বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, “আমাদের জীবন বা রক্ত কোনো কিছুরই মায়া নেই, যদি সেটা দেশের স্বাধীনতা ও ইসলাম রক্ষার জন্য হয়। ছাত্রশিবিরের প্রতিটি কর্মী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত, দেশকে শৃঙ্খলমুক্ত রাখার জন্য।”
তিনি আজ (২৯ আগস্ট) বগুড়া অঞ্চল সাথী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
বগুড়া শহরের টিটু মিলায়তন অডিটোরিয়ামে বগুড়া অঞ্চলের সাথীদের নিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বগুড়া শহর শাখার সভাপতি রেজোওয়ানুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও অঞ্চল তত্বাবধায়ক কেন্দ্রীয় স্পোর্টস সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতিত্বে সকাল সাড়ে নয়টায় দারসুল কুরআনের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বক্তব্যের শুরুতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল শহীদদের জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদার দোয়া ও আহতদের সুস্থতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের অপশাসনে দেশের স্বাধীনতা সাবভৌর্মত্ব হুমকির মুখে ফেলে দেওয়ার পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও বিশৃংখল পরিবেশ তৈরি করে গেছে। দেশের প্রতিটি সেক্টরে পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ রেখে গেছে।
স্বৈরাচার সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে ধংস করে দিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পুলিশ প্রশাসন-সহ সকল সেক্টর দলিয়করণ করার মাধ্যমে জুলুমের শাসন কায়েম করে এ জাতিকে মেরুদণ্ডহীন করার চেষ্টা করেছে। দেশের বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বিচারের নামে হাজার হাজার মামলা করে ছাত্রশিবির ও সাধারন শিক্ষার্থীসহ বিরোধী মতের লক্ষ লক্ষ মানুষকে জেলে পুড়ে নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে। গুম-খুন ও আয়নাঘর তৈরি করে দেশে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল।
কিন্তু জালেমের ক্ষমতা চিরস্থায়ী হয় না। দেশের মানুষের ওপর চালানো জুলুমের বদলা হিসেবে স্বৈরাচার দেশের ক্ষমতার নাগপাশ থেকে যোজন যোজন দূরে ছিটকে পড়েছে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।”
তিনি উপস্থিত সাথীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “দুনিয়ার সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তাকওয়াবান মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে, কিয়ামুল লাইল ও সিয়ামুন নাহার পালনের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে হবে, সাধারণ মানুষদের ভালোবাসতে হবে এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করতে হবে। এর ভিত্তিতে নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে”
ক্যাম্পাস সংগঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্রশিবির বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করবে। ছাত্রদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে হবে ও অসহায় ছাত্রদের সার্বিক খোঁজখবর রাখতে হবে। আর মেধার ভিত্তিতে হলের সীট বরাদ্দ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকুরী নিশ্চিত করতে হবে।”
উক্ত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া শহর জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত আমীর অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেল, মাওলানা আব্দুল হক আমীর বগুড়া জেলা পশ্চিম শাখা। আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবির সিরাজগঞ্জ শহর সভাপতি মো. তরিকুল ইসলাম, বগুড়া জেলা পূর্বের সভাপতি মো. যোবায়ের আহমেদ, বগুড়া জেলা পশ্চিম সভাপতি সাইয়েদ কুতুব সাব্বির, সিরাজগঞ্জ জেলা সভাপতি আলহাজ উদ্দিন, জয়পুরহাট জেলা সভাপতি জুয়েল হোসেন-সহ অঞ্চলের জেলা ও শহর শাখার দায়িত্বশীলবৃন্দ।