আজকের প্রত্রিকার প্রধান প্রধান খবর
নয়াদিগন্ত:
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ঠিক করছে ভারত
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ আবার কিভাবে ফিরে আসতে পারে তা নিয়ে পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে ভারতে। ইতোমধ্যে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে। এতে ভারতের বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিকরা অংশ নেন। ওই বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল, ‘বাংলাদেশে চলমান ভারতীয় প্রকল্প ও রি-সেটেল আওয়ামী লীগ’ (আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন)। বৈঠকে সবার আগে বাংলাদেশে চলমান ভারতীয় প্রকল্পগুলোর সঠিক ও বাধাহীন বাস্তবায়নের ওপর ব্যাপক জোর দিতে বলা হয়। পাশাপাশি ভারতের সাথে শেখ হাসিনা সরকারের মধ্যকার হওয়া সমঝোতা স্মারকগুলো (এমওইউ) পুনর্বিবেচনা করা হলেও সম্পাদিত চুক্তিগুলো থেকে বর্তমান সরকার যেন সরে না যায় সেটি নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয়।
২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকের ‘মিনিটস অব দ্য মিটিং’ জার্মানির বন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর এশিয়ার হাতে এসে পৌঁছেছে। একটি সূত্রে জানা গেছে, সেখানে সাংবাদিক ও আমলাদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন অধ্যাপককেও তাদের মতামত দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বৈঠকে ছিলেন অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ), বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশন ও ইনস্টিটিউট অব ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের (আইডিএসএ) প্রতিনিধিরা। তবে সব কিছু ছাপিয়ে ওই বৈঠকের মূল আলোচনা গড়ায় আওয়ামী লীগের ‘রিসেটেলমেন্ট’ (পুনর্বাসন) নিয়ে। সেখানে উপস্থিত একজন প্রতিনিধি জানান, তারা ধারণা করছেন দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু বিএনপি ঠিকই পাঁচ বছরের মধ্যে নানা অজনপ্রিয় কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়বে। বাংলাদেশের দ্বি-দলীয় রাজনৈতিক বাস্তবতায় তখন জনগণের সমর্থন আওয়ামী লীগের দিকে ঘুরে যাবে। আলোচনায় ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার ‘ভূমিধ্বস’ জয়ের উদাহরণ টানা হয়।
ভবিষ্যত আওয়ামী লীগের জন্য সে পথ খোলা রাখতে বর্তমান সংস্কার প্রক্রিয়া ও আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তাগাদা দেয়া হয়। বৈঠকে একজন থিংক ট্যাংক প্রতিনিধি, রি-সেটেল আওয়ামী লীগ পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আগে বাংলাদেশে গিয়ে ভারতের ‘অরাজনৈতিক বন্ধুদের’ পরামর্শ নেয়ার কথা বলেন।
যুগান্তর:
পাঁচশ কোটি টাকা পাচারে জড়িত সিন্ডিকেট
বিদ্যুতের স্মার্ট প্রিপেইড মিটার তৈরির নামে ‘মেইড ইন বাংলাদেশে’র আড়ালে ৫শ কোটি টাকার বেশি অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এ প্রক্রিয়ায় বিদেশ থেকে নিম্নমানের মিটার কিনে সেগুলোর গায়ে মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা হয়। এরপর দেশীয় পণ্য বলে বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়।
সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বেসিকো), বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো), চীনের কোম্পানি হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড ও সেনজেন স্টার ইকুইপমেন্ট নামের এই চারটি কোম্পানি মিলে গড়ে ওঠা একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এই লুটপাট আর পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিল।
এই জালিয়াতচক্রের সামনে ছিলেন সদ্য বিদায়ি শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও আবাসন ব্যবসায়ী আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল ও নসরুল হামিদ বিপুর স্ত্রীর বড় ভাই মাহবুব রহমান তরুণ। এদের মধ্যে বেসিকোর সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চার করা চাইনিজ প্রতিষ্ঠান হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেডের স্থানীয় প্রতিনিধি হলেন আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল এবং আরপিসিএলের সঙ্গে জয়েন্টভেঞ্চার করা চাইনিজ প্রতিষ্ঠান সেনজেন স্টার ইকুইপমেন্টের স্থানীয় প্রতিনিধি হলেন মাহবুব রহমান (তরুণ)।
সম্প্রতি এই চক্রের বিরুদ্ধে বাজার মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি দামে ডিপিএম (ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড) পদ্ধতিতে প্রিপেইড মিটার কেনাকাটার অভিযোগ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, ডিপিএম বাণিজ্য, এলসির মাধ্যমে অর্থ পাচার, দুর্নীতি, জাল-জালিয়াতিসহ বিভিন্ন খাতে এই চক্রটি দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সরকারের তদন্ত কমিটি ও যুগান্তরের নিজস্ব অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে উল্লিখিত সব চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সমকাল:
‘সংস্কার পরীক্ষা’র চ্যালেঞ্জ ডিঙাতে হবে সরকারকেই
বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত সংস্কারে সহযোগিতা ও সমর্থনের ব্যাপারে বিশ্বনেতারা একাট্টা। তবে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার প্রয়োজন, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকেই। মোদ্দা কথা, ‘সংস্কার পরীক্ষায় পাস’ করতে হবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। তবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার করতে না পারলে বিশ্বের এ সমর্থন তেমন একটা ফল বয়ে আনবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রে ৭৯তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি ড. ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট, কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধানসহ একাধিক বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা সবাই এক বাক্যে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার চান। এজন্য ড. ইউনূসকে যে কোনো সহায়তা দিতেও তারা প্রস্তুত।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকার বিভিন্ন খাতে কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের বিষয়টি চিহ্নিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) মোটামুটি সবাই বাংলাদেশ ও ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি সমর্থনের বার্তা দিয়েছে। গেল ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেক বড় দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস। ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা যাতে কেউ নিজের দখলে না নিতে পারে সেজন্য নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন এবং সংবিধান সংস্কারের মতো বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। আর এসব সংস্কারের জন্য বহির্বিশ্বের সমর্থন প্রয়োজন। তবে সবচেয়ে বেশি জরুরি অভ্যন্তরীণভাবে সব পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতে কঙ্ক্ষিত সংস্কার করা। বিষয়টি খুব একটা সহজ নয়। কারণ, গত সাড়ে ১৫ বছরে সাংবিধানিকসহ দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করে যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে, এর পুনর্গঠন করতে হবে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে।
প্রথম আলো:
কয়েক মাস নজরে রেখে হিজবুল্লাহপ্রধানকে হত্যা
১৯৯২ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে হিজবুল্লাহর প্রধান হন হাসান নাসরুল্লাহ। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সশস্ত্র সংগঠনটি।
বড় ধাক্কা খেল লেবাননের শিয়াপন্থী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। চিরশত্রু ইসরায়েলের হামলায় গত শুক্রবার রাতে নিহত হয়েছেন সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ। তিন দশকের বেশি সময় ধরে হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। নাসরুল্লাহর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংকট আরও গভীর হলো।
সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, কয়েক মাস ধরে নাসরুল্লাহর গতিবিধি অনুসরণ করছিলেন ইসরায়েলি গোয়েন্দারা। অনেক বছর ধরে তিনি সরাসরি জনসমক্ষে আসতেন না। ৬৪ বছর বয়সী এই নেতা বিভিন্ন সময়ে টিভিতে দেওয়া ভাষণে অনুসারীদের বার্তা দিতেন। মধ্যপ্রাচ্যের জন্য হুমকি উল্লেখ করে তিনি ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিতেন।
ইসরায়েল–হিজবুল্লাহর দ্বন্দ্ব বেশ পুরোনো। ২০০৬ সালে একবার যুদ্ধে জড়িয়েছিল তারা। এরপর গত বছর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর হামাসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলে হামলা শুরু করে সংগঠনটি। পাল্টা হামলা চালাচ্ছিল ইসরায়েলও। দুই সপ্তাহ ধরে হামলা জোরদার করে ইসরায়েল। এরই মধ্যে গত শুক্রবার রাতে রাজধানী বৈরুতসহ লেবাননের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালানো হয়।
শুক্রবারের হামলার পর ইসরায়েলি বাহিনীর একাধিক মুখপাত্র জানান, এদিন বৈরুতে হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহসহ অন্য নেতাদের
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেওয়া হবে : জামায়াত আমির
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘সময়মতো হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেওয়া হবে।’ গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আয়োজনে দায়িত্বশীল সমাবেশে ‘যৌক্তিক সময়ে জাতীয় নির্বাচন’ বিষয়ে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘জাতির প্রত্যাশা এবং আবেগের বাইরে কিছু করা যাবে না। জাতির চেতনা ও ২৪ বিপ্লবকে ধারণ করতে হবে’। দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আসুন একটি ঐক্যবদ্ধ সমাজ গড়ে তুলি। ঐক্যই হোক এ জাতির সৌন্দর্য এবং শক্তি।’ স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার সম্পর্কে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা অবৈধভাবে গদি টিকিয়ে রাখার জন্য খুনের নেশায় পাগল হয়ে গিয়েছিল।’
স্থানীয় হোটেল সাহিদ প্যালেসের সভাকক্ষে আয়োজিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মো. রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবুল হাশেম, চুয়াডাঙ্গার নায়েবে আমির মাওলানা আজিজুর রহমান, মেহেরপুরের নায়েবে আমির মাওলানা মাহবুবুর রহমান, সেক্রেটারি ইকবাল হোসাইন, চুয়াডাঙ্গার সাবেক আমির আনোয়ারুল হক মালিক প্রমুখ। দায়িত্বশীল সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার চার শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক সংগ্রাম:
অধিকাংশ দলই প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ভয়মুক্ত নির্বাচনের পক্ষে
মোহাম্মদ জাফর ইকবাল: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন। দীর্ঘ ভাষণে তিনি গত আওয়ামী লীগ সরকারের অনিয়ম, অত্যাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়ে কথা বলেন। ভাষণে তার দেয়া বক্তব্যের মধ্যে সবার আগ্রহ ছিল নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে। বক্তৃতায় ড. ইউনূস বলেন, দেশের মানুষ তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে এটাই আমাদের লক্ষ্য। অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তবে এই ভাষণে দিনক্ষণ বা কখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। যদিও এর আগে গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে সংবাদ ও গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার ১৮ মাস পর দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
জানা গেছে, আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশের বেশ কিছু রাজনৈতিক দল প্রতিনিয়ত বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নির্বাচনের একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চায়। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, মানুষের আস্থা ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে এবং নির্মম অতীত যেন আর ফিরে না আসে, সেজন্য তারা কিছু সুনির্দিষ্ট খাতে সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সেই লক্ষ্যে বিদ্যমান নির্বাচন ব্যবস্থা, সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা সংস্কারে স্বাধীন কমিশন গঠন করেছে। সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের সংস্কারের জন্যও পৃথক কমিশনসহ আরো কয়েকটি বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব সংস্কার যেন টেকসই হয়, তা দীর্ঘমেয়াদে নিশ্চিত করতে এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
সূত্র মতে, অন্তর্বর্তী সরকার যখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগের কথা বলছে, সেসময় সেনাপ্রধান দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে একটি সময়ের কথা জানান। তার বক্তব্যে সবাই একটি ধারণা পায় যে, এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। দেশে যাতে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বাত্মক সমর্থনের অঙ্গীকার করেছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। সম্প্রতি ঢাকায় নিজ কার্যালয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেনাপ্রধানের এ বক্তব্য বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। কারণ কতদিন পর দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এ নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা কৌতূহল ও প্রশ্ন রয়েছে। সেনাপ্রধানের এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এ বিষয়ে মানুষের কৌতূহলের অবসান হবে।
কালবেলা:
হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দিন
শেখ হাসিনাকে ‘খুনি ও গণহত্যাকারী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তাকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতকে চিঠি পাঠাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের শিল্পাঞ্চলে চলমান অস্থিরতার জন্য শেখ ‘হাসিনার প্রেতাত্মারা’ দায়ী বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিএনপির নেতাকর্মীদের কলকারখানা পাহারা দেওয়ার আহ্বানও জানান ফখরুল।
গতকাল শনিবার বিকেলে গাজীপুরের কোনাবাড়ী ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। শিল্পাঞ্চলে বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ ও শান্তি বজায় রাখা এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন নিয়মিত পরিশোধের দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাজীপুর জেলা ও মহানগর শ্রমিক দলের যৌথ উদ্যোগে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। দুপুর থেকেই বিএনপি ও শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল করে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। বিকেলের আগেই কয়েক হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি কলেজ মাঠ লোকারণ্য হয়ে ওঠে।মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য শেখ হাসিনা দেশের সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছিল। বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে। তাদের দিয়ে গুলি করে, মিথ্যা মামলা দিয়ে, জেলে নিয়ে নির্যাতন করে, অকথ্য অত্যাচার করে দেশকে ভীতির রাজ্যে পরিণত করেছিল। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা যখন পালিয়ে গেছে, তখন এ দেশের মানুষ হাফ ছেড়ে বেঁচেছে
মানবজমিন:
আন্দোলনে নিহত ১৫৮১
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারা দেশে শহীদদের একটি প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে গঠিত স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। প্রাথমিক এই তালিকায় মোট ১ হাজার ৫৮১ জনের শহীদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শনিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে স্বাস্থ্য উপ-কমিটি, নাগরিক কমিটিসহ অংশীজনদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ সংখ্যা এখনো চূড়ান্ত নয় বলে জানানো হয়। এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য উপ-কমিটির সদস্য সচিব তারেকুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রাথমিক তালিকার তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। এই কমিটি তথ্য যাচাই-বাছাই করার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চূড়ান্ত তালিকা প্রদান করবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তালিকা প্রণয়নের কাজে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি, রেড জুলাইসহ অন্য বেশ কয়েকটি সংস্থা সহায়তা করেছে। পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ের ব্যক্তিরাও তথ্য প্রদান করে সহযোগিতা করেছেন, যা এই তালিকা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ফরহাদ আলম ভূঁইয়া বলেন, এ তালিকার কাজ এখনো চলমান, এটি চূড়ান্ত নয়। চূড়ান্ত তালিকা পরে জানানো হবে। আহত ব্যক্তিদের কী ধরনের তথ্য পেয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তারেকুল ইসলাম বলেন, আমরা বর্তমানে ৩১ হাজারের বেশি আহতের নাম পেয়েছি। তবে এই তথ্যগুলো চূড়ান্ত নয়। সংখ্যা আরও বাড়বে। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য উপ-কমিটির আহ্বায়ক নাহিদা বুশরা ইতি, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মো. নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ গত ২২শে সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য উপ-কমিটি ১৪২৩ জন নিহতের তথ্য প্রকাশ করে। এ ছাড়া ২২ হাজার আহতের তথ্য দেয়া হয় এদিন।
বনিকবার্তা:
ভারত-পাকিস্তানে সাড়ে ৩ থেকে ৪ টাকা, বাংলাদেশে প্রায় ১১ টাকা
ভারতে দুই হাজার মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয় গত বছরের মার্চে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সোলার এনার্জি করপোরেশন অব ইন্ডিয়া (এসইসিআই) এ দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্রে অংশ নিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ পায় ছয় কোম্পানি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম অনুমোদন হয় ৩ সেন্টে, যা ভারতীয় মুদ্রায় ২ রুপি ৬০ পয়সা। ডলারের বিনিময় হার ১১৯ টাকা ৪৮ পয়সা হিসাবে ওই বিদ্যুতের ট্যারিফ বাংলাদেশী মুদ্রায় দাঁড়ায় ৩ টাকা ৫৮ পয়সা। এত কম দামে বিদ্যুতের ক্রয়চুক্তি দেশটিতে বেশ আলোচনাও তুলেছে। ‘বিল্ড-ওউন-অপারেট’ মডেলের ভিত্তিতে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনবে এসইসিআই। দেশটিতে সাম্প্রতিককালে অনুমোদন দেয়া অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও ট্যারিফ নির্ধারণ হয়েছে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ৩ থেকে সাড়ে ৪ সেন্টের মধ্যে।
বাংলাদেশে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয়ে চুক্তি হচ্ছে ৯ থেকে ১০ সেন্টে। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর সর্বনিম্ন দাম পড়ছে ১০ টাকা ৭৫ পয়সা। তবে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি ভিন্ন হওয়ায় দামে কিছুটা তারতম্য দেখা যায়, যা কিলোওয়াটপ্রতি সর্বনিম্ন ১০ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১৩ টাকাও পড়ছে।
বেসরকারি খাতে সৌরবিদ্যুতের ট্যারিফ কমিয়ে আনতে চলতি বছরেই প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। এজন্য বেঞ্চমার্ক হিসেবে সৌরবিদ্যুতে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা প্রস্তাব করা হয় ৫ সেন্ট। মূলত আমদানিনির্ভর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর চাপ কমাতে সৌরবিদ্যুতের ট্যারিফসংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। পাকিস্তানে সম্প্রতি অনুমোদিত বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্যারিফ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৫০০ থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে ক্রয়চুক্তি হয়েছে সর্বোচ্চ ৭ সেন্ট থেকে সর্বনিম্ন সাড়ে ৩ সেন্টের কিছু বেশিতে। ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশী টাকার হিসাবে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের সর্বনিম্ন দাম পড়েছে ৩ টাকা ৮২ পয়সা। প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার সৃষ্টি, প্রণোদনা ও আমদানিনির্ভর জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসতে সৌরবিদ্যুতের খরচ সামনের দিনগুলোয় আরো কমাতে চায় পাকিস্তান।
দেশরুপান্তর:
দেশ পেল অন্যরকম সম্মান
মিলল অনেক প্রতিশ্রুতি অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে বিশ্ববাসীকে চেনালেন নতুন বাংলাদেশ। দেশের ভাবমূর্তির পাশাপাশি বিশ্বমঞ্চে জুলাই-বিপ্লব পেল গ্রহণযোগ্যতাও। নানা কারণে প্রধান উপদেষ্টার এ সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে গণতন্ত্র, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি সংকট ছিল, এ সফরে সেটা কাটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিও তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম সম্মেলনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে চার দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ ১২টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান। এ ছাড়া সাইডলাইনে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, আইএমএফের প্রেসিডেন্টসহ ৪০টি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবে দেশের মানুষের কৌতূহল এতে বাংলাদেশ কী পেল।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অধ্যাপক ইউনূস এ সফরে বিভিন্ন ইস্যুতে যেসব বৈঠক করেছেন, তা বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থরক্ষায় ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ও প্রয়োজনের আলোকে হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।