আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান সংবাদ
প্রথম আলো:
ছাত্রলীগ হলেই পেতেন স্বাস্থ্যের বড় পদ
স্বাস্থ্যে দলীয় প্রাধান্য
একই রাজনৈতিক দলের পক্ষের কর্মকর্তা স্বাস্থ্যের প্রায় সর্বত্র। স্বাস্থ্যে জবাবদিহি-ঘাটতির এটি বড় কারণ।এম এম আখতারুজ্জামান রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। ছাত্রত্ব শেষ করে চিকিৎসক হওয়ার পরও রাজনীতি ছাড়েননি। তিনি আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সদস্য হন। বর্তমানে তিনি স্বাচিপের কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজকল্যাণ সম্পাদক।
স্বাচিপ বা ছাত্রলীগের কর্মী বা নেতা হওয়ার ফলে এম এম আখতারুজ্জামান একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কয়েকটি পদ দখল করে আছেন। তিনি রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সহকারী পরিচালক। পাশাপাশি এ বছরের ৫ মে তাঁকে অধিদপ্তরের চারটি কর্মসূচির ব্যবস্থাপক করা হয়েছিল। এগুলো হচ্ছে ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়া এবং ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি। অর্থাৎ পাঁচটি পৃথক পদ তিনি একা দখল করে ছিলেন। গত সপ্তাহে এম এম আখতারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি বর্তমানে দুটি কর্মসূচি দেখেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এসব কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার সারা দেশে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম, টিকাদান, পুষ্টি কার্যক্রম, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াসহ বিশেষ রোগনিয়ন্ত্রণ, যন্ত্রপাতি কেনা ও প্রশিক্ষণের মতো ১৪টি কর্মপরিকল্পনা (অপারেশনাল প্ল্যান বা ওপি) বাস্তবায়ন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতে বছরে সরকারের বরাদ্দ থাকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। এসব কর্মপরিকল্পনার জনবল বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাবেক ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বা স্বাচিপের সদস্যরা প্রাধান্য বিস্তার করে আছেন।
১৪টি কর্মপরিকল্পনার জন্য ১৪ জন বিষয়ভিত্তিক পরিচালক বা লাইন ডিরেক্টর রয়েছেন। প্রতিটি কর্মপরিকল্পনায় আছেন একাধিক কর্মসূচি ব্যবস্থাপক। তাঁরা কাজ করেন লাইন ডিরেক্টরের অধীন। এ রকম কর্মসূচি ব্যবস্থাপক আছেন মোট ৩২ জন। প্রতিটি কর্মসূচি ব্যবস্থাপকের অধীন কাজ করেন এক বা একাধিক উপকর্মসূচি ব্যবস্থাপক। এ রকম উপকর্মসূচি ব্যবস্থাপক আছেন মোট ৮৫ জন। এগুলো স্বাস্থ্য খাতের বড় পদ হিসেবে বিবেচিত।
১৪টি কর্মপরিকল্পনার কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক অবস্থান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিষয়ভিত্তিক পরিচালক, কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ও উপকর্মসূচি ব্যবস্থাপকের ১৩১টি পদের মধ্যে ৯১টি পদ বা ৭০ শতাংশ পদ সাবেক ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বা স্বাচিপের সদস্যরা দখল করে আছেন। কর্মকর্তাদের তালিকা ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা, স্বাচিপ ও ড্যাব নেতা এবং সাধারণ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের দলীয় পরিচয় সম্পর্কে জানা গেছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে চার ইস্যু
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ২৪ সেপ্টেম্বর বসবেন তাঁরা
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে আগ্রহের কেন্দ্র এখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠক। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সাইড লাইনে এক বিরল বৈঠক করতে যাচ্ছেন দুই সরকার প্রধান। সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘ অধিবেশন চলাকালে নিউইয়র্কে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন না। এ ধরনের বৈঠকগুলো হয়ে থাকে ওয়াশিংটনে। তাই বাইডেনের সঙ্গে ইউনূসের এই বৈঠক রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে কূটনৈতিক মহলে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখানে বাংলাদেশকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ই জানান দিচ্ছে। বলা যায়, এতেকরে অনন্য উচ্চতায় উঠেছে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনসহ একাধিক সূত্র বলছে, গত ৩০ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের রাষ্ট্র কিংবা সরকার প্রধানকে বেছে নিয়েছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন সূত্রে জানা গেছে, সব ঠিক থাকলে নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসবেন। বাংলাদেশের পক্ষে ড. ইউনূসের সঙ্গে থাকবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। বহুল আলোচিত এই বৈঠকে চারটি প্রস্তাবনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বাংলাদেশের প্রত্যাশার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরা হবে। প্রস্তাবনার প্রথমে গত ৫ আগস্টের আগে এবং পরে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হবে। বিশেষ করে বিভিন্ন খাতের সংস্কারের বিষয়টি তুলে ধরা হবে।
দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা এবং কোম্পানির কাছে থাকা ঋণ পরিশোধের সময় চাওয়া হবে। তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের আরও বেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হবে। চতুর্থত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানানো হবে। প্রস্তাব দেওয়া হবে সরেজমিনে বাংলাদেশ পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত নিতে।
ঢাকা ও নিউইয়র্কের উচ্চপর্যায়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বিকালে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ইউনূস-বাইডেন বৈঠকের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সাধারণত জাতিসংঘ অধিবেশনে তাঁর নির্ধারিত বক্তৃতার দিন সকালে নিউইয়র্কে পৌঁছান। তিনি সেদিন সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তৃতা দেন। এরপর বিকালে জাতিসংঘের অধিবেশনে আগত রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করেন। সেখানেও বাইডেনের সঙ্গে ফের দেখা হবে ড. ইউনূসের।
কালের কন্ঠ:
স্মার্ট মিটারে জালিয়াতিও স্মার্ট
সিন্ডিকেটে শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও আওয়ামী লীগের ৩ এমপি ► সাত মাসের মধ্যে একই মিটারের দামের পার্থক্য ৫,৮৭১ টাকা ► ৪ লাখ ৯০ হাজার মিটারে হাতিয়ে নেওয়া হয় ২৮৭ কোটিবাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের গ্রাহক পর্যায়ে স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। টেন্ডার জালিয়াতির মাধ্যমে বাজারদামের চেয়ে বাড়তি দামে কেনা হয়েছে চার লাখ ৯০ হাজার মিটার। এই জালিয়াতচক্রের সামনে ছিলেন ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক তিন সংসদ সদস্য (এমপি)। এ ছাড়া এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও তাঁর এক বন্ধু এবং সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
কালের কণ্ঠ’র অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ২০২২ সালের ৩ এপ্রিল পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ‘স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার অ্যান্ড মিটার কমিউনিকেশন সিস্টেম স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় লট-১-এ চার লাখ ৯০ হাজার স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার এবং মিটার কমিউনিকেশন সিস্টেম ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহবান করে। এরপর কাজ পেতে জেবিসিএ অব অকোলিন টেক বিডি লিমিটেড এবং এসকিউ ওয়্যার অ্যান্ড কেবলস লিমিটেড (JVCA of Oculin Tech BD Ltd. and SQ wire & Cables Ltd.) জয়েন্ট ভেঞ্চারে দরপত্র জমা দেয়। আরেকটি প্রতিষ্ঠান ভিকার ইন্টারন্যাশনাল জেভি এক্সজে মিটারিং কম্পানি লিমিটেড এবং জেভি গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেড (Vicar International JV XJ Metering Co. Ltd. JV Global Brand Pvt. Ltd.) জয়েন্ট ভেঞ্চারে দরপত্রে অংশ নেয়
নয়াদিগন্ত:
অস্থিরতা অব্যাহত পোশাক খাতে
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার অনুসারীরা এবং ভারতীয় এজেন্সি অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য বিক্ষোভে উসকানি দিচ্ছে। দেশের তৈরী পোশাক খাতে অস্থিরতার পেছনে ‘বিদেশী শক্তির’ ইন্ধনও দেখছেন আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা। তারা মনে করেন, ঢাকার আশুলিয়ায় অবস্থিত শিন শিন অ্যাপারেলস একটি তৈরী পোশাক (আরএমজি) কারখানা। এ প্রতিষ্ঠানে অন্য যেকোনো কারখানার তুলনায় সুযোগ-সুবিধা বেশি দেয়া হয়ে থাকে। তবে নানা ষড়যন্ত্রের কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে শুরু হয় শ্রমিক আন্দোলন। ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
পোশাককারখানাগুলোতে অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে কারখানার মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে একাধিক বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারা। শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারার অধীনে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ‘কাজ নেই, বেতন নেই’ নীতি তারা গ্রহণ করেছেন।
শিন শিন অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল সাদাত নয়া দিগন্তকে বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ দূর করার জন্য ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সরকারি কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং শ্রমিক নেতাদের সাথে একাধিকবার মিটিং হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো অগ্রগতি লক্ষ করা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েনের পরেও শ্রমিক অসন্তোষ দূর হচ্ছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, কারখানা বন্ধ থাকায় বিদেশী ক্রেতারা যেসব অর্ডার দিয়েছে তা তৈরি করা যাচ্ছে না। তবে নির্ধারিত সময়ে শিপমেন্ট নিশ্চিত করতে তারা অন্য কারখানার মাধ্যমে প্রায় তিন লাখ পিস পোশাক তৈরি করেছেন; কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে ক্রেতারা নতুন কোনো কাজের অর্ডার দেবে কি না এ ব্যাপারে তার কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন ‘আমি এই মুহর্তে হতাশ বোধ করছি। আমরা কিভাবে আমাদের ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখব সে সম্পর্কে সত্যিই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে’। সোহেল সাদাতের মতো অনেক পোশাককারখানার মালিক তাদের ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। কারণ ৩১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া শ্রমিকদের চলমান অসন্তোষের কারণে পোশাকশিল্প একটি সঙ্কটময় সময়ের মুখোমুখি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
কালবেলা:
সচিবের এতিমখানায় বরাদ্দ হয় ‘৮০ ভূতের’ নামে
মো. খায়রুল আলম সেখ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ পান গত বছরের অক্টোবরে। সচিব হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই নিজ গ্রাম ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেন এতিমখানা। নাম ‘পশ্চিম চরবর্ণী নরীরন্নেসা এতিমখানা ও মাদ্রাসা’। মাদ্রাসাটির সরকারি অনুমোদন পায় চলতি বছরের মে মাসে। তবে নিজের প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠার পরপরই অর্থ বরাদ্দ নেন সচিব। এমনকি ওই সময় একজন এতিমও সেখানে পড়াশোনা করতেন না। বর্তমানে ওই মাদ্রাসায় একজনও এতিম নেই। যদিও ৮০ জন এতিমের পড়াশোনা এবং
থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা বাবদ সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে এতিমখানায় বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় এক ব্যক্তি রসিকতা করে বলেছেন, ‘এখানে একজনও এতিম নেই। ওই ৮০ জন মনে হয় ভূত।’
শুধু এতিমখানায়ই নয়, সচিব হওয়ার দুই মাসের মধ্যেই বাবার নামে ‘আয়েন উদ্দিন সেখ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন’-এর নিবন্ধন নেন খায়রুল আলম। এরপর সেখানেও বরাদ্দ দেওয়া হয় সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে।নথিপত্র বলছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই নিজের মায়ের নামে একটি এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন খায়রুল আলম সেখ, যার নিবন্ধন নেওয়া হয় চলতি বছরের মে মাসে। নিয়ম অনুসারে নিবন্ধন নেওয়ার পরও কিছুদিন সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠান দেখভাল করে। এরপর সন্তোষজনক মনে হলে ওই প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে অর্থ সহায়তা দেয়। তবে সচিবের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নিয়মনীতি মানা হয়নি। চলতি বছরের মে মাসে এই প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন পেলেও সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে জানুয়ারি মাস থেকে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর ভারতে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ভারতে অবস্থান করলেও তার সম্বন্ধে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো জানায়নি দেশটি। এরই মধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তার কূটনৈতিক বা অফিশিয়াল পাসপোর্ট বাতিল করেছে এবং এই পাসপোর্টে ভারতে অবস্থানের ৪৫ দিনের মেয়াদও ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এতে শেখ হাসিনাার ভারতে অবস্থানের বৈধ ভিত্তিটা কী, সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের সামনে কার্যত তিনটি ‘অপশন’ বা রাস্তা খোলা আছে। এক. রাজনৈতিক আশ্রয়, দুই. তৃতীয় কোনো দেশে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা এবং তিন. বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ‘রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের’ পথ তৈরি করা।
ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্র বলছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুসম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়া দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ভালো। তা ছাড়া পদত্যাগের পর ভারতে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশটির সর্বদলীয় বৈঠকে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছিল। ফলে শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখার ক্ষেত্রে দেশটির অভ্যন্তরীণ কোনো চাপ নেই। যদিও তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হয়েছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনা যখন দেশত্যাগ করেন, তখন তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বহাল ছিল এবং এটির সুবাদেই তিনি অন্তত ৪৫ দিন বিনাভিসায় ভারতে থাকতে পারেন। সেই মেয়াদও ফুরিয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এখন তিনি কোন স্ট্যাটাসে ভারতে অবস্থান করছেন।
মানবজমিন:
হাসপাতালে এখনো কাতরাচ্ছে আহতরা
এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতরা। বিভিন্ন হাসপাতালে গুরুতর আহতদের এখনো চিকিৎসা চলছে। তাদের অনেকের অঙ্গহানি হয়েছে। কেউ হাত হারিয়েছে। কেউ পা। কারও চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে বুলেট। এমন আহতদের নিয়ে দুঃসহ সময় পার করছেন স্বজনরা। সরকারের নির্দেশনায় বিনা খরচে তাদের চিকিৎসা চললেও তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পরিবার।
আন্দোলনে যারা আহত হয়েছে তাদের বড় অংশই চিকিৎসা নিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জাতীয় অর্থোপেডিকস হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল)। গতকাল এই দুটি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, অনেক রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আবার অনেকেই সাধারণ বেডে ও আইসিইউতে চিকিৎসা নিচ্ছে। অনেকের অবস্থা গুরুতর। তারা বাঁচার লড়াই করছে। আন্দোলনে আহত হওয়ার কারণে চিকিৎসকরা তাদেরকে আলাদাভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।
সরজমিন গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরাতন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় হাসপাতালের তিনটি ওয়ার্ডে গুলিবিদ্ধ রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালটিতে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে রোগী আসা শুরু করেন। তাদের মধ্যে যাদের আঘাত গুরুতর ছিল না তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর যাদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে বুলেট প্রবেশ করেছে এবং একাধিক বুলেট বিদ্ধ হয়েছে তারা এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মাথায়, বুকে, চোখে, হাতে-পায়ে শতাধিক ছররা গুলিবিদ্ধ রোগীও সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকরা বলছেন, আমরা এসব রোগীদের বিষয়ে খুবই সচেতন। তাদেরকে দ্রুত সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করছি। যাদের শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হচ্ছে তাদেরকে আইসিইউতে পাঠাচ্ছি।
৮৭৩ কোটি টাকা নিয়েছে মডার্ন স্টিলসহ ৯ কোম্পানি
শিল্পে বিনিয়োগের নামে ব্যাংক ঋণ তুলে সে টাকা দিয়ে ভিন্ন ঋণ সমন্বয় এবং অর্থের একাংশ সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। এভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিবিধান ভেঙে চটগ্রামের মডার্ন স্টিল মিলস কোম্পানি সাড়ে চারশ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে। পৃথক ঘটনায় গুদামে পাটের মজুত ৯০ শতাংশ ঘাটতির পরও মোটা অঙ্কের ঋণ তুলে দেওয়া হয়েছে গ্রাহকের হাতে। শেষ পর্যন্ত ফেরত না দেওয়া ঋণের পৌনে দুইশ কোটি টাকা আটকে যায়। নানা অপকৌশলে ব্যাংকটির বিভিন্ন শাখা থেকে ঋণের নামে ৮৩৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। সরকারের নিরীক্ষা কার্যালয় এসব অনিয়ম তুলে ধরে রিপোর্ট তৈরি করেছে। এসব ঋণ এখন খেলাপি হয়ে পড়ছে যা আগামীতে আদায়ও অনিশ্চিত। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসে সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে আর্থিক খাতের দুর্নীতি প্রতিরোধে। বিশেষ করে ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাচার, ঋণের নামে খেলাপি এবং ঋণের অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অনিয়ম দূর করতে ইতোমধ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, নিরীক্ষার মাধ্যমে উঠে আসা ঋণ জালিয়াতির ঘটনাগুলো দেখা হবে। বেআইনিভাবে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের ঋণ নিয়ে আটকে রাখলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেটি উদ্ধার করা হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে অন্যায় ও অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। উপদেষ্টা আরও বলেন, আর্থিক খাত সংস্কারের কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও এরিয়া আছে। সে কাজগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগে শেষ করা হবে।
বনিক বার্তা:
এলএনজি আমদানি নীতির সুযোগ লুফে নেয় বিশেষ গোষ্ঠী
দেশে গ্যাস সংকট নিরসনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ‘গ্যাস সেক্টর মাস্টারপ্ল্যান-২০১৭’ তৈরি করেছিল। যেখানে মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানে ২০৪১ সাল পর্যন্ত এলএনজি আমদানিকেই মোটাদাগে প্রাধান্য দেয়া হয়। আর এ নীতিকে লুফে নেয় দেশী-বিদেশী বিশেষ কয়েকটি কোম্পানি। ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমদানি করা হয়েছে অন্তত দেড় লাখ কোটি টাকার এলএনজি। এসব প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার পেছনে মোটা অংকের কমিশন বাণিজ্য হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, এলএনজি আমদানি চুক্তি, টার্মিনাল নির্মাণ, রিগ্যাসিফিকেশন, স্পট মার্কেট থেকে সরবরাহসহ সংশ্লিষ্ট কাজগুলো ঘুরেফিরে হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানই পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় কোম্পানি সামিট গ্রুপ, যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি, সিঙ্গাপুরভিত্তিক এমএস গানভর ও ভিটল এশিয়া, জাপানের জেরা, সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জি গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার। তবে সামিট গ্রুপকেই এ খাতে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার।