ঢাকা ০৭:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তুচ্ছ ঘটনায় ছাত্রলীগের ৪ কর্মী দ্বারা নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খুলেছেন পাবিপ্রবি শিক্ষার্থী

বিগত আ.লীগ সরকারের শাসনামলে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দ্বারা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব নির্যাতনের কথা সে সময় শিক্ষার্থীরা বলতে না পারলেও গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন তারা।

এই শিক্ষার্থীদেরই মধ্যে একজন হলেন অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাহিয়াতুর রহমান তুহিন। এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ছাত্রলীগের চার নেতা-কর্মী দ্বারা নির্যাতন শিকার হয়েছেন তিনি। ছাত্রলীগের ঐ চার কর্মীর নাম হলো যুবরাজ সরকার, মমিন মণ্ডল, মাজহারুল ইসলাম জয়, ইবজুল হোসেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক শেহজাদ হাসানের অনুসারী এবং পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে মাজহারুল ইসলাম জয় বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।

তুহিনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার রুমমেট যুবরাজ প্রায়ই জুনিয়রদের রুমে নিয়ে এসে গান-বাজনা সহ আড্ডাবাজিতে লিপ্ত থাকে, এক পর্যায়ে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হলেই যুবরাজ তার দিকে তেড়ে আসেন এবং বুকে লাথি মারেন। তবে রুমে থাকা সিনিয়র ভাইয়ের সহায়তায় ঐদিন ছাড় পেলেও পরদিন বিকেল ৩.৩০-৪.০০ দিকে, যুবরাজ তার চার বন্ধুকে রুমে নিয়ে আসে। তুহিন বাজার থেকে ফিরেই রুমে তাদের অবস্থান দেখতে পান তারপর ফ্রেশ হবার জন্য ওয়াশরুমের দিকে যেতে লাগলেই মোমিন এবং ইবজুল দৌড়িয়ে  ওয়াসরুম থেকে তাকে ধরে নিয়ে আসে। তখন রুমের দরজা আটকিয়ে মোমিন প্রচন্ড জোরে চড় থাপ্পড় মারতে শুরু করে, এরপর যার যার মতো এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি-লাত্থি। জয় তার চুল টানতে থাকে, একপর্যায়ে যুবরাজ আবার প্রচন্ড জোরে তুহিনের বাম কানে বেশ কয়েকটা আঘাত করে,পরক্ষণেই তার কান দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়।

এই ঘটনা পরবর্তীতে শিক্ষকদের জানালেও পরিস্থিতি আরও খারাপের আশঙ্কায় শিক্ষকবৃন্দ অভিযোগ না করতে বলেন এবং এভাবেই ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়।

উল্লেখ্য তিনি আরও বলেন, সৈরাচার সরকার পতনের পর এখন তার একমাত্র দাবী বিগত দিনে যারা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী নির্যাতনে অংশ নিয়েছে, দ্রুত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এদের শাস্তি দেখে যেন পরবর্তীতে সকলে শিক্ষা নিতে পারে এবং কেউ যেন এরকম হীন কাজ করার দুঃসাহস আর না পায় এটাই চাওয়া।

জনপ্রিয় সংবাদ

তুচ্ছ ঘটনায় ছাত্রলীগের ৪ কর্মী দ্বারা নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খুলেছেন পাবিপ্রবি শিক্ষার্থী

আপডেট সময় ০৮:১১:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিগত আ.লীগ সরকারের শাসনামলে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দ্বারা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব নির্যাতনের কথা সে সময় শিক্ষার্থীরা বলতে না পারলেও গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন তারা।

এই শিক্ষার্থীদেরই মধ্যে একজন হলেন অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাহিয়াতুর রহমান তুহিন। এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ছাত্রলীগের চার নেতা-কর্মী দ্বারা নির্যাতন শিকার হয়েছেন তিনি। ছাত্রলীগের ঐ চার কর্মীর নাম হলো যুবরাজ সরকার, মমিন মণ্ডল, মাজহারুল ইসলাম জয়, ইবজুল হোসেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক শেহজাদ হাসানের অনুসারী এবং পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে মাজহারুল ইসলাম জয় বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।

তুহিনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার রুমমেট যুবরাজ প্রায়ই জুনিয়রদের রুমে নিয়ে এসে গান-বাজনা সহ আড্ডাবাজিতে লিপ্ত থাকে, এক পর্যায়ে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হলেই যুবরাজ তার দিকে তেড়ে আসেন এবং বুকে লাথি মারেন। তবে রুমে থাকা সিনিয়র ভাইয়ের সহায়তায় ঐদিন ছাড় পেলেও পরদিন বিকেল ৩.৩০-৪.০০ দিকে, যুবরাজ তার চার বন্ধুকে রুমে নিয়ে আসে। তুহিন বাজার থেকে ফিরেই রুমে তাদের অবস্থান দেখতে পান তারপর ফ্রেশ হবার জন্য ওয়াশরুমের দিকে যেতে লাগলেই মোমিন এবং ইবজুল দৌড়িয়ে  ওয়াসরুম থেকে তাকে ধরে নিয়ে আসে। তখন রুমের দরজা আটকিয়ে মোমিন প্রচন্ড জোরে চড় থাপ্পড় মারতে শুরু করে, এরপর যার যার মতো এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি-লাত্থি। জয় তার চুল টানতে থাকে, একপর্যায়ে যুবরাজ আবার প্রচন্ড জোরে তুহিনের বাম কানে বেশ কয়েকটা আঘাত করে,পরক্ষণেই তার কান দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়।

এই ঘটনা পরবর্তীতে শিক্ষকদের জানালেও পরিস্থিতি আরও খারাপের আশঙ্কায় শিক্ষকবৃন্দ অভিযোগ না করতে বলেন এবং এভাবেই ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়।

উল্লেখ্য তিনি আরও বলেন, সৈরাচার সরকার পতনের পর এখন তার একমাত্র দাবী বিগত দিনে যারা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী নির্যাতনে অংশ নিয়েছে, দ্রুত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এদের শাস্তি দেখে যেন পরবর্তীতে সকলে শিক্ষা নিতে পারে এবং কেউ যেন এরকম হীন কাজ করার দুঃসাহস আর না পায় এটাই চাওয়া।