ঢাকা ০১:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আগে আ.লীগ এখন চলছে বিএনপির নামে

ভোল পালটে মোশারফ সাভারে চাঁদাবাজির ‘ডন’ আগে আ.লীগ, এখন চলছে বিএনপির নামে

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৮:০২:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 30

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

যুগান্তর:

ভোল পালটে মোশারফ সাভারে চাঁদাবাজির ‘ডন’আগে আ.লীগ, এখন চলছে বিএনপির নামে
ফুটপাত দখলে বেপরোয়া, প্রতিদিন আয় ৫ লাখ টাকা * আমাদের ভাগ্যের আর উন্নয়ন হলো না-ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী * কোনো চাঁদাবাজি চলবে না, ব্যবস্থা নিচ্ছি-ডিআইজি

আওয়ামী লীগ সমর্থিত আন্তঃজেলা ট্রাকচালক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন। গত ১০ বছর আওয়ামী লীগের তকমা লাগিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত ছিলেন। সরকার পতনের পর এই মোশারফ ভোল পালটে এখনও সাভারে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রক। চাঁদা দিতে না চাওয়ায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত করে তিনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন সাভারে। ইউনিয়ন বিএনপি নেতা এক ভাইয়ের ছত্রছায়ায় তিনি নিজেকে ‘ডন’ ভাবতে শুরু করেছেন। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ফুটপাতের ফল বিক্রেতা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায়, তখন স্থানীয় নেতাদের নামে চাঁদা তুলতেন মোশারফ। সেই সরকার পতনের পর ভাবছিলাম এখন থেকে আর চাঁদা দিতে হবে না। কিন্তু শেখ হাসিনা ৫ তারিখ দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ৭ তারিখই বিএনপি পরিচয়ে মোশারফ এসে আমাদের কাছে চাঁদার কথা বলে যান। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, আমাদের আর ভাগ্যের উন্নয়ন হলো না। নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিশ ব্যবসায়ী বলেন, আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়েছেন মোশারফ। এমনকি ডিশ ব্যবসা দখলে নেওয়ার তৎপরতাও চালাচ্ছেন এখন। আরেক ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিদিন ফুটপাত থেকে তার বাহিনী চাঁদা তুলছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন রোববার যুগান্তরকে বলেন, চাঁদাবাজরা আসলে কোনো দলের হয় না। এরা ব্যক্তিস্বার্থে দলকে ব্যবহার করে। কে এই মোশারফ খোঁজ নিয়ে দেখছি। তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিষ্কার মেসেজ-কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হেমায়েতপুর এলাকাটি শিল্পঅধ্যুষিত হওয়ায় এখানে চাঁদাবাজির মাত্রাটা বেশি। এ সবের নেতৃত্বে রয়েছেন মোশারফ হোসেন। তার ভাই তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের বিএনপির সহসভাপতি মেহেদী হাসান। কোথাও নিজেরা সশরীরে, কোথাও আবার তাদের অন্য তিন ভাই শরিফ, রাকিব ও রাসেলকে পাঠিয়ে চালানো হচ্ছে এসব কর্মকাণ্ড। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি ও লুটতরাজে বাধা দেওয়ায় গত এক মাসে বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। এসব চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণে আছে তাদের নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। এরা দখল ও চাঁদাবাজির ক্ষেত্র বাড়াতে মহড়া দেয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। এতদিন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যেসব জায়গায় চাঁদাবাজি করে আসছিল, সরকার পতনের পর ভোল পালটে এরাই আবার বিএনপি সেজে সেসব জায়গায় চাঁদাবাজি করছে। এ সবের মধ্যে রয়েছে গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা দখল, ডিশলাইন-ইন্টারনেট ব্যবসা দখল, ফুটপাতে চাঁদাবাজি, স্কুল, মার্কেটের দখল নেওয়া থেকে শুরু করে বাদ যায়নি বাসাবাড়ির ময়লা ফেলার নিয়ন্ত্রণও।

কালের কন্ঠ:

টাকা পাচারের স্বর্গ বাংলাদেশ
গত দেড় দশকে টাকা পাচারের স্বর্গরাজ্য ছিল বাংলাদেশ। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসনের অভাব আর প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির প্রশ্রয়ে এ দেশের টাকা খুব সহজেই পাচার হয়েছে ভিনদেশে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বলছে, এ সময়ে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সরকারের অন্তত সাতটি নজরদারি সংস্থা থাকার পরও সবার নাকের ডগায় এই বিপুল অঙ্কের টাকা চলে গেছে বিদেশে।

আর এই পাচারের প্রায় ৮০ শতাংশই হয়েছে বাণিজ্যের আড়ালে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত দুর্বল শাসন ব্যবস্থা, নজরদারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা আর রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবসহ অন্তত এক ডজন কারণে টাকা পাচারের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। আশার কথা হচ্ছে, অর্ন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েই টাকা পাচার ঠেকানো এবং পাচার করা টাকা ফেরাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এরই মধ্যে টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত ও দুদকের বিগত বার্ষিক প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনায় এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে গতকাল দুদকে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) দুজন প্রতিনিধি। তাঁদের কাছে পাচারের টাকা ফেরাতে সহায়তা চেয়েছে দুদক।

তথ্য-উপাত্ত থেকে আরো জানা যায়, পণ্য আমদানি-রপ্তানির আড়ালে বড় অঙ্কের মুদ্রা পাচার করা হয়।

কখনো আন্ডার ইনভয়েস কখনো বা ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে এই পাচার হয়ে থাকে। প্রবাসীদের বাড়তি টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে হুন্ডির মাধ্যমেও একটি বড় অঙ্কের টাকা পাচার হয়। দেশের গুটিকয়েক অসাধু শীর্ষ ব্যবসায়ী থেকে মাঝারি স্তরের ব্যবসায়ী-আমদানিকারকরাও এই পাচারচক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কাস্টমস, বন্দরসহ অনেক সংস্থার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদেরও যোগসাজশ থাকার প্রমাণ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য অনুসারে, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশ থেকে অন্তত ১৪ হাজার ৯২০ কোটি বা ১৪৯.২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।

বাংলাদেশি মুদ্রায় পাচার করা টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলারে ১১৮ টাকা ধরে)। এ হিসাবে গড়ে প্রতিবছর পাচার করা হয়েছে অন্তত এক লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা।

এ ব্যাপারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘টাকা পাচারের অন্যতম কারণ হলো রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। পাচার করা সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রেও এটিই বাধা ছিল। এর সঙ্গে দুদকসহ অন্য সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতাও দায়ী। তবে পাচারের টাকা ফেরানোর এখনই উপযুক্ত সময়।’

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক ও সাবেক জেলা জজ মো. মঈদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিদেশ থেকে পাচার করা সম্পদ দেশে ফেরত আনতে চাইলে প্রথমেই দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। এ ছাড়া অর্থপাচার রোধে সরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।’

দৈনিক সংগ্রাম:

মণিপুরে সাতরঙা পতাকা উড়াল শিক্ষার্থীরা
সংগ্রাম ডেস্ক: ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে মণিপুরের রাজভবন ও জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে হামলা চালায় তারা। এ সময় ডিসি অফিসে টানানো পতাকা নামিয়ে সাতরঙা একটি পতাকা উড়ায় তারা। ইন্ডিয়া টুডে, ইন্ডিয়া টাইমস। ইন্ডিয়া টুডের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সংস্করণ ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম ইস্টমোজোর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। মণিপুরের শিক্ষার্থীরা গতকাল সোমবার সেখানকার প্রধান প্রধান সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছে। শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাজভবন ও থৈবালের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। এর আগে, রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের দাবিতে রাজধানী ইম্ফলের রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এ সময় তারা রাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারি প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করে।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা রাজ্যের বর্তমান নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অপসারণ ও মণিপুরে শান্তি ফেরাতে রাজ্য সরকারের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি দাবি জানায়। বিক্ষোভকারীরা বলছে, চলমান সংকটকে আরও ভালোভাবে মোকাবেলা করার জন্য নিরাপত্তা অভিযানের দায়িত্ব স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নেওয়া উচিত।বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছেন। পরে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাজভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মণিপুরের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সরকারি অফিস থেকে একটি পতাকা নামিয়ে সেখানে নতুন করে আরেকটি পতাকা উড়ানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

ইস্টমোজোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা নতুন করে যে পতাকাটি উড়িয়েছেন সেটি কাঙ্গলিপাক বা সালাই ট্যারেট পতাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে। মণিপুরের শিক্ষার্থীদের সরকারি অফিসে নতুন পতাকা উত্তোলনের এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা মণিপুরে ভারতের তেরঙা জাতীয় পতাকা নামিয়ে নতুন একটি সাতরঙা পতাকা উত্তোলন করেছে বলে জানা গেছে। ইস্টমোজো বলছে, রাজ্যের থাউবাল জেলার ডেপুটি কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। ভবনের ছাদে উঠে শিক্ষার্থীরা একটি সাত রঙের পতাকা উড়িয়েছে। এই ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত লোকজনকে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।

থাউবালের ডেপুটি কমিশনার এ সুভাষ সিং ইস্টমোজোকে বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা একটি পুরোনো সালাই ট্যারেট পতাকা নামিয়ে সেখানে নতুন পতাকা টানিয়ে দিয়েছে। আর এই ঘটনাটি ডিসি অফিসের প্রধান ভবনে ঘটেনি, বরং মূল ফটকে ঘটেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

প্রথম আলো:

এত বিদ্যুৎকেন্দ্র, তবু লোডশেডিং

জ্বালানি নিশ্চিত না করেই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। চাহিদাকেও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিবছর বড় সময় অলস বসিয়ে রাখতে হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র। দিতে হয়েছে অলস কেন্দ্রের ভাড়া। খরচের চাপ সামলাতে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়েছে, সরকারের দায় বেড়েছে। অথচ তিন বছর ধরে গরম বাড়লেই লোডশেডিংয়ে ভুগতে হচ্ছে মানুষকে।

নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েও (গত ৮ আগস্ট) পড়েছে একই সমস্যায়। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই। ফলে বেড়েছে লোডশেডিং। গতকাল সোমবার গড়ে দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে। তিন দিন ধরে লোডশেডিং বাড়ছে। ঢাকার বাইরে কোনো কোনো এলাকায় গ্রামাঞ্চলে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। যদিও দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনসক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার ৭৯১ মেগাওয়াট। চাহিদা এখন ১৬ হাজার মেগাওয়াটের কম।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র বলছে, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের একটি টার্মিনাল (সামিটের মালিকানাধীন) তিন মাস ধরে বন্ধ। এতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ছে না। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এক হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন কমেছে। বিল বকেয়া থাকায় আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ কমেছে ৫০০ মেগাওয়াট। বেসরকারি খাতের তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও সর্বোচ্চ চাহিদায় উৎপাদন করা যাচ্ছে না। কারণ, তারাও অনেক টাকা পাবে। তাই ঘাটতি পূরণে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনালের মাধ্যমে এলএনজি থেকে আসে ১১০ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল গত ২৭ মে থেকে বন্ধ। এতে এলএনজি সরবরাহ দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৬০ কোটি ঘনফুট।

সার্বিকভাবে দিনে এখন গ্যাস সরবরাহ নেমে এসেছে ২৬০ কোটি ঘনফুটে। বিদ্যুৎ খাতে গ্যাস সরবরাহ কমে দাঁড়িয়েছে ৮২ কোটি ঘনফুট। আড়াই মাস আগেও গ্যাস থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হতো। এখন হচ্ছে ৫ হাজার মেগাওয়াট।

ভারতের ঝাড়খন্ডে নির্মিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দিনে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা। তাদের বিদ্যুৎ বিল পাওনা দাঁড়িয়েছে ৮০ কোটি ডলারের (প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা) বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৫০ কোটি ডলার (৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা) পরিশোধের নির্ধারিত

জ্বালানি–সংকট

জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত না করেই বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। গ্যাসের সরবরাহ কমেছে। বিদ্যুৎ কম দিচ্ছে আদানি।

কালবেলা:

বিনা টেন্ডারে ওরাকলকে ২০৭ কোটির কাজ দেন পলক
কোনোরকম প্রতিযোগিতা ছাড়াই জাতীয় ডাটা সেন্টারের জন্য ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ওরাকলকে ক্লাউড সেবার দায়িত্ব দিয়েছিল সরকার। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে দেওয়া এই কাজের জন্য প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। সেই সময়ের দর অনুযায়ী ২০৭ কোটি টাকার বিনিময়ে তিন বছর ক্লাউড সেবা দেওয়ার কথা ওরাকলের। তবে রহস্যজনক কারণে চুক্তি স্বাক্ষরের আড়াই বছর পর ক্লাউড সেবা চালু করে ওরাকল।

জানা গেছে, বাছবিচার ছাড়াই ভিনদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেশের তথ্য সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে মূল ভূমিকা ছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের। তার চাপেই দরপত্র আহ্বান না করে ওরাকলকে সরাসরি কাজ দেওয়া হয়। ওই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এর বিনিময়ে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়েছিলেন পলক। তারচেয়ে প্রভাবশালী একটি পক্ষও সেই টাকার ভাগ পেয়েছিল। পুরো প্রক্রিয়ার পরিকল্পনাকারী ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) তৎকালীন পরিচালক তারিক এম বরকতউল্লাহ। পলকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ইকরামুল হক এই লেনদেনের সহযোগী ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০ সালের দিকে সরকারি সংস্থাগুলোর উপাত্ত সংরক্ষণে সরকারের একটি কেন্দ্রীয় ক্লাউড সেবা ব্যবস্থার প্রয়োজন দেখা দেয়। এর আগে সংস্থাগুলো নিজেদের মতো অর্থ খরচ করে ক্লাউড সেবা নিত। সেই সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ কেন্দ্রীয়ভাবে ক্লাউড ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা নেয়। প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল ক্লাউড ব্যবস্থা তৈরি করে সরকারি সংস্থাগুলোকে ভাড়ায় দিয়ে অর্থ উপার্জন এবং বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়। এমন একটি ক্লাউড সেবার প্রস্তাব সে সময় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) অধীন জাতীয় ডাটা সেন্টারকে (এনডিসি) দেয় ওরাকল। তবে বিসিসির তৎকালীন পরিচালক তারিক এম বরকতউল্লাহ সেই প্রস্তাব ঘুরিয়ে দেন বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) দিকে।

সূত্র বলছে, পলককে প্রভাবিত করে ডাটা সেন্টারে ওরাকলের ক্লাউড ব্যবস্থা স্থাপনের মূল ‘মাস্টারমাইন্ড’ এই তারিক বরকতউল্লাহ। প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটির সদস্যরা এই ক্লাউড সেবার বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন। শুধু তারিক বরকতউল্লাহ ওই কমিটির প্রতিবেদনে এককভাবে ভেটো দেন।

পরবর্তী সময়ে পলকের সরাসরি হস্তক্ষেপে ওরাকলের সঙ্গে বিডিসিসিএল ‘ডেডিকেটেড রিজিওনাল ক্লাউড’ স্থাপনে চুক্তিবদ্ধ হয়। এই ক্লাউড থেকে তিন বছরের সেবা নিতে মোট ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বছরে যথাক্রমে ৩০, ৬০ এবং ৯০ লাখ ডলার পরিশোধ করার কথা বিডিসিসিএলের। বিদ্যুৎ খাতের কুইক রেন্টালের সঙ্গে তুলনা করলে ওরাকলের সঙ্গে বিডিসিসিএলের এই অসম চুক্তি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

নতুন সংবিধান না সংশোধন
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা। কেমন হবে আগামীর বাংলাদেশ তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক। আগামীতে দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় এগিয়ে নিতে কী কী সংস্কার প্রয়োজন তা নিয়ে কথা বলছেন বিশিষ্টজনরাও। রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি সংবিধান সংশোধনের আলোচনা এখন তুঙ্গে। কেউ বলছেন- সংবিধান পুনর্লিখনের কথা। কেউ বলছেন প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা। এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তবে সরকার বলছে সংবিধান সংশোধন নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি; আলোচনা চলছে।

সংবিধান সংশোধন নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। এ ছাড়া সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে ছাত্র-জনতার মতামত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে আলোচনা যাই-হোক, মতামত নেওয়া হবে সমন্বয়কদের। তাদের মতামতের ওপর ভিত্তি করেই সংবিধান সংশোধন, নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, দাবিটি আসতে হবে ছাত্র-জনতার কাছ থেকে। তারা কী চায়, তারা কি নতুন কিছু চায়, নাকি পুরনো সংবিধানকে সংস্কার চায়? এটা তাদের কাছ থেকে আসতে হবে। সমন্বয়কারীরা এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন।

সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমান সংবিধান ১৯৭১ এর পরিপ্রেক্ষিতে লেখা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। যে আইন ছিল শাসক শ্রেণির শোষণের জন্য সেই আইন এখনো কীভাবে বিদ্যমান থাকে? আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনকে যদি কিনে ফেলা যায়, তাহলে গণতন্ত্র কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে? সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন। তবে সংবিধান বাতিলের মধ্যে গেলে, দশ-বিশ বছর পরে তা আবারও বাতিল হবে। সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সংবিধানে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। সংবিধানের পরিবর্তন আমরা দুভাবে আনতে পারি। প্রথমত- পুরো সংবিধান বাদ দিয়ে আমরা নতুন করে সংবিধান রচনা করতে পারি। দ্বিতীয়ত- সংবিধানের কতগুলো বিষয়ে সুদূরপ্রসারী গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারি।

নয়াদিগন্ত:

আশুলিয়ায় ফের বিক্ষোভ
৭৯ পোশাক কারখানায় ছুটি, সংঘর্ষে আহত ৩০
সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে মাত্র একদিন শান্ত থাকার পর ফের শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভের মুখে শিল্পাঞ্চলের ৭৯টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে ডিইপিজেডসহ অন্যান্য কারখানাতে উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপরদিকে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক, স্টাফদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে শিল্পাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও শিল্প পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
গতকাল সোমবার আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, বেলা ১১টা পর্যন্ত অন্তত ৭৯টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সেনাবাহিনী টহল অব্যাহত রেখেছে বলে জানান তিনি।

শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল সকালে আশুলিয়ার নরসিংহপুর, জামগড়া, জিরাবোসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে বেরিয়ে আসে। পরে অসন্তোষের মুখে কিছু কারখানায় ছুটি ও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

গতকাল দুপুরে আশুলিয়ার জিরাবো, নিশ্চিন্তপুর, নরসিংহপুর, সরকার মাকের্টসহ বেশ কিছু এলাকায় ঘুরে ৭৯টি পোশাক কারখানা সাধারণ ছুটি খবর পাওয়া গেছে। আশুলিয়া-ডিইপিজেডে-আবদুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় হা-মীম ও শারমিন নামে বড় দু’টি পোশাক কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে ওই এলাকার নিউএইজ, নাসা, আল মুসলিম জেনারেশন নেক্সটসহ ৭৯টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।
এ দিকে গত রোববার রাতে আশুলিয়ার শিমুলতলা এলাকায় ইউফোরিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেডের পোশাক কারখানার শ্রমিক, স্টাফ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। ইউফোরিয়া গার্মেন্টের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, গত কয়েক দিন ধরে আমরা টিফিন বিল ও রাত্রীকালীন অতিরিক্ত ডিউটির টাকা বৃদ্ধি, ছুটি বাড়ানোসহ নানা দাবি নিয়ে মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি। গত পরশুদিন মিটিংয়ের সময় আমাদের এক সহকর্মীকে মারধর করে কারখানার স্টাফরা। এ ছাড়া প্রতি মাসের ৭ তারিখ আমাদের বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও তা করছে না মালিকপক্ষ। এসবের দাবিতে রোববার সকাল থেকেই কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি পালন করছিলেন শ্রমিকরা। পরে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের আংশিক বেতন পরিশোধ করলে সবাই উত্তেজিত হয়ে পড়ে। আর সন্ধ্যা হয়ে গেলেও মালিকপক্ষ দাবি না মানায় শ্রমিকরা ভেতরেই অবস্থান করছিলেন। এ সময় সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে শ্রমিকদের এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। এতে অন্তত ২০ জন শ্রমিক আহত হন।

র্যাব-৪ সিপিসি ২ সাভার ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর জালিস মাহমুদ খান বলেন, আমরা এবং যৌথবাহিনীর সদস্যরা সমন্বয় করে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে বিকেলের দিকে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে। তখন গার্মেন্ট থেকে তাদের ডিসপাস করার জন্য আমরা চেষ্টা করি। পরবর্তীতে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে সমর্থ হই। গার্মেন্টে যারা দুষ্কৃতকারী ছিল তারা র্যাবের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগ করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমরা আগুন নেভাতে সমর্থ হই। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতেও তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন, তবে এটা মেজর না। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে গার্মেন্ট সেক্টরে অরাজকতার সৃষ্টিকারীদের শনাক্তে আমাদের ছায়া তদন্তের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আমরা নির্দিষ্ট করতে সক্ষম হচ্ছি, কারা এর পেছনে মদদদাতা এবং গার্মেন্ট সেক্টরকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

মানবজমিন:

জিয়ার মাজার সরানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছিলেন শেখ হাসিনা
কয়েক বছর ধরেই আওয়ামী লীগ সরকারে আলোচনা ছিল। শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়েছিল। আগামী বছরের গোড়ার দিকে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে বগুড়ায় সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিদায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তার সেই ইচ্ছা বাস্তব হওয়ার আগেই গত ৫ই আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে হয় তাকে।
মানবজমিন জানতে পেরেছে, জিয়াউর রহমানের কবর স্থানান্তর করতে গণভবনে একাধিক বৈঠক হয়। বৈঠকে আগামী বছরে বগুড়ায় কবর সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। শেখ হাসিনার একান্ত ইচ্ছায় এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল।

কয়েক বছর ধরে জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর বিষয়ে কথা বলছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এ নিয়ে জাতীয় সংসদেও আলোচনা হয়। শেখ হাসিনা নিজেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে কথা বলেন। শেখ হাসিনার বক্তব্যের সূত্র ধরে দলটির নেতারাও এ বিষয়ে সক্রিয় হন। কবরে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই এমন কটাক্ষও করেন শেখ হাসিনাসহ দলের নেতারা।
আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হক জিয়ার কবরসহ সংসদ এলাকার নকশা বহির্ভূত স্থাপনা সরিয়ে ফেলার প্রস্তাব করেছিলেন। বিএনপি’র পক্ষ থেকে অবশ্য আওয়ামী লীগের নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদও জানানো হয়েছিল তাৎক্ষণিক। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, সরকার এমন কিছু করলে দেশের মানুষ তা প্রতিহত করবে।

বনিক বার্তা:

জ্বালানির অভাব, সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটলে তাৎক্ষণিক বিকল্প নেই বিপিডিবির
বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে বিপুল পরিমাণ পাওনা বকেয়া পড়েছে ভারতীয় কোম্পানি আদানি গ্রুপের। এ বিল পরিশোধে এরই মধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্কবার্তা দিয়েছে আদানি। আদানি ছাড়াও ভারত থেকে দেশটির সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশে দ্বিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বাণিজ্য চুক্তির আওতায় আনা হচ্ছে আরো ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সেখানেও বকেয়া পড়ছে। এ বিপুল পরিমাণ বকেয়ার কারণে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় বিঘ্ন এমনকি বন্ধ হয়ে পড়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিপিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, দেশটি থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে জরুরি ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলার মতো সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশে আছে। যদিও আশঙ্কা রয়েছে এগুলো চালানোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানির সংস্থান করা নিয়ে। এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে জ্বালানি সংকটের কারণে বিপিডিবি তা তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবেলা করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে বড় ধরনের সংশয় রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াটের আশপাশে। ভারতের সঙ্গে আমদানি চুক্তি রয়েছে ২ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াটের (আদানি ও জিটুজি মিলিয়ে), যা চাহিদার ২০ শতাংশের কাছাকাছি। এর মধ্যে আদানি গ্রুপে ও ভারত সরকারের সঙ্গে জিটুজি চুক্তির আওতায় প্রতিবেশী দেশটি মোট ২ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট আসার কথা। বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, দেশে বিদ্যুতের গড় সরবরাহ প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে ভারত থেকে এ সরবরাহ সর্বনিম্ন ২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে ওঠানামা করে। কিন্তু এরই মধ্যে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ কোম্পানিটির পাওনা বেড়েই চলেছে। এ পরিস্থিতিকে ব্যবসা চালানোর জন্য ‘টেকসই নয়’ বলে মনে করছে আদানি গ্রুপ। বকেয়া বেড়ে যাওয়ায় বিপিডিবিকে জিটুজির আওতায় আনা বিদ্যুতের সরবরাহও কমিয়ে দিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো। বকেয়া পরিশোধ নিয়ে সংকট আরো বাড়লে একপর্যায়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধও হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সমকাল:

মশা মারতে ‘কামান দাগাচ্ছে’ না কেউ
ডেঙ্গু মৌসুম ঘিরে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নানা কর্মসূচি নিয়ে সামনে এলেও এবার মশা মারতে কামান দাগাচ্ছে না কেউ! প্রজননের অনুকূল পরিবেশ পেয়ে রাজধানী তো বটেই, সবখানে এখন মশার রাজত্ব। মশক বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এডিস মশার ঘনত্ব এখন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ফলে প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ধীরে ধীরে মৃত্যুর তালিকাও হচ্ছে দীর্ঘ।

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি পালিয়ে থাকায় গেল এক মাস মশক নিধন কার্যক্রম কার্যত লাটে উঠেছে। মাঠ পর্যায়ে অনেকেই হাত গুটিয়ে বসে আছেন। ফলে এডিস মশার ‘হটস্পট’ বিষয়ক কোনো তথ্য তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে আসছে না। যাদের মাধ্যমে এ তথ্য কেন্দ্রে আসার কথা, সেই জনপ্রতিনিধিরা রাজনৈতিক কারণে কর্মস্থলেই যাচ্ছেন না। এর মধ্যে আবার পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশন পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের সব শীর্ষ জনপ্রতিনিধিকে পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এদিকে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরকে এডিস মশার বংশবিস্তারের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময় চিহ্নিত করা হয়। বর্ষার শেষ সময়ে এসে মাঝেমধ্যেই নামছে ঝুম বৃষ্টি। এতে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে গত বছরের চেয়ে এবার আরও ভয়ংকর চেহারায় দেখা যেতে পারে ডেঙ্গু।
মশক বিশেষজ্ঞ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘এখনকার এডিস মশার ঘনত্ব থেকেই বোঝা যায়, গত দুই-এক মাস মশক নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজই হয়নি। পাশাপাশি সম্প্রতি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু বাড়ছে।
এতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। এখনই হটস্পট চিহ্নিত করে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এবার ডেঙ্গু আরও বিপদে ফেলবে।’

মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শূন্য
ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর আগেই সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রম হাতে নেওয়াটা রেওয়াজ। লিফলেট বিতরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবককে এক সুতায় গেঁথে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান, মসজিদে নামাজের পর ইমামের সচেতনতামূলক বয়ান, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি করে সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, বিশিষ্ট ব্যক্তির মাধ্যমে প্রচারণা, গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোসহ নানা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হতো। জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ার পর এসব কার্যক্রম খেই হারিয়েছে। সম্প্রচার মাধ্যমে দুয়েকবার প্রচারণা চালানো হলেও তা যৎসামান্য।

দেশ রুপান্তর:

হোমল্যান্ডের ১০৪ কোটি আত্মসাৎ
হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মেয়াদপূর্তির পরও গ্রাহকরা তাদের দাবিকৃত টাকা পাচ্ছেন না। মেয়াদ শেষে দাবি নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত ১ বছরে ৬ হাজার ৮২০ জন গ্রাহক বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে (আইডিআরএ) অভিযোগ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৩৭ হাজার গ্রাহক তাদের বীমার অর্থ ফেরত পাবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ১০৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আইডিআরএর হিসাব অনুযায়ী হোমল্যান্ড লাইফের ১৯৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ব্যবসার পরিধি বাড়ানো, জমি কেনা, জমি কেনার কমিশন, জমিতে মাটি ভরাট, সার্ভিস সেন্টার চালু ও শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের নামে এই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ অভিযোগের অনুসন্ধান করছে। দুদক ও হোমল্যান্ড থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ক্ষমতা অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান ও কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জমি কেনা, মাটি ভরাট, সার্ভিস সেন্টার (এজেন্ট অফিস) চালু করা, পারিবারিক বীমা ও শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগসহ ১৩টি খাতে ব্যয়ের নামে ১০০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগ জমা পড়ে।

দুদক অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংস্থাটির উপপরিচালক ইয়াসির আরাফাতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে নথিপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছেন। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট নথিপত্র দুদকে পাঠানো হয়।

অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক ইয়াসির আরাফাত এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বিষয়টি নিয়ে দুদক সচিব ও জনসংযোগ শাখার উপপরিচালকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

 

আশুলিয়ায় শ্রমিকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নারী নিহত

আগে আ.লীগ এখন চলছে বিএনপির নামে

ভোল পালটে মোশারফ সাভারে চাঁদাবাজির ‘ডন’ আগে আ.লীগ, এখন চলছে বিএনপির নামে

আপডেট সময় ০৮:০২:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

যুগান্তর:

ভোল পালটে মোশারফ সাভারে চাঁদাবাজির ‘ডন’আগে আ.লীগ, এখন চলছে বিএনপির নামে
ফুটপাত দখলে বেপরোয়া, প্রতিদিন আয় ৫ লাখ টাকা * আমাদের ভাগ্যের আর উন্নয়ন হলো না-ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী * কোনো চাঁদাবাজি চলবে না, ব্যবস্থা নিচ্ছি-ডিআইজি

আওয়ামী লীগ সমর্থিত আন্তঃজেলা ট্রাকচালক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন। গত ১০ বছর আওয়ামী লীগের তকমা লাগিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত ছিলেন। সরকার পতনের পর এই মোশারফ ভোল পালটে এখনও সাভারে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রক। চাঁদা দিতে না চাওয়ায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত করে তিনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন সাভারে। ইউনিয়ন বিএনপি নেতা এক ভাইয়ের ছত্রছায়ায় তিনি নিজেকে ‘ডন’ ভাবতে শুরু করেছেন। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ফুটপাতের ফল বিক্রেতা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায়, তখন স্থানীয় নেতাদের নামে চাঁদা তুলতেন মোশারফ। সেই সরকার পতনের পর ভাবছিলাম এখন থেকে আর চাঁদা দিতে হবে না। কিন্তু শেখ হাসিনা ৫ তারিখ দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ৭ তারিখই বিএনপি পরিচয়ে মোশারফ এসে আমাদের কাছে চাঁদার কথা বলে যান। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, আমাদের আর ভাগ্যের উন্নয়ন হলো না। নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডিশ ব্যবসায়ী বলেন, আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়েছেন মোশারফ। এমনকি ডিশ ব্যবসা দখলে নেওয়ার তৎপরতাও চালাচ্ছেন এখন। আরেক ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিদিন ফুটপাত থেকে তার বাহিনী চাঁদা তুলছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন রোববার যুগান্তরকে বলেন, চাঁদাবাজরা আসলে কোনো দলের হয় না। এরা ব্যক্তিস্বার্থে দলকে ব্যবহার করে। কে এই মোশারফ খোঁজ নিয়ে দেখছি। তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিষ্কার মেসেজ-কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হেমায়েতপুর এলাকাটি শিল্পঅধ্যুষিত হওয়ায় এখানে চাঁদাবাজির মাত্রাটা বেশি। এ সবের নেতৃত্বে রয়েছেন মোশারফ হোসেন। তার ভাই তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের বিএনপির সহসভাপতি মেহেদী হাসান। কোথাও নিজেরা সশরীরে, কোথাও আবার তাদের অন্য তিন ভাই শরিফ, রাকিব ও রাসেলকে পাঠিয়ে চালানো হচ্ছে এসব কর্মকাণ্ড। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি ও লুটতরাজে বাধা দেওয়ায় গত এক মাসে বেশ কয়েকজনকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। এসব চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণে আছে তাদের নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। এরা দখল ও চাঁদাবাজির ক্ষেত্র বাড়াতে মহড়া দেয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। এতদিন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যেসব জায়গায় চাঁদাবাজি করে আসছিল, সরকার পতনের পর ভোল পালটে এরাই আবার বিএনপি সেজে সেসব জায়গায় চাঁদাবাজি করছে। এ সবের মধ্যে রয়েছে গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা দখল, ডিশলাইন-ইন্টারনেট ব্যবসা দখল, ফুটপাতে চাঁদাবাজি, স্কুল, মার্কেটের দখল নেওয়া থেকে শুরু করে বাদ যায়নি বাসাবাড়ির ময়লা ফেলার নিয়ন্ত্রণও।

কালের কন্ঠ:

টাকা পাচারের স্বর্গ বাংলাদেশ
গত দেড় দশকে টাকা পাচারের স্বর্গরাজ্য ছিল বাংলাদেশ। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সুশাসনের অভাব আর প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির প্রশ্রয়ে এ দেশের টাকা খুব সহজেই পাচার হয়েছে ভিনদেশে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বলছে, এ সময়ে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সরকারের অন্তত সাতটি নজরদারি সংস্থা থাকার পরও সবার নাকের ডগায় এই বিপুল অঙ্কের টাকা চলে গেছে বিদেশে।

আর এই পাচারের প্রায় ৮০ শতাংশই হয়েছে বাণিজ্যের আড়ালে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত দুর্বল শাসন ব্যবস্থা, নজরদারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা আর রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবসহ অন্তত এক ডজন কারণে টাকা পাচারের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। আশার কথা হচ্ছে, অর্ন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েই টাকা পাচার ঠেকানো এবং পাচার করা টাকা ফেরাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এরই মধ্যে টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত ও দুদকের বিগত বার্ষিক প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনায় এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে গতকাল দুদকে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) দুজন প্রতিনিধি। তাঁদের কাছে পাচারের টাকা ফেরাতে সহায়তা চেয়েছে দুদক।

তথ্য-উপাত্ত থেকে আরো জানা যায়, পণ্য আমদানি-রপ্তানির আড়ালে বড় অঙ্কের মুদ্রা পাচার করা হয়।

কখনো আন্ডার ইনভয়েস কখনো বা ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে এই পাচার হয়ে থাকে। প্রবাসীদের বাড়তি টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে হুন্ডির মাধ্যমেও একটি বড় অঙ্কের টাকা পাচার হয়। দেশের গুটিকয়েক অসাধু শীর্ষ ব্যবসায়ী থেকে মাঝারি স্তরের ব্যবসায়ী-আমদানিকারকরাও এই পাচারচক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কাস্টমস, বন্দরসহ অনেক সংস্থার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদেরও যোগসাজশ থাকার প্রমাণ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য অনুসারে, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশ থেকে অন্তত ১৪ হাজার ৯২০ কোটি বা ১৪৯.২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।

বাংলাদেশি মুদ্রায় পাচার করা টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলারে ১১৮ টাকা ধরে)। এ হিসাবে গড়ে প্রতিবছর পাচার করা হয়েছে অন্তত এক লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা।

এ ব্যাপারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘টাকা পাচারের অন্যতম কারণ হলো রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। পাচার করা সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রেও এটিই বাধা ছিল। এর সঙ্গে দুদকসহ অন্য সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতাও দায়ী। তবে পাচারের টাকা ফেরানোর এখনই উপযুক্ত সময়।’

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক ও সাবেক জেলা জজ মো. মঈদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিদেশ থেকে পাচার করা সম্পদ দেশে ফেরত আনতে চাইলে প্রথমেই দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। এ ছাড়া অর্থপাচার রোধে সরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।’

দৈনিক সংগ্রাম:

মণিপুরে সাতরঙা পতাকা উড়াল শিক্ষার্থীরা
সংগ্রাম ডেস্ক: ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে মণিপুরের রাজভবন ও জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ে হামলা চালায় তারা। এ সময় ডিসি অফিসে টানানো পতাকা নামিয়ে সাতরঙা একটি পতাকা উড়ায় তারা। ইন্ডিয়া টুডে, ইন্ডিয়া টাইমস। ইন্ডিয়া টুডের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সংস্করণ ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম ইস্টমোজোর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। মণিপুরের শিক্ষার্থীরা গতকাল সোমবার সেখানকার প্রধান প্রধান সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছে। শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাজভবন ও থৈবালের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। এর আগে, রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের দাবিতে রাজধানী ইম্ফলের রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এ সময় তারা রাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারি প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করে।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা রাজ্যের বর্তমান নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অপসারণ ও মণিপুরে শান্তি ফেরাতে রাজ্য সরকারের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি দাবি জানায়। বিক্ষোভকারীরা বলছে, চলমান সংকটকে আরও ভালোভাবে মোকাবেলা করার জন্য নিরাপত্তা অভিযানের দায়িত্ব স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নেওয়া উচিত।বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছেন। পরে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাজভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মণিপুরের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সরকারি অফিস থেকে একটি পতাকা নামিয়ে সেখানে নতুন করে আরেকটি পতাকা উড়ানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

ইস্টমোজোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা নতুন করে যে পতাকাটি উড়িয়েছেন সেটি কাঙ্গলিপাক বা সালাই ট্যারেট পতাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে। মণিপুরের শিক্ষার্থীদের সরকারি অফিসে নতুন পতাকা উত্তোলনের এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা মণিপুরে ভারতের তেরঙা জাতীয় পতাকা নামিয়ে নতুন একটি সাতরঙা পতাকা উত্তোলন করেছে বলে জানা গেছে। ইস্টমোজো বলছে, রাজ্যের থাউবাল জেলার ডেপুটি কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। ভবনের ছাদে উঠে শিক্ষার্থীরা একটি সাত রঙের পতাকা উড়িয়েছে। এই ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত লোকজনকে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা যায়।

থাউবালের ডেপুটি কমিশনার এ সুভাষ সিং ইস্টমোজোকে বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা একটি পুরোনো সালাই ট্যারেট পতাকা নামিয়ে সেখানে নতুন পতাকা টানিয়ে দিয়েছে। আর এই ঘটনাটি ডিসি অফিসের প্রধান ভবনে ঘটেনি, বরং মূল ফটকে ঘটেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

প্রথম আলো:

এত বিদ্যুৎকেন্দ্র, তবু লোডশেডিং

জ্বালানি নিশ্চিত না করেই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। চাহিদাকেও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিবছর বড় সময় অলস বসিয়ে রাখতে হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র। দিতে হয়েছে অলস কেন্দ্রের ভাড়া। খরচের চাপ সামলাতে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়েছে, সরকারের দায় বেড়েছে। অথচ তিন বছর ধরে গরম বাড়লেই লোডশেডিংয়ে ভুগতে হচ্ছে মানুষকে।

নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েও (গত ৮ আগস্ট) পড়েছে একই সমস্যায়। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই। ফলে বেড়েছে লোডশেডিং। গতকাল সোমবার গড়ে দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে। তিন দিন ধরে লোডশেডিং বাড়ছে। ঢাকার বাইরে কোনো কোনো এলাকায় গ্রামাঞ্চলে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। যদিও দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনসক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার ৭৯১ মেগাওয়াট। চাহিদা এখন ১৬ হাজার মেগাওয়াটের কম।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র বলছে, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের একটি টার্মিনাল (সামিটের মালিকানাধীন) তিন মাস ধরে বন্ধ। এতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ছে না। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এক হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন কমেছে। বিল বকেয়া থাকায় আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ কমেছে ৫০০ মেগাওয়াট। বেসরকারি খাতের তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও সর্বোচ্চ চাহিদায় উৎপাদন করা যাচ্ছে না। কারণ, তারাও অনেক টাকা পাবে। তাই ঘাটতি পূরণে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনালের মাধ্যমে এলএনজি থেকে আসে ১১০ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল গত ২৭ মে থেকে বন্ধ। এতে এলএনজি সরবরাহ দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৬০ কোটি ঘনফুট।

সার্বিকভাবে দিনে এখন গ্যাস সরবরাহ নেমে এসেছে ২৬০ কোটি ঘনফুটে। বিদ্যুৎ খাতে গ্যাস সরবরাহ কমে দাঁড়িয়েছে ৮২ কোটি ঘনফুট। আড়াই মাস আগেও গ্যাস থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হতো। এখন হচ্ছে ৫ হাজার মেগাওয়াট।

ভারতের ঝাড়খন্ডে নির্মিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দিনে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা। তাদের বিদ্যুৎ বিল পাওনা দাঁড়িয়েছে ৮০ কোটি ডলারের (প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা) বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৫০ কোটি ডলার (৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা) পরিশোধের নির্ধারিত

জ্বালানি–সংকট

জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত না করেই বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। গ্যাসের সরবরাহ কমেছে। বিদ্যুৎ কম দিচ্ছে আদানি।

কালবেলা:

বিনা টেন্ডারে ওরাকলকে ২০৭ কোটির কাজ দেন পলক
কোনোরকম প্রতিযোগিতা ছাড়াই জাতীয় ডাটা সেন্টারের জন্য ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ওরাকলকে ক্লাউড সেবার দায়িত্ব দিয়েছিল সরকার। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে দেওয়া এই কাজের জন্য প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। সেই সময়ের দর অনুযায়ী ২০৭ কোটি টাকার বিনিময়ে তিন বছর ক্লাউড সেবা দেওয়ার কথা ওরাকলের। তবে রহস্যজনক কারণে চুক্তি স্বাক্ষরের আড়াই বছর পর ক্লাউড সেবা চালু করে ওরাকল।

জানা গেছে, বাছবিচার ছাড়াই ভিনদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেশের তথ্য সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে মূল ভূমিকা ছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের। তার চাপেই দরপত্র আহ্বান না করে ওরাকলকে সরাসরি কাজ দেওয়া হয়। ওই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এর বিনিময়ে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়েছিলেন পলক। তারচেয়ে প্রভাবশালী একটি পক্ষও সেই টাকার ভাগ পেয়েছিল। পুরো প্রক্রিয়ার পরিকল্পনাকারী ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) তৎকালীন পরিচালক তারিক এম বরকতউল্লাহ। পলকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ইকরামুল হক এই লেনদেনের সহযোগী ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০ সালের দিকে সরকারি সংস্থাগুলোর উপাত্ত সংরক্ষণে সরকারের একটি কেন্দ্রীয় ক্লাউড সেবা ব্যবস্থার প্রয়োজন দেখা দেয়। এর আগে সংস্থাগুলো নিজেদের মতো অর্থ খরচ করে ক্লাউড সেবা নিত। সেই সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ কেন্দ্রীয়ভাবে ক্লাউড ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা নেয়। প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল ক্লাউড ব্যবস্থা তৈরি করে সরকারি সংস্থাগুলোকে ভাড়ায় দিয়ে অর্থ উপার্জন এবং বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়। এমন একটি ক্লাউড সেবার প্রস্তাব সে সময় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) অধীন জাতীয় ডাটা সেন্টারকে (এনডিসি) দেয় ওরাকল। তবে বিসিসির তৎকালীন পরিচালক তারিক এম বরকতউল্লাহ সেই প্রস্তাব ঘুরিয়ে দেন বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) দিকে।

সূত্র বলছে, পলককে প্রভাবিত করে ডাটা সেন্টারে ওরাকলের ক্লাউড ব্যবস্থা স্থাপনের মূল ‘মাস্টারমাইন্ড’ এই তারিক বরকতউল্লাহ। প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটির সদস্যরা এই ক্লাউড সেবার বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন। শুধু তারিক বরকতউল্লাহ ওই কমিটির প্রতিবেদনে এককভাবে ভেটো দেন।

পরবর্তী সময়ে পলকের সরাসরি হস্তক্ষেপে ওরাকলের সঙ্গে বিডিসিসিএল ‘ডেডিকেটেড রিজিওনাল ক্লাউড’ স্থাপনে চুক্তিবদ্ধ হয়। এই ক্লাউড থেকে তিন বছরের সেবা নিতে মোট ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বছরে যথাক্রমে ৩০, ৬০ এবং ৯০ লাখ ডলার পরিশোধ করার কথা বিডিসিসিএলের। বিদ্যুৎ খাতের কুইক রেন্টালের সঙ্গে তুলনা করলে ওরাকলের সঙ্গে বিডিসিসিএলের এই অসম চুক্তি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

নতুন সংবিধান না সংশোধন
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা। কেমন হবে আগামীর বাংলাদেশ তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক। আগামীতে দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় এগিয়ে নিতে কী কী সংস্কার প্রয়োজন তা নিয়ে কথা বলছেন বিশিষ্টজনরাও। রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি সংবিধান সংশোধনের আলোচনা এখন তুঙ্গে। কেউ বলছেন- সংবিধান পুনর্লিখনের কথা। কেউ বলছেন প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা। এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তবে সরকার বলছে সংবিধান সংশোধন নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি; আলোচনা চলছে।

সংবিধান সংশোধন নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। এ ছাড়া সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে ছাত্র-জনতার মতামত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে আলোচনা যাই-হোক, মতামত নেওয়া হবে সমন্বয়কদের। তাদের মতামতের ওপর ভিত্তি করেই সংবিধান সংশোধন, নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, দাবিটি আসতে হবে ছাত্র-জনতার কাছ থেকে। তারা কী চায়, তারা কি নতুন কিছু চায়, নাকি পুরনো সংবিধানকে সংস্কার চায়? এটা তাদের কাছ থেকে আসতে হবে। সমন্বয়কারীরা এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন।

সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমান সংবিধান ১৯৭১ এর পরিপ্রেক্ষিতে লেখা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। যে আইন ছিল শাসক শ্রেণির শোষণের জন্য সেই আইন এখনো কীভাবে বিদ্যমান থাকে? আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনকে যদি কিনে ফেলা যায়, তাহলে গণতন্ত্র কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে? সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন। তবে সংবিধান বাতিলের মধ্যে গেলে, দশ-বিশ বছর পরে তা আবারও বাতিল হবে। সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সংবিধানে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। সংবিধানের পরিবর্তন আমরা দুভাবে আনতে পারি। প্রথমত- পুরো সংবিধান বাদ দিয়ে আমরা নতুন করে সংবিধান রচনা করতে পারি। দ্বিতীয়ত- সংবিধানের কতগুলো বিষয়ে সুদূরপ্রসারী গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারি।

নয়াদিগন্ত:

আশুলিয়ায় ফের বিক্ষোভ
৭৯ পোশাক কারখানায় ছুটি, সংঘর্ষে আহত ৩০
সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে মাত্র একদিন শান্ত থাকার পর ফের শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভের মুখে শিল্পাঞ্চলের ৭৯টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে ডিইপিজেডসহ অন্যান্য কারখানাতে উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপরদিকে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক, স্টাফদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে শিল্পাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও শিল্প পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
গতকাল সোমবার আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, বেলা ১১টা পর্যন্ত অন্তত ৭৯টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সেনাবাহিনী টহল অব্যাহত রেখেছে বলে জানান তিনি।

শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল সকালে আশুলিয়ার নরসিংহপুর, জামগড়া, জিরাবোসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে বেরিয়ে আসে। পরে অসন্তোষের মুখে কিছু কারখানায় ছুটি ও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

গতকাল দুপুরে আশুলিয়ার জিরাবো, নিশ্চিন্তপুর, নরসিংহপুর, সরকার মাকের্টসহ বেশ কিছু এলাকায় ঘুরে ৭৯টি পোশাক কারখানা সাধারণ ছুটি খবর পাওয়া গেছে। আশুলিয়া-ডিইপিজেডে-আবদুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় হা-মীম ও শারমিন নামে বড় দু’টি পোশাক কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে ওই এলাকার নিউএইজ, নাসা, আল মুসলিম জেনারেশন নেক্সটসহ ৭৯টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।
এ দিকে গত রোববার রাতে আশুলিয়ার শিমুলতলা এলাকায় ইউফোরিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেডের পোশাক কারখানার শ্রমিক, স্টাফ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। ইউফোরিয়া গার্মেন্টের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, গত কয়েক দিন ধরে আমরা টিফিন বিল ও রাত্রীকালীন অতিরিক্ত ডিউটির টাকা বৃদ্ধি, ছুটি বাড়ানোসহ নানা দাবি নিয়ে মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি। গত পরশুদিন মিটিংয়ের সময় আমাদের এক সহকর্মীকে মারধর করে কারখানার স্টাফরা। এ ছাড়া প্রতি মাসের ৭ তারিখ আমাদের বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও তা করছে না মালিকপক্ষ। এসবের দাবিতে রোববার সকাল থেকেই কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি পালন করছিলেন শ্রমিকরা। পরে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের আংশিক বেতন পরিশোধ করলে সবাই উত্তেজিত হয়ে পড়ে। আর সন্ধ্যা হয়ে গেলেও মালিকপক্ষ দাবি না মানায় শ্রমিকরা ভেতরেই অবস্থান করছিলেন। এ সময় সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে শ্রমিকদের এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। এতে অন্তত ২০ জন শ্রমিক আহত হন।

র্যাব-৪ সিপিসি ২ সাভার ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর জালিস মাহমুদ খান বলেন, আমরা এবং যৌথবাহিনীর সদস্যরা সমন্বয় করে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে বিকেলের দিকে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে। তখন গার্মেন্ট থেকে তাদের ডিসপাস করার জন্য আমরা চেষ্টা করি। পরবর্তীতে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে সমর্থ হই। গার্মেন্টে যারা দুষ্কৃতকারী ছিল তারা র্যাবের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগ করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমরা আগুন নেভাতে সমর্থ হই। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতেও তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন, তবে এটা মেজর না। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে গার্মেন্ট সেক্টরে অরাজকতার সৃষ্টিকারীদের শনাক্তে আমাদের ছায়া তদন্তের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আমরা নির্দিষ্ট করতে সক্ষম হচ্ছি, কারা এর পেছনে মদদদাতা এবং গার্মেন্ট সেক্টরকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

মানবজমিন:

জিয়ার মাজার সরানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছিলেন শেখ হাসিনা
কয়েক বছর ধরেই আওয়ামী লীগ সরকারে আলোচনা ছিল। শেষ মুহূর্তে পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়েছিল। আগামী বছরের গোড়ার দিকে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে বগুড়ায় সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিদায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তার সেই ইচ্ছা বাস্তব হওয়ার আগেই গত ৫ই আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে হয় তাকে।
মানবজমিন জানতে পেরেছে, জিয়াউর রহমানের কবর স্থানান্তর করতে গণভবনে একাধিক বৈঠক হয়। বৈঠকে আগামী বছরে বগুড়ায় কবর সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। শেখ হাসিনার একান্ত ইচ্ছায় এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল।

কয়েক বছর ধরে জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর বিষয়ে কথা বলছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এ নিয়ে জাতীয় সংসদেও আলোচনা হয়। শেখ হাসিনা নিজেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে কথা বলেন। শেখ হাসিনার বক্তব্যের সূত্র ধরে দলটির নেতারাও এ বিষয়ে সক্রিয় হন। কবরে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই এমন কটাক্ষও করেন শেখ হাসিনাসহ দলের নেতারা।
আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হক জিয়ার কবরসহ সংসদ এলাকার নকশা বহির্ভূত স্থাপনা সরিয়ে ফেলার প্রস্তাব করেছিলেন। বিএনপি’র পক্ষ থেকে অবশ্য আওয়ামী লীগের নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদও জানানো হয়েছিল তাৎক্ষণিক। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, সরকার এমন কিছু করলে দেশের মানুষ তা প্রতিহত করবে।

বনিক বার্তা:

জ্বালানির অভাব, সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটলে তাৎক্ষণিক বিকল্প নেই বিপিডিবির
বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে বিপুল পরিমাণ পাওনা বকেয়া পড়েছে ভারতীয় কোম্পানি আদানি গ্রুপের। এ বিল পরিশোধে এরই মধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্কবার্তা দিয়েছে আদানি। আদানি ছাড়াও ভারত থেকে দেশটির সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশে দ্বিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বাণিজ্য চুক্তির আওতায় আনা হচ্ছে আরো ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সেখানেও বকেয়া পড়ছে। এ বিপুল পরিমাণ বকেয়ার কারণে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় বিঘ্ন এমনকি বন্ধ হয়ে পড়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিপিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, দেশটি থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে জরুরি ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলার মতো সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশে আছে। যদিও আশঙ্কা রয়েছে এগুলো চালানোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানির সংস্থান করা নিয়ে। এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে জ্বালানি সংকটের কারণে বিপিডিবি তা তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবেলা করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে বড় ধরনের সংশয় রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াটের আশপাশে। ভারতের সঙ্গে আমদানি চুক্তি রয়েছে ২ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াটের (আদানি ও জিটুজি মিলিয়ে), যা চাহিদার ২০ শতাংশের কাছাকাছি। এর মধ্যে আদানি গ্রুপে ও ভারত সরকারের সঙ্গে জিটুজি চুক্তির আওতায় প্রতিবেশী দেশটি মোট ২ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট আসার কথা। বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, দেশে বিদ্যুতের গড় সরবরাহ প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে ভারত থেকে এ সরবরাহ সর্বনিম্ন ২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে ওঠানামা করে। কিন্তু এরই মধ্যে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ কোম্পানিটির পাওনা বেড়েই চলেছে। এ পরিস্থিতিকে ব্যবসা চালানোর জন্য ‘টেকসই নয়’ বলে মনে করছে আদানি গ্রুপ। বকেয়া বেড়ে যাওয়ায় বিপিডিবিকে জিটুজির আওতায় আনা বিদ্যুতের সরবরাহও কমিয়ে দিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো। বকেয়া পরিশোধ নিয়ে সংকট আরো বাড়লে একপর্যায়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধও হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সমকাল:

মশা মারতে ‘কামান দাগাচ্ছে’ না কেউ
ডেঙ্গু মৌসুম ঘিরে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নানা কর্মসূচি নিয়ে সামনে এলেও এবার মশা মারতে কামান দাগাচ্ছে না কেউ! প্রজননের অনুকূল পরিবেশ পেয়ে রাজধানী তো বটেই, সবখানে এখন মশার রাজত্ব। মশক বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এডিস মশার ঘনত্ব এখন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ফলে প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। ধীরে ধীরে মৃত্যুর তালিকাও হচ্ছে দীর্ঘ।

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি পালিয়ে থাকায় গেল এক মাস মশক নিধন কার্যক্রম কার্যত লাটে উঠেছে। মাঠ পর্যায়ে অনেকেই হাত গুটিয়ে বসে আছেন। ফলে এডিস মশার ‘হটস্পট’ বিষয়ক কোনো তথ্য তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে আসছে না। যাদের মাধ্যমে এ তথ্য কেন্দ্রে আসার কথা, সেই জনপ্রতিনিধিরা রাজনৈতিক কারণে কর্মস্থলেই যাচ্ছেন না। এর মধ্যে আবার পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশন পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের সব শীর্ষ জনপ্রতিনিধিকে পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এদিকে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরকে এডিস মশার বংশবিস্তারের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময় চিহ্নিত করা হয়। বর্ষার শেষ সময়ে এসে মাঝেমধ্যেই নামছে ঝুম বৃষ্টি। এতে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে গত বছরের চেয়ে এবার আরও ভয়ংকর চেহারায় দেখা যেতে পারে ডেঙ্গু।
মশক বিশেষজ্ঞ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘এখনকার এডিস মশার ঘনত্ব থেকেই বোঝা যায়, গত দুই-এক মাস মশক নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজই হয়নি। পাশাপাশি সম্প্রতি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু বাড়ছে।
এতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। এখনই হটস্পট চিহ্নিত করে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এবার ডেঙ্গু আরও বিপদে ফেলবে।’

মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শূন্য
ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর আগেই সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রম হাতে নেওয়াটা রেওয়াজ। লিফলেট বিতরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবককে এক সুতায় গেঁথে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান, মসজিদে নামাজের পর ইমামের সচেতনতামূলক বয়ান, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি করে সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, বিশিষ্ট ব্যক্তির মাধ্যমে প্রচারণা, গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোসহ নানা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হতো। জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ার পর এসব কার্যক্রম খেই হারিয়েছে। সম্প্রচার মাধ্যমে দুয়েকবার প্রচারণা চালানো হলেও তা যৎসামান্য।

দেশ রুপান্তর:

হোমল্যান্ডের ১০৪ কোটি আত্মসাৎ
হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মেয়াদপূর্তির পরও গ্রাহকরা তাদের দাবিকৃত টাকা পাচ্ছেন না। মেয়াদ শেষে দাবি নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত ১ বছরে ৬ হাজার ৮২০ জন গ্রাহক বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে (আইডিআরএ) অভিযোগ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৩৭ হাজার গ্রাহক তাদের বীমার অর্থ ফেরত পাবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ১০৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আইডিআরএর হিসাব অনুযায়ী হোমল্যান্ড লাইফের ১৯৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ব্যবসার পরিধি বাড়ানো, জমি কেনা, জমি কেনার কমিশন, জমিতে মাটি ভরাট, সার্ভিস সেন্টার চালু ও শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের নামে এই অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ অভিযোগের অনুসন্ধান করছে। দুদক ও হোমল্যান্ড থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ক্ষমতা অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান ও কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জমি কেনা, মাটি ভরাট, সার্ভিস সেন্টার (এজেন্ট অফিস) চালু করা, পারিবারিক বীমা ও শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগসহ ১৩টি খাতে ব্যয়ের নামে ১০০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগ জমা পড়ে।

দুদক অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংস্থাটির উপপরিচালক ইয়াসির আরাফাতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে নথিপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছেন। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট নথিপত্র দুদকে পাঠানো হয়।

অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক ইয়াসির আরাফাত এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বিষয়টি নিয়ে দুদক সচিব ও জনসংযোগ শাখার উপপরিচালকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।