ঢাকা ১১:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সহযোগিতা চায় জামায়াত

শেখ পরিবারের নাম থাকলেই প্রকল্প পাস

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:২৬:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 107

আজকের প্রতিকাগুলোর প্রধান প্রধান সংবাদ

প্রথম আলো:

শেখ পরিবারের নাম থাকলেই প্রকল্প পাস
১৫ বছরে ৫১ হাজার কোটি টাকার ৮২টি প্রকল্প। ৩৮টির কাজ শেষ। অনেকগুলো কাজে আসছে না।
প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের চাপে বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প হাতে নিয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। এসব প্রকল্প যাতে সহজে পাস করানো যায়, সে জন্য কৌশলে ব্যবহার করা হয়েছিল শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম। কিছু প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হলেও কাজে আসছে না। এতে সরকারি টাকার অপচয় হয়েছে।

শেখ পরিবারের সদস্যদের নামে গত ১৫ বছরে ৫১ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ৮২টি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩৮টি প্রকল্পের কাজ শেষ, বাকি ৪৪টি প্রকল্পের কাজ চলছে।

প্রকল্পগুলো নেওয়া হয়েছিল বিনোদনকেন্দ্র, সাফারি পার্ক, দৃষ্টিনন্দন ভবন, নভোথিয়েটার, আইসিটি, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠার নামে। প্রকল্পগুলো নেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, ছেলে শেখ কামাল ও শেখ রাসেলের নামে। এ ছাড়া শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে আরও ৪৩টি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সহযোগিতা চায় জামায়াত
দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ উন্নয়নমূলক কাজ এগিয়ে নিতে চীন সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে চূড়ান্ত প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে দেশটির কার্যকরী ভূমিকা পালনের দাবি জানিয়েছে দলটি। গতকাল রাজধানীর মগবাজারে দলীয় কার্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। বৈঠক শেষে জামায়াতের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানানো হয়। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূত, পলিটিক্যাল প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। কীভাবে বাংলাদেশ ও চীন আরও কাছাকাছি এসে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি, শিক্ষা-সংস্কৃতিসহ উন্নয়নে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারি সে ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। আমাদের দেশের উন্নয়নমূলক কাজে বড় পার্টনার হচ্ছে চীন। আমরা আশা করছি আগামীতেও বাংলাদেশের উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ করবে দেশটি। জামায়াত আমির বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা অনুরোধ করেছি, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসনের বিষয়ে চীন কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। চীন যদি কার্যকরী পদক্ষেপ বা ভূমিকা পালন করে তাহলে রোহিঙ্গা সংকটের সমস্যার সমাধান হবে। এদিকে জামায়াতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, আজকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে খুবই সফল একটি মতবিনিময় করেছি। জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ এখানে দলটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে সুদৃঢ় সম্পর্কোন্নয়ন, উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে কথা হয়েছে।

কালের কন্ঠ:

বিদেশে পাচার হওয়া শতকোটি ডলার ফিরিয়ে আনা হবে

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার হচ্ছে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া শতকোটি ডলার দেশে ফিরিয়ে আনা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকার আইনজীবী, প্রত্যর্পণ বিশেষজ্ঞ এবং লন্ডনভিত্তিক গার্নিকা ৩৭ ল ফার্মের যুগ্ম প্রধান টবি ক্যাডম্যান গতকাল সোমবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থনে একটি দেশীয় ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ক্যাডম্যানকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘বাংলাদেশকে দ্রুত সত্য, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির জন্য যথাযথভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বাংলাদেশের জনগণ দ্বারা সমর্থিত একটি কার্যকর অভ্যন্তরীণ আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টার কাছে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করার সময় ক্যাডম্যান বলেন, তাঁরা মানবতাবিরোধী অপরাধ, অর্থনৈতিক অপরাধ ও রাজনৈতিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণের জন্য একটি কাঠামো তৈরির প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সমর্থন করতে প্রস্তুত, যাঁরা অসদুপায়ে অর্জিত সম্পদ নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর প্রস্তাব শোনেন এবং তাঁকে লিখিতভাবে তা দাখিল করতে বলেন।

নয়াদিগন্ত:

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত ও বিচার হবে
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার শিগগিরই শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
গতকাল সোমবার সকালে সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলির সাথে সাক্ষাৎ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের অধিকার, সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। শুধু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে নয়, একজন সাধারণ নাগরিক ও সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য হিসেবে আমি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই। সঠিকভাবে এই হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু করা হবে।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের মধ্যে মানবপাচার প্রতিরোধ, কৃষি পুনর্বাসন ও বীমা, পুলিশ বাহিনীর পুনর্গঠন ও সংস্কার, মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতি প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান। রাষ্ট্রদূত এ মুহূর্তে উপদেষ্টার অগ্রাধিকারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বন্যাপরবর্তী কৃষি পুনর্বাসনই এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার ও চ্যালেঞ্জ। উপদেষ্টা এ সময় কৃষি পুনর্বাসনে সুইজারল্যান্ডের সহযোগিতা কামনা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা মানবপাচার প্রতিরোধে বিদ্যমান সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চাই। তিনি বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষকদের সক্ষমতা ও সামর্থ্য বৃদ্ধিতে কৃষি ক্ষেত্রে বীমা চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের কৃষকরা এখনো এ বিষয়ে খুব বেশি আগ্রহী নয়। ভবিষ্যতে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন বেশ বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। যে কারণে বন্যাসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি এসব সমস্যা সমাধানে কৃষকদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, পুলিশ সংস্কার ও পুনর্গঠনে সুইজারল্যান্ডের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশ এ সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে। এ সময় উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে মানবাধিকার সুউচ্চ ও সমুন্নত রাখতে সুইজারল্যান্ডের সহায়তা চান। রাষ্ট্রদূত বলেন, আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরত আনতে সহযোগিতা করবে সুইজারল্যান্ড। বৈঠকে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক কাউন্সেলর আলবার্তো জিওভানেত্তিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

যুগান্তর:

শহীদুল বেনজীর হাবিবের হাতেই পুলিশে সর্বনাশ
সিনিয়র তিন কর্মকর্তার ‘ফাউন্ডেশন’-এর নামে নজরানা আদায়ের চাঁদাবাজির ব্যবসায় পুলিশের চেইন অব কমান্ড ধ্বংস হয়েছে। সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের যোগদানের পর তার মা-বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশনে নজরানার নামে ঘুস নেওয়ার প্রথা চালু হয়।

সাবেক এই আইজিপি মজিদ-জরিনা ফাউন্ডেশনের নামে শতকোটি টাকা আদায় করেন পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকেই। সেই টাকায় বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হন তিনি। শরীয়তপুরে নড়িয়া উপজেলার নরকলিকাতা গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বেনজীর আহমেদ আধুনিক পুলিশবাহিনী গড়ার প্রত্যয় নিয়ে ঘুস বাণিজ্যের অর্থ গলা পর্যন্ত গিলে সৎ অফিসারের তকমা পরেন। আর পদ্মার এপার-ওপার পৃথক্করণের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করে গোটা পুলিশবাহিনীর মেরুদণ্ড ভেঙেছেন সদ্য বিদায়ি ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। এ মেরূকরণের সদস্য শতাধিক কর্মকর্তা আঙুল ফুলে গলাগাছ বনে গেছেন। তাদের কপাল পুড়ছে শেখ হাসিনার পতনের পর। যুগান্তরের তথ্যানুসন্ধানে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।

শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশের আইজি ছিলেন। আইজিপি থাকাবস্থায় তিনি মিরপুর শহিদ স্মৃতি পুলিশ কলেজ থেকেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা লোপাট করে মজিদ-জরিনা ফাউন্ডেশনে নিয়ে যান। পুলিশের একটি বিশেষ গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত সিনিয়র একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, পুলিশে যে বৈষম্য ও লাগামহীন দুর্নীতির যাত্রা শুরু হয় যাদের কারণে, তারা আজ বাহিনীতে নেই। কিন্তু প্রায় ২০০ বছরের ইতিহাসের সুশৃঙ্খল কাঠামোকে ধ্বংস করে তারা বিদায় নিয়েছেন। পুলিশের পদ-পদবি ব্যবহার করে কামিয়েছেন শত শত কোটি টাকা, যা আজ তাদের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিন পুলিশ কর্মকর্তা ভিন্ন পরিচয়ে নজরানা আদায়ে ফাউন্ডেশন করেন। তাদের দুর্নীতি ও ব্যক্তি দায় গোটা পুলিশবাহিনীর ওপর পড়েছে। বিরোধী রাজনীতিকদের দমন করতে এ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে পদায়ন করে রাখা হয়েছিল, তারাও এখন সামনে নেই। পদোন্নতি আর পদায়নকে কেন্দ্র করে পুলিশবাহিনীর যে ক্ষতি করা হয়েছে, তা কেটে উঠতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। ব্যক্তিগতভাবে বিগত সরকারের প্রভাবশালীরা বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েও এ বাহিনীর সর্বনাশ করেছেন।

ঘুরেফিরে যে তিন সুপারম্যানখ্যাত কর্মকর্তার নাম সামনে আসে, তারা হলেন-সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, বেনজীর আহমেদ ও সদ্যবিদায়ি ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনজনই পদ্মার ওই পারের মানুষ। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামল পতনের পর পুলিশে সর্বনাম আলোচিত তিন কর্মকর্তার আওয়ামী লীগের তকমা লাগানো পুলিশ কর্মকর্তাদের মিছিলে অংশ নিতে বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়েছে অনেক মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তারও। বৈষম্যের শিকার এসব কর্মকর্তার মনেপ্রাণে যারা এই দলকে পছন্দ করেননি, তারাও নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার সুযোগে ছিলেন।

মানবজমিন:

এখনো ৬ লাখের বেশি পরিবার পানিবন্দি
বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৬৭ জন
চলমান বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা একদিনে আরও আটজন বেড়েছে। সোমবার পর্যন্ত বন্যায় ১১ জেলায় মোট ৬৭ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে ফেনীতে মারা গেছেন ২৬ জন। এখনো ৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬৭টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। গতকাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। একদিন আগে মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৯ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যায় মৃত লোকসংখ্যা ৬৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪২ জন, নারী সাতজন ও শিশু ১৮ জন। কুমিল্লায় ১৭, ফেনীতে ২৬, চট্টগ্রামে ৬, খাগড়াছড়িতে একজন, নোয়াখালীতে ১১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক, লক্ষ্মীপুরে এক, কক্সবাজারে ৩ ও মৌলভীবাজারে একজন মারা গেছেন। এখনো মৌলভীবাজারে একজন নিখোঁজ রয়েছেন। চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।

মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এখনো ৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬৭টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত মোট লোকসংখ্যা ৫১ লাখ ৮ হাজার ২০২ জন। সার্বিকভাবে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লোকজন বাড়িঘরে ফিরছেন। মোট ৩ হাজার ৬১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ লাখ ৬ হাজার ৭৪১ জন লোক এবং ৩২ হাজার ৮৩০টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এগারো জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে মোট ৪৭২টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

দৈনিক সংগ্রাম:

আগামী দিনগুলোতে দুই দেশের জনগণ সরকার পার্টি টু পার্টি আরও ক্লোজলি কাজ করার সুযোগ পাবো ————– ডা. শফিকুর রহমান
চায়নার জনগণ বাংলাদেশের জনগণের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়: রাষ্ট্রদূত

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে নিযুক্ত চায়না এ্যাম্বেসডর মি. ইয়াও ওয়েন গতকাল সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তিনি ডেপুটি এ্যাম্বেসডরসহ চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন। সাক্ষাৎকালে চায়না এ্যাম্বেসডর ও আমীরে জামায়াত দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

রাজধানী ঢাকার মগবাজারস্থ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আযাদ সাবেক এমপি, মাওলানা আবদুল হালিম, এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও এডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন। সৌজন্য সাক্ষাতের পর আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ও চায়না এ্যাম্বেসডর মি. ইয়াও ওয়েন এক প্রেস ব্রিফিং-এ বক্তব্য রাখেন। আমীরে জামায়াত সবাইকে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের বৈঠকটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা একসাথে দীর্ঘ এক ঘণ্টা যাবৎ দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছি। উভয় দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ডেভেলপমেন্ট-সহ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটিয়ে আমরা যেন একসাথে এগিয়ে যেতে পারি সেই বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পেয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে দুই দেশের জনগণ, দুই দেশের সরকার, পার্টি টু পার্টি আমরা আরও ক্লোজলি কাজ করার সুযোগ পাবো। আপনাদের মাধ্যমে সম্মানিত অতিথিবৃন্দকে এখানে আসার জন্য আরেকবার অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং আশা করছি আগামী দিনগুলোতে আমাদের এ ধরনের মিউচুয়াল ডায়ালগ দুই দেশের স্বার্থে অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

বনিক বার্তা:

ডলারের বাজারে কোনো অস্থিরতা নেই
দেশে ডলারের বাজারে এ মুহূর্তে কোনো অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে না। স্থিতিশীল হয়ে এসেছে মুদ্রাটির বিনিময় হার। ব্যাংক বা কার্ব মার্কেটে ডলারের সংকট নেই। ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রবাসীরা প্রণোদনাসহ ডলারপ্রতি ১২৩ টাকা পাচ্ছেন, যেখানে খুচরা বাজারে মিলছে ১২১-১২২ টাকায়। হুন্ডির চাহিদা কমায় খুচরা বাজারে ডলারের বিনিময় হার নিম্নমুখী বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
যদিও দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশে অস্থির ছিল বৈদেশিক মুদ্রার বাজার। ২০২২ সালের শুরুতে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা। সংকট তীব্র হয়ে ওঠায় বিনিময় হার বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। গত আড়াই বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ঘটেছে ৪২ শতাংশেরও বেশি। ডলারের দর স্থিতিশীল করতে গত মে মাসে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি গ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরও সমাধান মেলেনি, ব্যাংকের ঘোষিত দরের সঙ্গে কার্ব মার্কেটে ডলারের দরের ব্যবধান ছিল ৩-১০ টাকা। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ডলারের বাজার ক্রমেই স্থিতিশীল হয়ে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধান শ্রমবাজারগুলোয় হুন্ডির যে বাজার আছে, সেটির চাহিদা তৈরি হয় বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বাজারে হুন্ডির চাহিদায় বড় পতন হয়েছে। হুন্ডির বাজারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানের যোগসূত্র আছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটেও চিড় ধরেছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শক্ত অবস্থানের কারণে সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালান কমেছে। এ কারণে কার্ব মার্কেটে ডলারের চাহিদায় পতন হয়েছে। আমদানির ঋণপত্র (এলসি) কমে যাওয়ার প্রভাবে ব্যাংকেও ডলারের চাহিদা কমে গেছে।

সমকাল:

‘অসাধ্য সাধন’ করত সাধনের পরিবার
সাধন চন্দ্র মজুমদার ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের সাড়ে পাঁচ বছরের খাদ্যমন্ত্রী। টানা চারবার তিনি হয়েছেন এমপি। গেল সাড়ে ১৫ বছর সাধন চন্দ্রের জনপ্রতিনিধির জমানা ছিল অরাজকতায় ভরা। ক্ষমতাকে তিনি মনে করতেন ‘জাদুর কাঠি’। সেই কাঠির ছোঁয়ায় নানা অপকর্মে তাল দিয়ে গেছেন তাঁর ভাতিজা রাজেশ মজুমদার, ছোট ভাই মনোরঞ্জন মজুমদার মনা, ছোট মেয়ে তৃণা মজুমদার এবং দুই জামাতা আবু নাসের বেগ ও নাসিম আহম্মেদ। সবাই মিলে গড়ে তোলেন দুর্ভেদ এক সিন্ডিকেট। টাকা দিয়ে ‘অসাধ্য সাধন’ হতো সাধন চন্দ্রের ডেরায়।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, পুরোভাগে থেকে সব অপকর্মের সমন্বয় করতেন ভাতিজা রাজেশ। তিনি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রীর সহকারী; বসতেন মন্ত্রণালয়ে। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রীর একান্ত সচিব সাধন চন্দ্রের বড় জামাতা আবু নাসের বেগ (মাগুরার সাবেক ডিসি) ও মন্ত্রীর এপিএসের দায়িত্বে থাকা ছোট মেয়ে তৃণা মজুমদার। টাকার বিনিময়ে দপ্তরের যে কোনো পদায়ন, বদলি, বরাদ্দ– সবকিছু মন্ত্রণালয়ে বসে তারাই সামলাতেন। টাকার লেনদেন হতো মন্ত্রীর বেইলি রোডের সরকারি বাসায়। সেই বাসভবন সন্ধ্যা থেকেই খাদ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার পদভারে করত গমগম। প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে দরদাম ঠিক করে পছন্দমাফিক বদলি কিংবা পদায়ন নিতেন কর্মকর্তারা।
তি পদায়নে অন্তত ৩০ লাখ থেকে সর্বোচ্চ কোটি টাকা পর্যন্ত নিলাম উঠত। লোভনীয় পদের মধ্যে ছিল আরসি ফুড (রিজওনাল কন্ট্রোলার অব ফুড), ডিসি ফুড (ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোলার) এবং ওসি এলএসডি (গুদাম কর্মকর্তা)। এ ছাড়া ধান-চাল বেশি উৎপাদন হয় এমন তালিকাভুক্ত জেলার বাইরেও যে কোনো স্থান ও পদে পদায়নের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হতো সাধন সিন্ডিকেটকে। খাদ্য বিভাগের একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র সমকালকে নিশ্চিত করেছে এসব তথ্য।

কালবেলা:

বিচারক বদলি-পদোন্নতিতে সক্রিয় পুরোনো সিন্ডিকেট
অধস্তন আদালতে এখন প্রায় দুই হাজার একশ বিচারক কাজ করছেন। কর্মরত বিচারকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে বদলি ও পদোন্নতি। কাউকে পুরস্কার বা তিরস্কার করার মোক্ষম অস্ত্র বদলি। আওয়ামী শাসনামলে বিচারকদের বদলি নিয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। সরকারের অনুগত ও সুবিধাভোগী ছাড়া কাউকেই ঢাকার ভেতরে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হয়নি। একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই বদলি-পদোন্নতির নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের কারণে সুবিধাভোগী প্রায় দুই শতাধিক বিচারক এক যুগ ধরে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় পোস্টিং বাগিয়েছেন।

অন্যদিকে ঢাকার বাইরে যারা বছরের পর বছর কাটিয়েছেন, তাদের মেধা ও যোগ্যতা থাকলেও কখনই ঢাকার কোনো আদালতে পদায়ন করা হয়নি। এ ছাড়া বড় বড় জেলার দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে, প্রেষণে গুরুত্বপূর্ণ পদে কে যাবেন—এই সবকিছুই ঠিক করা হতো এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। গত সরকারের আমলে সুবিধাভোগী বিচারকদের টিকিয়ে রাখতে এখনো কাজ করে যাচ্ছে ওই পুরোনো সিন্ডিকেট। ক্ষুব্ধ বিচারকরা দ্রুত এই সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বিচার বিভাগ পৃথককরণ রায়ের আলোকে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে আলাদা সচিবালয় করার দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে তৎকালীন ওয়ান ইলেভেনের সরকার বিচার বিভাগ পৃথক ঘোষণা করে। এর এক বছর পরই ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। ক্ষমতায় আসার পরই বিচারকদের বদলি-পদোন্নতি নিয়ন্ত্রণে আইন মন্ত্রণালয়ে গড়ে ওঠে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। শুরু হয় বিচারকদের মুখ দেখে খাদিম দেওয়ার। বিচারকদের সুখ-দুঃখ দেখার জন্য যে অ্যাসোসিয়েশন, তারও নিয়ন্ত্রক ছিল ওই সিন্ডিকেট। ফলে সাধারণ বিচারকদের পক্ষে কথা বলার মতো কেউ ছিল না। বিচারকদের এক প্রকার বোবার মতো কাজ করতে হয়েছে বলে দাবি সাবেক বিচারকদের।

জনপ্রিয় সংবাদ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সহযোগিতা চায় জামায়াত

শেখ পরিবারের নাম থাকলেই প্রকল্প পাস

আপডেট সময় ০৭:২৬:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আজকের প্রতিকাগুলোর প্রধান প্রধান সংবাদ

প্রথম আলো:

শেখ পরিবারের নাম থাকলেই প্রকল্প পাস
১৫ বছরে ৫১ হাজার কোটি টাকার ৮২টি প্রকল্প। ৩৮টির কাজ শেষ। অনেকগুলো কাজে আসছে না।
প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের চাপে বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প হাতে নিয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। এসব প্রকল্প যাতে সহজে পাস করানো যায়, সে জন্য কৌশলে ব্যবহার করা হয়েছিল শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম। কিছু প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হলেও কাজে আসছে না। এতে সরকারি টাকার অপচয় হয়েছে।

শেখ পরিবারের সদস্যদের নামে গত ১৫ বছরে ৫১ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ৮২টি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩৮টি প্রকল্পের কাজ শেষ, বাকি ৪৪টি প্রকল্পের কাজ চলছে।

প্রকল্পগুলো নেওয়া হয়েছিল বিনোদনকেন্দ্র, সাফারি পার্ক, দৃষ্টিনন্দন ভবন, নভোথিয়েটার, আইসিটি, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠার নামে। প্রকল্পগুলো নেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, ছেলে শেখ কামাল ও শেখ রাসেলের নামে। এ ছাড়া শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে আরও ৪৩টি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সহযোগিতা চায় জামায়াত
দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ উন্নয়নমূলক কাজ এগিয়ে নিতে চীন সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে চূড়ান্ত প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে দেশটির কার্যকরী ভূমিকা পালনের দাবি জানিয়েছে দলটি। গতকাল রাজধানীর মগবাজারে দলীয় কার্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। বৈঠক শেষে জামায়াতের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানানো হয়। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূত, পলিটিক্যাল প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। কীভাবে বাংলাদেশ ও চীন আরও কাছাকাছি এসে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি, শিক্ষা-সংস্কৃতিসহ উন্নয়নে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারি সে ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। আমাদের দেশের উন্নয়নমূলক কাজে বড় পার্টনার হচ্ছে চীন। আমরা আশা করছি আগামীতেও বাংলাদেশের উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ করবে দেশটি। জামায়াত আমির বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা অনুরোধ করেছি, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসনের বিষয়ে চীন কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। চীন যদি কার্যকরী পদক্ষেপ বা ভূমিকা পালন করে তাহলে রোহিঙ্গা সংকটের সমস্যার সমাধান হবে। এদিকে জামায়াতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, আজকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে খুবই সফল একটি মতবিনিময় করেছি। জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ এখানে দলটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে সুদৃঢ় সম্পর্কোন্নয়ন, উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে কথা হয়েছে।

কালের কন্ঠ:

বিদেশে পাচার হওয়া শতকোটি ডলার ফিরিয়ে আনা হবে

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার হচ্ছে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া শতকোটি ডলার দেশে ফিরিয়ে আনা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকার আইনজীবী, প্রত্যর্পণ বিশেষজ্ঞ এবং লন্ডনভিত্তিক গার্নিকা ৩৭ ল ফার্মের যুগ্ম প্রধান টবি ক্যাডম্যান গতকাল সোমবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থনে একটি দেশীয় ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ক্যাডম্যানকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘বাংলাদেশকে দ্রুত সত্য, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির জন্য যথাযথভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বাংলাদেশের জনগণ দ্বারা সমর্থিত একটি কার্যকর অভ্যন্তরীণ আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টার কাছে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করার সময় ক্যাডম্যান বলেন, তাঁরা মানবতাবিরোধী অপরাধ, অর্থনৈতিক অপরাধ ও রাজনৈতিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণের জন্য একটি কাঠামো তৈরির প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সমর্থন করতে প্রস্তুত, যাঁরা অসদুপায়ে অর্জিত সম্পদ নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর প্রস্তাব শোনেন এবং তাঁকে লিখিতভাবে তা দাখিল করতে বলেন।

নয়াদিগন্ত:

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত ও বিচার হবে
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার শিগগিরই শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
গতকাল সোমবার সকালে সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলির সাথে সাক্ষাৎ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের অধিকার, সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। শুধু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে নয়, একজন সাধারণ নাগরিক ও সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য হিসেবে আমি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই। সঠিকভাবে এই হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু করা হবে।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের মধ্যে মানবপাচার প্রতিরোধ, কৃষি পুনর্বাসন ও বীমা, পুলিশ বাহিনীর পুনর্গঠন ও সংস্কার, মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতি প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান। রাষ্ট্রদূত এ মুহূর্তে উপদেষ্টার অগ্রাধিকারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বন্যাপরবর্তী কৃষি পুনর্বাসনই এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার ও চ্যালেঞ্জ। উপদেষ্টা এ সময় কৃষি পুনর্বাসনে সুইজারল্যান্ডের সহযোগিতা কামনা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা মানবপাচার প্রতিরোধে বিদ্যমান সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চাই। তিনি বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষকদের সক্ষমতা ও সামর্থ্য বৃদ্ধিতে কৃষি ক্ষেত্রে বীমা চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের কৃষকরা এখনো এ বিষয়ে খুব বেশি আগ্রহী নয়। ভবিষ্যতে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন বেশ বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। যে কারণে বন্যাসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি এসব সমস্যা সমাধানে কৃষকদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, পুলিশ সংস্কার ও পুনর্গঠনে সুইজারল্যান্ডের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশ এ সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে। এ সময় উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে মানবাধিকার সুউচ্চ ও সমুন্নত রাখতে সুইজারল্যান্ডের সহায়তা চান। রাষ্ট্রদূত বলেন, আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরত আনতে সহযোগিতা করবে সুইজারল্যান্ড। বৈঠকে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক কাউন্সেলর আলবার্তো জিওভানেত্তিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

যুগান্তর:

শহীদুল বেনজীর হাবিবের হাতেই পুলিশে সর্বনাশ
সিনিয়র তিন কর্মকর্তার ‘ফাউন্ডেশন’-এর নামে নজরানা আদায়ের চাঁদাবাজির ব্যবসায় পুলিশের চেইন অব কমান্ড ধ্বংস হয়েছে। সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের যোগদানের পর তার মা-বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশনে নজরানার নামে ঘুস নেওয়ার প্রথা চালু হয়।

সাবেক এই আইজিপি মজিদ-জরিনা ফাউন্ডেশনের নামে শতকোটি টাকা আদায় করেন পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকেই। সেই টাকায় বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হন তিনি। শরীয়তপুরে নড়িয়া উপজেলার নরকলিকাতা গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বেনজীর আহমেদ আধুনিক পুলিশবাহিনী গড়ার প্রত্যয় নিয়ে ঘুস বাণিজ্যের অর্থ গলা পর্যন্ত গিলে সৎ অফিসারের তকমা পরেন। আর পদ্মার এপার-ওপার পৃথক্করণের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করে গোটা পুলিশবাহিনীর মেরুদণ্ড ভেঙেছেন সদ্য বিদায়ি ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। এ মেরূকরণের সদস্য শতাধিক কর্মকর্তা আঙুল ফুলে গলাগাছ বনে গেছেন। তাদের কপাল পুড়ছে শেখ হাসিনার পতনের পর। যুগান্তরের তথ্যানুসন্ধানে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।

শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশের আইজি ছিলেন। আইজিপি থাকাবস্থায় তিনি মিরপুর শহিদ স্মৃতি পুলিশ কলেজ থেকেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা লোপাট করে মজিদ-জরিনা ফাউন্ডেশনে নিয়ে যান। পুলিশের একটি বিশেষ গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত সিনিয়র একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, পুলিশে যে বৈষম্য ও লাগামহীন দুর্নীতির যাত্রা শুরু হয় যাদের কারণে, তারা আজ বাহিনীতে নেই। কিন্তু প্রায় ২০০ বছরের ইতিহাসের সুশৃঙ্খল কাঠামোকে ধ্বংস করে তারা বিদায় নিয়েছেন। পুলিশের পদ-পদবি ব্যবহার করে কামিয়েছেন শত শত কোটি টাকা, যা আজ তাদের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিন পুলিশ কর্মকর্তা ভিন্ন পরিচয়ে নজরানা আদায়ে ফাউন্ডেশন করেন। তাদের দুর্নীতি ও ব্যক্তি দায় গোটা পুলিশবাহিনীর ওপর পড়েছে। বিরোধী রাজনীতিকদের দমন করতে এ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে পদায়ন করে রাখা হয়েছিল, তারাও এখন সামনে নেই। পদোন্নতি আর পদায়নকে কেন্দ্র করে পুলিশবাহিনীর যে ক্ষতি করা হয়েছে, তা কেটে উঠতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। ব্যক্তিগতভাবে বিগত সরকারের প্রভাবশালীরা বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েও এ বাহিনীর সর্বনাশ করেছেন।

ঘুরেফিরে যে তিন সুপারম্যানখ্যাত কর্মকর্তার নাম সামনে আসে, তারা হলেন-সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, বেনজীর আহমেদ ও সদ্যবিদায়ি ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনজনই পদ্মার ওই পারের মানুষ। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামল পতনের পর পুলিশে সর্বনাম আলোচিত তিন কর্মকর্তার আওয়ামী লীগের তকমা লাগানো পুলিশ কর্মকর্তাদের মিছিলে অংশ নিতে বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়েছে অনেক মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তারও। বৈষম্যের শিকার এসব কর্মকর্তার মনেপ্রাণে যারা এই দলকে পছন্দ করেননি, তারাও নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার সুযোগে ছিলেন।

মানবজমিন:

এখনো ৬ লাখের বেশি পরিবার পানিবন্দি
বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৬৭ জন
চলমান বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা একদিনে আরও আটজন বেড়েছে। সোমবার পর্যন্ত বন্যায় ১১ জেলায় মোট ৬৭ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে ফেনীতে মারা গেছেন ২৬ জন। এখনো ৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬৭টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। গতকাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। একদিন আগে মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৯ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যায় মৃত লোকসংখ্যা ৬৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪২ জন, নারী সাতজন ও শিশু ১৮ জন। কুমিল্লায় ১৭, ফেনীতে ২৬, চট্টগ্রামে ৬, খাগড়াছড়িতে একজন, নোয়াখালীতে ১১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক, লক্ষ্মীপুরে এক, কক্সবাজারে ৩ ও মৌলভীবাজারে একজন মারা গেছেন। এখনো মৌলভীবাজারে একজন নিখোঁজ রয়েছেন। চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।

মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এখনো ৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬৭টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত মোট লোকসংখ্যা ৫১ লাখ ৮ হাজার ২০২ জন। সার্বিকভাবে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লোকজন বাড়িঘরে ফিরছেন। মোট ৩ হাজার ৬১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ লাখ ৬ হাজার ৭৪১ জন লোক এবং ৩২ হাজার ৮৩০টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এগারো জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে মোট ৪৭২টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

দৈনিক সংগ্রাম:

আগামী দিনগুলোতে দুই দেশের জনগণ সরকার পার্টি টু পার্টি আরও ক্লোজলি কাজ করার সুযোগ পাবো ————– ডা. শফিকুর রহমান
চায়নার জনগণ বাংলাদেশের জনগণের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়: রাষ্ট্রদূত

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে নিযুক্ত চায়না এ্যাম্বেসডর মি. ইয়াও ওয়েন গতকাল সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তিনি ডেপুটি এ্যাম্বেসডরসহ চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন। সাক্ষাৎকালে চায়না এ্যাম্বেসডর ও আমীরে জামায়াত দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

রাজধানী ঢাকার মগবাজারস্থ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আযাদ সাবেক এমপি, মাওলানা আবদুল হালিম, এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও এডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন। সৌজন্য সাক্ষাতের পর আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ও চায়না এ্যাম্বেসডর মি. ইয়াও ওয়েন এক প্রেস ব্রিফিং-এ বক্তব্য রাখেন। আমীরে জামায়াত সবাইকে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের বৈঠকটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা একসাথে দীর্ঘ এক ঘণ্টা যাবৎ দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছি। উভয় দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ডেভেলপমেন্ট-সহ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটিয়ে আমরা যেন একসাথে এগিয়ে যেতে পারি সেই বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পেয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে দুই দেশের জনগণ, দুই দেশের সরকার, পার্টি টু পার্টি আমরা আরও ক্লোজলি কাজ করার সুযোগ পাবো। আপনাদের মাধ্যমে সম্মানিত অতিথিবৃন্দকে এখানে আসার জন্য আরেকবার অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং আশা করছি আগামী দিনগুলোতে আমাদের এ ধরনের মিউচুয়াল ডায়ালগ দুই দেশের স্বার্থে অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

বনিক বার্তা:

ডলারের বাজারে কোনো অস্থিরতা নেই
দেশে ডলারের বাজারে এ মুহূর্তে কোনো অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে না। স্থিতিশীল হয়ে এসেছে মুদ্রাটির বিনিময় হার। ব্যাংক বা কার্ব মার্কেটে ডলারের সংকট নেই। ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রবাসীরা প্রণোদনাসহ ডলারপ্রতি ১২৩ টাকা পাচ্ছেন, যেখানে খুচরা বাজারে মিলছে ১২১-১২২ টাকায়। হুন্ডির চাহিদা কমায় খুচরা বাজারে ডলারের বিনিময় হার নিম্নমুখী বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
যদিও দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশে অস্থির ছিল বৈদেশিক মুদ্রার বাজার। ২০২২ সালের শুরুতে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা। সংকট তীব্র হয়ে ওঠায় বিনিময় হার বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। গত আড়াই বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ঘটেছে ৪২ শতাংশেরও বেশি। ডলারের দর স্থিতিশীল করতে গত মে মাসে ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি গ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরও সমাধান মেলেনি, ব্যাংকের ঘোষিত দরের সঙ্গে কার্ব মার্কেটে ডলারের দরের ব্যবধান ছিল ৩-১০ টাকা। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ডলারের বাজার ক্রমেই স্থিতিশীল হয়ে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধান শ্রমবাজারগুলোয় হুন্ডির যে বাজার আছে, সেটির চাহিদা তৈরি হয় বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বাজারে হুন্ডির চাহিদায় বড় পতন হয়েছে। হুন্ডির বাজারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানের যোগসূত্র আছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটেও চিড় ধরেছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শক্ত অবস্থানের কারণে সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালান কমেছে। এ কারণে কার্ব মার্কেটে ডলারের চাহিদায় পতন হয়েছে। আমদানির ঋণপত্র (এলসি) কমে যাওয়ার প্রভাবে ব্যাংকেও ডলারের চাহিদা কমে গেছে।

সমকাল:

‘অসাধ্য সাধন’ করত সাধনের পরিবার
সাধন চন্দ্র মজুমদার ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের সাড়ে পাঁচ বছরের খাদ্যমন্ত্রী। টানা চারবার তিনি হয়েছেন এমপি। গেল সাড়ে ১৫ বছর সাধন চন্দ্রের জনপ্রতিনিধির জমানা ছিল অরাজকতায় ভরা। ক্ষমতাকে তিনি মনে করতেন ‘জাদুর কাঠি’। সেই কাঠির ছোঁয়ায় নানা অপকর্মে তাল দিয়ে গেছেন তাঁর ভাতিজা রাজেশ মজুমদার, ছোট ভাই মনোরঞ্জন মজুমদার মনা, ছোট মেয়ে তৃণা মজুমদার এবং দুই জামাতা আবু নাসের বেগ ও নাসিম আহম্মেদ। সবাই মিলে গড়ে তোলেন দুর্ভেদ এক সিন্ডিকেট। টাকা দিয়ে ‘অসাধ্য সাধন’ হতো সাধন চন্দ্রের ডেরায়।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, পুরোভাগে থেকে সব অপকর্মের সমন্বয় করতেন ভাতিজা রাজেশ। তিনি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রীর সহকারী; বসতেন মন্ত্রণালয়ে। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রীর একান্ত সচিব সাধন চন্দ্রের বড় জামাতা আবু নাসের বেগ (মাগুরার সাবেক ডিসি) ও মন্ত্রীর এপিএসের দায়িত্বে থাকা ছোট মেয়ে তৃণা মজুমদার। টাকার বিনিময়ে দপ্তরের যে কোনো পদায়ন, বদলি, বরাদ্দ– সবকিছু মন্ত্রণালয়ে বসে তারাই সামলাতেন। টাকার লেনদেন হতো মন্ত্রীর বেইলি রোডের সরকারি বাসায়। সেই বাসভবন সন্ধ্যা থেকেই খাদ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার পদভারে করত গমগম। প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে দরদাম ঠিক করে পছন্দমাফিক বদলি কিংবা পদায়ন নিতেন কর্মকর্তারা।
তি পদায়নে অন্তত ৩০ লাখ থেকে সর্বোচ্চ কোটি টাকা পর্যন্ত নিলাম উঠত। লোভনীয় পদের মধ্যে ছিল আরসি ফুড (রিজওনাল কন্ট্রোলার অব ফুড), ডিসি ফুড (ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোলার) এবং ওসি এলএসডি (গুদাম কর্মকর্তা)। এ ছাড়া ধান-চাল বেশি উৎপাদন হয় এমন তালিকাভুক্ত জেলার বাইরেও যে কোনো স্থান ও পদে পদায়নের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হতো সাধন সিন্ডিকেটকে। খাদ্য বিভাগের একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র সমকালকে নিশ্চিত করেছে এসব তথ্য।

কালবেলা:

বিচারক বদলি-পদোন্নতিতে সক্রিয় পুরোনো সিন্ডিকেট
অধস্তন আদালতে এখন প্রায় দুই হাজার একশ বিচারক কাজ করছেন। কর্মরত বিচারকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে বদলি ও পদোন্নতি। কাউকে পুরস্কার বা তিরস্কার করার মোক্ষম অস্ত্র বদলি। আওয়ামী শাসনামলে বিচারকদের বদলি নিয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। সরকারের অনুগত ও সুবিধাভোগী ছাড়া কাউকেই ঢাকার ভেতরে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হয়নি। একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই বদলি-পদোন্নতির নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের কারণে সুবিধাভোগী প্রায় দুই শতাধিক বিচারক এক যুগ ধরে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় পোস্টিং বাগিয়েছেন।

অন্যদিকে ঢাকার বাইরে যারা বছরের পর বছর কাটিয়েছেন, তাদের মেধা ও যোগ্যতা থাকলেও কখনই ঢাকার কোনো আদালতে পদায়ন করা হয়নি। এ ছাড়া বড় বড় জেলার দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে, প্রেষণে গুরুত্বপূর্ণ পদে কে যাবেন—এই সবকিছুই ঠিক করা হতো এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। গত সরকারের আমলে সুবিধাভোগী বিচারকদের টিকিয়ে রাখতে এখনো কাজ করে যাচ্ছে ওই পুরোনো সিন্ডিকেট। ক্ষুব্ধ বিচারকরা দ্রুত এই সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বিচার বিভাগ পৃথককরণ রায়ের আলোকে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে আলাদা সচিবালয় করার দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে তৎকালীন ওয়ান ইলেভেনের সরকার বিচার বিভাগ পৃথক ঘোষণা করে। এর এক বছর পরই ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। ক্ষমতায় আসার পরই বিচারকদের বদলি-পদোন্নতি নিয়ন্ত্রণে আইন মন্ত্রণালয়ে গড়ে ওঠে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। শুরু হয় বিচারকদের মুখ দেখে খাদিম দেওয়ার। বিচারকদের সুখ-দুঃখ দেখার জন্য যে অ্যাসোসিয়েশন, তারও নিয়ন্ত্রক ছিল ওই সিন্ডিকেট। ফলে সাধারণ বিচারকদের পক্ষে কথা বলার মতো কেউ ছিল না। বিচারকদের এক প্রকার বোবার মতো কাজ করতে হয়েছে বলে দাবি সাবেক বিচারকদের।