শাজাহানপুরে জোড়া খুনের মামলায় আশেকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলীসহ আসামী ২৯
বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের সাবরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাগর বাহিনীর প্রধান সাগর তালুকদার (৩৫) ও তার সহযোগী স্বপন হোসেন (৩৬) হত্যার ঘটনায় আশেকপুর ইউপি চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হযরত আলীকে প্রধান আসামি করে এজাহার নামীয় ১৯ জনসহ মোট ২৯ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সাগর তালুকদারের বোন রুখসানা আকতার বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এর আগে গত রোববার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের সাবরুল ছোট মন্ডলপাড়ার জনৈক ব্যক্তির পোল্ট্রি ফার্মের সামনে রাস্তার পাশ থেকে সাবরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী সাগর বাহিনীর প্রধান সাগর তালুকদার ও তার সহযোগী স্বপন হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় অপর এক সহযোগীর কাটা হাতও উদ্ধার করা হয়।
নিহত সাগর তালুকদার সাবরুল হাটখোলা গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে এবং নিহত স্বপন হোসেন একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। নিহত সাগর হোসেনের নামে ২টি হত্যা ও মাদক সহ দেড় ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত রোববার সন্ধা ৭টার দিকে সাগর তালুকদার ও তার দুই সহযোগীকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে সাবরুল বাজারের দিকে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে সাবরুল ছোটমন্ডল পাড়া জনৈক ব্যক্তির মুরগীর খামারের সামনে পৌঁছা মাত্র একদল দূর্বৃত্ত দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে উপর্যুপুরি কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সাগর ও স্বপন মারা যায়। অপর সহযোগী গুরুতর আহত অবস্থায় ঘা ঢাকা দেয়।
স্থানীয়রা আরো জানান, সন্ত্রাসী সাগর বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে অতিষ্ঠ হয়ে ছিল। এর আগে সাবরুল এলাকার মাছ ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিন বাবু ও প্রভাষক পারভেজ হত্যার মাষ্টার মাইন্ড ছিল সাগর। এছাড়া সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও মাদক থেকে শুরু করে যাবতীয় অপরাধমূলক কর্মকান্ডে সাবরুল এলাকা জিম্মী করে রেখে ছিল এই সাগর বাহিনী। গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পরও এই সন্ত্রাসী বাহিনী এলাকায় দাপটের সাথে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছিল। এই হত্যার মধ্য দিয়ে সাবরুল এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে আশেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলীকে একাধিক বার ফোন করলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
শাজাহানপুর থানার (ওসি) ওয়াদুদ আলম জানান, আশেকপুর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলীসহ মোট ২৯ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।