বিটিএসে আসক্ত জয়পুরহাটের কালাইয়ের একটি মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়া পাঁচ মাদ্রাসা ছাত্রীকে বগুড়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বগুড়ার মহাস্থানগড় বাসস্ট্যান্ড এলাকা থাকে তাদের উদ্ধার করা হয়। পরে রাতেই তাদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়।
বিটিএসে আসক্ত ওই পাঁচ ছাত্রী গয়না বিক্রি করে বিটিএস ব্যান্ড দলের মতো নিজেদের একটি ব্যান্ড দল বানাতে চেয়েছিলো। এর আগে শুক্রবার ভোর থেকে ওই পাঁচ ছাত্রীর খোঁজ না পেয়ে দুপুরে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক কামরুন্নাহার বাদী হয়ে কালাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই মাদ্রাসায় ৫৫ জন ছাত্রী পড়াশোনা করে। এর মধ্যে ৫০ জন আবাসিক। গত বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পর তারা ঘুমিয়ে পড়ে। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার ভোরে ফজরের নামাজের জন্য আবাসিকের তত্ত্বাবধায়ক দরজা খুলে দেন। এরপর ওই পাঁচ ছাত্রী বাইরে গিয়ে আর মাদ্রাসায় ফেরেনি।
পরে কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের বাসায় খোঁজ নিয়েও সন্ধান পায়নি। তাদের সবার বয়স ১১ থেকে ১৪ বছর। এদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থীর ট্রাংক খুলে ভেতরে একটি করে চিরকুট পাওয়া যায়।
কালাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তোফায়েল আহাম্মেদ বলেন, ‘‘মাদ্রাসা থেকে পালানো পাঁচ শিক্ষার্থী ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে ইউটিউবে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যান্ড দল বিটিএসের ভিডিও দেখত। এতে তারা বিটিএসে আসক্ত হয়ে পড়ে। বিটিএসের ভিডিও দেখে তারা বিটিএসের আদলে নিজেদের একটি ব্যান্ডদল তৈরি করতে চেয়েছিল। সে জন্য তারা মাদ্রাসা পালিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তবে ঢাকায় যাওয়ার জন্য তাদের কাছে টাকা ছিল না। যে কারণে একজন সিএনজি চালকের সহযোগিতায় ওই পাঁচ ছাত্রীর মধ্যে একজনের কানের দুল বিক্রি করে সবাই মিলে ঢাকায় রওনা দেয়।
‘মাঝপথে গিয়ে তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে গাড়ির ভেতরে কান্নাকাটি শুরু করে। এ সময় গাড়ির ভেতরে লোকজন তাদের জিজ্ঞাসা করলে তারা বিষয়টি জানায়। গাড়ি থেকে তাদের পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করা হয়। পরে গাড়ি থেকে তাদের নামিয়ে জয়পুরহাটের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেন যাত্রীরা।”
এসআই তোফায়েল আরো বলেন, ‘ওই ছাত্রীদের মোবাইল ফোন আমরা সব সময় ট্র্যাকিংয়ে রেখেছিলাম এবং তাদের অবস্থান সম্পর্কে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও তাদের অভিভাবকদের জানাচ্ছিলাম। পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকরা বগুড়ার মহাস্থানগড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান করে। ছাত্রীদের বহনকারী বাসটি স্ট্যান্ডে পৌঁছলে তারা শিক্ষার্থীদের নিয়ে কালাই থানায় নিয়ে যায়। পরে প্রত্যেক ছাত্রীর অভিভাবকদের থানায় ডেকে মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।