পবিত্র ঈদ এ মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ৫২তম জশনে জুলুস। আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের অন্যতম বড় এ জশনে জুলুসের নেতৃত্বে ছিলেন পাকিস্তান থেকে আগত পীরে কামেল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ)।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে মুরাদপুরের ষোলশহর আলমগীর খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ থেকে জশনে জুলুসের সূচনা হয়। জুলুসটি নগরীর বিবিরহাট হয়ে মুরাদপুর, ষোলশহর, ২ নম্বর গেট, জিইসি মোড় হয়ে আবার একই পথ ধরে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এসে সমাপ্ত হয়।
জশনে জুলুস মিডিয়া কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বলেন, চট্টগ্রামে জশনে জুলুসের প্রবর্তন হয়েছে ৫০ বছর আগে ১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল। দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরিফের (পাকিস্তান) তৎকালীন সাজ্জাদানশীন, আধ্যাত্মিক সাধক, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রা.) এ জশনে জুলুসের প্রবর্তন করেন। এবারের জুলুসে অর্ধকোটি মানুষ অংশ নিচ্ছেন। জুলুসের মধ্য দিয়ে শান্তির বার্তা দেওয়া হয়।
এই জুলুসে চট্টগ্রাম মহানগরী, জেলার ১৪টি উপজেলা, তিন পার্বত্য জেলা এবং চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে লাখ লাখ সুন্নি জনতা অংশ নেন। জুলুস গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা সংলগ্ন মাঠে জমায়েত হলে সেখানে দেশখ্যাত আলেমরা বক্তব্য রাখেন।
এ উপলক্ষে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে সুসজ্জিত তোরণ দেওয়া হয়েছে। সড়কদ্বীপ, সড়ক বিভাজকে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা, আনজুমানের পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। এর আগে আজ ভোর থেকেই বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক, জিপে করে লাখ লাখ মানুষ নগরীতে আসতে থাকেন।
এদিকে জুলুসকে ঘিরে চট্টগ্রামের মুরাদপুর ষোলশহরসহ রেললাইনের দুই পাশে এক কিলোমিটারজুড়ে বসছে ভাসমান মেলা। টুপি, মেসওয়াক, তসবিহ, ইসলামি বই, আতর, পতাকা, পাঞ্জাবি, পাজামা, জুতাসহ মুখরোচক খাবার বিক্রি হচ্ছে মেলায়। অনেককে তবারক হিসেবে শরবত, পানি, চকলেট, জিলাপি, খেজুর, আপেল বিতরণ করতে দেখা যায়।