভাঙন। এবারও হয়তো ফসলি জমি নদীর পেটে চলে যাবে। এ নিয়ে চিন্তায় আছি। হঠাৎ বন্যায় নদী-তীরবর্তী এলাকার উঠতি ধান, বীজ বাদাম, মরিচসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ডুবে যায় কৃষকের ফসল, ভেসে যায় পুকুরের মাছ।

টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, তার এলাকায় ১০টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যে হারে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে করে আরও শতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। তিস্তা নদী ড্রেজিং করা না হলে এই ভাঙন ঠেকানো যাবে না।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার হরিণচওড়ার বাসিন্দা ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মালেক জানায়, হরিণচড়া এলাকায় নদীর ভাঙন এতটাই তীব্র আকারে শুরু হয়েছে যে মানুষজন বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়ার সময় পায়নি। গত ১২ ঘণ্টায় ২৪টি বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ১৬টি বসতভিটা। এ ছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে বহুতল মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনা। একই এলাকার বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ সাবেরা বেগম বলেন, মধ্য রাতে নদীর ভাঙনে আমাদের বাড়ি অন্য স্থানে সরিয়ে নিতে শুরু করি। কিছুক্ষণের মধ্যে দুটি ঘর সরাতে পারলেও একটি ঘর ও কয়েকটি গাছ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

হাতিবান্ধার গড্ডিমারি এলাকার এক কৃষক বলেন, চলতি বছরে দুই দফা বাড়ি সরিয়ে এবারও ভাঙনের কবলে পড়তে হলো। সোমবার রাতে তিস্তার ভাঙনে তার বাড়িসহ এ এলাকার ছয়টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানায়, তিস্তার বেশকিছু পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সব বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।

তিস্তায় ভাঙ্গনে বসতভিটা জমি সবই নদীগর্ভে

আপডেট সময় ১০:০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

তিস্তা নদী গিলে খাচ্ছে মানুষের বসতভিটা, ফসলি জমি। রংপুরের কাউনিয়ায় গত কয়েকদিনে ১০ পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে।

লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার হরিণচওড়া, রাজপুর, আদিতমারী উপজেলার চি মারি, হাতিবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারিসহ অন্তত ২৩টি পয়েন্টে তিস্তার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে শতাধিক বসতভিটাসহ নানা স্থাপনা।

রংপুরের কাউনিয়ায় উপজেলায় তিস্তা নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। কাউনিয়ার মানচিত্র থেকে শুভাঘাট ও শনশনাটারী মৌজা দুটি বিলীন হয়ে গেছে অনেক আগেই।

আরও পড়ুন:দুপুরের মধ্যে ১৩ জেলায় ঝড়বৃষ্টির আভাস

গত কয়েকদিনে ১০ পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। জানা জায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়নই নদীভাঙনের শিকার। কাউনিয়ায় গত শুক্রবার রাত থেকে ভারতের ছেড়ে দেওয়া পানি আর বৃষ্টির পানিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে নদী-তীরবর্তী ১০টি গ্রাম।

গত রবিবার রাত থেকে পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে চরগনাই গ্রামের ১০টি বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। আরও ১২টি বসতভিটা নদীগর্ভে যাওয়ার পথে। এভাবেই প্রতিবছর ফসলি জমি আর বাড়িঘর তিস্তা নদী গিলে খাচ্ছে।

চরগনাই গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিমিশেই তারসহ ১০টি বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। এ অবস্থায় দুশ্চিস্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিস্তা নদীপাড়ের বাসিন্দারা। নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে নদীভাঙন। এবারও হয়তো ফসলি জমি নদীর পেটে চলে যাবে। এ নিয়ে চিন্তায় আছি। হঠাৎ বন্যায় নদী-তীরবর্তী এলাকার উঠতি ধান, বীজ বাদাম, মরিচসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ডুবে যায় কৃষকের ফসল, ভেসে যায় পুকুরের মাছ।

টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, তার এলাকায় ১০টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যে হারে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে করে আরও শতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। তিস্তা নদী ড্রেজিং করা না হলে এই ভাঙন ঠেকানো যাবে না।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার হরিণচওড়ার বাসিন্দা ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মালেক জানায়, হরিণচড়া এলাকায় নদীর ভাঙন এতটাই তীব্র আকারে শুরু হয়েছে যে মানুষজন বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়ার সময় পায়নি। গত ১২ ঘণ্টায় ২৪টি বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ১৬টি বসতভিটা। এ ছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে বহুতল মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনা। একই এলাকার বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ সাবেরা বেগম বলেন, মধ্য রাতে নদীর ভাঙনে আমাদের বাড়ি অন্য স্থানে সরিয়ে নিতে শুরু করি। কিছুক্ষণের মধ্যে দুটি ঘর সরাতে পারলেও একটি ঘর ও কয়েকটি গাছ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

হাতিবান্ধার গড্ডিমারি এলাকার এক কৃষক বলেন, চলতি বছরে দুই দফা বাড়ি সরিয়ে এবারও ভাঙনের কবলে পড়তে হলো। সোমবার রাতে তিস্তার ভাঙনে তার বাড়িসহ এ এলাকার ছয়টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানায়, তিস্তার বেশকিছু পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সব বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।