পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় আরজি কর হাসপাতালে সম্প্রতি নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় উত্তাল ভারত। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানালেন, ধর্ষণের ঘটনায় কঠোর শাস্তি কাম্য। ধর্ষণের একমাত্র সাজা হবে ফাঁসি।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার মেয়ো রোডে বক্তব্য দেন মমতা। সেখানে তিনি বলেন, ‘রাজ্যের হাতে ক্ষমতা নেই কঠোর শাস্তির। রাজ্যের হাতে ক্ষমতা থাকলে সাত দিনে বিচার করে দেব আমি। ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি ফাঁসি, আর কিছু নয়। এই আইন করলে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।’
এ সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ে উদ্দেশে বলেন, ‘রাজ্য সরকার সাত দিনের মধ্যে মামলাটির তদন্ত শেষ করতে চেয়েছিল, কিন্তু মামলাটি সিবিআইয়ের কাছে পাঠানো হয়। তারা বিচার চায় না, বিলম্ব চায়। ১৬ দিন পেরিয়ে গেলেও কোথায় বিচার?’
ধর্ষণের ঘটনায় রাজ্যের পক্ষ থেকে আলাদা আইনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কোনো কথা বলি না বা কাজ করি না, যা মানুষের পক্ষে নয়। আমি বলে যাচ্ছি, আগামী সপ্তাহে বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হবে স্পিকারকে বলে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা থেকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ধর্ষকের ফাঁসির বিল পাস করে রাজ্যপালের কাছে পাঠাব।’
তিনি রাজ্যপালকে উদ্দেশ্য করে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমি জানি, রাজার পাঠ। রাজাবাবু কিছু করবেন না। না করলে (বিলে স্বাক্ষর না করলে) মেয়েরা রাজভবনে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকবেন। ভাইয়েরাও থাকবেন। এই বিলে স্বাক্ষর করতেই হবে। রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়ে দায় সারলে হবে না।’
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির যে অভিযোগ উঠেছিল, তা নিয়েও তাকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, ‘আপনি আবার বড়-বড় কথা বলেন কিভাবে। রাজভবনের একজন নারী কর্মীকে আপনি নির্যাতন করেন। মেয়েটা বিচার পায়নি। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। তাকে আমি অন্য জায়গায় চাকরি দিয়েছি। তাকে আমি সরিয়ে দিয়েছি। থাকার জায়গা করে দিয়েছি। এই কথাগুলো বলতে পারেন না? লজ্জা নেই?’
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের ঘটনা নিয়েও কথা বলেন মমতা ব্যানার্জি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তরুণী চিকিৎসকের (স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া) যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্য সরকার চেয়েছিল যে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের মাধ্যমে সাতদিনের মধ্যে ব্যবস্থা করা হোক। সেইসঙ্গে কামদুনির ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে মমতা জানান যে, রাজ্য সরকার ফাঁসি চেয়েছিল ধর্ষকদের। তবে আদালতের রায়ে দু’জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতে ধর্ষকদের জন্য ১০ বছর সাজার আইন রয়েছে। কেবল ১২ বছরের কম বয়সী শিশু ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডের আইন রয়েছে দেশটিতে।