ঢাকা ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আলজাজিরার প্রতিবেদন

বিদেশে ৮ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি সাবেক ভূমিমন্ত্রীর

বিদেশে ৮ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি সাবেক ভূমিমন্ত্রীর

যুক্তরাজ্যে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন তিনি।

যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সমান!এছাড়াও দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া মিলিয়ে দেশের বাইরে প্রায় ৮ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকারও সম্পত্তি গড়েছেন তিনি।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরার প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সামান্য সরকারি বেতন পেয়ে ভিনদেশে কীভাবে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই মন্ত্রী, আল জাজিরা প্রতিবেদনের পর সবাই বিস্মিত।

আল জাজিরার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, যুক্তরাজ্য ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ায়ও নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন সাইফুজ্জামান। সব মিলিয়ে ধনী দেশগুলোতে পাঁচশরও বেশি বাড়ির মালিক এই সাবেক ভূমিমন্ত্রী। এসব বাড়ির মূল্য প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি অর্থে যা প্রায় ৮ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকারও বেশি।

গণমাধ্যমটি বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বেশ ভালো সখ্য ছিল সাইফুজ্জামানের। যা তিনি নিজেই স্বীকার করে বলেছেন, ‘আমার বাবা শেখ হাসিনার খুব কাছের লোক ছিলেন। আমিও তার কাছের লোক… শেখ হাসিনা আমার বস… তিনি জানেন যুক্তরাজ্যে আমার ব্যবসা আছে। ’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৭ সালের দিকে সম্পত্তি কেনা বাড়িয়ে দেন। ২০১৯ সালে যখন তিনি মন্ত্রী হন, তখন এটি আরো বাড়ে।

আলজাজিরার তথ্য মতে, গত বছর বিনিয়োগকারীর ছদ্মবেশে সাইফুজ্জামানের ১৪ মিলিয়ন ডলারের বাড়িতে যান তাদের প্রতিবেদক। ওই সময় ‘ছদ্মবেশী’ প্রতিবেদকদের সাইফুজ্জামান বড়াই করে জানান, তিনি কুমিরের চামড়ার হাতে তৈরি জুতার ওপর হাজার হাজার ডলার খরচ করেন এবং লন্ডনের সবচেয়ে দামি দোকান থেকে ইতালিয়ান স্যুট বানিয়ে পরেন।

এছাড়া ওই সময় লন্ডনের নিজের বাড়িও ঘুরিয়ে দেখান সাইফুজ্জামান। যে বাড়িতে রয়েছে সিনেমা হল, জিম, ব্যক্তিগত এলিভেটর এবং নতুন রোলস রয়েলস গাড়ি রাখার নিরাপদ আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং এরিয়া।

সাইফুজ্জামান আলজাজিরার কাছে দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতে নিজের বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে এই সম্পদ কিনেছেন তিনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে এখন অর্থপাচারের অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়া ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান তখন সাইফুজ্জামানও দেশে ছেড়ে চলে যান।

কাতারভিত্তিক এ গণমাধ্যম তাদের ইউটিউব অ্যাকাউন্ট ও ওয়েবসাইটে সাইফুজ্জামানকে নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

আলজাজিরার প্রতিবেদন

বিদেশে ৮ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি সাবেক ভূমিমন্ত্রীর

আপডেট সময় ১১:৫৯:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

যুক্তরাজ্যে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন তিনি।

যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সমান!এছাড়াও দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া মিলিয়ে দেশের বাইরে প্রায় ৮ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকারও সম্পত্তি গড়েছেন তিনি।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরার প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সামান্য সরকারি বেতন পেয়ে ভিনদেশে কীভাবে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই মন্ত্রী, আল জাজিরা প্রতিবেদনের পর সবাই বিস্মিত।

আল জাজিরার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, যুক্তরাজ্য ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ায়ও নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন সাইফুজ্জামান। সব মিলিয়ে ধনী দেশগুলোতে পাঁচশরও বেশি বাড়ির মালিক এই সাবেক ভূমিমন্ত্রী। এসব বাড়ির মূল্য প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি অর্থে যা প্রায় ৮ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকারও বেশি।

গণমাধ্যমটি বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বেশ ভালো সখ্য ছিল সাইফুজ্জামানের। যা তিনি নিজেই স্বীকার করে বলেছেন, ‘আমার বাবা শেখ হাসিনার খুব কাছের লোক ছিলেন। আমিও তার কাছের লোক… শেখ হাসিনা আমার বস… তিনি জানেন যুক্তরাজ্যে আমার ব্যবসা আছে। ’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৭ সালের দিকে সম্পত্তি কেনা বাড়িয়ে দেন। ২০১৯ সালে যখন তিনি মন্ত্রী হন, তখন এটি আরো বাড়ে।

আলজাজিরার তথ্য মতে, গত বছর বিনিয়োগকারীর ছদ্মবেশে সাইফুজ্জামানের ১৪ মিলিয়ন ডলারের বাড়িতে যান তাদের প্রতিবেদক। ওই সময় ‘ছদ্মবেশী’ প্রতিবেদকদের সাইফুজ্জামান বড়াই করে জানান, তিনি কুমিরের চামড়ার হাতে তৈরি জুতার ওপর হাজার হাজার ডলার খরচ করেন এবং লন্ডনের সবচেয়ে দামি দোকান থেকে ইতালিয়ান স্যুট বানিয়ে পরেন।

এছাড়া ওই সময় লন্ডনের নিজের বাড়িও ঘুরিয়ে দেখান সাইফুজ্জামান। যে বাড়িতে রয়েছে সিনেমা হল, জিম, ব্যক্তিগত এলিভেটর এবং নতুন রোলস রয়েলস গাড়ি রাখার নিরাপদ আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং এরিয়া।

সাইফুজ্জামান আলজাজিরার কাছে দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতে নিজের বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে এই সম্পদ কিনেছেন তিনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে এখন অর্থপাচারের অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়া ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান তখন সাইফুজ্জামানও দেশে ছেড়ে চলে যান।

কাতারভিত্তিক এ গণমাধ্যম তাদের ইউটিউব অ্যাকাউন্ট ও ওয়েবসাইটে সাইফুজ্জামানকে নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।