ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে এক নারীসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মাঝারদিয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ও তার ছেলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত একযুগ ধরে মাঝারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমান হামিদ মাতুব্বরের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহসভাপতি শাহিদুজ্জামান শাহিদের বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে মাঝে মধ্যেই সংঘর্ষে লিপ্ত হন উভয় গ্রুপের সমর্থকরা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে শাহিদের গ্রুপের স্থানীয় ইউপি মেম্বার কবির মোল্যার নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন সমর্থক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান হামিদ ও তার ছেলে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ফারুক মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা চালান।
এসময় উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে অন্তত ১২ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে হামিদের সমর্থক রেনু বেগম (৫৮), রহমতুল্লাহ মাতুব্বর (৩২), বুরহান (২৪), বাসার মোল্যা (৫২), মমিন মোল্যা (৩৪), মাসুদ (১৮) ও শাহিদের সমর্থক হানিফ মোল্যাকে (৪০) ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাবিবুর রহমান হামিদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে তার ছেলে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ফারুক মাতুব্বর বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই শাহিদ গ্রুপের ইউপি মেম্বার কবির মোল্যা ও তার লোজকন আমাদের সমর্থক স্বপনকে মারধর করেন। পরে আমাদের লোকজন ঠেকাতে গেলে তাদেরও মারধর করা হয়। পরে কবির মোল্যার নেতৃত্বে শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে আমাদের বাড়িতে হামলা চালান। এসময় ১০টি বসতঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও ঘরে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমাদের পক্ষের ৭-৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
স্থানীয় ইউপি মেম্বার কবির মোল্যা বলেন, ‘সংঘর্ষ বা হামলার সঙ্গে আমি জড়িত না। পাট চুরি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগ করি। আমরা কি এখন সংঘর্ষে জড়াতে পারি?’
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহসভাপতি শাহিদুজ্জামান শাহিদ বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। তবে শুনেছি, কবির মেম্বার ও হামিদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।’
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।