রুশ সেনাবাহিনীর পক্ষে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধের প্রথম থেকেই স্বেচ্ছাসেবক ও বেসামরিক নাগরিকরা সেনাবাহিনীতে যোগদান করছে। তবে এই প্রথমবার নিহতের সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিদিন নিহতদের নাম, শেষকৃত্যের ছবিসহ তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে। বিবিসি রাশিয়া ও স্থানীয় ওয়েবসাইট মিডিয়াজোনা নামের একটি ওয়েবসাইট এসব সেনাদের নাম সংগ্রহ করেছে। সরকারি কর্তৃপক্ষ ও নিহতদের স্বজনদের থেকে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে এগুলো যাচাই করা হয়েছে। তবে নিহত সেনার প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কারণ কিছু পরিবার তাদের নিহত স্বজনদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে সম্মত হয়নি। যাদের বিষয়ে তথ্য যাচাই করা যায়নি, তাদের নাম নিহত সেনাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ ছাড়া যারা রাশিয়ার দখল করা দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে নিহত হয়েছেন তাঁদের নামও যুক্ত করা হয়নি। ইউক্রেনে নিহত ৭০ হাজার ১১২ জন রুশ যোদ্ধার নাম শনাক্ত করতে পেরেছে বিবিসি।
সমাধিস্থলে নতুন কবরের নামফলক থেকেও ইউক্রেনে মৃত যোদ্ধাদের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত রুশ সেনাদের মধ্যে ১৩ হাজার ৭৮১ জন স্বেচ্ছাসেবী। যা মোট নিহতের সংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ। স্বেচ্ছাসেবীদের নিহত হওয়ার সংখ্যা নিহত রুশ সেনা সংখ্যা থেকে ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চেচনিয়ার অনেকে মানবাধিকার কর্মীদের জানিয়েছেন, তাদেরকে হুমকি ধামকি দিয়ে জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ানো হয়েছে।
অনেকে আবার জানিয়েছেন, তারা চুক্তিনামার সব শর্ত বুঝে উঠতেই পারেননি। এ ছাড়া ভালো সুযোগ-সুবিধার কখাও বলা হয়েছে। ফলে অনেকই যুদ্ধে যোগদান করেছিল।
শেষ এক বছরে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১০০ স্বেচ্ছাসেবী প্রাণ হারিয়েছেন। কোনো সপ্তাহে এই সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে অনেক অপরাধীও, তারা সাজা মওকুফের বিনিময়ে যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন। এর আগে বাহিনীতে অপরাধীদের মধ্যে থেকে নেওয়া সদস্যদের মধ্যে নিহতের হার সবচেয়ে বেশি ছিল, প্রায় ১৯ শতাংশ এবং যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাধারণ বেসামরিক সেনাসদস্যের হার ১৩ শতাংশ।
এদিকে গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনের ৩১ হাজার সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। তবে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে বলে অনুমান মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের। দেশটি এ বিষয়ে খব কম তথ্যই প্রকাশ করে থাকে।