ঢাকা ০৮:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত, ৫ আগস্ট উপস্থাপন করবে সরকার: প্রেস উইং Logo জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন হবে: নাহিদ ইসলাম Logo ৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র Logo মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি নিহত Logo আমিরে জামায়াত দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থা রাখায় কৃতজ্ঞ চিকিৎসকরা Logo জামায়াত আমিরের ওপেন হার্ট সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন Logo গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১১ ইউনিট Logo ঢাকা কলেজে অনুষ্ঠিত হলো বেসিক মানবাধিকার বিষয়ক কর্মশালা Logo ছাত্রদলের সমাবেশ ঘিরে নেতাকর্মীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৬ নির্দেশনা Logo আমীরে জামায়াতের  হার্টে ৪ ব্লক, শনিবার বাইপাস সার্জারি

মুক্ত হওয়ার পর যেভাবে দিন কাটছে খালেদা জিয়ার

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলার দণ্ড থেকে গত ৬ আগস্ট মুক্তি পেয়েছেন। রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে তাকে মুক্তি দেন। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি এখন গুলশানের বাসা ফিরোজায় মানসিকভাবে স্বস্তিতে দিন কাটাচ্ছেন এবং আগের চেয়ে ভালো আছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন তিনি।

জানা যায়, গুলশানের বাসা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতাল পর্যন্ত চলাফেরা ছিল বেগম খালেদা জিয়ার। অবশেষে সেই শুভক্ষণ দেখা দেয় ৬ আগস্ট। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকারের পতনের পর।

এদিন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দণ্ড মওকুফ করে মুক্তির আদেশ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ সংবাদ পান তিনি। মুক্তির পর দিনই ৭ আগস্ট নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশে ভিডিও বার্তায় বক্তব্য রাখেন বেগম খালেদা জিয়া। এক মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২১ আগস্ট গুলশানের বাসায় ফিরেন দুর্নীতির দুই মামলার দণ্ড থেকে মুক্তি পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন। মুক্তি পেলেও অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না। যদিও ২৪ ঘণ্টাই চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন এখনও সুস্থ নন। আগে তিনি বন্দি ছিলেন, এখন মুক্ত। দলের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন, দমন-নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেয়েছেন এবং দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে এসেছে। এজন্য খালেদা জিয়া মানসিকভাবে স্বস্তিতে দিন কাটাচ্ছেন।

সূত্রটি জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার শরীর কিছুটা ভালো থাকলে উনি বই, পত্রিকা এবং টেলিভিশন দেখে সময় কাটান। পাশাপাশি দলের অনেকেই দেখা করতে চান। এক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়া চাইলে তাদের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় সবাইকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্তা দেন তিনি। এ ছাড়া পরিবারের সদস্যরা প্রায় প্রতিদিনই বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখতে গুলশানের বাসায় যান।

ওদিকে ৪ সেপ্টেম্বর রাতে স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে গুলশানের বাসভবনে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক। ব্রিটিশ হাইকমিশনার বাংলাদেশ ও ইউকের সম্পর্কের ব্যাপারে তাদের চিন্তা-ভাবনা বেগম খালেদা জিয়াকে অবগত করেন। পাশাপাশি দুদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে তারা কি করতে চায়, সে বিষয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জানান সারাহ ক্যাথেরিন কুক।

এ প্রসঙ্গে বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশ-ইউকের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার জন্য বলেন এবং আগামী দিনে দুদেশের অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ প্রত্যেকটা জিনিস যাতে উন্নততর অবস্থায় যেতে পারে, সে বিষয়েও ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। রাত সাড়ে ৮টায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের পতাকাবাহী গাড়ি গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসা ‘ফিরোজা’য় প্রবেশ করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

মেডিকেল বোর্ডের দুজন সদস্য বলেন, গুলশানে নিজ বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার মতো শারীরিকভাবে এখনো তিনি সুস্থ নন। কারণ মেডিকেল বোর্ড চাচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্যে কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যেতে। বেশ লম্বা সময় ফ্লাই করার মতো শারীরিক অবস্থা হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশে নিতে তার যে দীর্ঘ সময়ের জার্নি সে বিষয়ে তার প্রস্তুতির বিষয়টি নিয়ে তারা কাজ করছেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন অসুস্থ। ম্যাডাম গুলশানের বাসভবনে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। সবশেষ গত ৮ জুলাই গভীর রাতে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে।

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত, ৫ আগস্ট উপস্থাপন করবে সরকার: প্রেস উইং

মুক্ত হওয়ার পর যেভাবে দিন কাটছে খালেদা জিয়ার

আপডেট সময় ০২:৪৫:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলার দণ্ড থেকে গত ৬ আগস্ট মুক্তি পেয়েছেন। রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে তাকে মুক্তি দেন। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি এখন গুলশানের বাসা ফিরোজায় মানসিকভাবে স্বস্তিতে দিন কাটাচ্ছেন এবং আগের চেয়ে ভালো আছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন তিনি।

জানা যায়, গুলশানের বাসা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতাল পর্যন্ত চলাফেরা ছিল বেগম খালেদা জিয়ার। অবশেষে সেই শুভক্ষণ দেখা দেয় ৬ আগস্ট। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকারের পতনের পর।

এদিন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দণ্ড মওকুফ করে মুক্তির আদেশ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ সংবাদ পান তিনি। মুক্তির পর দিনই ৭ আগস্ট নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশে ভিডিও বার্তায় বক্তব্য রাখেন বেগম খালেদা জিয়া। এক মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২১ আগস্ট গুলশানের বাসায় ফিরেন দুর্নীতির দুই মামলার দণ্ড থেকে মুক্তি পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন। মুক্তি পেলেও অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না। যদিও ২৪ ঘণ্টাই চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন এখনও সুস্থ নন। আগে তিনি বন্দি ছিলেন, এখন মুক্ত। দলের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন, দমন-নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেয়েছেন এবং দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে এসেছে। এজন্য খালেদা জিয়া মানসিকভাবে স্বস্তিতে দিন কাটাচ্ছেন।

সূত্রটি জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার শরীর কিছুটা ভালো থাকলে উনি বই, পত্রিকা এবং টেলিভিশন দেখে সময় কাটান। পাশাপাশি দলের অনেকেই দেখা করতে চান। এক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়া চাইলে তাদের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় সবাইকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্তা দেন তিনি। এ ছাড়া পরিবারের সদস্যরা প্রায় প্রতিদিনই বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখতে গুলশানের বাসায় যান।

ওদিকে ৪ সেপ্টেম্বর রাতে স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে গুলশানের বাসভবনে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক। ব্রিটিশ হাইকমিশনার বাংলাদেশ ও ইউকের সম্পর্কের ব্যাপারে তাদের চিন্তা-ভাবনা বেগম খালেদা জিয়াকে অবগত করেন। পাশাপাশি দুদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে তারা কি করতে চায়, সে বিষয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে জানান সারাহ ক্যাথেরিন কুক।

এ প্রসঙ্গে বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশ-ইউকের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার জন্য বলেন এবং আগামী দিনে দুদেশের অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ প্রত্যেকটা জিনিস যাতে উন্নততর অবস্থায় যেতে পারে, সে বিষয়েও ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। রাত সাড়ে ৮টায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের পতাকাবাহী গাড়ি গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসা ‘ফিরোজা’য় প্রবেশ করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

মেডিকেল বোর্ডের দুজন সদস্য বলেন, গুলশানে নিজ বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার মতো শারীরিকভাবে এখনো তিনি সুস্থ নন। কারণ মেডিকেল বোর্ড চাচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্যে কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যেতে। বেশ লম্বা সময় ফ্লাই করার মতো শারীরিক অবস্থা হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশে নিতে তার যে দীর্ঘ সময়ের জার্নি সে বিষয়ে তার প্রস্তুতির বিষয়টি নিয়ে তারা কাজ করছেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন অসুস্থ। ম্যাডাম গুলশানের বাসভবনে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। সবশেষ গত ৮ জুলাই গভীর রাতে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে।