ঢাকা ১১:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ ছাড়াল

২৩ মাসে রপ্তানি বেশি দেখানো হয় ২৬ বিলিয়ন ডলার

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৮:০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪
  • 34

আজকের প্রত্রিকাগুলো প্রধান প্রধান খবর

সমকাল:

২৩ মাসে রপ্তানি বেশি দেখানো হয় ২৬ বিলিয়ন ডলার
২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রকৃত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে ৪০ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। সরকারি সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সর্বশেষ গত মে মাস পর্যন্ত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি ২৩ মাসে রপ্তানি দেখিয়েছিল ১০৭ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার। প্রকৃতপক্ষে রপ্তানি হয় ৮০ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। এর মানে ২৩ মাসে রপ্তানি বেশি দেখানো হয় ২৬ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার।

আইএমএফের চাপে বাংলাদেশ ব্যাংক গত এপ্রিলে মাসভিত্তিক প্রকৃত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ শুরু করে। প্রকৃত রপ্তানির সঙ্গে ইপিবির তথ্যে বড় ধরনের গড়মিল দেখা যায়। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে সংস্থাটি। এর পর থেকে রপ্তানি তথ্য প্রকাশ বন্ধ রেখেছে ইপিবি। সাধারণত সংস্থাটি প্রতি মাস শেষ হওয়ার পরবর্তী সপ্তাহে তথ্য প্রকাশ করে। জুলাইয়ের পর আগস্ট মাস শেষ হতে চললেও এখনও জুনের তথ্য প্রকাশ করেনি ইপিবি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৮১ কোটি ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রকৃত রপ্তানি ছিল ৪ হাজার ৩৩৬ কোটি ডলার। এর মানে গত অর্থবছর রপ্তানি কমেছে ২৫৫ কোটি ডলার বা ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। ইপিবি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের রপ্তানি দেখিয়েছিল। এর মানে ইপিবি বেশি দেখিয়েছিল ১২ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের মে পর্যন্ত সংস্থাটি ৫ হাজার ১৫৪ কোটি ডলারের রপ্তানি দেখিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে গত মে পর্যন্ত রপ্তানি হয় ৩ হাজার ৭৩৪ কোটি ডলার। এর মানে গত অর্থবছরের ১১ মাসে বেশি দেখানো হয় ১৪ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এতদিন একই রপ্তানি একাধিকবার হিসাব করা, শিপমেন্ট বাতিল হলেও তা রপ্তানির তালিকা থেকে বাদ না দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে রপ্তানি বেশি দেখানো হচ্ছিল। এর পর বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের সব হিসাব ওলট-পালট হয়ে গেছে।

রপ্তানির প্রকৃত তথ্য প্রকাশের ফলে গত অর্থবছর বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। যদিও গত মার্চ পর্যন্ত মাত্র ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি দেখানো হয়েছিল। প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে হিসাব করার ফলে গত অর্থবছর চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। গত মার্চ পর্যন্ত যেখানে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত দেখানো হয় ৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। আর্থিক হিসাবে আসলে ৪ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত হয়েছে। গত মার্চ পর্যন্ত যেখানে আর্থিক হিসাবে ঘাটতি দেখানো হয় ৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অবশ্য সামগ্রিক ঘাটতির হিসাবে তেমন কোনো হেরফের হয়নি। গত অর্থবছর এ ক্ষেত্রে ৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি হয়েছে।

প্রথম আলো:

দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ ছাড়াল

গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫২ জন মারা যাওয়ার তথ্য জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ, ৬ জন নারী ও ৭ শিশু রয়েছে।

গত বুধবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ৩১। এক দিনের ব্যবধানে আরও ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। এর মধ্যে শুধু ফেনীতেই মৃতের সংখ্যা ২ থেকে বেড়ে ১৭ হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বন্যাকবলিত ১১ জেলায় এখনো ১০ লাখ ৭২ হাজার ৫৭৯টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৮০ হাজার ৪৬৩। এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ৩ হাজার ৪০৩টি। এগুলোতে ৫ লাখ ২ হাজার ৫০১ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মৃত্যুর তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ১১টি জেলার ৬৮টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত। জেলাগুলো হলো ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট।

মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ফেনীতে ১৭ জন, কুমিল্লায় ১৪, নোয়াখালীতে ৮, চট্টগ্রামে ৬, কক্সবাজারে ৩, খাগড়াছড়িতে ১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১ ও মৌলভীবাজারে ১ জন রয়েছেন। এ ছাড়া মৌলভীবাজারে একজন নিখোঁজ আছেন।

ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফাহমিদা হক প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ বিভিন্ন সময় মরদেহ উদ্ধার ও সংগ্রহ করেছে। পুলিশের কাছ থেকে মরদেহের তথ্য জেলা প্রশাসন সংগ্রহ করে। মৃতদের মধ্যে একজন ত্রাণের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হয়েছেন।

এদিকে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মুহুরী নদী থেকে কলাগাছের ভেলায় ভাসমান অবস্থায় কাফনের কাপড় পরানো অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁদের ধারণা, মৃত্যুর পর বন্যার কারণে দাফনের জায়গা না পেয়ে স্বজনেরা লাশটি হয়তো ভাসিয়ে দিয়েছেন।

গত বুধবার বিকেলের দিকে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের বাদামতলী এলাকায় মুহুরী নদীর পাশে ঝোপের মধ্যে আটকে থাকা কলাগাছের ভেলা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।

বাদামতলী এলাকার রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁরা মানবিক দিক বিবেচনা করে লাশটি উদ্ধারের পর দাফন করেছেন।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় বলেন, মুহুরী নদী থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে দাফন করার কথা তিনি শুনেছেন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরান
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন, দ্বিকক্ষের সংসদে আসন বাড়ানো, সংবিধান ও ইসির নিয়োগ আইন সংশোধান, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থায়ী রূপ দেওয়া

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচনপদ্ধতি প্রবর্তন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠনের পাশাপাশি আসন সংখ্যা বাড়নো এবং নারীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক।

গতকাল রাজধানীর ফার্মগেটে দ্য ডেইলি স্টার ভবনে ‘বাংলাদেশ নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক থেকে এ দাবি জানানো হয়।

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তনের জন্য সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদে সংশোধনী আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লেজুরবৃত্তি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, কার্যকর না ভোট চালু; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী যুক্ত করা, নির্বাচন কমিশনারদের বয়স ৪৫ বছর নির্ধারণ করা; নির্বাচন বৈধতার জন্য ভোটের হার নির্ধারণ; বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের সংখ্যা নির্ধারণ এবং নির্বাচনকালীন জোট করলেও দলের নিজস্ব প্রতীকে ভোট করা আইনি বাধ্যবাধকতা আরোপ করার প্রস্তাব দেন বিশিষ্টজনরা। অন্যদিকে, প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয় কমানোর জন্য পোস্টার ছাপানোর খরচ, হলফনামার তথ্য; সংস্কার ও প্রচার এবং আসনভিত্তিক পরিচিত সভা আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সুজন নেতৃবৃন্দ। সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বিচারপতি আবদুর রউফ, সুজন নির্বাহী সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সুজন সহসম্পাদক জাকির হোসেন, সুজন নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, নির্বাচন কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা জেসমিন টুলী, ফেমার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুনিরা খান, সাংবাদিক ও কবি সোহরাব হাসান, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আবদুল আলীম, প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ আহমদ তৈয়ব। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

নয়াদিগন্ত:

গুমবিরোধী সনদে স্বাক্ষর ঢাকার
গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল এ সনদে স্বাক্ষর করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’ ৩০ আগস্ট গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসের আগেই এ সনদে যুক্ত হলো বাংলাদেশ।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে সরকার ইতোমধ্যে হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে ইতোমধ্যে একটি কমিশন গঠন করেছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করে গত মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের অভিযোগ নিয়ে গত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের সমালোচনা রয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিত গোপন বন্দিশালা থেকে দীর্ঘ সময় পর বেশ কয়েকজন ব্যক্তি মুক্ত হওয়ার পর গুমের বিষয়টি জোরালোভাবে সামনে আসে।
বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে সাত শ’র বেশি মানুষ গুম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৫০ জনের বেশি মানুষের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক ৯টি সনদের আটটিতে সই করেছে। জাতিসঙ্ঘের দীর্ঘদিনের অনুরোধের পরও বিগত সরকার গুমবিরোধী সনদে সই করেনি। অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার সমুন্নত রাখার পাশাপাশি গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে চায়। এ লক্ষ্যে সরকার গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রতিটি গুমের তদন্ত এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে দেশবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।
গত সোমবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ সরকারি বাহিনীর যে সদস্যরা ‘গুম, খুন, নির্যাতনের’ মত অপরাধে যুক্ত ছিলেন, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেয়া হবে। তিনি বলেন, তালিকা প্রস্তুত করে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হবে। দুর্নীতি ও সম্পদ পাচারের বিচার করা হবে।’
তার বক্তব্যের পরদিন গঠিত কমিশনের কার্যপরিধিতে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট পর্যন্ত গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত এবং কোনো পরিস্থিতিতে গুম হয়েছে তা নির্ধারণের ক্ষমতা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয় ‘জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনাসমূহের বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করা এবং এতদ বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করা; জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাহাদের আত্মীয়স্বজনকে অবহিত করা এবং জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে এ কমিশন।’
উল্লেখ্য, গুমবিরোধী সনদটি ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ৩২টি দেশ এটি অনুস্বাক্ষর করার পরে ২০১০ সালে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়। সামগ্রিকভাবে এ সনদের লক্ষ্য গুম বন্ধের পাশাপাশি এ অপরাধের জন্য দায়মুক্তি বন্ধ করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেয়া।

কালবেলা:

আ.লীগপন্থি শীর্ষ আমলারা এবার দুদকের নজরে
আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের পাশাপাশি শেখ হাসিনা সরকারের আমলে প্রশাসনের শীর্ষ পদে থাকা কর্মকর্তাদের সম্পদের খোঁজে মাঠে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১৫ বছরে যেসব আমলা গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন শিগগিরই তাদের বিষয়ে অনুসন্ধানের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবদের সম্পদের তথ্য তলবের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এই প্রক্রিয়া। এরপর তদন্তের আওতায় আসবেন সাবেক জনপ্রশাসন সচিব ও জ্বালানি সচিবরা। এর বাইরে আওয়ামী লীগের আমলে সুবিধাভোগী বেশ কয়েকজন আমলার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বিগত ১৫ বছরে সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন আমলারা। বিভিন্ন সময়ে অনেকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছে দুদক। তবে বিভিন্ন মহলের চাপের কারণে এতদিন সেসব অভিযোগ নিয়ে কাজ করতে পারেনি সংস্থাটি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এখন সেসব অভিযোগ অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দীর্ঘদিন লাল ফিতায় বন্দি থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে দুদক।

সূত্র জানায়, গত সরকারের কয়েক ডজন প্রভাবশালী আমলার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে দুদকের কাছে। এর মধ্যে কয়েকজনের অবৈধভাবে বিপুল সম্পদ অর্জনের তথ্য রয়েছে। চাকরি জীবনে ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কমিশন নেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে মালিক হয়েছেন শত শত কোটি টাকার। এসব অবৈধ অর্থে তারা দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়েছেন। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। কারও কারও রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির বিপুল পরিমাণ শেয়ার। দেশের বিভিন্ন জায়গায় জমি আছে অনেকের। এসব সম্পদের বেশিরভাগই স্ত্রী, সন্তান কিংবা আত্মীয়স্বজনদের নামে। অনেকেই চাকরি শেষে নাম লিখিয়েছেন রাজনীতিতে। কেউ কেউ গড়েছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কয়েকজন আবার দেশ ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিদেশে স্থায়ী হয়েছেন। কারও কারও বিরুদ্ধে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে।

যুগান্তর:

আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরছে মানুষ
বিধ্বস্ত বাড়িঘর মেরামত করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আরও সময় লাগবে * ১১ জেলায় মৃত্যু ৫২ জনের
দেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তবে বন্যায় অনেকের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘরের নানা সরঞ্জাম পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।

অনেক এলাকায় টিউবওয়েল ডুবে আছে। এতে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে এখনো সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে দুর্গত বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আরও অনেক সময় লাগবে। এদিকে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও কুমিল্লার নিচু এলাকা এখনো পানিতে তলিয়ে আছে।

এসব স্থানে মানুষ খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে কষ্ট করছেন। তাছাড়া বন্যার্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মানুষ এক সপ্তাহ ধরে ভাত খেতে পারেননি। তারা দিনের পর দিন শুকনো খাবার খেয়েও ক্লান্ত। অনেকের কাছে চাল-ডাল থাকলেও জ্বালানি সংকটের কারণে রান্না করতে পারছেন না।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী রেজা বলেছেন, দেশে চলমান বন্যায় ১১ জেলায় ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ, ৬ জন নারী ও ৭ শিশু রয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় ১৪ জন, ফেনীতে ১৭ জন, চট্টগ্রামে ৬ জন, খাগড়াছড়িতে ১ জন, নোয়াখালীতে ৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন, লক্ষ্মীপুরে ১ জন, কক্সবাজারে ৩ জন ও মৌলভীবাজারে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মৌলভীবাজারে একজন নিখোঁজ রয়েছেন।

তিনি জানান, ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য মোট ৫৯৫টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। বন্যাউপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিসহ সব পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর, রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি : জেলা সদরের পশ্চিম জামিরতলি গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিম ও জয়নাল আবেদিন জানান, তাদের এলাকার টিউবওয়েলগুলো এখনো পানির নিচে। ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই বাজার থেকে পানি কিনে খাচ্ছেন। কারণ ত্রাণের সঙ্গে দেওয়া পানিতে তাদের প্রয়োজন মিটছে না।

কমলনগরের চরকাদিরা ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের পুরোটাই এখনো পানির নিচে। এতে পানিবন্দি অন্তত ২০ হাজারের বেশি মানুষ। ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করলেও এসব এলাকার বহু বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডুবে আছে। তলিয়ে আছে আমন ধানের বীজতলা, শাকসবজির মাঠ ও রাস্তাঘাট। বন্যার্ত এলাকাগুলোতে প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শুকনো খাবার বিতরণ অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে রামগতির চরপোড়াগাছা, চরবাদাম, কমলনগরের চরকাদিরা ইউনিয়নের চরবসু, বাদামতলা, বটতলা, পাটোয়ারীপাড়া এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ভুলুয়া নদীর পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় পানি সরতে পারছে না। সে কারণে এখনো ওইসব এলাকা পানির নিচে ডুবে আছে। এমন পরিস্থিতিতে এখানকার পানিবন্দি বাসিন্দারা চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলায় উল্লেখযোগ্যভাবে পানি কমেছে।

দেশরুপান্তর:

২ লাখ ৩৪ হাজার কোটিই পরিচালকদের
ব্যাংক লুটের মহোৎসবে পরিচালকদের নাম বরাবরই এসেছে, তবে তা অনেকটা আড়ালে চাপা পড়েছিল। এস আলমের পরিকল্পিত ব্যাংক লুটের পর এখন অন্য ব্যাংক পরিচালকদের আমানতের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। জনগণের গচ্ছিত আমানত গনিমতের মালের মতো ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালকরা ঋণের নামে ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছেন, যা ব্যাংক খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১৫ শতাংশ। বারবার ঋণ পুনঃতফসিল কিংবা পুনর্গঠনের নামে এসব টাকা ফেরত দিচ্ছেন না তারা।

যাদের ব্যাংক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তারাই খেয়ানত করছেন জনগণের আমানত। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা ঋণ হিসেবে বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো, যার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণই ব্যাংক মালিক ও পরিচালকরা যোগসাজশের মাধ্যমে নিয়ে গেছেন। কিন্তু যখন ঋণ পরিশোধের সময় হয়, তখন নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন। এত দিন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এসব অনিয়মে সহযোগিতা করেছে। ফলে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে খেলাপি ঋণ। আবার প্রকৃত খেলাপি ঋণও দেখানো যাচ্ছে না আদালতের স্থগিতাদেশ ও ঋণ অবলোপনের কারণে। সব মিলিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের পরিমাণ চার লাখ কোটি টাকারও বেশি বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

মানবজমিন:

আনিসুল-সালমান ফের রিমান্ডে
‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর বাড্ডায় সুমন সিকদার (৩১) কে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে ফের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই মামলায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়া আলোচিত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান ও সাবেক এমপি সাদেক খানের ফের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ওদিকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রিমান্ড শুনানির সময় আদালতকে বলেছেন, আমি ও সালমান এফ রহমান কোটা আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। আমি নির্দোষ। ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানি না। আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই।
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাড্ডায় ফুজি টাওয়ারের সামনে সুমন সিকদারকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে ফের ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। গতকাল সকাল ৭টায় তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
একই মামলায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

দৈনিক সংগ্রাম:

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরী ও জেলার উদ্যাগে গতকাল বৃহস্পতিবার সিদ্ধিরগঞ্জে গ্রীন গার্ডেন রেস্টুরেন্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের শহীদ পরিবারের সাথে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এর মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

এসময় শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, একটি জাতি যেখানে দাঁড়িয়ে যায়, সেখানে কোনো স্বৈরাচার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। তিনি আরও বলেন এবারের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র- জনতার আন্দোলনে দেশ দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয় বরং তৃতীয় বার স¦াধীনতা পেয়েছে। ১৯৪৭ এর স্বাধীনতা, ১৯৭১ এর স্বাধীনতা এবং ২০২৪ এর স্বাধীনতা। অতীতের দুইটি স্বাধীনতার যেমন ইতিহাস লেখা হয়েছে তেমনিভাবে ২০২৪ এর স্বাধীনতার ইতিহাসও লেখতে হবে এবং শহীদদের ইতিহাস পাঠ্যবই এ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের সাথে বসেছিলাম। আমরা বলেছি, যেই পরিবারগুলোর আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন আপনারা তাদের সহযোগিতা করুন। আহতদের জন্য যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করুন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। বীরদের বীরত্বগাঁথা আমাদের পাঠ্যপুস্তকসহ সকল জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্থান করে দিতে হবে। এটা তাদের পরিবারের চাহিদা নয়, এটা আগামী প্রজন্মের চাহিদা। তারা যাতে জানতে পারে, তাদের পূর্বের যুবকরা জালেমের সামনে বুক পেতে দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তারা বলেছিল, বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলী কর।

ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, আমরা এসেছি শহীদ পরিবারকে সান্ত¡না দিতে নয় বরং অনুপ্রেরণা নিতে। এ সময় শহীদ সুমাইয়ার ২ মাসের এতিম শিশুসহ অন্যান্য শহীদদের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে যান। তিনি বলেন, আর কোন জালেম যেনো জুলুম করতে সাহস না দেখায়, আমরা এমন শাসক চাই যে এ দেশের জনগণকে দাসের পরিবর্তে মালিক মনে করবে। নিজেদেরকে দেশের মালিক মনে না করে খাদেম মনে করবে।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার এর সভাপতিত্বে, মহানগর সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন এর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল ছাত্রনেতা জাহিদুল ইসলাম কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমাদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা আমীর মুমিনুল হক সরকার, মহানগরীর নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জাকির হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবির নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সভাপতি ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান রাকিব, জেলা সভাপতি ছাত্রনেতা আবু সুফিয়ান, মহানগর ও জেলা সহকারী সেক্রেটারি জামাল হোসাইন ও আবু সাঈদ মুন্না, জেলা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও থানা আমীরবৃন্দসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

বনিক বার্তা:

বছরে ১,৪০০ কোটি টাকা আয়ের প্রাক্কলন, ছয় মাসে আয় হয়েছে ৩৭ কোটি

 

রাজস্ব আয়ের এ প্রাক্কলন করা হয় মূলত পণ্য পরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে। সমীক্ষায় বলা হয়, চালুর প্রথম বছরে পদ্মার নতুন রেলপথ দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে প্রতিদিন ১২ জোড়া কনটেইনার ট্রেন চলবে। ২০২৪ সালে শুধু পণ্য পরিবহন করেই রাজস্ব আয় হবে ১ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। কিন্তু রেলপথটি আংশিকভাবে চালুর ১০ মাস পার হলেও কোনো আন্তঃদেশীয় পণ্যবাহী ট্রেন চলেনি। এমনকি স্থানীয় পণ্যবাহী ট্রেনও চলেনি। আরো বলা হয়েছিল, ২০৩০ সালে চালু হবে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, যেখান থেকে প্রতিদিন আরো দুই জোড়ার বেশি ট্রেন (গড়ে ২ দশমিক ৩টি ট্রেন) চলবে। তখন পণ্য পরিবহন বাবদ বছরে আয় বেড়ে দাঁড়াবে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা। যদিও এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে পায়রা গভীর সমুদ্র প্রকল্প। বন্দরটি না হওয়ায় ভবিষ্যতে রেলপথটিতে পণ্য পরিবহন বৃদ্ধির সুযোগও সীমিত হয়ে এসেছে।

পদ্মা সেতু সংযোগ রেলপথটি অর্থনৈতিকভাবে কার্যকর করতে হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সমন্বিতভাবে শিল্পায়ন নিশ্চিত করা উচিত ছিল বলে মনে করেন অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সামছুল হক। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘‌পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতু রেল সংযোগ মিলে এ করিডোরে ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। বিনিয়োগ করার সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল—দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পায়ন হবে, পরিকল্পিত উন্নয়ন করা হবে। পদ্মা সেতু হয়েছে দুই বছর আগে। রেল আংশিক চালুর এক বছর হতে চলল। এখনো এ অঞ্চলে শিল্পায়নের কোনো উদ্যোগ নেই। পদ্মা সেতুর মতো ব্যয়বহুল একটি যোগাযোগ করিডোর অর্থনৈতিকভাবে কার্যকরের জন্য শিল্পায়ন দরকার ছিল। কারণ যাত্রী পরিবহন করে বিনিয়োগ তুলে আনা সম্ভব নয়। একমাত্র পণ্য পরিবহনই পারে রেলপথটির বিনিয়োগ তুলে আনতে।’

তিনি বলেন, ‘‌সামগ্রিকভাবে আমি বলব পদ্মা রেল প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উচ্চাভিলাষী প্রাক্কলন করা হয়েছে। পণ্য পরিবহনকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা উচিত ছিল। শুরুতেই সমন্বিত পরিকল্পনা করা জরুরি ছিল। যে পায়রা বন্দরের পণ্য এ রেলপথের মাধ্যমে পরিবহন করার পরিকল্পনা হয়েছিল, সেই বন্দরটিই আদতে বাস্তবায়ন হবে কিনা, তা আগেই যাচাই করা দরকার ছিল। রেলপথটির কাজ শুরুর পর পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প বাদ পড়েছে। ফলে প্রকল্পটি রেলের আয় বাড়ানোর বদলে উল্টো লোকসানি হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এর সঙ্গে প্রকল্পের জন্য গ্রহণ করা বিদেশী ঋণ দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ তৈরি করবে।’

জনপ্রিয় সংবাদ

দিনাজপুরে ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত

বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ ছাড়াল

২৩ মাসে রপ্তানি বেশি দেখানো হয় ২৬ বিলিয়ন ডলার

আপডেট সময় ০৮:০৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলো প্রধান প্রধান খবর

সমকাল:

২৩ মাসে রপ্তানি বেশি দেখানো হয় ২৬ বিলিয়ন ডলার
২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রকৃত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে ৪০ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। সরকারি সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সর্বশেষ গত মে মাস পর্যন্ত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি ২৩ মাসে রপ্তানি দেখিয়েছিল ১০৭ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার। প্রকৃতপক্ষে রপ্তানি হয় ৮০ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। এর মানে ২৩ মাসে রপ্তানি বেশি দেখানো হয় ২৬ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার।

আইএমএফের চাপে বাংলাদেশ ব্যাংক গত এপ্রিলে মাসভিত্তিক প্রকৃত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ শুরু করে। প্রকৃত রপ্তানির সঙ্গে ইপিবির তথ্যে বড় ধরনের গড়মিল দেখা যায়। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে সংস্থাটি। এর পর থেকে রপ্তানি তথ্য প্রকাশ বন্ধ রেখেছে ইপিবি। সাধারণত সংস্থাটি প্রতি মাস শেষ হওয়ার পরবর্তী সপ্তাহে তথ্য প্রকাশ করে। জুলাইয়ের পর আগস্ট মাস শেষ হতে চললেও এখনও জুনের তথ্য প্রকাশ করেনি ইপিবি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৮১ কোটি ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রকৃত রপ্তানি ছিল ৪ হাজার ৩৩৬ কোটি ডলার। এর মানে গত অর্থবছর রপ্তানি কমেছে ২৫৫ কোটি ডলার বা ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। ইপিবি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের রপ্তানি দেখিয়েছিল। এর মানে ইপিবি বেশি দেখিয়েছিল ১২ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের মে পর্যন্ত সংস্থাটি ৫ হাজার ১৫৪ কোটি ডলারের রপ্তানি দেখিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে গত মে পর্যন্ত রপ্তানি হয় ৩ হাজার ৭৩৪ কোটি ডলার। এর মানে গত অর্থবছরের ১১ মাসে বেশি দেখানো হয় ১৪ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এতদিন একই রপ্তানি একাধিকবার হিসাব করা, শিপমেন্ট বাতিল হলেও তা রপ্তানির তালিকা থেকে বাদ না দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে রপ্তানি বেশি দেখানো হচ্ছিল। এর পর বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের সব হিসাব ওলট-পালট হয়ে গেছে।

রপ্তানির প্রকৃত তথ্য প্রকাশের ফলে গত অর্থবছর বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। যদিও গত মার্চ পর্যন্ত মাত্র ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি দেখানো হয়েছিল। প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে হিসাব করার ফলে গত অর্থবছর চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। গত মার্চ পর্যন্ত যেখানে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত দেখানো হয় ৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। আর্থিক হিসাবে আসলে ৪ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত হয়েছে। গত মার্চ পর্যন্ত যেখানে আর্থিক হিসাবে ঘাটতি দেখানো হয় ৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অবশ্য সামগ্রিক ঘাটতির হিসাবে তেমন কোনো হেরফের হয়নি। গত অর্থবছর এ ক্ষেত্রে ৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি হয়েছে।

প্রথম আলো:

দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ ছাড়াল

গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫২ জন মারা যাওয়ার তথ্য জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ, ৬ জন নারী ও ৭ শিশু রয়েছে।

গত বুধবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ৩১। এক দিনের ব্যবধানে আরও ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। এর মধ্যে শুধু ফেনীতেই মৃতের সংখ্যা ২ থেকে বেড়ে ১৭ হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বন্যাকবলিত ১১ জেলায় এখনো ১০ লাখ ৭২ হাজার ৫৭৯টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে আছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৮০ হাজার ৪৬৩। এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ৩ হাজার ৪০৩টি। এগুলোতে ৫ লাখ ২ হাজার ৫০১ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মৃত্যুর তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ১১টি জেলার ৬৮টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত। জেলাগুলো হলো ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট।

মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ফেনীতে ১৭ জন, কুমিল্লায় ১৪, নোয়াখালীতে ৮, চট্টগ্রামে ৬, কক্সবাজারে ৩, খাগড়াছড়িতে ১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১ ও মৌলভীবাজারে ১ জন রয়েছেন। এ ছাড়া মৌলভীবাজারে একজন নিখোঁজ আছেন।

ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফাহমিদা হক প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ বিভিন্ন সময় মরদেহ উদ্ধার ও সংগ্রহ করেছে। পুলিশের কাছ থেকে মরদেহের তথ্য জেলা প্রশাসন সংগ্রহ করে। মৃতদের মধ্যে একজন ত্রাণের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হয়েছেন।

এদিকে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মুহুরী নদী থেকে কলাগাছের ভেলায় ভাসমান অবস্থায় কাফনের কাপড় পরানো অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁদের ধারণা, মৃত্যুর পর বন্যার কারণে দাফনের জায়গা না পেয়ে স্বজনেরা লাশটি হয়তো ভাসিয়ে দিয়েছেন।

গত বুধবার বিকেলের দিকে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের বাদামতলী এলাকায় মুহুরী নদীর পাশে ঝোপের মধ্যে আটকে থাকা কলাগাছের ভেলা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।

বাদামতলী এলাকার রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁরা মানবিক দিক বিবেচনা করে লাশটি উদ্ধারের পর দাফন করেছেন।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় বলেন, মুহুরী নদী থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে দাফন করার কথা তিনি শুনেছেন।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরান
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন, দ্বিকক্ষের সংসদে আসন বাড়ানো, সংবিধান ও ইসির নিয়োগ আইন সংশোধান, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থায়ী রূপ দেওয়া

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচনপদ্ধতি প্রবর্তন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠনের পাশাপাশি আসন সংখ্যা বাড়নো এবং নারীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক।

গতকাল রাজধানীর ফার্মগেটে দ্য ডেইলি স্টার ভবনে ‘বাংলাদেশ নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক থেকে এ দাবি জানানো হয়।

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তনের জন্য সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদে সংশোধনী আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লেজুরবৃত্তি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, কার্যকর না ভোট চালু; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী যুক্ত করা, নির্বাচন কমিশনারদের বয়স ৪৫ বছর নির্ধারণ করা; নির্বাচন বৈধতার জন্য ভোটের হার নির্ধারণ; বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের সংখ্যা নির্ধারণ এবং নির্বাচনকালীন জোট করলেও দলের নিজস্ব প্রতীকে ভোট করা আইনি বাধ্যবাধকতা আরোপ করার প্রস্তাব দেন বিশিষ্টজনরা। অন্যদিকে, প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয় কমানোর জন্য পোস্টার ছাপানোর খরচ, হলফনামার তথ্য; সংস্কার ও প্রচার এবং আসনভিত্তিক পরিচিত সভা আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সুজন নেতৃবৃন্দ। সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বিচারপতি আবদুর রউফ, সুজন নির্বাহী সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সুজন সহসম্পাদক জাকির হোসেন, সুজন নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, নির্বাচন কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা জেসমিন টুলী, ফেমার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুনিরা খান, সাংবাদিক ও কবি সোহরাব হাসান, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আবদুল আলীম, প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ আহমদ তৈয়ব। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

নয়াদিগন্ত:

গুমবিরোধী সনদে স্বাক্ষর ঢাকার
গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল এ সনদে স্বাক্ষর করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’ ৩০ আগস্ট গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসের আগেই এ সনদে যুক্ত হলো বাংলাদেশ।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে সরকার ইতোমধ্যে হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে ইতোমধ্যে একটি কমিশন গঠন করেছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করে গত মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের অভিযোগ নিয়ে গত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের সমালোচনা রয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিত গোপন বন্দিশালা থেকে দীর্ঘ সময় পর বেশ কয়েকজন ব্যক্তি মুক্ত হওয়ার পর গুমের বিষয়টি জোরালোভাবে সামনে আসে।
বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে সাত শ’র বেশি মানুষ গুম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৫০ জনের বেশি মানুষের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক ৯টি সনদের আটটিতে সই করেছে। জাতিসঙ্ঘের দীর্ঘদিনের অনুরোধের পরও বিগত সরকার গুমবিরোধী সনদে সই করেনি। অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার সমুন্নত রাখার পাশাপাশি গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে চায়। এ লক্ষ্যে সরকার গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রতিটি গুমের তদন্ত এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে দেশবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।
গত সোমবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ সরকারি বাহিনীর যে সদস্যরা ‘গুম, খুন, নির্যাতনের’ মত অপরাধে যুক্ত ছিলেন, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেয়া হবে। তিনি বলেন, তালিকা প্রস্তুত করে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হবে। দুর্নীতি ও সম্পদ পাচারের বিচার করা হবে।’
তার বক্তব্যের পরদিন গঠিত কমিশনের কার্যপরিধিতে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট পর্যন্ত গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত এবং কোনো পরিস্থিতিতে গুম হয়েছে তা নির্ধারণের ক্ষমতা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয় ‘জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনাসমূহের বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করা এবং এতদ বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করা; জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাহাদের আত্মীয়স্বজনকে অবহিত করা এবং জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে এ কমিশন।’
উল্লেখ্য, গুমবিরোধী সনদটি ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ৩২টি দেশ এটি অনুস্বাক্ষর করার পরে ২০১০ সালে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়। সামগ্রিকভাবে এ সনদের লক্ষ্য গুম বন্ধের পাশাপাশি এ অপরাধের জন্য দায়মুক্তি বন্ধ করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেয়া।

কালবেলা:

আ.লীগপন্থি শীর্ষ আমলারা এবার দুদকের নজরে
আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের পাশাপাশি শেখ হাসিনা সরকারের আমলে প্রশাসনের শীর্ষ পদে থাকা কর্মকর্তাদের সম্পদের খোঁজে মাঠে নামছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১৫ বছরে যেসব আমলা গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন শিগগিরই তাদের বিষয়ে অনুসন্ধানের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবদের সম্পদের তথ্য তলবের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এই প্রক্রিয়া। এরপর তদন্তের আওতায় আসবেন সাবেক জনপ্রশাসন সচিব ও জ্বালানি সচিবরা। এর বাইরে আওয়ামী লীগের আমলে সুবিধাভোগী বেশ কয়েকজন আমলার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বিগত ১৫ বছরে সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন আমলারা। বিভিন্ন সময়ে অনেকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছে দুদক। তবে বিভিন্ন মহলের চাপের কারণে এতদিন সেসব অভিযোগ নিয়ে কাজ করতে পারেনি সংস্থাটি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এখন সেসব অভিযোগ অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দীর্ঘদিন লাল ফিতায় বন্দি থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে দুদক।

সূত্র জানায়, গত সরকারের কয়েক ডজন প্রভাবশালী আমলার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে দুদকের কাছে। এর মধ্যে কয়েকজনের অবৈধভাবে বিপুল সম্পদ অর্জনের তথ্য রয়েছে। চাকরি জীবনে ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কমিশন নেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে মালিক হয়েছেন শত শত কোটি টাকার। এসব অবৈধ অর্থে তারা দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়েছেন। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। কারও কারও রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির বিপুল পরিমাণ শেয়ার। দেশের বিভিন্ন জায়গায় জমি আছে অনেকের। এসব সম্পদের বেশিরভাগই স্ত্রী, সন্তান কিংবা আত্মীয়স্বজনদের নামে। অনেকেই চাকরি শেষে নাম লিখিয়েছেন রাজনীতিতে। কেউ কেউ গড়েছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কয়েকজন আবার দেশ ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিদেশে স্থায়ী হয়েছেন। কারও কারও বিরুদ্ধে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে।

যুগান্তর:

আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরছে মানুষ
বিধ্বস্ত বাড়িঘর মেরামত করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আরও সময় লাগবে * ১১ জেলায় মৃত্যু ৫২ জনের
দেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তবে বন্যায় অনেকের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘরের নানা সরঞ্জাম পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।

অনেক এলাকায় টিউবওয়েল ডুবে আছে। এতে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে এখনো সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে দুর্গত বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আরও অনেক সময় লাগবে। এদিকে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও কুমিল্লার নিচু এলাকা এখনো পানিতে তলিয়ে আছে।

এসব স্থানে মানুষ খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে কষ্ট করছেন। তাছাড়া বন্যার্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মানুষ এক সপ্তাহ ধরে ভাত খেতে পারেননি। তারা দিনের পর দিন শুকনো খাবার খেয়েও ক্লান্ত। অনেকের কাছে চাল-ডাল থাকলেও জ্বালানি সংকটের কারণে রান্না করতে পারছেন না।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী রেজা বলেছেন, দেশে চলমান বন্যায় ১১ জেলায় ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ, ৬ জন নারী ও ৭ শিশু রয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় ১৪ জন, ফেনীতে ১৭ জন, চট্টগ্রামে ৬ জন, খাগড়াছড়িতে ১ জন, নোয়াখালীতে ৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন, লক্ষ্মীপুরে ১ জন, কক্সবাজারে ৩ জন ও মৌলভীবাজারে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মৌলভীবাজারে একজন নিখোঁজ রয়েছেন।

তিনি জানান, ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য মোট ৫৯৫টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। বন্যাউপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিসহ সব পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর, রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি : জেলা সদরের পশ্চিম জামিরতলি গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিম ও জয়নাল আবেদিন জানান, তাদের এলাকার টিউবওয়েলগুলো এখনো পানির নিচে। ফলে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকেই বাজার থেকে পানি কিনে খাচ্ছেন। কারণ ত্রাণের সঙ্গে দেওয়া পানিতে তাদের প্রয়োজন মিটছে না।

কমলনগরের চরকাদিরা ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের পুরোটাই এখনো পানির নিচে। এতে পানিবন্দি অন্তত ২০ হাজারের বেশি মানুষ। ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করলেও এসব এলাকার বহু বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডুবে আছে। তলিয়ে আছে আমন ধানের বীজতলা, শাকসবজির মাঠ ও রাস্তাঘাট। বন্যার্ত এলাকাগুলোতে প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শুকনো খাবার বিতরণ অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে রামগতির চরপোড়াগাছা, চরবাদাম, কমলনগরের চরকাদিরা ইউনিয়নের চরবসু, বাদামতলা, বটতলা, পাটোয়ারীপাড়া এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ভুলুয়া নদীর পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় পানি সরতে পারছে না। সে কারণে এখনো ওইসব এলাকা পানির নিচে ডুবে আছে। এমন পরিস্থিতিতে এখানকার পানিবন্দি বাসিন্দারা চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলায় উল্লেখযোগ্যভাবে পানি কমেছে।

দেশরুপান্তর:

২ লাখ ৩৪ হাজার কোটিই পরিচালকদের
ব্যাংক লুটের মহোৎসবে পরিচালকদের নাম বরাবরই এসেছে, তবে তা অনেকটা আড়ালে চাপা পড়েছিল। এস আলমের পরিকল্পিত ব্যাংক লুটের পর এখন অন্য ব্যাংক পরিচালকদের আমানতের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। জনগণের গচ্ছিত আমানত গনিমতের মালের মতো ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালকরা ঋণের নামে ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছেন, যা ব্যাংক খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১৫ শতাংশ। বারবার ঋণ পুনঃতফসিল কিংবা পুনর্গঠনের নামে এসব টাকা ফেরত দিচ্ছেন না তারা।

যাদের ব্যাংক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তারাই খেয়ানত করছেন জনগণের আমানত। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা ঋণ হিসেবে বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো, যার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণই ব্যাংক মালিক ও পরিচালকরা যোগসাজশের মাধ্যমে নিয়ে গেছেন। কিন্তু যখন ঋণ পরিশোধের সময় হয়, তখন নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন। এত দিন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এসব অনিয়মে সহযোগিতা করেছে। ফলে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে খেলাপি ঋণ। আবার প্রকৃত খেলাপি ঋণও দেখানো যাচ্ছে না আদালতের স্থগিতাদেশ ও ঋণ অবলোপনের কারণে। সব মিলিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের পরিমাণ চার লাখ কোটি টাকারও বেশি বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

মানবজমিন:

আনিসুল-সালমান ফের রিমান্ডে
‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর বাড্ডায় সুমন সিকদার (৩১) কে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে ফের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই মামলায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়া আলোচিত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান ও সাবেক এমপি সাদেক খানের ফের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ওদিকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রিমান্ড শুনানির সময় আদালতকে বলেছেন, আমি ও সালমান এফ রহমান কোটা আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। আমি নির্দোষ। ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানি না। আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই।
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাড্ডায় ফুজি টাওয়ারের সামনে সুমন সিকদারকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে ফের ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। গতকাল সকাল ৭টায় তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
একই মামলায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

দৈনিক সংগ্রাম:

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরী ও জেলার উদ্যাগে গতকাল বৃহস্পতিবার সিদ্ধিরগঞ্জে গ্রীন গার্ডেন রেস্টুরেন্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের শহীদ পরিবারের সাথে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এর মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

এসময় শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, একটি জাতি যেখানে দাঁড়িয়ে যায়, সেখানে কোনো স্বৈরাচার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। তিনি আরও বলেন এবারের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র- জনতার আন্দোলনে দেশ দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয় বরং তৃতীয় বার স¦াধীনতা পেয়েছে। ১৯৪৭ এর স্বাধীনতা, ১৯৭১ এর স্বাধীনতা এবং ২০২৪ এর স্বাধীনতা। অতীতের দুইটি স্বাধীনতার যেমন ইতিহাস লেখা হয়েছে তেমনিভাবে ২০২৪ এর স্বাধীনতার ইতিহাসও লেখতে হবে এবং শহীদদের ইতিহাস পাঠ্যবই এ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের সাথে বসেছিলাম। আমরা বলেছি, যেই পরিবারগুলোর আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন আপনারা তাদের সহযোগিতা করুন। আহতদের জন্য যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করুন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। বীরদের বীরত্বগাঁথা আমাদের পাঠ্যপুস্তকসহ সকল জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্থান করে দিতে হবে। এটা তাদের পরিবারের চাহিদা নয়, এটা আগামী প্রজন্মের চাহিদা। তারা যাতে জানতে পারে, তাদের পূর্বের যুবকরা জালেমের সামনে বুক পেতে দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তারা বলেছিল, বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলী কর।

ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, আমরা এসেছি শহীদ পরিবারকে সান্ত¡না দিতে নয় বরং অনুপ্রেরণা নিতে। এ সময় শহীদ সুমাইয়ার ২ মাসের এতিম শিশুসহ অন্যান্য শহীদদের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে যান। তিনি বলেন, আর কোন জালেম যেনো জুলুম করতে সাহস না দেখায়, আমরা এমন শাসক চাই যে এ দেশের জনগণকে দাসের পরিবর্তে মালিক মনে করবে। নিজেদেরকে দেশের মালিক মনে না করে খাদেম মনে করবে।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার এর সভাপতিত্বে, মহানগর সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন এর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল ছাত্রনেতা জাহিদুল ইসলাম কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমাদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা আমীর মুমিনুল হক সরকার, মহানগরীর নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জাকির হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবির নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সভাপতি ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান রাকিব, জেলা সভাপতি ছাত্রনেতা আবু সুফিয়ান, মহানগর ও জেলা সহকারী সেক্রেটারি জামাল হোসাইন ও আবু সাঈদ মুন্না, জেলা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও থানা আমীরবৃন্দসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

বনিক বার্তা:

বছরে ১,৪০০ কোটি টাকা আয়ের প্রাক্কলন, ছয় মাসে আয় হয়েছে ৩৭ কোটি

 

রাজস্ব আয়ের এ প্রাক্কলন করা হয় মূলত পণ্য পরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে। সমীক্ষায় বলা হয়, চালুর প্রথম বছরে পদ্মার নতুন রেলপথ দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে প্রতিদিন ১২ জোড়া কনটেইনার ট্রেন চলবে। ২০২৪ সালে শুধু পণ্য পরিবহন করেই রাজস্ব আয় হবে ১ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। কিন্তু রেলপথটি আংশিকভাবে চালুর ১০ মাস পার হলেও কোনো আন্তঃদেশীয় পণ্যবাহী ট্রেন চলেনি। এমনকি স্থানীয় পণ্যবাহী ট্রেনও চলেনি। আরো বলা হয়েছিল, ২০৩০ সালে চালু হবে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, যেখান থেকে প্রতিদিন আরো দুই জোড়ার বেশি ট্রেন (গড়ে ২ দশমিক ৩টি ট্রেন) চলবে। তখন পণ্য পরিবহন বাবদ বছরে আয় বেড়ে দাঁড়াবে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা। যদিও এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে পায়রা গভীর সমুদ্র প্রকল্প। বন্দরটি না হওয়ায় ভবিষ্যতে রেলপথটিতে পণ্য পরিবহন বৃদ্ধির সুযোগও সীমিত হয়ে এসেছে।

পদ্মা সেতু সংযোগ রেলপথটি অর্থনৈতিকভাবে কার্যকর করতে হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সমন্বিতভাবে শিল্পায়ন নিশ্চিত করা উচিত ছিল বলে মনে করেন অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সামছুল হক। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘‌পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতু রেল সংযোগ মিলে এ করিডোরে ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। বিনিয়োগ করার সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল—দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পায়ন হবে, পরিকল্পিত উন্নয়ন করা হবে। পদ্মা সেতু হয়েছে দুই বছর আগে। রেল আংশিক চালুর এক বছর হতে চলল। এখনো এ অঞ্চলে শিল্পায়নের কোনো উদ্যোগ নেই। পদ্মা সেতুর মতো ব্যয়বহুল একটি যোগাযোগ করিডোর অর্থনৈতিকভাবে কার্যকরের জন্য শিল্পায়ন দরকার ছিল। কারণ যাত্রী পরিবহন করে বিনিয়োগ তুলে আনা সম্ভব নয়। একমাত্র পণ্য পরিবহনই পারে রেলপথটির বিনিয়োগ তুলে আনতে।’

তিনি বলেন, ‘‌সামগ্রিকভাবে আমি বলব পদ্মা রেল প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উচ্চাভিলাষী প্রাক্কলন করা হয়েছে। পণ্য পরিবহনকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা উচিত ছিল। শুরুতেই সমন্বিত পরিকল্পনা করা জরুরি ছিল। যে পায়রা বন্দরের পণ্য এ রেলপথের মাধ্যমে পরিবহন করার পরিকল্পনা হয়েছিল, সেই বন্দরটিই আদতে বাস্তবায়ন হবে কিনা, তা আগেই যাচাই করা দরকার ছিল। রেলপথটির কাজ শুরুর পর পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প বাদ পড়েছে। ফলে প্রকল্পটি রেলের আয় বাড়ানোর বদলে উল্টো লোকসানি হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এর সঙ্গে প্রকল্পের জন্য গ্রহণ করা বিদেশী ঋণ দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ তৈরি করবে।’