ঢাকা ০১:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারে টাইফুন ইয়াগির কারণে বন্যায়, নিহত অন্তত ২৩৬

মিয়ানমারে টাইফুন ইয়াগির কারণে বন্যায় নিহত অন্তত ২৩৬

টাইফুন ইয়াগি মায়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি করেছে। এর পর থেকে অন্তত ২৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করা গেছে। এ ছাড়া এখনো প্রায় ৭৭ জন নিখোঁজ রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সরকারি পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে রাষ্ট্র পরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট অব মায়ানমার এই তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) ইঙ্গিত দিয়েছে, এই সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। গতকাল সোমবার দেওয়া তাদের একটি নতুন বার্তায় বলা হয়েছে, ‘একাধিক সূত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে, শত শত লোক মারা গেছে। আরো অনেক নিখোঁজ রয়েছে। আনুমানিক ছয় লাখ ৩১ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

টাইফুন ইয়াগি চলতি বছর এ অঞ্চলে আঘাত হানা অন্যতম শক্তিশালী ঝড়। গত সপ্তাহে দক্ষিণ চীন, ভিয়েতনাম, লাওস এবং মায়ানমারজুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে ইয়াগির প্রভাবে। ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে ইতিমধ্যেই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। মায়ানমারের রাজধানী নেপিডো, কেন্দ্রীয় মান্দালয় অঞ্চলের পাশাপাশি কায়া, কায়িন এবং শান রাজ্যসহ অন্তত ৯টি অঞ্চল ও রাজ্য বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে নেয় মায়ানমারের জান্তা বাহিনী। এর পরেই অভ্যুত্থানের বিরোধী সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়। এর ফলে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, মিয়ানমারে অন্তত তিন মিলিয়ন মানুষ সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই ভয়াবহ ঝড় ও বন্যায় বিপর্যস্ত মায়ানমার।

এর আগে ২০২৩ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় মোচা পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে আঘাত হানে। তখন মায়ানমারের জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্যের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সপ্তাহান্তে বাইরের সহায়তা চাওয়া হয়েছিল।

ওসিএইচএ বলেছে, খাদ্য, পানীয় জল, ওষুধ, জামাকাপড় এবং বাসস্থানের জরুরি প্রয়োজন। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ও সেতুর পাশাপাশি অস্থিতিশীল টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা ত্রাণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। মায়ানমারের জন্য বিশেষ উপদেষ্টা পরিষদ এসএসি-এম এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘মায়ানমারের সামরিক জান্তা এ দেশের বৈধ বা বাস্তবিক সরকার নয় এবং তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছা বা ক্ষমতা নেই।’

সেখানে আরো বলা হয়, ‘সেনাবাহিনী মায়ানমারে আগে থেকে বিদ্যমান মানবিক সংকট তৈরি করেছে। জনগণের খরচে তার নিজস্ব সামরিক ও রাজনৈতিক এজেন্ডাকে এগিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক অভিনেতাদের সঙ্গে জড়িত থাকার চেষ্টা করবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইকুয়েডরকে ৭ গোল দিল আর্জেন্টিনা

মিয়ানমারে টাইফুন ইয়াগির কারণে বন্যায়, নিহত অন্তত ২৩৬

আপডেট সময় ০৯:১২:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

টাইফুন ইয়াগি মায়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি করেছে। এর পর থেকে অন্তত ২৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করা গেছে। এ ছাড়া এখনো প্রায় ৭৭ জন নিখোঁজ রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সরকারি পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে রাষ্ট্র পরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট অব মায়ানমার এই তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ) ইঙ্গিত দিয়েছে, এই সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। গতকাল সোমবার দেওয়া তাদের একটি নতুন বার্তায় বলা হয়েছে, ‘একাধিক সূত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে, শত শত লোক মারা গেছে। আরো অনেক নিখোঁজ রয়েছে। আনুমানিক ছয় লাখ ৩১ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

টাইফুন ইয়াগি চলতি বছর এ অঞ্চলে আঘাত হানা অন্যতম শক্তিশালী ঝড়। গত সপ্তাহে দক্ষিণ চীন, ভিয়েতনাম, লাওস এবং মায়ানমারজুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে ইয়াগির প্রভাবে। ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে ইতিমধ্যেই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। মায়ানমারের রাজধানী নেপিডো, কেন্দ্রীয় মান্দালয় অঞ্চলের পাশাপাশি কায়া, কায়িন এবং শান রাজ্যসহ অন্তত ৯টি অঞ্চল ও রাজ্য বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে নেয় মায়ানমারের জান্তা বাহিনী। এর পরেই অভ্যুত্থানের বিরোধী সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়। এর ফলে হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, মিয়ানমারে অন্তত তিন মিলিয়ন মানুষ সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই ভয়াবহ ঝড় ও বন্যায় বিপর্যস্ত মায়ানমার।

এর আগে ২০২৩ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় মোচা পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে আঘাত হানে। তখন মায়ানমারের জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্যের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সপ্তাহান্তে বাইরের সহায়তা চাওয়া হয়েছিল।

ওসিএইচএ বলেছে, খাদ্য, পানীয় জল, ওষুধ, জামাকাপড় এবং বাসস্থানের জরুরি প্রয়োজন। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ও সেতুর পাশাপাশি অস্থিতিশীল টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা ত্রাণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। মায়ানমারের জন্য বিশেষ উপদেষ্টা পরিষদ এসএসি-এম এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘মায়ানমারের সামরিক জান্তা এ দেশের বৈধ বা বাস্তবিক সরকার নয় এবং তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছা বা ক্ষমতা নেই।’

সেখানে আরো বলা হয়, ‘সেনাবাহিনী মায়ানমারে আগে থেকে বিদ্যমান মানবিক সংকট তৈরি করেছে। জনগণের খরচে তার নিজস্ব সামরিক ও রাজনৈতিক এজেন্ডাকে এগিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক অভিনেতাদের সঙ্গে জড়িত থাকার চেষ্টা করবে।