গত কয়েক বছর ধরে প্রতিবছরই দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতে পাঠানো হতো বাংলাদেশের ইলিশ। কিন্তু টানা দেড় দশক ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেই ধারাবাহিকতা বজায় না থাকার বিষয়টি এবার অনেকটাই নিশ্চিত।
ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এবার ইলিশ দেওয়া হবে না বলে ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় ভারতের পক্ষ থেকে ইলিশ পাঠানোর আবদার করে বাংলাদেশের কাছে চিঠি পাঠানোর খবর পাওয়া গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাংলাদেশ থেকে ইলিশ যায় ভারতে। তবে এবার ইলিশ যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। প্রতিবার শেখ হাসিনা সরকার ভারতে ইলিশ পাঠানোর ব্যবস্থা করত।
কিন্তু এবার পরিস্থিতি একেবারেই অন্যরকম। এবার হাসিনা আর সরকারে নেই। বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তবে এই অনিশ্চয়তার মধ্যেও কিছুটা আশার আলো দেখা গেছে। ফিস ইমপোর্টার অ্য়াসোসিয়েশন ইলিশ রপ্তানির জন্য় আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের কাছে।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, গত ৫ বছর ধরে ইলিশ আমদানি হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। এবারও সেই রীতি মেনে ভারতে ইলিশ পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে আবেদন করেছে ফিস ইমপোর্টার অ্য়াসোসিয়েশন।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরা ও আসামেও যায় বাংলাদেশের ইলিশ। বছরজুড়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বাংলাদেশের ইলিশের জন্য মুখিয়ে থাকেন। আর বাংলাদেশের ইলিশ হলে সেখানকার পূজা একেবারে জমে যায়।
গত বছরও ১৩০০ মেট্রিক টন ইলিশ গিয়েছিল বাংলাদেশ থেকে। তবে এবার কতটা ইলিশ ভারতে যাবে, আদৌ যাবে কিনা তা নিয়ে এখনও কোনও নিশ্চয়তা মেলেনি।
সংবাদমাধ্যমটির দাবি, অনেকের মতে অন্তর্বর্তী সরকার আসার আগে থেকেই বাংলাদেশে ভারতবিরোধী বাতাস বইতে শুরু করেছিল। তবে এবার সেই বাতাস কি ইলিশের ওপরেও পড়বে? এসব নিয়ে আলোচনা একেবারে তুঙ্গে।
তবে দাম যতই বেশি হোক অনেকেই বাংলাদেশের ইলিশ কিনে থাকেন। অনেকের কাছে বাংলাদেশের ইলিশ ছাড়া যেন উৎসব সম্পূর্ণ হয় না। অনেকে আবার যারা শেকড় ছিঁড়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছিলেন তাদের কাছে এই পদ্মার ইলিশ যেন কিছুক্ষণের জন্য ফেলে আসা ভিটে মাটির গন্ধ বয়ে আনে।